এপ্রিল ২০, ২০২৪ ১৪:৪৬ Asia/Dhaka
  • আমেরিকা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইলি গোষ্ঠী/ মার্কিন সংখ্যা গরিষ্ঠদের ওপর সংখ্যালঘুদের একনায়কত্ব

আমেরিকা এবং পাশ্চাত্যের পৃষ্ঠপোষকতায় ইহুদিবাদী ইসরাইল ১৯৪৮ সালে নিজেকে একটি দখলদার রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পর থেকে সত্যের বিরুদ্ধে সব সময় আদর্শিক যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে।

আমেরিকার আধিপত্যবাদ

গত বছরের ৭ অক্টোবর দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী সংগঠনগুলোর চালানো আল-আকসা তুফান অভিযানের আগে এই অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের একটি জোট প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল যেটি অত্যন্ত কার্যকরভাবে ইসরাইল সম্পর্কে বিভিন্ন ধারনা এবং মতামতকে নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল এবং তাদের সম্পর্কে ভিন্নমতের কণ্ঠকে রোধ করে আসছিল।

ইসরাইল বিষয়ে অপ্রচলিত কথাবার্তা বা আলাপ আলোচনা মার্কিন রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, বিশিষ্ট খ্রিস্টান ব্যক্তিত্ব, মূলধারার মিডিয়া এবং শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ আমেরিকানদের চিন্তাভাবনা এবং শব্দভান্ডারে অনুপ্রবেশ করেছিল।

আশ্চর্যজনকভাবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং বি'টসেলেমের মতো মানবাধিকার সংস্থাগুলোর শত শত প্রতিবেদনের পরও  দখলদার ইসরাইলের ফিলিস্তিনিদের জমি চুরি, বর্ণবৈষম্য এবং তাদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন ও জাতিগত নিধন চালানোর ৭৬ বছরের ইতিহাস নথিভুক্ত করার পরেও ইসরাইলের প্রতি পৃষ্ঠপোষক এবং সমর্থকরা  তেল আবিবের প্রতি অবিচল রয়েছে।

কণ্ঠরোধের নীতি

বর্তমান সময়ের একটি ঘটনা যা সারা বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করেছে তা হচ্ছে   ওয়াশিংটন প্রেসের একজন সদস্য প্রকাশ্যে ইসরাইলের প্রতি মার্কিন সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন তোলায়  তিনি তার ৫৭ বছরের চাকরি হারিয়েছেন।

তিনি পরে বলেছিলেন, "আপনি এই দেশে ইসরায়েলের সমালোচনা করতে পারবেন না এবং বেঁচে থাকতে পারবেন না।"

এমএসএনবিসি-এর সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানের আরেক জনপ্রিয় উপস্থাপক মেহেদি হাসানকে শাস্তি দেয়া হয়েছিল। কারণ তিনি ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করেছিলেন এবং ইসরাইলের সমালোচনা করেছিলেন। 

এমএসএনবিসি-এর মতো সংবাদ সংস্থাগুলো "গ্রহণযোগ্য ইসরাইলি গোষ্ঠীর বক্তৃতা" থেকে বিচ্যুত হলে ইহুদিবাদী শক্তির কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়তে হয়। এর ফলে তারা ফিলিস্তিনিদের দুঃখকষ্ট এবং তাদের জীবনের ওপর বয়ে যাওয়া পাশবিক নির্যাতনের বর্ণনা থেকে তারা দূরে সরে যায় এবং মূলত তারা তেল আবিব শাসক গোষ্ঠীর একনিষ্ঠ প্রচারক বাহিনীতে পরিণত হয়।

আমেরিকার অগ্রাধিকার এবং নেতানিয়াহুর সংগ্রাম

গত সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে আমেরিকার প্রাথমিক অগ্রাধিকার হচ্ছে পশ্চিম এশিয়ায় মোতায়েন তার ঘাঁটিগুলোকে সুরক্ষিত রাখা। বর্তমানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১৯৭৩ সালে সিনেটে প্রবেশের পর থেকে "ইসরাইলের একজন খাঁটি বন্ধু হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছেন এবং প্রায়ই বলেন, "আমি একজন জায়নিস্ট বা ইহুদিবাদী।" ইসরাইল যখন এই অঞ্চলে যুদ্ধ ছড়িয়ে দেয়ার ইন্ধন জোগাচ্ছে এবং লেবানন ও সিরিয়ায় মারাত্মক বিমান হামলা চালাচ্ছে তখনও বাইডেন প্রশাসন তেল আবিবের প্রতি তার নির্লজ্জ সমর্থন অব্যাহত রেখেছে।

গাজা এবং রাফাহ শহরে তেল আবিবের পরিকল্পিত স্থল হামলার বিরুদ্ধে যখন মার্কিন জনগণ এবং এমনকি ইসরাইলে অভিবাসী হওয়া ইহুদিরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছেন তখনও  বাইডেন প্রশাসনের এই সমর্থন অব্যাহত রয়েছে।

কয়েক দশক ধরে নেতানিয়াহু বিশ্বকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে ইরান একটি হুমকি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তেহরানের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হতে প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করেছে।

অক্টোবরের হামলার পর থেকে নেতানিয়াহু ইরানের বিরুদ্ধে তার অঘোষিত যুদ্ধের মাত্রা বাড়িয়েছেন। কীভাবে নিজের স্বার্থকে এগিয়ে নিতে হবে সে সম্পর্কে তিনি সচেতন। অনেকেই মনে করছেন যে গাজার গণহত্যা থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরাতে এবং নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের মৃত্যু ঠেকাতে নেতানিয়াহু ইরানকে যুদ্ধের মাঠে টেনে আনতে চাইছেন।#

পার্সটুডে/এমবিএ/ ২০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন

ট্যাগ