ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের তথ্য জানাল ব্রিটিশ পত্রিকা  
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i153524-ইসরায়েলি_কারাগারে_ফিলিস্তিনি_বন্দিদের_ওপর_ভয়াবহ_নির্যাতনের_তথ্য_জানাল_ব্রিটিশ_পত্রিকা
পার্সটুডে- ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে- ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতন, যৌন সহিংসতা ও প্রতিশোধমূলক আচরণের ফলে বহু ফিলিস্তিনি বন্দি শহীদ হয়েছেন।
(last modified 2025-11-28T10:09:50+00:00 )
অক্টোবর ২৯, ২০২৫ ১৯:৩১ Asia/Dhaka
  • ফিলিস্তিনি বন্দি
    ফিলিস্তিনি বন্দি

পার্সটুডে- ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে- ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতন, যৌন সহিংসতা ও প্রতিশোধমূলক আচরণের ফলে বহু ফিলিস্তিনি বন্দি শহীদ হয়েছেন।

প্যালেস্টাইন ইনফরমেশন সেন্টারের উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক এক মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, “সত্যিকারের কোনো আনন্দ ছিল না; শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে। সেখানে কোনো মানবতা ছিল না, কোনো দয়া বা সহানুভূতি ছিল না।

তিনি ভাঙা পাঁজর ও মুখে আঘাতের চিহ্ন নিয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পান। সাম্প্রতিক চুক্তির আওতায় মুক্তিপ্রাপ্ত প্রায় দুই হাজার বন্দির একজন হলেন এই ফিলিস্তিনি। বন্দিদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থাই ইসরায়েলি কারাগারগুলোর ভেতরে চলমান নির্যাতনের গভীরতা আবারও স্পষ্ট করেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৮০ জন ফিলিস্তিনি বন্দি ইসরায়েলি কারাগারে শহীদ হয়েছেন। ফিলিস্তিনি বন্দি ও মুক্তিপ্রাপ্তদের আইনি বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিল শুহাদা বলেন, “বন্দিদের অবস্থা সবসময়ই ভয়াবহ ছিল, কিন্তু ৭ অক্টোবরের পর পরিস্থিতি আমূল বদলে গেছে।

বন্দি অধিকার সংরক্ষণ সংগঠনের একজন কর্মকর্তা আমানি সারাহনে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেছেন, “একজন বন্দিকে ফুটন্ত পানি ঢেলে নির্যাতন করা হয়েছে এবং আরেকজন এক চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন প্রহরী কুকুরের আক্রমণে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারাও নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। সেদিতিমান সামরিক কারাগারের একজন কর্মকর্তা আমানি সারাহনে বলেছেন, “কিছু সৈন্য গাজাবাসীদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ হিসেবে দেখত। আমার এক সহকর্মী সবসময় বন্দিদের খুঁজে বের করত শুধু মারধর করার জন্য। সে স্পষ্ট বলত এটাই আমার লক্ষ্য।

সারাহনে আরও বলেন, নেতানিয়াহুর সরকারে ইতমার বেন-গাভির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বন্দিদের অবস্থা নজিরবিহীনভাবে খারাপ হয়েছে—খাবারের মান কমানো হয়েছে, গোসলের সময় সীমিত করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যবিধি সামগ্রী সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বারশ জানান, শহীদ বন্দিদের অনেকের দেহে ভয়াবহ নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের দেহে ছিল গভীর ক্ষত, নীলচে কালশিটে দাগ। তাদেরকে হাত-পা বাঁধা এবং চোখ ঢেকে রাখা অবস্থায় ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, “তাদের দেহগুলো ছিল আঘাত ও ভাঙনের চিহ্নে ভরা, যা ধারাবাহিক নির্যাতন ও মারধরের প্রমাণ বহন করে কিছু বন্দির মতে, ইসরায়েলি কারাগারে থাকা মানে নরকে থাকা; জীবন্ত কবরস্থ হওয়ার শামিল।"#

পার্সটুডে/এসএ/২৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।