আমি চাই ইরানি কর্মকর্তারা আমাকে টেলিফোন করুক: ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানি নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ইরানের প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের চরম বিদ্বেষী নীতির জের ধরে দু’দেশের মধ্যে যখন উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করছে তখন তিনি এ আগ্রহ প্রকাশ করলেন।
ট্রাম্প বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমি ইরানের ব্যাপারে যা দেখতে চাই তা হলো তারা (আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য) আমাকে টেলিফোন করছে।” তিনি বলেন, আমি চাই ইরানি কর্মকর্তারা একটি ভালো চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনা করতে আমাকে টেলিফোন করুক। এ ধরনের চুক্তি ইরানকে চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে সহযোগিতা করবে। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ইরানিদের কাছ থেকে বেশি কিছু চান না; শুধু চান ইরানিরা পরমাণু অস্ত্র তৈরি না করুক।
ট্রাম্প এমন সময় এ দাবি করলেন যখন পশ্চিমাদের ভাষায় ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে বাধা দেয়ার লক্ষ্যে আমেরিকাসহ ছয় বিশ্বশক্তি ২০১৫ সালে তেহরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা সই করে। কিন্তু এই ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছরের মে মাসে গোটা বিশ্বের বিরোধিতা উপেক্ষা করে সেই সমঝোতা থেকে আমেরিকাকে বের করে নেন।
হোয়াইট হাউজের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করার একই সঙ্গে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দেন। পাশাপাশি সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তার প্রশাসনের ইরান নীতি প্রত্যাখ্যান করে জন কেরি ইরানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ‘লোগান আইন’ লঙ্ঘন করছেন এবং এজন্য তার বিচার হতে পারে।
ট্রাম্প বলেন, “জন কেরি (টেলিফোনে) তাদের (ইরানিদের) সঙ্গে অনেক বেশি কথা বলছেন এবং তিনি তাদেরকে বলছেন তারা যেন আমাকে ফোন না করে। এটি লোগান আইনের লঙ্ঘন এবং অকপটে বলতে গেলে এজন তার বিচার হওয়া উচিত।”
ট্রাম্পের এ বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জন কেরির একজন মুখপাত্র সিএনএন’কে বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ যা কিছু বলেছেন তার সব ভুল এবং কল্পকাহিনী। তিনি বাস্তবতা বুঝতে পারেননি, আইন বোঝেননি এবং সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে আমেরিকাকে কীভাবে নিরাপদ রাখতে হয় সেই কূটনীতি তিনি রপ্ত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।”
জন কেরি গত বছর এক বক্তব্যে বলেন, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফের সঙ্গে ‘তিন থেকে চারবার’ সাক্ষাৎ করেছেন এবং এসব সাক্ষাতে পরমাণু সমঝোতাসহ অন্যান্য বিষয়ে কথা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৭৯৯ সালে অনুমোদিত লোগান আইনে আমেরিকার শত্রু ভাবাপন্ন কোনো দেশের সঙ্গে ওয়াশিংটনের অনুমতি ছাড়া আলোচনা করাকে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৮০২ এবং ১৮৫২ সালে মাত্র দুই ব্যক্তি এই আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধীদের পাশাপাশি কোনো কোনো মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, ট্রাম্পের সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন ক্ষমতা গ্রহণের আগে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত তৎকালীন রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লোগান চুক্তি লঙ্ঘন করেছিলেন।#
পার্সটুডে/মো. মুজাহিদুল ইসলাম/১০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।