ইরানের ইসলামী স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য কী?
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i155054-ইরানের_ইসলামী_স্থাপত্যের_বৈশিষ্ট্য_কী
পার্সটুডে: ইরানের ইসলামি স্থাপত্য এমন একটি শিল্পধারা, যেখানে ইরানি সংস্কৃতির গভীর শিকড় ও ইসলামের আধ্যাত্মিক ভাবধারা একে অন্যের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই স্থাপত্য শুধু ভবন নির্মাণের কৌশল নয়, বরং এটি একটি দর্শন, যেখানে সৌন্দর্য, বিশ্বাস ও চিন্তার সমন্বয় দেখা যায়।  
(last modified 2025-12-13T13:54:54+00:00 )
ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫ ১৯:৫১ Asia/Dhaka
  • শেখ লুতফুল্লাহ মসজিদের গম্বুজ
    শেখ লুতফুল্লাহ মসজিদের গম্বুজ

পার্সটুডে: ইরানের ইসলামি স্থাপত্য এমন একটি শিল্পধারা, যেখানে ইরানি সংস্কৃতির গভীর শিকড় ও ইসলামের আধ্যাত্মিক ভাবধারা একে অন্যের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই স্থাপত্য শুধু ভবন নির্মাণের কৌশল নয়, বরং এটি একটি দর্শন, যেখানে সৌন্দর্য, বিশ্বাস ও চিন্তার সমন্বয় দেখা যায়।  

পার্সটুডের প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের ইসলামী স্থাপত্য একটি মহিমান্বিত শৈল্পিক প্রকাশ, যা চৌদ্দ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ইরানি মৌলিকতাকে ইসলামের শিক্ষার আত্মার সাথে মিশিয়ে একটি অতুলনীয় শৈলী সৃষ্টি করেছে। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোকে কয়েকটি মূল ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ করা যায়:

১. অভ্যন্তরীণ স্থানের প্রতি মনোনিবেশ: গ্রিক স্থাপত্যের মতো বাইরের চেহারার উপর জোর না দিয়ে, ইরানি স্থপতিরা চিত্তাকর্ষক ও আধ্যাত্মিক অভ্যন্তরীণ স্থান সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দিয়েছেন। গম্বুজের উদ্ভাবন (যেমন শেখ লুৎফুল্লাহ মসজিদের গম্বুজ) আকাশের প্রতীক হিসেবে, ইওয়ান (উঁচু অর্ধ-খোলা স্থান) নির্মাণ এবং মুকারনা (ঝুলন্ত সজ্জা) তাদের অন্যতম বৃহৎ অর্জন।

২. সূক্ষ্ম জ্যামিতি ও স্বতন্ত্র সমানুপাতিক কাঠামো: জ্যামিতি এই স্থাপত্যে প্রধান ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত বর্গাকার, বৃত্তাকার, তারকাকৃতি নকশা এবং সোনালী অনুপাত কেবল সৌন্দর্যের জন্যই নয়, বরং আধ্যাত্মিক ধারণার ভিত্তিতে নকশা করা হয়েছে।

৩. বিস্তৃত ও প্রতীকী সজ্জা: ভবনগুলোকে সাত রঙ ও মোজাইক টাইলস, ইটের কাজ, প্লাস্টার খোদাই ও সূক্ষ্ম লিপিশিল্প (কুফি, সুলুস ও নাস্তালিক লিপি) দিয়ে কাঠামো আবৃত। পুনরাবৃত্তিমূলক আরবেস্ক ও জ্যামিতিক নিদর্শন ঐক্য ও অনন্ততার প্রতীক।

৪. প্রকৃতির সাথে সংযোগ: স্থাপত্যে পানি (হাউজ, নালা), আলো (জালি জানালা দিয়ে) এবং বাগান (জান্নাতের প্রতীক) ব্যবহার করে এই স্থাপত্য স্থানকে জীবন্ত ও আত্মিক করে তোলে।

৫. চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য: এই নীতিগুলো মসজিদ, মাদ্রাসা, কারভানসরাই, বাজার এবং সমাধি (যেমন গম্বুজে কাবুস) ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ভবনে প্রয়োগ করা হয়েছে।

সার্বিকভাবে, ইরানের ইসলামী স্থাপত্য পাথর, টাইলস, জ্যামিতি এবং আলোর সমন্বয়ে ভৌতিক জগতের বাইরে একটি স্থান সৃষ্টি করে যা চোখ জুড়ানোর পাশাপাশি চিন্তা ও শান্তির দিকে আহ্বান করে। এই ঐতিহ্য ইরানি শিল্পীদের প্রতিভা এবং ইসলামী সংস্কৃতির সমৃদ্ধির প্রমাণ।#