সুচি'র বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করল রোহিঙ্গারা
নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজে-তে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি'র বক্তব্য প্রত্যখ্যান করেছে রোহিঙ্গা মুসলমানরা। আন্তর্জাতিক আদালতে সুচি'র বক্তব্যের পর তারা বলেছেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আদারতে সুচি মিথ্যাচার করেছেন।
গতকাল (বুধবার) আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বক্তব্য দেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি। তিনি বলেছেন, তার দেশের সেনাসদস্যরা যুদ্ধাপরাধ করে থাকলে তা মিয়ানমারের দেশীয় তদন্ত ও বিচারব্যবস্থায় নিষ্পত্তি করা হবে। এটিকে আন্তর্জাতিকীকরণের সুযোগ নেই। আদালতে গাম্বিয়ার দেওয়া বিভিন্ন তথ্যকে বিভ্রান্তিকর এবং রাখাইনে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে সংঘাতের ফল হিসেবে অভিহিত করেন অং সান সু চি।
সুচির এমন বক্তব্যে হতাশ বাংলাদেশের বিভিন্ন শিবিরে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গারা। তারা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন এবং অং সান সুচিকে সরাসরি মিথ্যুক বলে অভিহিত করছেন। তবে নিষেধাজ্ঞা থাকায় রোহিঙ্গারা কোনো শিবিরে বিক্ষোভ কিংবা প্রতিবাদ সমাবেশ করতে পারেননি।
বাংলাদেশে আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের অধিকার সংগঠন 'আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস' বা এআরএসপিএইচ'র একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমকে বলেছেন, সুচি এবারও মিথ্যাচার করলেন। রোহিঙ্গা গণহত্যা মিয়ানমারের দেশীয় তদন্ত ও বিচারব্যবস্থায় নিষ্পত্তি কখনোই সম্ভব নয়। এতে ন্যায়বিচার আশা করা যায় না। সুচি'র বক্তব্য রোহিঙ্গারা প্রত্যাখ্যান করেছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যে সে দেশের সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১১ লাখ।
গতকাল মঙ্গলবার অং সান সুচির উপস্থিতিতে রোহিঙ্গা গণহত্যার সারাংশ তুলে ধরেন আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। তিনি বলেন, বিশ্ববিবেকের কালিমা মোচনে আর দেরি করা চলে না।
গাম্বিয়ার আইনমন্ত্রী আরও বলেন, একমাত্র এই আদালতই শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারে, আশা জাগাতে পারে। আইসিজে মিয়ানমারকে বলুক যে এখনই রোহিঙ্গা শিশুদের হত্যা বন্ধ করতে হবে, নৃশংসতার অবসান ঘটাতে হবে। গাম্বিয়ার এমন বক্তব্যকে স্বাগত জানায় রোহিঙ্গারা।#
পার্সটুডে/এসএ/১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।