হক ও বাতিলের যুদ্ধে প্রত্যেককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কে কোন্ পক্ষে দাঁড়াবে: রায়িসি
(last modified Sat, 11 Nov 2023 12:53:19 GMT )
নভেম্বর ১১, ২০২৩ ১৮:৫৩ Asia/Dhaka
  • প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি
    প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি বলেছেন: আজ আল-আকসা মসজিদ প্রতিরক্ষার একটি ঐতিহাসিক দিন।

সেইসাথে তিনি বলেন: গাজা যুদ্ধ হলো হক ও বাতিলের মধ্যকার যুদ্ধ। প্রত্যেককে  আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে কে কোন্ পক্ষে দাঁড়াবে। প্রেসিডেন্ট রায়িসি গাজা যুদ্ধ বন্ধে প্রস্তাব দিতে গিয়ে আরও বলেন: আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে প্রবেশ করেছে এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলের পেছনে দাঁড়িয়েছে। ইহুদিবাদী ইসরাইলকে আত্মরক্ষার অজুহাতে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপরাধ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করছে। 

রিয়াদে গাজা বিষয়ক ওআইসি'র জরুরি এক বৈঠকে মুসলিম দেশগুলোর নেতৃবৃন্দ গাজায় ইহুদিবাদীদের হামলা অবিলম্বে বন্ধের ওপর জোর দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট রায়িসি ইহুদিবাদী ইসরাইলের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

সৌদি কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট রায়িসিকে অভ্যর্থনা

বার্তা সংস্থা ইরান-প্রেস জানিয়েছে, আজ (শনিবার) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে গাজা ও ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মুসলিম দেশগুলোর প্রধানদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। গত মার্চে দু'দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপনের পর প্রেসিডেন্ট রায়িসি প্রথমবারের মতো সৌদি সফরে গেলেন। সৌদি কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনী ঐতিহ্যবাহী সাদা রুমাল (কেফিয়া) পরিহিত ইব্রাহিম রায়িসি'কে অভ্যর্থনা জানান।

ফিলিস্তিনীদের সমস্যা সমাধানে মুসলিম বিশ্বকে ইরানি প্রেসিডেন্ট জরুরি ভিত্তিতে ১০টি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দেন। প্রথম পদক্ষেপ হলো: গাজার জনগণের ওপর অবিলম্বে  গণহত্যা বন্ধ করা এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচার হামলাসহ সেখানকার হাসপাতাল, স্কুল, ক্যাম্প এবং ত্রাণ কেন্দ্রে হামলা বন্ধ করার ব্যবস্থা করা।

দ্বিতীয়ত, গাজার ওপর থেকে অবরোধ সম্পূর্ণ তুলে নেওয়া। মিশরীয় ভাইদের সহযোগিতায় রাফাহ ক্রসিং অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে পুনরায় চালু করে গাজায় খাদ্য, ওষুধসহ ত্রাণ সরবরাহের ব্যবস্থা করা। মানবিক সাহায্য পাঠানোর বিষয়ে মুসলিম দেশগুলোর সম্মানিত নেতৃবৃন্দকে এই বৈঠকেই সম্মত হতে হবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্বাহী কমিটি গঠন করতে হবে।

তৃতীয়ত গাজা থেকে ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনাদেরকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করার ব্যবস্থা নেওয়া। চতুর্থত, মুসলিম দেশগুলোকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সকল সম্পর্ক ছিন্ন করা।

পঞ্চমত, মুসলিম দেশগুলোকে আগ্রাসী ও দখলদার ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে বলেও জনাব রায়িসি প্রস্তাব দেন।

ষষ্ঠত, সাম্প্রতিক যুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সাথে জড়িত কর্তৃপক্ষকে অগ্রাধিকার দিয়ে ইহুদিবাদী এবং আমেরিকার অপরাধী নেতাদের বিচার ও শাস্তির জন্য একটি আন্তর্জাতিক আদালত প্রতিষ্ঠা করা। সপ্তম, বৈঠকে উপস্থিত মুসলিম দেশগুলোর অংশগ্রহণে গাজা পুনর্গঠনের জন্য অবিলম্বে একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা জরুরি।

অষ্টম, মুসলিম দেশগুলো থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য মানবিক সাহায্য বহনকারী কনভয় পাঠানো।

নবম, আহলি আল-আরব হাসপাতালে ইহুদিবাদীদের অপরাধ ও বোমা হামলার দিনটিকে 'গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দিবস' হিসেবে নামকরণ করা।

দশম প্রস্তাবে প্রেসিডেন্ট রায়িসি বলেন: এই অসম যুদ্ধে ইহুদিবাদী এবং আমেরিকার যুদ্ধাপরাধ অব্যাহত থাকলে মুসলিম দেশগুলোর উচিত ফিলিস্তিনি জনগণকে অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে দখলদারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উৎসাহিত করা।

বৈঠকের শুরুতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর যুদ্ধ অব্যাহত রাখার নিন্দা জানান। সেইসঙ্গে তিনি অবিলম্বে সামরিক অভিযান বন্ধ করাসহ গাজায় মানবিক করিডোর তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সৌদি যুবরাজ গাজার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বৈত আচরণেরও সমালোচনা করেন। বিন সালমান গাজা যুদ্ধ অব্যাহত রাখার ঘটনাকে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতা বলেও মন্তব্য করেন।#

পার্সটুডে/এনএম/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ