ইরানি মরুভূমিতে ভিন্ন জগৎ: লুতের স্পন্দিত বুকে এক রহস্যময় যাত্রা
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i154062-ইরানি_মরুভূমিতে_ভিন্ন_জগৎ_লুতের_স্পন্দিত_বুকে_এক_রহস্যময়_যাত্রা
পার্সটুডে: মরুভূমি প্রকৃতির অন্যতম মনোমুগ্ধকর রূপ, যা ইরানের বেশ কিছু অংশেও দেখা যায়। ইরানের এমনই এক দর্শনীয় মরুভূমি, যা বিশ্বজুড়ে বহু পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, তার নাম 'লুত মরুভূমি'।
(last modified 2025-11-15T12:00:58+00:00 )
নভেম্বর ১৫, ২০২৫ ১৭:৩৭ Asia/Dhaka
  • দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের লুত মরুভূমি
    দক্ষিণ-পূর্ব ইরানের লুত মরুভূমি

পার্সটুডে: মরুভূমি প্রকৃতির অন্যতম মনোমুগ্ধকর রূপ, যা ইরানের বেশ কিছু অংশেও দেখা যায়। ইরানের এমনই এক দর্শনীয় মরুভূমি, যা বিশ্বজুড়ে বহু পর্যটকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, তার নাম 'লুত মরুভূমি'।

ফারসি 'লুত' শব্দের অর্থ পানি ও গাছপালাবিহীন খালি জায়গা। মরুভূমিটি ইরানের দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত। মরুর পূর্ব অংশ লবণাক্ত ফ্ল্যাট আবৃত নিম্ন মালভূমি হিসেবে দেখায়। আর মাঝখানে সমান্তরাল গিরিশিরা ও খাঁজকাটা সদৃশ্যগুলো সিরিজ আকারে দেখা যায়। 

এটি প্রকৃতির মহিমার এক জীবন্ত জাদুঘর; যেখানে বাতাস শিল্পীর মতো মাটিকে অনন্য ভাস্কর্যে রূপ দিয়েছে এবং সময় এখানে পৃথিবীর অন্য যেকোনো জায়গার তুলনায় ধীরগতিতে চলে।

পার্স টুডের এই সচিত্র প্রতিবেদনে আমরা পাঠকদের নিয়ে যাব এই রহস্যময় ভুবনের গভীরে। 

কালুত; লুত সমভূমিতে অবস্থিত কিংবদন্তি মাটির শহর

প্রথম স্টেশন: কালুত—মাটির পৌরাণিক নগরী

লুতের সমতলে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল কাদামাটির টিলা। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাদামাটির শহর বলা হয়, যা বাতাস ও পানির ঘষায় গড়ে উঠেছে।

ইয়েলান বালি; আগুনের রঙে রাঙা বালির ঢেউ

দ্বিতীয় স্টেশন: রিগ-ই ইয়ালান—আগুনের রঙে রাঙা বালির ঢেউ

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বালিয়াড়ি লুত মরুভূমির হৃদয়ে অবস্থিত। সোনালি বালুর এই সমুদ্র ইরানের অন্যতম বিস্ময়কর প্রাকৃতিক দৃশ্য।

লুত মরুভূমিতে শাহদদ হ্রদ

তৃতীয় স্টেশন: লুত মরুভূমিতে শাহদদ হ্রদ

শাহদাদ হ্রদ ইরানের বিখ্যাত হ্রদগুলোর একটি, যা কেরমান প্রদেশের শাহদদ অঞ্চলে অবস্থিত। এটি শাহদাদের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ, যেখানে প্রতিবছর বহু ভ্রমণকারী আসে।

নেবকা বা লুত মালভূমির ফুলদানি

চতুর্থ স্টেশন: নেবকা বা লুত মালভূমির ফুলদানি

মরুভূমির বুকে সবুজের দ্বীপশিখরের মতো এগুলো—যেখানে দৃঢ় প্রতিরোধী গাছপালা বালুকে আটকে রেখে জীবনের আশা বজায় রেখেছে।

লুত মরুভূমিতে রাতের আকাশ

পঞ্চম স্টেশন: রাত্রির আকাশ—সফরের চূড়ান্ত মুহূর্ত

লুত সফরের শ্রেষ্ঠ সময় হলো সূর্যাস্তের পর। নানাবিধ আলোক দূষণ থেকে দূরে, আকাশের পর্দা সরে যায় এবং পূর্ণ মহিমায় মিল্কিওয়ে বা আকাশগঙ্গা দৃশ্যমান হয়।

মরুভূমির শিয়াল

ইরানের দাশ্ত-এ কাবির অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণিজগত

দাশ্ত-এ কাবির অঞ্চলে রাত ও দিনের তাপমাত্রার প্রচণ্ড ব্যবধান জীবনধারণকে কঠিন করে তোলে। এখানে গোরকন, উট, মরুভূমির শিয়াল, ঈগল, বাজপাখি, স্থানীয় ভেড়া ও ছাগল, মরুভূমির সাপ, মাকড়সা ও আরও কিছু সরীসৃপ বেঁচে থাকতে পারে। আশপাশের পাহাড়ি এলাকায় ইরানি চিতা ও পাহাড়ি বকরির মতো বন্যপ্রাণীরও আবাস রয়েছে।

দাশ্ত-এ কাবিরে অধিকাংশ সফর কেরমান শহর থেকে শুরু হয়ে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের শাহদাদের দিকে চলে, যাকে লুতের প্রধান দ্বার বলা হয়। কালুত দেখতে সাধারণত শাহদাদ পথেই যাওয়া হয়, আর রিগ-ই ইয়ালান (বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু বালিয়াড়ি) পৌঁছাতে মরুভূমির আরও গভীরে যেতে হয়। ভ্রমণের সেরা সময় হলো শরতের শুরু (মেহর ও আবান / অক্টোবর–নভেম্বর) থেকে বসন্তের শুরু (ইসফান্দ ও ফারভারদিন / ফেব্রুয়ারি–এপ্রিল) পর্যন্ত। আপনার যাত্রা শুভ হোক!#

পার্সটুডে/এমএআর/১৫