ইসরায়েলকে ট্রাম্পের সবুজ সংকেত; গাজা যুদ্ধ কি আবার শুরু হবে?
https://parstoday.ir/bn/news/world-i153078-ইসরায়েলকে_ট্রাম্পের_সবুজ_সংকেত_গাজা_যুদ্ধ_কি_আবার_শুরু_হবে
পার্সটুডে- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধ পুনরায় শুরুর জন্য ইসরায়েলকে “সবুজ সংকেত” দিয়েছেন। পার্সটুডে’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- তথাকথিত “গাজা শান্তি চুক্তি” স্বাক্ষর ও ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির তিন দিন পরই ট্রাম্প হামাসের পক্ষ থেকে চুক্তি না মানার অজুহাত তুলে ইসরায়েলকে আবারও যুদ্ধ শুরুর জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছেন।।
(last modified 2025-10-16T14:32:54+00:00 )
অক্টোবর ১৬, ২০২৫ ১৬:৪২ Asia/Dhaka
  • ট্রাম্প
    ট্রাম্প

পার্সটুডে- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধ পুনরায় শুরুর জন্য ইসরায়েলকে “সবুজ সংকেত” দিয়েছেন। পার্সটুডে’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- তথাকথিত “গাজা শান্তি চুক্তি” স্বাক্ষর ও ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির তিন দিন পরই ট্রাম্প হামাসের পক্ষ থেকে চুক্তি না মানার অজুহাত তুলে ইসরায়েলকে আবারও যুদ্ধ শুরুর জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছেন।।

তিনি গতকাল বুধবার বলেন, “যদি হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি না মানে তাহলে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরু করতে পারে।

ট্রাম্প হামাসের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ পুনরাবৃত্তি করে ইসরায়েলের সুরে সুর মিলিয়ে বলেন, “আমি বললেই ইসরায়েল আবার রাস্তায় নামবে। যদি ইসরায়েল আবার নামতে পারে এবং কঠোরভাবে আঘাত করতে পারে, তাহলে তারা তাই করবে।” তিনি দাবি করেন, “হামাসের ব্যাপারে এখন যা ঘটছে, দ্রুতই সেটার সমাধান হবে।

তবে পরে ট্রাম্পের এক মন্তব্যে তিনি বলেন, “যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে... যুদ্ধ শেষ... যুদ্ধ শেষ... বুঝলে?

বিশ্লেষকরা এটাকে ট্রাম্পের জনমত নিয়ন্ত্রণ বা রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন।

এদিকে, দখলদার ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলছে- তারা বন্দি বিনিময় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জাতিসংঘকে জানিয়েছেন, হস্তান্তরকৃত মৃত বন্দির সংখ্যা কম হওয়ায় গাজায় মানবিক সাহায্য পাঠানো কমানো হতে পারে বা বিলম্বিত হতে পারে। যদিও এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি টিকে আছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইসরায়েল এখন সব জীবিত বন্দি পাওয়ার পর হামাসের বিরুদ্ধে নানা বাহানা তৈরি করছে, তারা এখন সব মৃত বন্দির মরদেহ না ফেরানোর অজুহাতে গাজায় পুনরায় হামলার পরিকল্পনা করছে। এই উদ্দেশ্যের অংশ হিসেবে তারা ইতিমধ্যে গাজায় মানবিক সহায়তা সরবরাহে সীমাবদ্ধতা আরোপের হুমকি দিয়েছে।

এদিকে, নেতানিয়াহুর সরকারের চরমপন্থী মন্ত্রীরা যেমন স্মোটরিচ ও বেনগাভির যুদ্ধবিরতির বিরোধী। তারা পুনরায় যুদ্ধ শুরুর জন্য চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিয়ুস জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে যে, যদি হামাস নিহত সৈন্যদের মরদেহ ফেরত না দেয়, তাহলে গাজার যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাবে। কিন্তু হামাস জানিয়েছে, তাদের কাছে ফেরত দেওয়ার মতো আর কোনো মরদেহ নেই এবং বাকি মরদেহ উদ্ধারে বিশেষ সরঞ্জাম ও সময় প্রয়োজন। ইসরায়েলি কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন, মরদেহগুলো খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে, যদিও তারা দাবি করছে ১৫ থেকে ২০টি মরদেহ দ্রুত ফেরত পাওয়া সম্ভব।

ওয়াশিংটন ঘোষণা করেছে,  তারা যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ নিয়ে আলোচনায় যেতে চায়, যেখানে গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন ও নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হবে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা পাঁচটি দেশের সঙ্গে সমন্বয়ে গাজায় একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। তবে ইসরায়েল সতর্ক করেছে, নিহত বন্দিদের মরদেহের বিষয়ে অগ্রগতি না হলে এই প্রক্রিয়া এগোনো “খুব কঠিন” হবে।

সব মিলিয়ে গাজার বর্তমান যুদ্ধবিরতি অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে ইসরায়েলি হামলা আবার শুরু হতে পারে—বিশেষ করে যখন খোদ নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এবং তার জোটের উগ্রপন্থী মন্ত্রীদের খুশি রাখতে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের দিকে ঝুঁকছেন।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এরপর ৩ অক্টোবর হামাস  শর্তসাপেক্ষে এই পরিকল্পনা মেনে নেয়। তারা জানায়, যুদ্ধ সম্পূর্ণ বন্ধ হতে হবে, বন্দি বিনিময় করতে হবে এবং গাজায় স্বাধীন প্রশাসন গঠিত হবে। শেষ পর্যন্ত ১৩ অক্টোবর ট্রাম্পের উপস্থিতিতে এবং ২০টিরও বেশি দেশের অংশগ্রহণে “গাজা শান্তি চুক্তি” নামের পরিকল্পনাটি স্বাক্ষরিত হয়।

যদিও ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই চুক্তির উদ্দেশ্য গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা এবং গাজাকে পুনর্গঠিত করা। কিন্তু এই চুক্তির বিষয়ে নানা মহলে সমালোচনা রয়েছে।#   

পার্সটুডে/এসএ/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।