আফ্রিকায় প্রচণ্ড খরা ও দুর্ভিক্ষ: সোমালিয়ার অবস্থা দুর্বিষহ
(last modified Mon, 06 Mar 2017 13:00:45 GMT )
মার্চ ০৬, ২০১৭ ১৯:০০ Asia/Dhaka

আফ্রিকা মহাদেশের বহু এলাকায় প্রচণ্ড খরা ও দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। সোমালিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গত দুই দিনে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাই শহরে ক্ষুধা ও তৃষ্ণায় মারা গেছে ১১০ জন।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার শিং হিসেবে খ্যাত সোমালিয়ার পাঁচ লাখ মানুষ মারাত্মক খরা ও দুর্ভিক্ষের কারণে ব্যাপক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে এবং তাদের জন্য অবিলম্বে সাহায্যের প্রয়োজন। খরার কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কথা উল্লেখ করে মহা বিপর্যয় রোধের জন্য সোমালিয়ার প্রেসিডেন্টও গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা 'হু'ও সোমালিয়ায় বড় ধরণের  দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, দেড় লাখ মানুষ এখন সবচেয়ে বিপদের মুখে রয়েছে।

গত কয়েক বছরে আফ্রিকার অনেক দেশে খরা ও দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রিন হাউজ গ্যাস এসব দেশের আবহাওয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলেছে এবং দেখা দিয়েছে খরা ও দুর্ভিক্ষ। খরা ও বন্যার কারণে এসব এলাকার কৃষিকাজ ব্যহত হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছর থেকে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের চার কোটির বেশি মানুষ খাদ্যের সম্মুখীন এবং পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটছে।

গ্রিন হাউজ গ্যাসের  কারণে আফ্রিকায় বিপর্যয় দেখা দিলেও এর জন্য ওই দেশগুলো দায়ী নয়। গ্রিন হাউজ গ্যাসের জন্য আফ্রিকার দেশগুলোর ভূমিকা খুবই সামান্য। পাশ্চাত্যের উন্নত দেশগুলো জলবায়ু দূষণের জন্য দায়ী হলেও এর ধ্বংসাত্মক ও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে অন্য দেশগুলোর ওপর।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রয়োজনীয় উন্নয়ন ও অবকাঠামো না থাকা, পানির সঠিক ব্যবহার না করা, পয়ঃনিস্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকা, অধিক জনসংখ্যা, প্রযুক্তির অভাব, কৃষিকাজে পুরানো পদ্ধতির ব্যবহার প্রভৃতি কারণে আফ্রিকার এ দেশগুলোতে দুর্ভিক্ষ লেগেই আছে। এ ছাড়া, যুদ্ধ এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বাইরের ষড়যন্ত্রও এসব অঞ্চলের সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ও খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরে আফ্রিকার বিভিন্ন এলাকায় প্রচণ্ড খরার ব্যাপারে সতর্ক করে আসছিলেন। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলেছেন, বর্তমানে ওই মহাদেশের দুই কোটি মানুষ মারাত্মক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। এসব আশঙ্কার কথা শোনা গেলেও বিপর্যয় রোধে কিংবা সাহায্যের জন্য এখন পর্যন্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গত কয়েক বছরে কেবল সতর্কবাণীই উচ্চারণ করে যাচ্ছে। # 

পার্সটুডে/মোঃ রেজওয়ান হোসেন/৬

 

ট্যাগ