ফিলিস্তিন সংকট:
বেসামরিক নাগরিকদের গাজা ত্যাগের জন্য সময় নির্ধারণ করাই ইসরাইলের উদ্দেশ্য
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি গতকাল (৬ নভেম্বর) বলেছেন: উত্তর গাজায় টানা দুই দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠিত হবে। উত্তর গাজার বাসিন্দারা যাতে এলাকা ছেড়ে যেতে পারে সেজন্য ওই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। হাগারির ওই বার্তার উদ্দেশ্য হলো গাজার উত্তরাঞ্চল এবং গাজা শহরের নাগরিকরা যেন তাদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার স্বার্থে সাময়িকভাবে দক্ষিণাঞ্চলে চলে যায়।
গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের সর্বাত্মক হামলার ৩২ দিন অতিবাহিত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ১০ হাজার ৩শ'রও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে। শহীদদের মধ্যে ৭০ শতাংশই শিশু এবং মহিলা। এছাড়াও বেসরকারী প্রতিবেদনে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে অন্তত ৫ হাজার ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তুপের নীচেই দাফন হয়েছেন। গাজায় প্রতি ঘণ্টায় ১৫ জন শহীদ হচ্ছেন এবং প্রতি মিনিটে একজন আহত হচ্ছে। গাজার সরকারী তথ্য বিভাগ জানিয়েছে, যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দখলদার ইসরাইল গাজায় হামলায় ৩০ হাজার টন বিস্ফোরক ব্যবহার করেছে। তার মানে ওই এলাকার ওপর প্রতিদিন ১ হাজার বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন জাগে, ২ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং উত্তর গাজা ছেড়ে বেসামরিক নাগরিকদের চলে যাওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার ইহুদিবাদী লক্ষ্যটা আসলে কী?
ইহুদিবাদীদের এই পদক্ষেপটি একটি তিক্ত কৌতুকের মতো। কারণ এই পদক্ষেপটি এমন পরিস্থিতিতে নেওয়া হলো যখন বর্বর ইহুদিবাদীরা বহির্বিশ্বের সাথে গাজার যোগাযোগের সকল পথ, উপায় এবং সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। তাহলে গাজার জনগণ কীভাবে ইহুদিবাদীদের ওই সতর্কতা কিংবা সময়সীমা সম্পর্কে জানতে পারবে? এই সম্পর্কে আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে লিখেছে, ইহুদিবাদী সিরাইল এই বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে যে, ইসরায়েল ভীষণভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে যাতে গাজা উপত্যকায় হামলার সময় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি না হয়। প্রকৃতপক্ষে ইসরাইলিরা যদি সত্যিই গাজা উপত্যকার বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করতো, তাহলে এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ শহীদ হতো না। অথচ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে ইসরাইল গাজায় আগের চেয়েও বেশি হামলা চালিয়ে হামাসকে নির্মূল করার চেষ্টা করবে। সুতরাং ২ দিনের সময়সীমা ঘোষণা করে ইসরাইল বিশ্বের জনমতকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে বিশেষজ্ঞমহল মনে করছেন।#
পার্সটুডে/এনএম/৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।