আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা চলবে: দক্ষিণ আফ্রিকা
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i153036-আন্তর্জাতিক_বিচার_আদালতে_ইসরায়েলের_বিরুদ্ধে_মামলা_চলবে_দক্ষিণ_আফ্রিকা
পার্সটুডে- দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলেও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তার দেশের দায়ের করা মামলার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। গতকাল মঙ্গলবার কেপটাউনের পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
(last modified 2025-10-16T02:18:19+00:00 )
অক্টোবর ১৫, ২০২৫ ১৭:৩৭ Asia/Dhaka
  • রামাফোসা
    রামাফোসা

পার্সটুডে- দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি হলেও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তার দেশের দায়ের করা মামলার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। গতকাল মঙ্গলবার কেপটাউনের পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

গাজায় জাতিগত নিধনের অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলাটি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও দখলদার ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। তবে তা সত্ত্বেও দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২৩ সালে শুরু করা মামলাটি চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় সংকল্পে অটল রয়েছে।

পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে রামাফোসা বলেন, ‘যে শান্তিচুক্তি হয়েছে, সেটিকে আমরা স্বাগত জানাই। এটা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে চলমান মামলার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।

দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মামলাটি দায়ের করে। দেশটির অভিযোগ, গাজায় জাতিগত নিধন চালাচ্ছে ইসরায়েল।

২০২৪ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার ৫০০ পৃষ্ঠার একটি বিস্তারিত আবেদন দাখিল করে। ইসরায়েলের পাল্টা যুক্তি জমা দেওয়ার শেষ সময় ২০২৬ সালের ১২ জানুয়ারি। ২০২৭ সালে মৌখিক শুনানি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২৭ সালের শেষ দিকে বা ২০২৮ সালের শুরুতে চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করা হতে পারে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত তিনটি অস্থায়ী নির্দেশ জারি করেছে। এর আওতায় ইসরায়েলকে জাতিগত নিধন বন্ধ ও গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর সুযোগ দিতে বলা হয়েছে। তবে ইসরায়েল অনেকাংশেই এই নির্দেশগুলো মানতে ব্যর্থ হয়েছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

মামলা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে রামাফোসা যে ঘোষণা দিয়েছেন তা নিয়ে জাতিসংঘের স্পেশাল র‍্যাপোর্টিয়ার ফ্রান্সেসকা আলবানিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা, ক্ষতিপূরণ এবং পুনরাবৃত্তি রোধের নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো শান্তিই টেকসই নয়।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানশেজ ইসরায়েলের কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। তিনিও একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। স্প্যানিশ রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতির মানে ইসরায়েলের দায়মুক্তি হতে পারে না। এখানে দায়মুক্তির সুযোগ নেই।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ কিছু মানবাধিকার সংস্থা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় জাতিগত নিধন চালানোর অভিযোগ করেছে। গত মাসে জাতিসংঘ সমর্থিত একটি তদন্ত কমিশন বলেছে, গাজায় ইসরায়েল জাতিগত নিধন চালিয়েছে।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি অপরাধের বিচার দাবিতে দক্ষিণ আফ্রিকার আইনি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে।
জাতিসংঘের জেনেভা কার্যালয়ে ইরানের স্থায়ী মিশন অনেক আগেই ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সমর্থনসূচক বিবৃতি জারি করে বলেছে, “ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান দক্ষিণ আফ্রিকার সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানায় ও সমর্থন করে, যার মাধ্যমে তারা ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্ণবৈষম্যমূলক (আপারথেইড) শাসনের অপরাধের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা প্রতিরোধ কনভেনশন’-এর আওতায় আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে মামলা দায়ের করেছে। আন্তর্জাতিক সমাজেরও উচিত দক্ষিণ আফ্রিকার এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা, যাতে অপরাধীদের জবাবদিহি নিশ্চিত হয়।”

সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে আন্তর্জাতিক আইন ও “আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত”-এর রায় অমান্য করার জন্য ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন। তিনি গাজা ইসরায়েলি গণহত্যা রোধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছিলেন। #

পার্সটুডে/এসএ/১৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।