কেন হাজার হাজার ইসরায়েলি গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানিয়েছে?
-
• কেন হাজার হাজার ইসরায়েলি গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানিয়েছে?
পার্সটুডে- গাজা যুদ্ধ বন্ধএবং ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির প্রচেষ্টার দাবিতে হাজার হাজার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
৬ সেপ্টেম্বর, শনিবার হাজার হাজার ইসরায়েলি তেল আবিবের রাস্তায় নেমে এস ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে গাজায় ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্ত করতে কাজ করার আহ্বান জানায়। বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুর গাজা শহর পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনারও প্রতিবাদ করে।
ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীরা মনে করে এই ধরনের অভিযান গাজায় হামাসের হাতে আটক অবশিষ্ট বন্দীদের জীবনকে বিপন্ন করতে পারে। ইসরায়েলের কিছু সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছে যে অধিকৃত জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাড়ির সামনে শত শত ইসরায়েলি বিক্ষোভ করছে।
শুক্রবার রাতে, ইসরায়েলি বাসিন্দারা নেতানিয়াহু এবং তার যুদ্ধবাজ নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এক পর্যায়ে সহিংস হয়ে ওঠে এবং পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর আক্রমণ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে যে বিক্ষোভ চলাকালীন গাজায় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি পুলিশ বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েল সরকারের গাজা পুরোপুরি দখলের সিদ্ধান্তের পর, অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে বসবাসকারী ইহুদিবাদীদের মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং নেতানিয়াহুর নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ শুরু করেছে। অনেক ইসরায়েলি যুদ্ধের অবসান চায় এবং তারা প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধ নীতি মানে না।
গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত রাখার এবং এর পুরোপুরি দখলের বিরুদ্ধে অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে ব্যাপক বিক্ষোভ কেবল ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থায় গভীর ফাটলের লক্ষণই নয়, বরং অধিকৃত অঞ্চল এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এই শাসনব্যবস্থার রাজনৈতিক ও নৈতিক বৈধতার সংকটেরও প্রতিফলন।
ইসরায়েলি বন্দীদের পরিবাররা বিশ্বাস করে যে নেতানিয়াহু সরকার রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের মুক্তির জন্য কোনো কাজ করছে না। তারা যুদ্ধবিরতির জন্য অবিলম্বে আলোচনার আহ্বান জানান।
তেল আবিবে মহাসড়ক অবরোধ, টায়ার পোড়ানো এবং সমাবেশ জনগণের ক্ষোভ এবং সরকারের প্রতি আস্থা হ্রাসের প্রমাণ। ইসরায়েলি শাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জনমতও সংগঠিত হয়েছে। যুদ্ধের শুরু থেকেই, লক্ষ লক্ষ মানুষ ইসরায়েলি শাসনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ করেছে। এই বিক্ষোভ কেবল আরব দেশগুলিতেই নয়, ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে।
নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক চাপের সম্মুখীন এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনকারীদের দ্বারা তার সিদ্ধান্তগুলি সমালোচিত হচ্ছে। ব্যাপক বেসামরিক হতাহত, গাজার বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি এবং যুদ্ধের হৃদয়বিদারক চিত্র বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের বিবেককে জাগ্রত করেছে এবং ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভ জোরদার হচ্ছে।
তেল আবিবের পরিস্থিতিও নেতানিয়াহুর অনুকূলে নয় এবং বিরোধী দলগুলো তাকে গাজার যুদ্ধ সম্পর্কে মিথ্যা বলার এবং এই যুদ্ধ সঠিকভাবে পরিচালনা করতে অক্ষমতার অভিযোগ করেছে। মন্ত্রিসভার কিছু সদস্য যুদ্ধ অব্যাহত রাখা এবং গাজার সম্পূর্ণ দখল এবং হামাসের ধ্বংসকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে, যদিও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কমান্ডাররা বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন যে সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী এবং হামাসের মুখোমুখি হতে সক্ষম নয়।
চরম ডানপন্থী এবং যুদ্ধবাজ ইসরায়েলিদের মধ্যে তীব্র পার্থক্য মন্ত্রিসভাকে ভেতর থেকে ভেঙে ফেলতে পারে এবং ইসরায়েলকে দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে নিমজ্জিত করতে পারে। তেল আবিব এবং সমগ্র অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে এই বিক্ষোভগুলি কেবল গাজা যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া নয় বরং অধিকৃত অঞ্চলগুলিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোর গভীর সংকটেরও প্রমাণ। এই ধারা অব্যাহত রাখলে অভ্যন্তরীণ সংকট আরও তীব্র হবে এবং তেল আবিবের রাজনৈতিক পতন ত্বরান্বিত হবে।#
পার্সটুডে/এমআরএইচ/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।