সিডনিতে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক প্রকল্পকে একজন মুসলিমের সাহসিকতা ব্যর্থ করে দিয়েছে
-
• সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের উপর হামলাকারীকে নিরস্ত্র করল এক সাহসি মুসলিম ব্যক্তি
পার্সটুডে- সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে হনুক্কা উদযাপনকারী ইহুদিদের উপর হামলায় ফলে বেশ কয়েকজন হতাহত হওয়ার ঘটনায় ব্যাপক রাজনৈতিক এবং মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া হয়েছে। মেহের নিউজের বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে এমন একটি আক্রমণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছিল যার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং আইনি জবাবদিহিতার প্রয়োজন ছিল, কিন্তু শীঘ্রই এটিকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানোর কিছু প্রচেষ্টা শুরু হয়।
ঘটনাটিকে রাজনীতিকরণের প্রচেষ্টা চালিয়েছে ইসরায়েল
এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইহুদিবাদী ইসরায়েল, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, ঘটনাটিকে একটি রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল এবং এটিকে পশ্চিমা দেশগুলিতে ইহুদিদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং বিশ্বব্যাপী "ইহুদি-বিদ্বেষ" এর উদাহরণ হিসাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিল। এই কৌশল পশ্চিমা সরকারগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, বিশেষ করে যাদের ফিলিস্তিন এবং গাজা যুদ্ধের বিষয়ে ভিন্ন অবস্থান ছিল। ইসরায়েল গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে জনগণের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে ওই হামলার ঘটনার সাথে সংযুক্ত করার চেষ্টা করেছিল এবং পশ্চিমা সরকারগুলোর ইসরায়েল বিরোধী নীতি পরিবর্তন করতে বাধ্য করার জন্য এ ঘটনাকে পশ্চিমা দেশগুলিতে ইহুদিদের বিরুদ্ধে সরাসরি হুমকি হিসাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিল।
তবে এক সাহসি মুসলিম বীর ইসরায়েলের এ অপকৌশল ব্যর্থ করে দেয়
তবে, এই ঘটনার একটি ভিডিও চিত্র ইসরায়েলের সমস্ত রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। দেখা গেল যে একজন মুসলিম ব্যক্তি সাহসিকতার সাথে আক্রমণকারীদের একজনকে নিরস্ত্র করতে এবং অনেক জীবন বাঁচাতে সক্ষম হন। অস্ট্রেলিয়ান জনগণের দ্বারা প্রশংসিত এই মানবিক এবং সাহসী কাজটি সরাসরি ইসরায়েলি অপপ্রচারকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে যারা ঘটনাটিকে "ইহুদি-বিরোধী সহিংসতা" হিসাবে উপস্থাপন করতে চেয়েছিল।
এতে প্রমাণ হয়েছে যে প্রতিটি ঘটনাকে কেবল ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বলে দাবি করা যায় না। এই মুসলিম ব্যক্তির সাহস এবং ত্যাগ, যিনি বেশ কয়েকজনের জীবন রক্ষা করেছেন, ইসরায়েলকে তার অসৎ রাজনৈতিক লক্ষ্যগুলো এগিয়ে নেওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে।
অস্ট্রেলিয়ান জনসাধারণ এবং মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া
অস্ট্রেলিয়ান জনসাধারণ ঘটনার মানবিক দিকটির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, ব্যক্তিগত সাহসিকতার উপর জোর দিয়ে বলেছে সহিংসতার ঘটনাগুলিকে কোনও নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা ধর্মের সাথে যুক্ত করা উচিত নয়।
মিডিয়া এবং অনলাইন উভয় ক্ষেত্রেই মুসলিম ব্যক্তির কর্মকাণ্ডের জন্য জনসাধারণের প্রশংসা প্রমাণ করে যে সমাজ তার নৈতিক বিচারকে রাজনীতি থেকে আলাদা করতে এবং মানবিক মূল্যবোধের উপর মনোনিবেশ করতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রতিক্রিয়াগুলি ইসরায়েলি অপপ্রচার এবং তাদের রক্ত শোষণের নীতিকে ব্যর্থ করে দিয়েছে।
ইসরায়েলি অপপ্রচার রোধে সোশ্যাল মিডিয়ার ভূমিকা
ইসরায়েলের অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সীমিত করার ক্ষেত্রেও সোশ্যাল মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আক্রমণকারীকে নিরস্ত্রীকরন প্রচেষ্টার মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও প্রকাশিত হওয়ায় তা এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপপ্রচার বা মিথ্যা তথ্য দেয়ার সুযোগ নষ্ট করে দিয়েছে। এই ডিজিটাল মাধ্যম ইসরায়েলের রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য ব্যর্থ করে দিয়েছে এবং এটা প্রমাণ করেছে যে এই যুগে এসে একতরফা ঘটনার বর্ণনা দেয়া খুব কঠিন।
পশ্চিমে "ইহুদি-বিদ্বেষ" দাবির কার্যকারিতা হ্রাস
ইউরোপীয় প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা গেছে যে বিশ্বব্যাপী ইহুদি-বিদ্বেষের দাবি এবং গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদেরকে সিডনির ঘটনার সাথে যুক্ত করার চেষ্টা কোনো প্রভাব ফেলেনি। ইউরোপীয় জনমতের একটি বিরাট অংশ ধর্ম হিসেবে ইহুদি ধর্ম এবং রাজনৈতিক প্রকল্প হিসেবে ইহুদিবাদীদের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম হয়েছে, ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনকে ইহুদি-বিদ্বেষের সাথে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে কম গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। গাজায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনা বিশেষ করে শিশু ও নারীদের দুঃখকষ্টের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও মানবিক মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই অবস্থা জনমত এবং মিডিয়াকে একতরফাভাবে ব্যবহার করার এবং সহিংস ঘটনাগুলিকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানোর যেকোনো প্রচেষ্টার ব্যাপারে সচেতনতা প্রমাণিত হয়েছে।#
পার্সটুডে/এমআরএইচ/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন