তুর্কি খেলাফত ধ্বংস ও আরব বিশ্বকে ছিন্নভিন্ন করে ব্রিটিশ গুপ্তচর লরেন্স
১৮৮৮ সালের ১৬ আগস্ট জন্ম হয়েছিল লরেন্স অব অ্যারাবিয়া নামে কুখ্যাত ধূর্ত ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ও সেনা-গোয়েন্দা কর্মী থমাস এডওয়ার্ড লরেন্সের।
ব্রিটেনের এক অভিজাত ব্যক্তির বিবাহ-বহির্ভূত যৌন সম্পর্কের ফসল হিসেবে জন্ম নেয়া লরেন্স ছিল অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির গোয়েন্দা কর্মী ও দক্ষ প্রতারক। তার কাজ ছিল বন্ধুর বেশ ধরে মধ্যপ্রাচ্য ও আরব অঞ্চলের মুসলিম শাসকদের ধোঁকা দেয়া ও তাদের ধ্বংস করা।
লরেন্স ১৯১০ থেকে ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ সরকারের প্রত্নতাত্ত্বিক প্রতিনিধির ছদ্মবেশে ইরাক, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনে সক্রিয় থেকে আরব ও তুর্কিদের মধ্যে বিভেদের বীজ বপন করে যাতে ওসমানিয় তুর্কি খেলাফত বা তুর্কি সাম্রাজ্য ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।
ব্রিটিশ সরকারের ডিভাইড এন্ড রুল বা 'ভাগ ও শাসন কর' নীতির আওতায় সক্রিয় এই গুপ্তচর তুর্কি শাসনের বিরুদ্ধে একদল আরবকে ক্ষেপিয়ে তুলতে বা বিদ্রোহীতে রূপান্তরিত করতে সফল হয়। মূলতঃ তার চেষ্টাতেই হিজাজের শাসক ও ব্রিটিশদের অনুচর শরিফ হুসাইনের ছেলে আবদুল্লাহর জন্য গঠন করা হয় জর্দান নামক একটি কৃত্রিম রাষ্ট্র এবং শরিফের আরেক ছেলে ফয়সালকে করা হয় সিরিয়ার রাজা।
কিন্তু ফয়সাল মাত্র চার মাস পর দামেস্ক থেকে বিতাড়িত হলে তাকে ইরাকের রাজার পদে বসানো হয়। ফয়সালকে দিয়ে ইরাকের সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর দমন অভিযান চালানো হয় যাতে তারা এই দেশটি পরিচালনার নেতৃত্বে থাকতে না পারে।
এরপর ব্রিটেনের ষড়যন্ত্রে নজদের মরুচারী ওয়াহাবি গুণ্ডাদের মাধ্যমে হিজাজ থেকে বিতাড়িত করা হয় শরিফ হুসাইনকে এবং ওয়াহাবি জঙ্গিদের নেতা আবদুল আজিজ আলে সৌদকে দিয়ে গঠন করা হয় আরেকটি নতুন কৃত্রিম দেশ সৌদি আরব। তবে এ জন্য সৌদকে এ শর্ত মেনে নিতে হয় যে সে ফিলিস্তিনে ইউরোপ থেকে অবৈধভাবে আসা ইহুদিবাদীদের জন্য ইসরাইল নামক একটি রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনায় কোনো আপত্তি করবে না।
লরেন্স প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার পাকানো নানা ষড়যন্ত্রের কিছু বিবরণ নিজেই নির্লজ্জভাবে উল্লেখ করেছে 'সেভেন পিলারস অফ উইজডোম' বা 'প্রজ্ঞার সাত স্তম্ভ' শীর্ষক বইয়ে। #
পার্সটুডে/মু.আ.হুসাইন/১৬