ইহুদিবাদী ইসরাইল কেন ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদদের টার্গেট করছে?
পার্স টুডে: গাজায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধ শুধু বেসামরিক নাগরিক হত্যা ও ঘরবাড়ি ধ্বংসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং তারা সুপরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ ও আশার প্রতীকগুলোকে মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর।
পার্স টুডে'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজা উপত্যকায় ৭০০ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের শাহাদাতবরণ এবং ক্রীড়া অবকাঠামো ধ্বংসের ঘটনা একটি কঠিন প্রশ্ন উত্থাপন করে। আর তা হলো- ইহুদিবাদীরা কেন ক্রীড়াবিদদের বিশেষভাবে লক্ষ্য করছে?
ক্রীড়া: জাতীয় পরিচয় ও প্রতিরোধের প্রতীক
ফিলিস্তিনসহ যেকোনো সমাজে ক্রীড়াবিদরা শুধু ক্রীড়াঙ্গনের নায়ক নন, তারা জাতীয় ঐক্য, প্রতিরোধ ও আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। ইহুদিবাদী ইসরাইল ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের মনোবল ভেঙে দিতে চায়। তারা জানে, এই ক্রীড়া নায়করা তরুণ প্রজন্মকে দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনুপ্রাণিত করে।
প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হত্যা: ফিলিস্তিনের কণ্ঠরোধের চেষ্টা
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদরা ফিলিস্তিনের মানবাধিকারের দূত। তারা বিশ্বমঞ্চে ইহুদিবাদীদের অপরাধ উন্মোচন করে। দখলদার ইসরাইল এই কণ্ঠস্বরগুলোকে নিশ্চিহ্ন করে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের বার্তা ও নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে চায়।
ফিলিস্তিনি ক্রীড়ার ভবিষ্যৎ ধ্বংস: জাতীয় পরিচয় মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র
ক্রীড়াবিদ হত্যা ও স্টেডিয়াম ধ্বংসের মাধ্যমে ইহুদিবাদীরা শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্রীড়া সম্ভাবনাকেও নিশানা করছে। তারা ফিলিস্তিনি যুবাদের ক্রীড়াসুবিধা থেকে বঞ্চিত করে জাতীয় ঐক্য ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ কেড়ে নিতে চায়।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা: অপরাধে সমর্থন
গাজায় শাহাদাতবরণকারীর সংখ্যা ৫২ হাজার ছাড়িয়ে গেলেও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। ক্রীড়াবিদ হত্যা ও ক্রীড়া অবকাঠামো ধ্বংস কি মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন নয়? ফিফা ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির মতো সংস্থাগুলো কেন এই অপরাধের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না?
প্রতিরোধই একমাত্র জবাব
ইহুদিবাদী ইসরাইল ক্রীড়াবিদ হত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের স্বপ্ন ছিনিয়ে নিতে চায়। কিন্তু ইতিহাস প্রমাণ করেছে, দখলদাররা যত হত্যা করবে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ ততই শক্তিশালী হবে। 'জার্নালিস্টস অফ হোপ'-এর মতো উদ্যোগ প্রমাণ করে, ধ্বংসস্তূপের মধ্যেও ফিলিস্তিনের আত্মা অমর, আর তাদের ন্যায়ের সংগ্রামের গল্প বিশ্ব শুনবেই।
ফিলিস্তিনি স্পোর্টস মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনতাসির আদকাইদাক জানান, ফিলিস্তিনি ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সহযোগিতায় গাজার যুবাদের সমর্থনে "জার্নালিস্টস অফ হোপ" নামে একটি উদ্যোগ চালু করা হয়েছে। এর লক্ষ্য হলো- অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানসিক সহায়তা প্রদান, গাজাবাসীর কণ্ঠস্বরকে শক্তিশালী করা এবং ক্রীড়ার মাধ্যমে মানবিক সংহতি গড়ে তোলা।#
পার্সটুডে/এমএআর/১৮