গাজায় মানবিক বিপর্যয়; দুই বছরের অবরোধ ও দুর্ভিক্ষ
-
দুই বছরের যুদ্ধ এবং ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের পরও গাজা অবরোধ অব্যাহত
পার্সটুডে-গাজা যুদ্ধের দুই বছর পর, এ অঞ্চলে মানবিক পরিস্থিতি এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুসারে, ইহুদিবাদী ইসরাইল মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিয়ে গাজায় দুর্ভিক্ষ, বাস্তুচ্যুতি এবং মৃত্যুর ঢেউ এনে দিয়েছে। ওই অবরোধ ও বাধার ফলে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ সংকটজনক পরিস্থিতিতে পড়েছে।
ইরানি সম্প্রচার সংস্থার বরাত দিয়ে পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধের দ্বিতীয় বার্ষিকী ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে, এই উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি আগের যে-কোনো সময়ের চেয়েও ভয়াবহ বলে জানা গেছে। প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরাইলি বর্বরোচিত হামলায় ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছে এবং প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। অক্সফামসহ মানবিক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে, গাজায় মানবিক সহায়তা সরবরাহে ইসরাইলের পক্ষ থেকে ব্যাপক বাধার সম্মুখীন হয়েছে। প্রায় সম্পূর্ণ অবরোধ দিয়ে এবং একটানা সহিংসতা চালিয়ে গাজার বাসিন্দাদের জীবনকে নরকে পরিণত করেছে।
গাজার পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ বর্তমানে ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং মৃত্যুর মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি। সমন্বিত খাদ্য নিরাপত্তা ২০২৫ এর প্রতিবেদনে গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত করা হয়েছে এবং সতর্ক করা হয়েছে যে আগামী সপ্তাহগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। এছাড়া, দশ লাখেরও বেশি মানুষ অর্থাৎ গাজার জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশ মানুষ জরুরি পর্যায়ের ক্ষুধা-তৃষ্ণার মুখোমুখি হচ্ছে।
ত্রাণ সরবরাহে পদ্ধতিগতভাবে বাধা সৃষ্টি করে, ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা জুড়ে খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক পরিষেবার দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অসংখ্য আইনি বিশ্লেষক জোর দিয়ে বলেছে, এই অবরোধ গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার মূল পদক্ষেপের একটি অংশ। মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলেছেন যে কেবল একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতিই গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয়ের অবসান ঘটাতে পারে এবং মানবিক সংস্থাগুলোকে তাদের জীবন রক্ষাকারী কাজ সম্পাদনের সুযোগ করে দিতে পারে।#
পার্সটুডে/এনএম/৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।