ইসরাইলকে সমর্থন করে কি ব্রিটেনের কাছ থেকে ফকল্যান্ড দ্বীপ মুক্ত করা সম্ভব?
(last modified Thu, 26 Sep 2024 03:45:20 GMT )
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪ ০৯:৪৫ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলকে সমর্থন করে কি ব্রিটেনের কাছ থেকে ফকল্যান্ড দ্বীপ মুক্ত করা সম্ভব?
    ইসরাইলকে সমর্থন করে কি ব্রিটেনের কাছ থেকে ফকল্যান্ড দ্বীপ মুক্ত করা সম্ভব?

পার্সটুডে- একটি দেশ যখন আরেকটি দেশের দখলদারিত্ব থেকে নিজের ভূখণ্ড মুক্ত করার চেষ্টা করে তখন সেদেশ কীভাবে অন্য একটি দেশের দখলদারিত্বকে সমর্থন করে বক্তব্য দেয়?

ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা নিয়ে আর্জেন্টিনা ও ব্রিটেনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও রেষারেষি চলছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ওই দ্বীপপুঞ্জ ব্রিটেনের দেয়া নাম ফকল্যান্ড হিসেবে পরিচিতি পেলেও আর্জেন্টিনার জনগণ সেটিকে মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জ বলে জানে। পার্সটুডের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঊনবিংশ শতাব্দি থেকে ব্রিটেনের দখলে থাকা এই দ্বীপপুঞ্জ ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আর্জেন্টিনা এটিকে নিজের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে এবং এটির ওপর ব্রিটেন দখলদারিত্ব বজায় রেখেছে বলে মনে করে। সাম্প্রতিক সময়ে এই দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে টানাপড়েন একথা প্রমাণ করে যে, ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে উত্তেজনার অবসান হয়নি বরং আর্জেন্টিনার পরস্পরবিরোধী কৌশল ও ইসরাইলের প্রতি সমর্থনের কারণে পরিস্থিতির আরো বেশি অবনতি হয়েছে।

বিদ্যমান উত্তেজনা ও নয়া পরিস্থিতি

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে আর্জেন্টিনা মালভিনাজ দ্বীপপুঞ্জের ওপর নিজের মালিকানা দাবির ৬০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে। ওই অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনার কর্মকর্তারা এই দ্বীপপুঞ্জের ওপর তাদের অধিকার দাবি করে বলেছেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই উত্তেজনার অবসান ঘটাতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা প্রয়োজন। আর্জেন্টিনা সরকার এ পর্যন্ত বহুবার ওই দ্বীপপুঞ্জ ত্যাগ করতে ব্রিটিশ সরকারকে বাধ্য করার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যাতে এটি আর্জেন্টিনার মালিকানায় ফিরে যায়।

অন্যদিকে দ্বীপপুঞ্জটির স্বায়ত্বশাসনের প্রতি ইঙ্গিত করে ব্রিটিশ সরকার দাবি করছে, সেখানকার অধিবাসীরা ব্রিটেনের সঙ্গে থাকতে চায় বলে এটির মালিকানা নিয়ে আর্জেন্টিনার সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না। পদস্থ ব্রিটিশ কর্মকর্তারা মাঝেমধ্যেই ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জ সফর করে এটির ওপর লন্ডনের অকাট্য মালিকানা ফলিয়ে আসছেন। এ কারণে, কূটনৈতিক উপায়ে দ্বীপটি ফিরে পেতে আর্জেন্টিনা যে চেষ্টা করছে তা ব্যাপক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।

দখলদারিত্বের প্রতি সমর্থন

আর্জেন্টিনা সরকারের পররাষ্ট্রনীতির একটি বহু বিতর্কিত অবস্থান হচ্ছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্বকে সমর্থন করা। জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক ফোরামে আর্জেন্টিনা সব সময় ইসরাইলের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ইসরাইলি দখলদারিত্বের প্রতি আর্জেন্টিনার এই সমর্থনের কারণে মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জের ওপর ব্রিটিশ দখলদারিত্বের যে দাবি দেশটি করছে তার আবেদন ব্যাপক মাত্রায় কমে এসেছে।

অধিকৃত ফিলিস্তিনের নাদেবা প্রাচীরের সামনে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জ্যাভিয়ের মিলি (ফাইল ছবি)

আর্জেন্টিনার এই দ্বৈত নীতি সম্পর্কে পর্যবেক্ষকরা প্রশ্ন করছেন, একটি দেশ যখন আরেকটি দেশের দখলদারিত্ব থেকে নিজের ভূখণ্ড মুক্ত করার চেষ্টা করে তখন সেদেশ কীভাবে অন্য একটি দেশের দখলদারিত্বকে সমর্থন করতে পারে? এই নৈতিক স্ববিরোধিতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আর্জেন্টিনার বৈধ দাবিকে দুর্বল করে দিয়েছে এবং দেশটির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বারবার অচলাবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। একটি দেশের সকল ভূখণ্ডের ওপর তার সার্বভৌম মালিকানা দাবি করা যদি আর্জেন্টিনার মৌলিক নীতি হয়ে থাকে তাহলে যে পদক্ষেপের ফলে তার ওই মৌলিক নীতি প্রশ্নবিদ্ধ হয় সেরকম পদক্ষেপ বুয়েন্স আয়ার্স নিতে পারে না।#

পার্সটুডে/এমএমআই/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ