ইউরোপ-মেডিটেরানিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর:
'ইসরায়েল এখনো ক্ষুধাকে গণহত্যার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে'
পার্সটুডে: ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার অঞ্চলজুড়ে মানবাধিকার রক্ষা ও প্রচারের কাজে নিয়োজিত 'ইউরোপ-মেডিটেরানিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর' এক বিবৃতিতে সতর্ক করেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ ও অনাহারের ঝুঁকি এখনো দূর হয়নি। মানবিক সহায়তা ইচ্ছাকৃতভাবে কমিয়ে দেওয়ার ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে যে, ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী এখনো ক্ষুধাকে গণহত্যার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
পার্স টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংস্থাটি তার বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে, গাজায় যে অল্প পরিমাণ পণ্য ও সাহায্য ইসরায়েল প্রবেশ করতে দিচ্ছে, তা জনগণের প্রকৃত চাহিদার সামান্য অংশও পূরণ করছে না।
মানবাধিকার সংস্থাটি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, তেলআবিব নানা অজুহাতে ইসরায়েলি নিহতদের মরদেহ ফেরত না দেওয়ার বিষয়টি সামনে এনে মানবিক সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে এবং রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ রাখছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরবর্তী দুই দিনে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মাত্র ১৭৩টি মানবিক সহায়তা বহনকারী ট্রাককে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। অথচ সোমবার (১৩ অক্টোবর) কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারেনি এবং মঙ্গলবারও ধর্মীয় ছুটির অজুহাতে সহায়তা বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইউরোপ–ভূমধ্যসাগর মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা জোর দিয়ে বলেছে, সহায়তার পরিমাণের ওপর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ ও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে তাদের অঙ্গীকার অমান্য করা চলমান গণহত্যারই বহিঃপ্রকাশ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মানবিক সহায়তা প্রদান ইসরায়েলি সরকারের কোনো দয়া বা সুবিধা নয়, বরং এটি একটি অবিচ্ছেদ্য আইনি বাধ্যবাধকতা। মানবিক সাহায্য অবশ্যই নিরপেক্ষতা, মানবিক প্রয়োজন ও বৈষম্যহীনতার নীতির ভিত্তিতে, কোনো বিলম্ব বা নির্বাচনের সুযোগ ছাড়াই প্রদান করতে হবে।
সংস্থাটি পূর্ণাঙ্গভাবে সামরিক অভিযান বন্ধ করা ও গাজার অবরোধ তাৎক্ষণিক ও সর্বাত্মকভাবে তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করেছে যেন তারা এমন নিশ্চয়তা দেয় যাতে ভবিষ্যতে কোনো অজুহাতে গাজায় সাহায্য প্রবেশে বাধা সৃষ্টি না করা যায়।
বিবৃতির শেষে সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, দখলদার শাসনের এই আচরণের প্রতি কোনো উদাসীনতা বা সহনশীলতা প্রদর্শন মানে হলো সেই একই পরিস্থিতিকে মেনে নেওয়া, যা গণহত্যার মতো অপরাধ ঘটার পথ তৈরি করে।#
পার্সটুডে/এমএআর/১৬