ইসরায়েলে বিদেশি বিনিয়োগে ধস: বাজারের অর্ধেক খালি হয়ে গেছে
-
ইসরায়েলে বিদেশি বিনিয়োগে ধস: বাজারের অর্ধেক খালি হয়ে গেছে
পার্সটুডে-দখলদার ইসরায়েলের গবেষণা ও আইন সংস্থাগুলো স্বীকার করেছে, দেশটির ভেঞ্চার ক্যাপিটাল শিল্প এক বিরল ও অবিশ্বাস্য সংকটের মুখোমুখি।
ফার্স নিউজের বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ২০২৫ সালে ইসরায়েলের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল খাত তার ইতিহাসের অন্যতম মারাত্মক মন্দার সম্মুখীন হয়েছে। বছরের প্রথমার্ধে মাত্র ২৬ কোটি ডলার বিনিয়োগ এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম।
ইসরায়েলের IVC, Gornitzky এবং KPMG সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে এবং হিব্রু দৈনিক গ্লোবস-এ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বছরের প্রথমার্ধে ভেঞ্চার ফান্ডের তহবিল সংগ্রহ ৪০ শতাংশ কমে ২৬ কোটি ডলারে নেমেছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তাহলে বছরের শেষে মোট বিনিয়োগ ৩৫ কোটি ডলারের বেশি হবে না, যেখানে ২০২৪ সালে তা ছিল ১২০ কোটি ডলার এবং ২০২১-২০২২ সালে ছিল ৬০০ কোটি ডলার।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংকট মূলত বৈশ্বিক বিনিয়োগ হ্রাসের কারণে নয় বরং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত সমস্যা, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত অস্থিতিশীলতা এবং বাজারে অসন্তোষের ফল। পিটানগো, ভিওলা, ভার্টেক্স এবং স্টেজ ওয়ান-এর মতো সুপরিচিত ফান্ডগুলোর নতুন বিনিয়োগে অনুপস্থিতি গভীর অনিশ্চয়তার প্রতীক।
বিশ্বখ্যাত ফান্ড অ্যান্ড্রিসেন হরোভিটজ এবং ইন্ডেক্স পুরোপুরি ইসরায়েলি বাজার থেকে সরে গেছে। সিকোয়া ও লাইটস্পিড মাত্র ৩–৪টি চুক্তি করেছে, আর এক্সেল কেবল ৩টি চুক্তিতে অংশ নিয়েছে। এটি প্রমাণ করছে যে, ইসরায়েলি প্রযুক্তি বাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও আগ্রহ কমেছে।
KPMG ইসরাইল নামক অ্যাকাউন্টিং ফার্মের প্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান দিনা বাসকা-রাজ বলেছেন, “বাজার সংকুচিত হচ্ছে এবং বিনিয়োগের অভাব ফান্ডগুলোকে তাদের বিনিয়োগ সীমিত করতে বাধ্য করেছে। ফলে বাজারে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। যদিও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সাইবার সিকিউরিটি খাত এখনও উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে সক্ষম, পরিচ্ছন্ন শক্তি ও জীববিজ্ঞান খাত প্রায় পুরোপুরি উপেক্ষিত।”
নতুন প্রতিষ্ঠিত স্টার্টআপগুলো—বিশেষ করে জেনারেটিভ এআই-এ নিয়ে তৎপর স্টার্টআপগুলো এখনো বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারছে। তবে দুই থেকে তিন বছর বয়সী কোম্পানিগুলো তহবিল সংগ্রহে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
একই সঙ্গে বিমা ও পেনশন সংস্থাগুলোর অধীনে প্রতিষ্ঠানিক ফান্ডও তাদের কার্যক্রম হ্রাস করেছে। প্রথমার্ধে এই প্রতিষ্ঠানগুলো মোট ৮৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যার মাত্র ১৮ মিলিয়ন ডলার নতুন কোম্পানিতে গেছে।
হিব্রু ভাষার গ্লোবস পত্রিকার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দখলদার ইসরায়েলের বিনিয়োগ ব্যবস্থা তার গতিশীলতা হারিয়েছে। বিনিয়োগের মন্দা, রাজনৈতিক ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং বাজারে আস্থা কমার কারণে অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। এই সংকট উত্তরণে অনেক বছর লাগতে পারে।#
পার্সটুডে/এসএ/১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।