মে ০২, ২০২০ ১৮:৫২ Asia/Dhaka
  • জোসেফ বোরেল
    জোসেফ বোরেল

ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে আমেরিকা দেশটির ওপর কঠিন নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। এমনকি ইরানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাও নবায়ন করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আগামী অক্টোবরে এ নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে।

ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে পরমাণু সমঝোতায় সইকারী দেশগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আমেরিকা এখন আর এ চুক্তির কোনো অংশীদার নয়। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ৮মে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রমাণ করেছেন তিনি আর পরমাণু সমঝোতার অংশীদার হতে চান না। আমি ট্রাম্পকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ট্রাম্প এ  সংক্রান্ত বৈঠকের একটিতেও যোগ দেননি। অতএব এটা পরিষ্কার যে আমেরিকা এখন আর পরমাণু সমঝোতার অংশীদার নয়।

ইরানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নবায়নের জন্য মার্কিন সরকারের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল আরো বলেছেন, জাতিসংঘের অন্য সদস্য দেশের মতো ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার আবেদন জানানোর অধিকার আমেরিকার রয়েছে। এখন নিরাপত্তা পরিষদে কি সিদ্ধান্ত নেয় সেটাই আমাদের দেখতে হবে।

জোসেফ বোরেল যদিও ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার জন্য সরাসরি মার্কিন দাবির বিরোধিতা করেননি কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞার পক্ষেও তিনি মত দেননি। তিনি বলেন, আমেরিকা ২০১৮ সালে শুধু যে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেছে তাই নয় একইসঙ্গে এ সংক্রান্ত যৌথ কমিশনের কোনো বৈঠকেও তারা যোগ দেয়নি। কিন্তু তারপরও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এখন দাবি করছেন তারা পরমাণু সমঝোতার অংশীদার এবং মশে ম্যাকানিজমসহ যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার তাদের রয়েছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের এসব বক্তব্য থেকে বোঝা যায় পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি ও অযৌক্তিক। জাতিসংঘের সদস্য হিসেবে নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব তুলে ধরার অধিকার আমেরিকার রয়েছে। তবে রাশিয়া ও চীন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য। তাই ওয়াশিংটনের এটাও বোঝা উচিত ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নবায়নের মার্কিন প্রস্তাব বিরোধিতার সম্মুখীন হবে। এ কারণে জোসেফ বোরেল সরাসরি ইরানবিরোধী অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে মার্কিন প্রস্তাবের বিরোধিতা করেননি ঠিকই কিন্তু তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের চেষ্টা নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটিতে  বাতিল হয়ে যেতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে আমেরিকার রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট দল উভয়েই ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখতে চায়। কিন্তু চীন ও রাশিয়া এরই মধ্যে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতায় করায় ওয়াশিংটন তেহরানের ব্যাপারে তার লক্ষ্যে পৌছতে পারবে কিনা তাতে সন্দেহ রয়েছে।#   

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩০

ট্যাগ