ফ্রান্স থেকে ২৩১ জন বিদেশিকে বহিষ্কার: ইসলাম বিদ্বেষীদের পক্ষে ম্যাকরনের সাফাই
(last modified Tue, 20 Oct 2020 12:31:51 GMT )
অক্টোবর ২০, ২০২০ ১৮:৩১ Asia/Dhaka

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফ্রান্সে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ মোকাবেলার অজুহাতে সেদেশে মুসলমানদের ওপর চাপ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসাবে ফ্রান্স সরকার উগ্রপন্থী তৎপরতার অভিযোগ এনে ২৩১ জন বিদেশী নাগরিককে সেদেশ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একজন চেচেন নাগরিকের হাতে ফ্রান্সের এক শিক্ষক নিহত হওয়ার পর দেশটির সরকার উগ্রপন্থী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলে ২৩১ জন নাগরিককে বের করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল।

ইউরোপে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মুসলমান বাস করে ফ্রান্সে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওই দেশটিতে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী প্রচার সবচেয়ে বেশি এবং প্রায়ই বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ(সা.)এর প্রতি অবমাননার ঘটনা ঘটছে। উদাহরণ স্বরূপ স্যামুয়েল প্যাটি নামে এক শিক্ষক ক্লাসে তার এক ছাত্রের হাতে নিহত হন। ওই শিক্ষক শার্লি এবদো ম্যাগাজিনে প্রকাশিত বিশ্বনবীকে নিয়ে ব্যাঙ্গ কার্টুন ক্লাসে ছাত্রদেরকে প্রদর্শন করে। এর প্রতিবাদে ওই ছাত্র শিক্ষককে হত্যা করে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন এ ঘটনাকে ইসলামপন্থীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করে দাবি করেছেন, বাক স্বাধীনতার পক্ষে শিক্ষা দেয়ার কারণেই ৪৭ বছর বয়সী ওই  শিক্ষককে হত্যা করা হয়েছে। তিনি এমন সময় ধর্মের প্রতি অবমাননাকে বাক স্বাধীনতা হিসেবে অভিহিত করলেন যখন এ দেশটি কথিত ইহুদি নিধনযজ্ঞ হলোকাস্টের ঘটনা নিয়ে আপত্তি জানানো বা এটাকে অস্বীকার করাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। শার্লি এবদো ম্যাগাজিনে ইসলাম অবমাননার ঘটনাকে ম্যাকরন এমন সময় বাক স্বাধীনতা বলে দাবি করলেন যখন আন্তর্জাতিক আইন ও বাক স্বাধীনতার ব্যাখ্যায় কোনো ধর্ম বিশ্বাসের প্রতি অবমাননা করাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।        

প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন ও ফরাসি সরকার ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিশেষ করে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)র বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ার পরিবর্তে উল্টো বাক স্বাধীনতার দোহায় দিয়ে অপরাধীদের সমর্থন দেয়ায় ইসলাম বিদ্বেষীরা আরো বেশি উৎসাহী হচ্ছে। যার ফলে মুসলমানদের পক্ষ থেকেও পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ফরাসি সরকার ২৩১ জন বিদেশিকে বহিষ্কারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা প্রকৃত অপরাধীদেরকে আড়াল করার প্রচেষ্টা মাত্র এবং মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থী হিসাবে চিহ্নিত করার অপচেষ্টা। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে মার্কিন নেতৃত্বে ব্রিটেনের মতো ইউরোপের ফ্রান্সসহ আরো বেশ কিছু সরকার পশ্চিম এশিয়ায় উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে আইএস সন্ত্রাসীদের গড়ে তোলার পেছনে পাশ্চাত্যের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলে দখলদার ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ বুহ্য ভেঙে ফেলা। ফ্রান্সের তৈরি সন্ত্রাসীরাই যখন ফ্রান্সে হামলা চালাচ্ছে তখন তারা দায়ভার ইসলাম ও সমগ্র মুসলমানদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে।

যাইহোক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও সন্ত্রাসী ঘটনা রোধের জন্য ফ্রান্স সরকারের উচিত ইসলাম অবমাননার ঘটনাগুলো প্রতিহত করা।#   

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২০

ট্যাগ