জোহরান মামদানি কে?
https://parstoday.ir/bn/news/world-i153720-জোহরান_মামদানি_কে
পার্সটুডে-নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জয়লাভ করে এবং নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের হুমকিসহ ইসরাইল-বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করে "জোহরান মামদানি" মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন।
(last modified 2025-11-06T10:52:20+00:00 )
নভেম্বর ০৫, ২০২৫ ১৫:১৪ Asia/Dhaka
  • নিউইয়র্কের মেয়র জোহরান মামদানি
    নিউইয়র্কের মেয়র জোহরান মামদানি

পার্সটুডে-নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জয়লাভ করে এবং নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের হুমকিসহ ইসরাইল-বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করে "জোহরান মামদানি" মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন।

জনপ্রিয়তা এবং তার আবেগপ্রবণ নির্বাচনী প্রচারণার সমর্থনে, জোহরান মামদানি তার প্রতিদ্বন্দ্বী, নিউ ইয়র্কের প্রাক্তন ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো এবং তার বিলিয়নেয়ার সমর্থকদের পাশাপাশি রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করতে সক্ষম হন এবং নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হন। প্রতিবেদন অনুসারে, ২৬ জনেরও বেশি বিলিয়নেয়ার এবং আমেরিকার ধনী পরিবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যান্ড্রু কুমোকে সমর্থন করার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছিলেন যাতে মামদানি জয়লাভ করতে না পারে, কিন্তু তার আবেগপ্রবণ প্রচারণা এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক বার্তাগুলো এই ব্যয়ের প্রভাবকে প্রতিরোধ করে। পার্সটুডে'র এই নিবন্ধে আমরা জোহরান মামদানির জীবনীর প্রতি সংক্ষিপ্ত নজর দেওয়ার চেষ্টা করবো।

১৯৯১ সালের ১৮ অক্টোবর উগান্ডার কাম্পালায় জন্মগ্রহণকারী জাহরান কাওয়াম মামদানি একজন ভারতীয় অভিবাসী পরিবারের সন্তান। তৎকালীন উগান্ডার স্বৈরশাসক ইদি আমিনের নির্বাসন নীতির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন। তিনি নিউইয়র্কে বেড়ে ওঠেন এবং আফ্রিকা ও পশ্চিম এশীয় স্টাডিজের ক্ষেত্রে ব্রাউন এবং নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এই সাংস্কৃতিক পটভূমি এবং বৈষম্যের অভিজ্ঞতা তার ন্যায়বিচার-সন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তিনি ২০২৫ সালের গোড়ার দিকে সিরিয়ার শিল্পী রামা দাওয়াজিকে বিয়ে করেন।

মামদানি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে মিস্টার কার্ডামম নামে র‍্যাপ করা থেকে শুরু করে স্কুল ক্রিকেট দল প্রতিষ্ঠা করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন অধ্যায় চালু করা ইত্যাদি। তিনি দুবার নিউইয়র্ক ম্যারাথনেও দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এবং উগান্ডায় তিনি জমিরও মালিক।

২০২০ সালে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে তার আনুষ্ঠানিক প্রবেশ শুরু হয়। বহুসংস্কৃতির লালনভূমি ব্রুকলিনের একটি এলাকায়, তিনি দ্রুত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বামপন্থী একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন। ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্টস অফ আমেরিকা (ডিএসএ)-তে তার সদস্যপদ তাকে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন, শ্রমিকদের অধিকার এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বর্ণগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মতো ধারণাগুলো প্রচারের জন্য একটি উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে।

মামদানির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হলেও তিনি নিজেকে ঐতিহ্যবাহী লেবেল অতিক্রমকারী হিসেবে দেখেন। তিনি পুঁজিবাদী ব্যবস্থা এবং নব্য উদারনীতির একজন কট্টর সমালোচক এবং সম্পদ কর, গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের জাতীয়করণসহ শ্রমিক ইউনিয়নগুলোকে শক্তিশালী করার মতো উদ্যোগকে সমর্থন করেন। মেয়র নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি আবাসন সংকট সমাধান, অবকাঠামোগত উন্নতি এবং সামাজিক পরিষেবাগুলোকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছিলেন।

মামদানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানগুলোর মধ্যে একটি হল ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিডিএস (BDS) আন্দোলনের প্রতি তার স্পষ্ট সমর্থন। তিনি বারবার ইসরাইলের নীতিগুলোকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন এবং ইসরাইলকে মার্কিন সামরিক সহায়তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায়ের পর নিউইয়র্কে নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা সম্পর্কে তার মন্তব্য মার্কিন মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।

মামদানি পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপেরও সমালোচনা করেছেন এবং আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। এই দৃষ্টিভঙ্গি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রগতিশীল শাখার অবস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।#

পার্সটুডে/এনএম/৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।