শেষ পর্যন্ত ইরানের ব্যাপারে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করলেন পম্পেও
(last modified Mon, 15 Mar 2021 12:30:36 GMT )
মার্চ ১৫, ২০২১ ১৮:৩০ Asia/Dhaka
  • মাইক পম্পেও
    মাইক পম্পেও

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর নজিরবিহীনভাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির কৌশল গ্রহণ করেছিলেন। ওয়াশিংটনের অবৈধ দাবির কাছে মাথা নত করতে তেহরানকে বাধ্য করাই ছিল ট্রাম্পের মূল উদ্দেশ্য। যদিও ট্রাম্পের ওই কৌশল শেষ পর্যন্ত চরম ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় এবং তিনি কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেননি।

ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে কট্টর ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও যিনি ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি ইরানের ব্যাপারে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেছেন। ইরানকে নতিস্বীকার করতে এবং আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে ট্রাম্প প্রশাসন চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে পম্পেও বলেন, আমরা কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারিনি।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অনেক দেরিতে হলেও ব্যর্থতার কথা স্বীকার করা থেকে বোঝা যায় সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞায় কাজ হয়েছে বলে এর আগে যে দাবি করেছিলেন তার অসারতা প্রমাণিত হয়েছে। ট্রাম্প ও পম্পেও দুজনই বলেছিলেন, তাদের ভাষায় পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরান আরো ভালো চুক্তিতে পৌঁছার ব্যাপারে আলোচনায় বসতে বাধ্য হবে। কিন্তু আড়াই বছর ধরে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির চেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে এবং তারা কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি। এ কারণে ট্রাম্প তার দায়িত্ব পালনের শেষের দিকে এসে তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন। সমালোচকরা ইরানের ব্যাপারে সঠিক কর্মপরিকল্পনা না থাকার জন্য ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেছেন, এতে করে এ অঞ্চলে অযথা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় ইরানের ব্যাপারে ট্রাম্পের ব্যর্থতার কথা শুধু যে মার্কিন মিত্ররা শিকার করেছে তাই নয় একইসঙ্গে ওয়াশিংটনের অনেক কর্মকর্তাও একাধিকবার শিকার করেছেন। মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক পল পিলার বলেন, ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য ট্রাম্পের সকল চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে এবং খোদ মার্কিন কর্মকর্তারাই তা স্বীকার করছেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এসব স্বীকারোক্তি থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শিক্ষা নিতে পারেন যাতে ট্রাম্পের ভুলের পুনরাবৃত্তি করা থেকে তিনি বিরত থাকতে পারেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে বাইডেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি ইরানের ব্যাপারে ট্রাম্পের নীতি থেকে সরে আসবেন এবং পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসবেন। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের দুই মাস পরও তিনি ইরানের ব্যাপারে ট্রাম্পের নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছেন। তিনি ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছেন এবং এমনকি কিছু দিন আগে তিনি প্রথম নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, বাইডেনের বর্তমান নীতিও ব্যর্থ হবে। কারণ এ যাবত যুক্তরাষ্ট্রের সকল নিষেধাজ্ঞা ইরান সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করে এসেছে। তাই বাইডেনও ইরানকে নতজানু করতে পারবেন না।#          

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৫

ট্যাগ