রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে ট্রাম্পের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে সমালোচনার ঝড়
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শনিবার ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস বা আইএনএফ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানোর পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস আমেরিকাকে বিশ্বশান্তি ও মানবাধিকারের শত্রু বলে অভিহিত করেছেন। তিনি এক টুইট বার্তায় আরো বলেছেন, "আইএনএফ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে সেনা বাহিনী পাঠানোর হুমকি দিয়েছেন যাতে মধ্য আমেরিকা থেকে কোনো অভিবাসী আমেরিকায় প্রবেশ করতে না পারে। এ থেকে প্রমাণিত হয় ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্ব শান্তি ও মানবতার শত্রু।"
ওই অঞ্চলে মার্কিন নীতির অন্যতম বৃহৎ সমালোচক হচ্ছে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। তিনি বহুবার আমেরিকাকে গণতন্ত্র বিরোধী ও একনায়ক শাসকদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং আইএনএফ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
এর আগেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, বাণিজ্য চুক্তি ও পরমাণুর মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। এবারও তিনি ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ হতে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাল্লার পরমাণুবাহী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি নিষিদ্ধ করণ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানোয় নতুন করে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
এদিকে, আমেরিকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া আইএনএফ চুক্তি থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসেবে অভিহিত করেছেন। এ অবস্থায় ইউরোপ আবারো আমেরিকা ও রাশিয়ার পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতার মাঝখানে আটকা পড়েছে। কারণ এর আগেও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আমেরিকার প্রতিযোগিতার কেন্দ্রে ছিল ইউরোপ। রাশিয়া নতুন করে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন শুরু করেছে এমন অজুহাতে ওই দেশটির সঙ্গে সম্পাদিত পরমাণু চুক্তি থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বেরিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ট্রাম্পের এ ঘোষণার ফলে পরমাণু অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে আর কোনো সীমাবদ্ধতা রইল না এবং ইউরোপের বিভিন্ন স্থানে এসব ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে। যদিও ইউরোপ ট্রাম্পের এ ধরণের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।
ইউরোপীয় কমিশন এক বিবৃতিতে ইউরোপে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করে আইএনএফ চুক্তি টিকিয়ে রাখার জন্য রাশিয়া ও আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আইএনএফ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কট্টর সমর্থক মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বুল্টন বলেছেন, "আমেরিকা ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও ইউরোপে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শুধু ইউরোপ নয় একই সঙ্গে পূর্ব এশিয়ায়ও চীনের ক্ষেপণাস্ত্রের মোকাবেলায় আমেরিকা নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, আমেরিকার এসব পদক্ষেপ বিশ্ব শান্তির জন্য বিরাট হুমকি।#
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৪
- খবরসহ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সব লেখা ফেসবুকে পেতে এখানে ক্লিক করুন এবং নোটিফিকেশনের জন্য লাইক দিন