ট্রাম্পবিহীন পরমাণু সমঝোতা এখন ইউরোপের জন্য বিরাট পরীক্ষা
(last modified Wed, 13 Jun 2018 12:48:51 GMT )
জুন ১৩, ২০১৮ ১৮:৪৮ Asia/Dhaka

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি বলেছেন, ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতার প্রতি আন্তর্জাতিক সমাজের সমর্থন রয়েছে।

তিনি বলেন, পরমাণু সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই এবং এটি টিকিয়ে রাখার জন্য সবাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতি আন্তর্জাতিক সমাজের সমর্থনের কথা উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, "চুক্তির বিষয়ে ইউরোপের নীতি অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি এবং আমরা এর পুরোপুরি বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।"

অবশ্য গত ৮মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইউরোপীয় নেতারা ট্রাম্পের এ পদক্ষেপকে একতরফা ও  আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করে এ চুক্তিকে টিকিয়ে রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ইউরোপের নেতারা পরমাণু সমঝোতাকে আন্তর্জাতিক সনদ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, এটি ছিল অনেক বড় কূটনৈতিক সাফল্য এবং এর ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। এদিকে, মার্কিন সরকার স্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক বসানোসহ একতরফা আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়া সত্বেও ইউরোপ পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। বাড়তি শুল্ক আরোপকে ইউরোপের জন্য অর্থনৈতিক হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি এ ব্যাপারে বলেন, "১২ বছর ধরে কঠিন ও শ্বাসরুদ্ধকর কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতায় পৌঁছা সম্ভব হয়েছিল এবং এটি আন্তর্জাতিক চুক্তি।" মোগেরিনি বলেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আন্তর্জাতিক সমাজ, বহুপাক্ষিক শাসনব্যবস্থা ও জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতাকে হুমকির মুখ ঠেলে দিয়েছেন।"

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্বেচ্ছাচারী নীতিতে অটল থাকায় এমনকি ইউরোপীয় মিত্রদের মতামতকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোয় পর্যবেক্ষকরা এ  আচরণের পরিণতির ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা আন্তর্জাতিক এ চুক্তি টিকিয়ে রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন। কানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপক রায়ান অ্যালফোর্ড বলেছেন, "আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী একতরফাভাবে কোনো চুক্তি থেকে কেউ বেরিয়ে গেলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই পরমাণু সমঝোতা থেকে ট্রাম্পের বেরিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।"

ইউরোপীয় কর্মকর্তারা মনে করেন, পরমাণু সমঝোতার মাধ্যমে এটা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। তারা এও স্বীকার করেন, গত প্রায় তিন বছরে ইরান তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে। এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএও বিষয়টি স্বীকার করেছে। এ কারণে ইউরোপ নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই পরমাণু সমঝোতা টিকিয়ে রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। তাছাড়া, বিষয়টি আমেরিকার মোকাবেলায় ইরানের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে ইউরোপের জন্যও স্বাধীন নীতি, ক্ষমতা ও মর্যাদা রক্ষার পরীক্ষা হয়ে দেখা দিয়েছে। এ কারণে ইউরোপের কর্মকর্তারা বলেছেন, পরমাণু সমঝোতার কোনো বিকল্প নেই। #                

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৩

 

 

 

ট্যাগ