খাশোগি হত্যার এক বছর: সৌদি অপরাধযজ্ঞকে আন্তর্জাতিকীকরণে এরদোগানের ভূমিকা
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i74171-খাশোগি_হত্যার_এক_বছর_সৌদি_অপরাধযজ্ঞকে_আন্তর্জাতিকীকরণে_এরদোগানের_ভূমিকা
সৌদি সরকারের হাতে খ্যাতনামা সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার প্রথম বার্ষিকী ছিল গতকাল।
(last modified 2025-11-11T14:44:42+00:00 )
অক্টোবর ০৩, ২০১৯ ১৪:৪৬ Asia/Dhaka
  • খাশোগি হত্যার এক বছর: সৌদি অপরাধযজ্ঞকে আন্তর্জাতিকীকরণে এরদোগানের ভূমিকা

সৌদি সরকারের হাতে খ্যাতনামা সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার প্রথম বার্ষিকী ছিল গতকাল।

তিনি সৌদি দৈনিক আল ওয়াতান পত্রিকার প্রধান সম্পাদক ও মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি সৌদি সরকারের কট্টর সমালোচক ছিলেন। গত বছর ২ অক্টোবর তিনি বিবাহের লক্ষ্যে কিছু অফিসিয়াল কাজ সম্পাদনের জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কন্সুলেটে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখান থেকে তিনি আর কখনোই ফিরে আসেননি।

তিনি সৌদি কন্স্যুলেটে যাবার কথা আগেই কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। তার আসার খবর পেয়ে ঠিক একই সময়ে সৌদি যুবরাজ সালমানের নির্দেশে ১৮ সদস্যের নিরাপত্তা কর্মী ও চিকিৎসক দল বিশেষ জেট বিমানে করে ইস্তাম্বুল পৌঁছান। সৌদি যুবরাজের ওই বিশেষ ঘাতক টিম সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে কন্স্যুলেটেই নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং মৃতদেহ টুকরা টুকরা করে বিশেষ কেমিকেল দিয়ে তা গলিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।

সৌদি সরকার বহুদিন ধরেই জামাল খাশোগিকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে আসছিল। এ কারণে কারাভোগ ও নির্যাতনের ভয়ে খাশোগি বহুদিন ধরে সৌদি আরবের বাইরে অবস্থান করছিলেন। ইস্তাম্বুলে সৌদি কন্স্যুলেটে খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা ও চাঞ্চল্য সৃষ্টির ১৮ দিন পর গত বছরের ২০ অক্টোবর সৌদি সরকার ওই কন্স্যুলেটেই সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

প্রায় এক বছর পর সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান জামাল খাশোগি'র নির্মম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। সম্প্রতি মার্কিন টিভি চ্যানেল পিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বিন সালমান বলেছেন, যেহেতু ঘটনাটি তার সময়কালে সংঘটিত হয়েছে তাই ওই হত্যাকাণ্ডের সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব তার। তবে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের দায় নিলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, যুবরাজ সালমান কৌশলে খুনের দায়দায়িত্ব অন্যের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন। দৈনিক রাই আল-ইয়াওমের সাংবাদিক আব্দুল বারি আতাওয়ান এক নিবন্ধে লিখেছেন, "খাশোগি হত্যায় দায় নেয়ার বিষয়ে সৌদি যুবরাজের বক্তব্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে একইসঙ্গে তিনি এ ঘটনার জন্য তার নির্দেশ দানের বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেছেন।"

তুরস্কের গায়ারসান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিভাগের সদস্য আব্বাস কারা আগাচলি আমাদের বহির্বিশ্ব কার্যক্রমকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছেন, "সৌদি সরকার তাদের অপরাধী কর্মকাণ্ডের পরিণতি থেকে পালানোর চেষ্টা করছে। সৌদি যুবরাজ খাশোগিকে হত্যায় দায় স্বীকার করা থেকে বোঝা যায়, ওয়াশিংটন ও রিয়াদ প্রকৃতপক্ষে এতবড় অপরাধযজ্ঞ থেকে সৌদি সরকারকে রক্ষার চেষ্টা করছে।"

রজব তাইয়্যেব এরদোগান

তবে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি সরকারের জড়িত থাকার বিষয়ে সারা বিশ্বকে অবহিত করার ক্ষেত্রে তুরস্ক সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান এ ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করেছেন। প্রথমত, হত্যার ঘটনা তুরস্কের মাটিতে ঘটেছে। দ্বিতীয়ত, ইখওয়ানুল মুসলিমিন বা মুসলিম ব্রাদারহুড সংগঠনের সঙ্গে সাংবাদিক জামাল খাশোগির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তুরস্কের সঙ্গেও তার ভাল সম্পর্ক ছিল। এ কারণে প্রেসিডেন্ট এরদোগান খাশোগি হত্যার ঘটনাকে আন্তর্জাতিক রূপ দিয়েছেন। সৌদি যুবরাজ সালমান ইখওয়ানুল মুসলেমিন সংগঠনের তীব্র বিরোধী। যুবরাজ সালমানকে দুর্বল করার জন্য তুর্কি প্রেসিডেন্ট খাশোগি হত্যার ঘটনাকে ভালভাবে ব্যবহার করেছেন। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩