মার্কিন আকাশ সেতু প্রকল্প এবং ইসরাইলের পোড়া মাটি নীতির ব্যর্থতা
(last modified Sun, 23 Feb 2025 11:23:05 GMT )
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫ ১৭:২৩ Asia/Dhaka
  • লয়েড জেমস অস্টিন তৃতীয় ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত জো বাইডেন প্রশাসনে ২৮তম মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গাজার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অন্যতম খেলোয়াড় ছিলেন তিনি।
    লয়েড জেমস অস্টিন তৃতীয় ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত জো বাইডেন প্রশাসনে ২৮তম মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গাজার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অন্যতম খেলোয়াড় ছিলেন তিনি।

পার্সটুডে-লেবাননে নিযুক্ত ইরানের সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেছেন: প্রতিরোধ কেবল ফিলিস্তিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এ অঞ্চলের সর্বত্রই তার কার্যকর প্রভাব রয়েছে।

লেবাননে নিযুক্ত ইরানের সাবেক রাষ্ট্রদূত সাইয়্যেদ আহমাদ দাস্তমলচিয়ান বলেছেন: পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় প্রতিরোধের ভবিষ্যৎ বর্তমানের চেয়েও শক্তিশালী হবে এবং ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে ভাগ্য নির্ধারক পটভূমি তৈরি করবে। পার্সটুডে জানিয়েছে, প্রতিরোধ ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ এবং এ অঞ্চলে পরিস্থিতির উন্নয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ইরনার সাথে এক সাক্ষাৎকারে সাইয়্যেদ আহমাদ দাস্তমলচিয়ান আরও বলেন: ২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত, রাজনৈতিক যুদ্ধে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে বিশাল পরাজয়ের পর, ইহুদিবাদী ইসরাইল কোনও যুদ্ধেই তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারে নি।

এই শাসকগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান ব্যর্থতা ছিল ২০০০ সালে লেবানন থেকে জোরপূর্বক বহিষ্কার, যা এ অঞ্চলের ইতিহাসে একটি সন্ধিক্ষণ হিসেবে স্বীকৃত। তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মোড় ছিল যখন ইহুদিবাদী ইসরাইল পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে অতীতের তিক্ত পরাজয়ের ক্ষতিপূরণ করতে চেয়েছিল, কিন্তু কেবল যে সফল হয় নি তাই নয় বরং আরও বিশাল পরাজয়ের সম্মুখিন হয়েছে।

লেবাননে নিযুক্ত ইরানের সাবেক রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল বারবার দাবি করেছে যে তারা তাদের জিম্মিদের মুক্ত করবে, প্রতিরোধের টানেলগুলো ধ্বংস করবে এবং হামাসকে ধ্বংস করবে। তিনি বলেন: তারা আসলে এইসব করতে কেবল যে সফল হয় নি তাই নয় বরং হামাস এবং সারা বিশ্ব ফিলিস্তিনি প্রতিরোধের শক্তি ও ক্ষমতাও দেখেছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থীরা যখন তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে আসে এবং এমনকি যখন ইহুদিবাদী ইসরাইলের বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়, তখনও বিশ্ববাসী প্রতিরোধের শক্তি দেখে বিস্মিত হয়েছে।

দাস্তমলচিয়ান আরও বলেন: ইহুদিবাদী ইসরাইল পোড়া মাটি নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গাজার জনগণকে নিজেদের ভিটেমাটি ত্যাগ করে ওই অঞ্চলকে জনমানবশূন্য করতে বাধ্য করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতেও ব্যর্থ হয়েছে। অবশেষে, প্রতিরোধ শক্তিকে দমনের জন্য তাদের সামরিক ও রাজনৈতিক সকল হাতিয়ার ব্যবহার করা সত্ত্বেও পরাজয় ও অপমানের সাথে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।

লেবাননে নিযুক্ত ইরানের সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন: ৩৩ দিনের যুদ্ধে লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনীর সামরিক সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছে- প্রতিরোধ শক্তি সুসজ্জিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দৃঢ়তার সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে সক্ষম।

দাস্তমলচিয়ান আরও বলেন: যে বিষয়টি লক্ষ্য করার মতো তা হলো, এই যুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি মূলত আমেরিকার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, কেবল ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে নয়। যদি ইহুদিবাদী ইসরাইলকে আমেরিকা অস্ত্র, প্রযুক্তি এবং গোয়েন্দা সহায়তা না দিত, তাহলে প্রথম দিন থেকেই ইসরাইলের পতন হতো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে অস্ত্র পাঠানোর জন্য সরাসরি আকাশ সেতু স্থাপন করেছিল।

তিনি আরও বলেন: এই সত্যটি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকা উচিত যে, প্রতিরোধ যোদ্ধাদের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি অপরাজেয়। প্রতিরোধ হলো একটি বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন এবং চিন্তাধারা যে চিন্তাধারা জনগণের অধিকার রক্ষার ইচ্ছা থেকে উদ্ভূত হয়। ইতিহাস জুড়ে দেখা যায়, কোনো দেশ ও জাতির জনশক্তি যখন তাদের নিজস্ব ভাগ্য নির্ধারণের জন্য সংগ্রাম করে কোনও অশুভ শক্তি সেই জাতিকে নতজানু করতে সক্ষম হয় নি। হতে পারে এই পথ বেশ দীর্ঘ এবং ব্যয়বহুল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই জাতির ইচ্ছাই জয়ী হয়। ঐতিহাসিক বহু প্রমাণ রয়েছে যেগুলো এই সত্যকে নিশ্চিত করে। আজ আমরা নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছি কীভাবে জনগণের ইচ্ছাশক্তি শত্রুদের সামরিক শক্তি এবং ঐক্যকে পরাজিত করে এবং শেষ পর্যন্ত সংগ্রামী জাতিগুলিরই বিজয় হবে।#

পার্সটুডে/এনএম/২৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।