তালেবান-মার্কিন দোহা চুক্তি:
আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনে তালেবানের বিরোধিতার পুনরাবৃত্তি
আফগানিস্তানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনে আবারও বিরোধিতা করলো অন্তর্বর্তী তালেবান সরকার। তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী আমির খান মোত্তাকি সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন তাঁর সরকার কোনো দেশের সাথে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা করে নি।
যদিও বলা হচ্ছে দোহা চুক্তির অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে সাতটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করার কথা রয়েছে। তবে তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছেন মার্কিন সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠার বিষয়টি দোহা চুক্তির অংশ নয়। তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দোহা চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকাশিত না হলেও অনুমান করা অসঙ্গত নয় যে তালেবান যদি চুক্তিতে এমন একটি ধারা স্বীকার করেও থাকে সেটা যে তাদের আমেরিকা বিরোধী স্লোগানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী-তা্ই নয় বরং আমেরিকা আফগানিস্তানে সঙ্কট ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে ঘাঁটি স্থাপনের ক্ষেত্র সৃষ্টি করার মতো পরিস্থিতির দিকে মোড় নিতে চেষ্টা চালাবে। তালেবানরা যেমনটি বলছে যে তারা দোহা চুক্তিতে আফগানিস্তানে মার্কিন ঘাঁটি স্থাপনে সম্মত হয় নি, তারপরও আমেরিকা আফগানিস্তানে নিরাপত্তাহীনতা কিংবা নিয়ন্ত্রণ করার অক্ষমতার অজুহাত দেখিয়ে ঘাঁটি স্থাপনের চেষ্টা করবে। রাজনীতি বিশ্লেষক সৈয়দ ঈসা মাজারী বলেছেন: মনে হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ত্যাগ করার কারণে অনুশোচনা করছে। তাই চেষ্টা করছে যে-কোনো উপায়েই হোক একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করে সে দেশে ফিরে আসতে। তালেবানরা আফগানিস্তানে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সুসংহত করে আমেরিকাকে ফিরে আসার মতো অজুহাত সৃষ্টির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। আমির খান মোত্তাকির মতে আমেরিকার বিরোধিতা শুধুমাত্র তালেবানের সাথে সম্পর্কিত নয়, আফগানিস্তানের জনগণও সেদেশ থেকে আমেরিকাকে তাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সুতরাং আফগানিস্তানের জনগণ নিশ্চিতভাবেই ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে তালেবানের অবস্থানকে সমর্থন করবে। জনগণ তাই প্রত্যাশা করছে দোহা চুক্তি পুরোপুরি প্রকাশ করে দিয়ে তালেবান সরকারের ওপর মার্কিন চাপ ব্যর্থ করে দিক। রাজনীতি বিশেষজ্ঞ আসাদুল্লাহ বাশিরও বলেছেন: গোটা বিশ্বের সামনে এটা পরিষ্কার যে আফগানিস্তানের জনগণ প্রবলভাবে বিদেশী বিদ্বেষী বিশেষ করে চরমভাবে আমেরিকা বিরোধী। আফগান জনগণ এ পর্যন্ত তিনটি বিশ্বশক্তিকে এমনভাবে পরাজিত করেছে যে তারা আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আমেরিকাও এই ইতিহাস ভালো করেই জানে।#
পার্সটুডে/এনএম/৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।