এপ্রিল ১৯, ২০২১ ০৫:১১ Asia/Dhaka
  • ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান (ফাইল ছবি)
    ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান (ফাইল ছবি)

রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য ইউক্রেন সরকার ইরানের আকাশসীমায় সেদেশের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন পদস্থ কর্মর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা  আইআরআইবি’কে বলেন, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে তেহরানের অদূরে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর দেশটি তেহরানকে একটি প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ইরান যেন একথা ঘোষণা করে যে, রাশিয়ায় তৈরি ট্যুর এম-ওয়ান বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল না থাকায় ইরান ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ঠিক এ কারণে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক খেলায় মেতে ওঠে ইউক্রেন।

মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান (ফাইল ছবি)

ইরানের এই নিরাত্তা কর্মকর্তা বলেন, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের আকাশে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় কিয়েভের হাত থাকার অভিযোগের নিস্পত্তি না হওয়ায় ইউক্রেন সরকার দু’টি ঘটনাকে এক সুতায় গেঁথে দিয়ে নিজেকে দায়মুক্ত করতে চেয়েছিল।

২০১৪ সালের ওই ঘটনায় ২৯৮ যাত্রী নিহত হন। ইউক্রেন একথা বলতে চেয়েছিল যে, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়েই মালয়েশিয়ার বিমানটি নামানো হয়েছিল এবং ইরানের আকাশে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি যেহেতু রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুলিতে বিধ্বস্ত হয়েছে তাই ওই ব্যবস্থাতে ত্রুটি রয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কর্মকর্তা আরো বলেন, ক্রিমিয়া উপত্যকার মালিকানা নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের তীব্র উত্তেজনা থাকার কারণে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় মস্কোর ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। তিনি আরো বলেন, কিন্তু ইরান প্রকৃত সত্য বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে বলেছে, মানবীয় ভুলের কারণে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটিকে গুলি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক খেলার কোনো অবকাশ নেই।

২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে তেহরানের অদূরে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমানটি বিধ্বস্ত হয় (ফাইল ছবি)

২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হওয়ার পর ইরান ইরাকে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি আইন আল-আসাদে ভয়াবহ প্রতিশোধমূলক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। মার্কিন সেনারা পাল্টা হামলা চালাতে পারে- এই আশঙ্কা মাথায় রেখে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়। এরকম পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী একটি বিমান লক্ষ্য করে ভুল করে গুলি চালালে দুঃখজনকভাবে বিমানটি ভূপাতিত হয় এবং এর ১৭৬ আরোহীর সবাই নিহত হন।

কিন্তু ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উলুক্সি দানিলোভ গত শুক্রবার এক বক্তব্যে দাবি করেন, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছে ইউক্রেনের যে যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত হয়েছিল সেটি কোনো ভুল বা দুর্ঘটনা ছিল না বরং ইরান ইচ্ছা করেই বিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে।#

পার্সটুডে/এমএমআই/১৯ 

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ