নানাজির জন্য প্রাণ কাঁদলে আলী আকবরকে দেখতাম: ইমাম হুসাইন (আ)
(last modified Wed, 18 May 2016 20:34:52 GMT )
মে ১৯, ২০১৬ ০২:৩৪ Asia/Dhaka
  • নানাজির জন্য প্রাণ কাঁদলে আলী আকবরকে দেখতাম: ইমাম হুসাইন (আ)

আজ কারবালার অন্যতম প্রধান বীর শহীদ ও নবী-পরিবারের সদস্য আলী আকবর ইবনে ইমাম হুসাইন (আ)’র পবিত্র জন্ম-বার্ষিকী। আজ হতে ১৪০৪ চন্দ্র বছর আগে ৩৩ হিজরির এই দিনে (১১ শাবান) তিনি পবিত্র মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন। অবশ্য কোনো কোনো বর্ণনা অনুযায়ী তাঁর জন্ম হয়েছিল ৪২ হিজরিতে। তাঁর মায়ের নাম ছিল লায়লা।

তাঁর চেহারা, চাল-চলন ও কথা-বার্তা ছিল প্রায় অবিকল বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা)’র মত। হযরত আলী আকবর ছিলেন নানা সৎ স্বভাব ও মহান গুণের অধিকারী। তাই এই মহাপুরুষের জন্ম-বার্ষিকী ইরানে যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়। তিনি ছিলেন অত্যন্ত জ্ঞানী ও বাগ্মী। তিনি হাদিসও বর্ণনা করতেন। মহান আল্লাহকে ধন্যবাদ যে তিনি এমন এক মহাপুরুষ উপহার দিয়েছেন মানবজাতিকে। এই মহান যুবকের জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে সবাইকে জানাচ্ছি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

ইমাম হুসাইন (আ) বলতেন, নানাজির কথা মনে হলে তাঁর জন্য যখন আমাদের প্রাণ কাঁদত তখন আমরা আলী আকবরের দিকে তাকাতাম। আর এ জন্যই আশুরার দিনে তাঁকে যুদ্ধে পাঠাতে ইমাম হুসাইন (আ) খুবই কষ্ট অনুভব করেছিলেন। তাঁর শাহাদতের ঘটনায় ইমাম অশেষ বেদনায় মুষড়ে পড়েছিলেন। তাই যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তাঁর লাশ শিবিরে ফিরিয়ে আনতে তিনি নিজে যাননি, বরং বনি হাশিমের যুবকদের পাঠান। ফুফু জাইনাবও ব্যাকুল হয়ে ছুটে আসেন ভাতিজার লাশের কাছে। পিতার পবিত্র মাজারের পাশেই রয়েছে তাঁর কবর। 

পবিত্র আশুরার দিনে হযরত আলী আকবরই ছিলেন নবী পরিবারের প্রথম সদস্য যিনি শাহাদত বরণ করেন। শাহাদত বরণের আগে তিনি অত্যন্ত সাহসী বীরের মত লড়াই করে বহু ইয়াজিদি সেনাকে জাহান্নামে পাঠান।

কোনো কোনো বর্ণনা অনুযায়ী তাঁকে যুদ্ধ না করার শর্তে নিরাপত্তার প্রস্তাব দিয়েছিল ইয়াজিদ বাহিনী। কিন্তু তিনি তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেন। ইয়াজিদ বাহিনী ভেবেছিল তাঁর মা বনি উমাইয়া গোত্রের হওয়ায় তিনি সেই সম্পর্কের কথা ভেবে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকবেন!

বলা হয় তিনি যুদ্ধের ময়দানে জোহরের নামাজের সময় হলে আজান দেন। তাঁর কণ্ঠস্বরও ছিল হুবহু প্রপিতামহ বিশ্বনবীর (সা) কণ্ঠের মত। এতে ইয়াজিদি বাহিনীর অনেক বয়স্ক সেনা চমকে ওঠে। অনেকের কাছেই মনে হচ্ছিল যেন যুবক মুহাম্মাদই (সা) কারবালার ময়দানে আবির্ভূত হয়েছেন! কিন্তু পাষাণ-হৃদয় ইয়াজিদি সেনারা তাঁকে লক্ষ্য করে বর্শা ও তিরের বৃষ্টি বর্ষণ করতে দ্বিধা বোধ করেনি। চির-অভিশপ্ত ও জাহান্নামি হোক তাঁর হত্যাকারী। #

মু. আ. হুসাইন/১৮