নাইজেরিয়ায় আত্মসমর্পণ করছে বোকো হারাম
তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বোকো হারামের কয়েক ডজন জঙ্গি নাইজেরিয় কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। দেশটির উত্তর-পূর্বে জঙ্গি গোষ্ঠীটির শেষ ঘাঁটি নাইজেরিয় সেনারা দখল করেছে বলে দেশটির সরকার ঘোষণা দেয়ার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এসব জঙ্গি আত্মসমর্পণ করল।
নাইজেরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাজুম মোহাম্মাদ বলেন, “কয়েক বছর আগে বোকো হারামের তালিকাভুক্ত হওয়া দিফা অঞ্চলের ৩১ তরুণ আত্মসমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।" গোলযোগপূর্ণ দিফা এলাকাটি নাইজার সীমান্তের দক্ষিণ-পূর্বে নাইজেরিয়ার অস্থিতিশীল বর্নো রাজ্যের কাছে অবস্থিত যেখানে বোকো হারাম সন্ত্রাসীরা সহজেই ঘন সামবিসা জঙ্গলে গা ঢাকা দিয়ে থাকে।
জঙ্গি দল থেকে পলাতকদের একজন নাইজেরিয়ার এক সরকারি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে কেন তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করছেন তার বিবরণ দেন। তিনি বলেন, “আমরা বোকো হারাম ত্যাগ করেছি কারণ আমরা দেখতে পেলাম যে, এ গোষ্ঠী যার ওপর দাঁড়িয়ে আছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা সরকারের কাছ থেকে ক্ষমা প্রত্যাশা করছি যাতে আমরা দেশের উন্নয়নে অংশ নিতে পারি এবং আমাদেরকে এই মানসিক আঘাত থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করুন।”
নাইজেরিয়ার সরকার নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, জঙ্গি গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে আসা সবাইকে দেশটি ক্ষমা করবে এই শর্তে যে, তারা মৌলবাদ-বিরোধী কর্মসূচির সঙ্গে থাকবে। এরপর তাদের আর্থ-সামাজিক সমন্বিতকরণ প্রকল্পে তালিকাভুক্ত করা হবে।
চলতি বছরের জুন মাসে বোকো হারাম সন্ত্রাসীরা অঞ্চলটিতে সুদূরপ্রসারী অভিযান শুরু করায় দিফায় হাজার হাজার মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হতে হয়েছিল। সেপ্টেম্বরে, দিফার ৬৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে তুমুর গ্রামের কাছে কমপক্ষে পাঁচ নাইজেরিয় সেনা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে নিহত হয়েছিল।
নাইজার হচ্ছে সেই দেশগুলোর একটি যা সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে নাইজেরিয়ার বোকো হারাম জঙ্গিদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটি নিয়মিত নাইজেরিয়া সীমান্ত পার হয়ে নাইজার, চাদ ও ক্যামেরুনে হামলা চালায়। এ গোষ্ঠীর হাতে নাইজেরিয়াসহ এসব দেশের হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া, নারী ও স্কুলছাত্রীসহ বহু মানুষকে তারা অপহরণ করেছে। কখনো কখনো এসব মানুষকে বোকো হারাম সন্ত্রাসীরা মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।#
পার্সটুডে/সিরাজুল ইসলাম/২৯