বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের মূর্তি ভাঙ্গা অব্যাহত!
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হুমকি! গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে উৎখাত করে দেশটিতে নতুন কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হুমকি দিয়েছেন কোনো কোনো প্রতিবাদী নেতা।
'কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনের মূল্য রয়েছে' শীর্ষক শ্লোগানের আওতায় গড়ে তোলা আন্দোলনের নেতা হক নিউসাম বলেছেন, মার্কিন সরকার প্রতিবাদীদের দাবি-দাওয়া পূরণে ব্যর্থ হলে জনগণ এ দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আগুন দিবে এবং নতুন ব্যবস্থা চালু করবে।
একটানা ত্রিশ দিন ধরে পুলিশি পাশবিকতা ও বর্ণবাদ বিরোধী বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে মার্কিন শহরগুলো। পুলিশি বর্বরতায় জর্জ ফ্লয়েড-এর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছোট বড় সব শহরে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভের আগুন। একইসঙ্গে বাড়ছে পুলিশি বর্বরতা ও নির্মম দমন-পীড়ন এবং বাড়ছে পুলিশের হাতে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা।
ফলে ক্রমেই আরো ফুঁসে উঠছে বিক্ষোভ। দীর্ঘ দিনের চাপা ক্ষোভগুলোর বিস্ফোরণ ঘটেছে দেশটিতে। প্রতিবাদী মার্কিন নেতারা এখন প্রকাশ্যেই বিপ্লব সংঘটনের ও মার্কিন সরকার বদলে দেয়ার কথা বলছে। প্রতিবাদীদের দাবি এখন কেবলই বর্ণবাদ দূর করা ও মার্কিন পুলিশ-ব্যবস্থায় সংস্কারের দাবিতে সীমিত নয়। এর কারণ হল প্রতিবাদীদের ওপর কঠোর দমন-পীড়নের সরকারি নীতি! প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যের গভর্নর এই কঠোর দমন নীতি গ্রহণ করায় প্রতিবাদী জনগণ আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে এখন সার্বিক ব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তন আনার দাবি তুলছেন।
প্রতিবাদীরা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কনসহ অনেক বিশিষ্ট মার্কিন ব্যক্তিত্বদের মূর্তি ভেঙ্গেছেন। কারণ বর্ণবাদ ও দাসপ্রথা টিকিয়ে রাখা বা এ প্রথাকে ভিন্ন আঙ্গিকে জিইয়ে রাখার ব্যাপারে এই ব্যক্তিত্বদের ভূমিকা ছিল।
একই কারণে সান ফ্রান্সিসকোতে বিক্ষোভকারীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা ফ্রান্সিস স্কট কি এবং জুনিপেরো সেরার মূর্তিও ভেঙ্গেছে !!!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আবারও গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে এমন আশঙ্কাও করছেন অনেকে। গত দুই দশক ধরে মার্কিন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সমাজ-ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার দাবিতে অনেক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হলেও কাজের কাজ কিছুই করেনি সরকারগুলো। তাই প্রতিবাদী জনগণ এখন অনেক বেশি মরিয়া হয়ে উঠছেন। তবে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী প্রতিবাদীদের চেয়েও অনেক বেশি মার্কিন নাগরিক সড়ক-বিক্ষোভে অংশ নিতে আগ্রহী নন।
মার্কিন জনগণ আয়-উপার্জনসহ সব ক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য ও দুর্নীতি দূর করার দাবি জানাচ্ছেন। শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে নৈতিক বিচ্যুতি যেমন প্রকট তেমনি তারা একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর হাতে দেশের বেশিরভাগ সম্পদ কুক্ষিগত রাখার জন্যও দায়ী। অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট বা 'ওয়াল-স্ট্রিট দখল কর' শীর্ষক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল এ কারণেই।
কয়েক দিন আগে মার্টিন লুথার কিংয়ের কন্যা বার্নিস কিং বর্ণবাদী শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে নিহত এক কৃষ্ণাঙ্গের দাফন অনুষ্ঠানের সমাবেশে বলেছেন: পুলিশি ব্যবস্থাসহ নানা ক্ষেত্রে সংস্কার আনার দাবি না মানা পর্যন্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/২৯