ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীতে ভয়াবহ সংকট:
সেনাদের মানসিক সমস্যা, আত্মহত্যা, অবসর নেওয়া, পালানোর প্রবণতা বৃদ্ধি
পার্সটুডে-গাজার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ এবং প্রতিরোধ শক্তির বিজয়ের ধারাবাহিকতায় ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীতে জনবল সংকট ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
ইসরাইলের চ্যানেল-১২ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালে আল-আকসা তুফান অভিযান শুরুর পর গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা চালানোর পর থেকে অন্তত ৯০০ সেনা অধিনায়ক এবং মেজর অবসর নেওয়ার আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
পার্সটুডে আরও জানিয়েছে ইহুদিবাদী এই চ্যানেলটি বলেছে: ইহুদিবাদী সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে অবসর নেওয়ার জন্য দরখাস্ত দেওয়ার পরিমাণ এর আগে শ'খানেকের মতো ছিল।
ইসরাইলি এই মিডিয়াটি ইহুদিবাদী সেনাবাহিনীর অভূতপূর্ব সংকটের অন্যান্য কারণও উল্লেখ করেছে। বলা হয়েছে বর্তমান সরকারের কিছু রাজনৈতিক কর্মকর্তার মধ্যে সেনাবাহিনীকে অসম্মান করার মানসিকতা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইহুদিবাদী সামরিক বিষয়ের বিশেষজ্ঞ নীর দোভারি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মকর্তাদের ধরে রাখা।
এর আগেও ইসরাইলি দৈনিক ইয়াদিউত অররোনুত জানিয়েছে ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তারা সামরিক সেবা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মাঝে এমনকি আত্মহত্যা করার মতো প্রবণতাও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় গণহত্যা শুরুর পর থেকে ৯ হাজার ইহুদিবাদী সেনা মানসিক চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের এক চতুর্থাংশ আর যুদ্ধে ফিরে আসে নি বলেও জানিয়েছে পত্রিকাটি।
এই পরিস্থিতিতে ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইহুদ ওলমার্ট হিজুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ বিস্তারের ব্যাপারে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। ওলমার্ট বলেছে: যদি হিজবুল্লাহ তার পূর্ণশক্তি ব্যবহার করে এবং অবশ্যই সেটা করবে, তাহলে ইসরাইল এমন বেদনাদায়ক আঘাত পাবে, যে আঘাত এখন পর্যন্ত পায় নি তেলআবিব।
গত কয়েক মাসে গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী গণহত্যার প্রতিক্রিয়ায়, লেবাননের হিজবুল্লাহ ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে তাদের সামরিক অবস্থানগুলোতে হামলা চালিয়েছে। ওই হামলার ঘটনায় ইহুদিবাদীদের মনে ভয় ও আতঙ্ক যেমন সৃষ্টি হয়েছে তেমনি ইসরাইলের হুমকি যে 'গর্জনই সার'-সেটাও ফুটে উঠেছে।
পশ্চিমা দেশগুলির পরিপূর্ণ মদদে ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলি সেনারা নতুন করে গণহত্যা শুরু করে। তাদের ওই পাশবিক আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং ৮৫ হাজারের বেশি আহত হয়েছে।
১৯১৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের পরিকল্পনায় ইসরাইল গঠনের নীল-নকশা তৈরি হয়। তারপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদেরকে ফিলিস্তিনি ভূমিতে অভিবাসনের মাধ্যমে ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে ইসরাইলের অস্তিত্ব ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকে বংশ নির্মূল করার টার্গেট নিয়ে ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর বেপরোয়া গণহত্যা চালিয়ে এসেছে। ফিলিস্তিনীদের সমগ্র ভূমি দখলের জন্য ইসরাইল অসংখ্যবার গণহত্যা চালিয়েছে।
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি দেশ অবৈধ ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিলুপ্তি চায়। সেইসঙ্গে তারা চায় যেসব দেশ থেকে এসে ইহুদিরা ইসরাইলে বসবাস করছে তারা যেন তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যায়।#
পার্সটুডে/এনএম/২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।