ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের বিপর্যয়: জাতিসংঘের শান্তি মিশন জোরদার
(last modified Mon, 09 Mar 2020 09:47:35 GMT )
মার্চ ০৯, ২০২০ ১৫:৪৭ Asia/Dhaka
  • ইয়েমেনি যোদ্ধাদের হামলায় নিহত সৌদি  অনুচর
    ইয়েমেনি যোদ্ধাদের হামলায় নিহত সৌদি অনুচর

সৌদি আরবের নেতৃত্বে কয়েকটি আরব দেশের সামরিক জোট ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইয়েমেনের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ওই আগ্রাসনে এ পর্যন্ত হাজার হাজার সাধারণ মানুষ হতাহত হয়েছে। আগ্রাসন বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে উদ্যোগ নেয়া হলেও সৌদি আরব ও তার মিত্রদের বাধার কারণে তা ব্যর্থ হয়েছে।

ইয়েমেন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্টিন গ্রিফিতস্‌ ইয়েমেনের মাআরিব প্রদেশ সফরে গিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসন বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের প্রচণ্ড আগ্রাসী ও বিদ্বেষমূলক আচরণের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, 'সামরিক আগ্রাসনের কৌশল কিংবা ইয়েমেনের ভূমি দখল করার চিন্তা করে কোনো লাভ হবে না। কারণ যুদ্ধের মাধ্যমে এই সংকটের কোনো সমাধান হবে না।' জাতিসংঘের এ প্রতিনিধি আরো বলেন, 'অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা শুরুর কোনো বিকল্প নেই।'

ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং সব পক্ষের মধ্যে সমঝোতার লক্ষ্যে রা

জনৈতিক সংলাপের জন্য জাতিসংঘ ব্যাপক চেষ্টা চালালেও সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের কারণে তা বারবার ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি সমঝোতা হলেও তারা তা লঙ্ঘন করছে। ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলীয় হুদাইদা বন্দরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও সৌদি আরব তা বহুবার লঙ্ঘন  করেছে।

গত প্রায় ছয় বছর ধরে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের হামলায় এ পর্যন্ত হাজার হাজার ইয়েমেনি নিহত ও লাখ লাখ মানুষ আহত হয়েছে। ইয়েমেনের ওপর অব্যাহত নিষেধাজ্ঞা এবং প্রতিনিয়ত বেসামরিক মানুষ ও আবাসিক এলাকার ওপর বোমা বর্ষণের কারণে সেখানে প্রচণ্ড ওষুধ ও খাদ্য  সংকট দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছরে গর্ভবতী নারী ও শিশুসহ লাখ লাখ মানুষ মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। ইয়েমেন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত সংঘাত শিথিল হয়ে আসার খবর দিলেও তিনি বলেছেন, ইয়েমেনে যে দুরবস্থা চলছে তা সহ্য করা দেশটির জনগণের পক্ষে আর সম্ভব নয়।

ইয়েমেন বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত মার্টিন গ্রিফিতস্‌

এদিকে, ইয়েমেনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অবস্থান একেবারেই স্বচ্ছ। দেশটির ন্যাশনাল কমিটির প্রধান বলেছেন, জাতিসংঘ প্রতিনিধির উচিত তার সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা। কারণ রাজনৈতিক সংলাপ সফল হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে সৌদি আগ্রাসন বন্ধ ও অবরোধ তুলে নেয়া ওপর।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সৌদি আরব যখন ইয়েমেন যুদ্ধে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ঠিক তখন জাতিসংঘ প্রতিনিধির ইয়েমেন সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। জোফ প্রদেশে ইয়েমেনি যোদ্ধাদের সাম্প্রতিক বিজয়ের পর সৌদি আরব তার অন্য মিত্রদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে যাতে ইয়েমেনিদের অগ্রযাত্রা ঠেকানো যায়। ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ যোদ্ধারা কয়েক সপ্তাহ ধরে লড়াই করে জোফ প্রদেশ সৌদি অনুচর বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ সাফল্যের ফলে একদিকে ইয়েমেনিদের  মধ্যে  যেমন আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে অন্যদিকে সৌদি বলয়ে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ইয়েমেনিরা মাআরিভ প্রদেশ উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

এ অবস্থায় জাতিসংঘ প্রতিনিধি যুদ্ধ থামিয়ে উত্তেজনা হ্রাস এবং রাজনৈতিক সংলাপ শুরুর চেষ্টা করছেন।  ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে তখন তার এ প্রচেষ্টা তাৎপর্যপূর্ণ বলে অনেকে মনে করছেন। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৮