অক্টোবর ২৫, ২০২২ ১৭:২০ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ২৫ অক্টোবর মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • মতামত ক্ষমতাসীনেরা কি ভয় পেয়েছে-প্রথম আলো
  • ঘূর্ণিঝড়ে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত, সমুদ্রে ড্রেজার ডুবে ৮ শ্রমিকের মৃত্যু-কালের কণ্ঠ
  • জ্বালানি উপদেষ্টার বক্তব্যে তোলপাড়, দলে অস্বস্তি কুইক ম্যাজিকের ভরাডুবি-মানবজমিন
  • বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে, তাদের কি লাজ শরম নেই: কাদের- যুগান্তর
  • ব্রিটেনের ৫৭ তম প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণ করলেন ঋষি সুনাক-ইত্তেফাক
  • রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ইরান-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:

  • ব্রিটেনের মতো ভারতেও চাই সংখ্যালঘু প্রধানমন্ত্রী, সুনাক প্রসঙ্গ তুলে দাবি বিরোধীদের-সংবাদ প্রতিদিন
  • কোনও প্রমাণ ছাড়াই স্বামীকে ‘চরিত্রহীন’ ও ‘মাতাল’ বলা নিষ্ঠুরতা, জানিয়ে দিল হাই কোর্ট–আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ‘আম্পায়াররা কোনও ভুল করেননি’, ভারত–পাক ম্যাচের বিতর্কিত ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন ৫ বারের বিশ্বসেরা আম্পায়ার-আজকাল

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

জনাব সিরাজুল ইসলাম কথাবার্তার বিশ্লেষণে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি। 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১.  স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক প্রাপ্ত দেশের বিশিষ্ট গুণীজনদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হোক। নির্মলেন্দু গুণের এ বক্তব্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকা। কী বলবেন তার এ বক্তব্য সম্পর্কে?

২. 'ইউক্রেন যুদ্ধে ইরান জড়িত নয়, কোনো পক্ষের কাছে অস্ত্রও বিক্রি করছে না'। কিন্তু পশ্চিমারা ইরানের বক্তব্য বিশ্বাস করছে না বরং তারা তাদের অবস্থানেই রয়েছে। আসলে বিষয়টি কী?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

জ্বালানি উপদেষ্টার বক্তব্যে তোলপাড়, দলে অস্বস্তি কুইক ম্যাজিকের ভরাডুবি-মানবজমিন

লোড শেডিং

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরই বেশ কয়েকটি ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছিল। এরপর ক্রমে এ ধরনের কেন্দ্র আরও বেড়েছে। রেন্টাল এবং কুইক রেন্টাল এসব কেন্দ্র স্থাপনের সময় বলা হয়েছিল আপৎকালীন সংকটের সুরাহা করতে এই ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব প্রকল্প হবে স্বল্প সময়ের। স্বল্পমেয়াদি এই রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদেও চলছে। 

এক যুগের বেশি সময় ধরে চলা এই ভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রই পুরো বিদ্যুৎ খাতের জন্য সর্বনাশ ডেকে এনেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসুক বা না আসুক দিতে হয়েছে ক্যাপাসিটি চার্জ।  গত এক যুগে ভাড়ায় চলা বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে দিতে হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার ক্যাপাসিটি চার্জ। সাধারণত প্রতি ইউনিট সাত থেকে আট টাকায় যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় সেই বিদ্যুৎ এসব কেন্দ্র থেকে ১৭ টাকায় কিনতে হয়েছে। কোনো কোনো কেন্দ্রের বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি দাম পড়েছে আরও কয়েকগুণ বেশি।  

রেন্টাল-কুইক রেন্টালে বাড়তি ব্যয় বিদ্যুৎ বিভাগের জন্য বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন গ্যাস এবং জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুতের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাবে দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। গড়ে উৎপাদন হচ্ছে ১২ হাজার মেগাওয়াটের মতো। দিনে অন্তত ৩ হাজার মেগাওয়াটের ঘাটতি থাকছে। এ কারণে করতে হচ্ছে ঘন ঘন লোডশেডিং। দিনে কোনো  কোনো এলাকায় আট থেকে দশ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে শিল্প কারখানার উৎপাদনে ধস নেমেছে। বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কিত ব্যবসায়ীরা। 

এমন অবস্থার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ  জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহীর একটি বক্তব্যে হতাশা ছড়িয়েছে সর্বত্র। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক সভায় তিনি পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেছেন, প্রয়োজনে দিনের বেলা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হবে। তার এই বক্তব্যে উপস্থিত ব্যবসায়ীরাই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তারা পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান। অসহায় উপদেষ্টা অবশ্য খুব একটা আশার বাণী দিতে পারেননি। সহজে যে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয় তা পরিষ্কার হয়েছে তার বক্তব্যে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য উপদেষ্টার অনেক দায় আছে। তিনি এমন বক্তব্য দিয়ে মানুষকে আরও হতাশায় ডুবিয়েছেন। সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি যখন পরিস্থিতিকে এতো সংকটপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন তখন মানুষ ধরে নিতে বাধ্য হবে যে পরিস্থিতি আর সরকারের নিয়ন্ত্রণের মতো অবস্থায় নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কুইক রেন্টাল ম্যাজিক এখন এই খাতের ভরাডুবির বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

রোববার প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ বিষয়ক উপদেষ্টার দেয়া বক্তব্যে দেশজুড়ে তোলপাড় তৈরি হয়েছে। খোদ আওয়ামী লীগেই তার বক্তব্য নিয়ে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। উপদেষ্টার বক্তব্য ব্যক্তিগত, দলের নয় বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞরাও তার এই বক্তব্যে ভালোভাবে নেননি। বরং তারা বলেছেন, বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য জ্বালানি উপদেষ্টাই দায়ী। তার জন্যই সর্বনাশ হয়েছে এ খাত।

সরকারের অব্যবস্থাপনা, ভুল নীতি এবং দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের বর্তমানে এই অবস্থা চলছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে নয়। আগের ভুলের কারণে আমরা এখন কষ্ট করছি। তিনি বলেন, দেশে ডলারের ব্যাপক সংকট। এলএনজি আনা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, জ্বালানি উপদেষ্টার বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রীই তো আপত্তি তুলেছেন। জ্বালানি উপদেষ্টা বিদ্যুৎ খাত ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট।

কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম মানবজমিনকে বলেন, সরকার বলছে ২৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা আছে। কিন্তু এখন বলছে বিদ্যুৎ নেই। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ দিতে পারবে না। সরকারের সক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ  আরও  বলেন, ভোক্তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। রসাতলে গিয়েছে দেশ। সঠিকভাবে বিদ্যুৎ খাত উন্নত হলে পয়সা বানানো কঠিন হতো। লুণ্ঠন করে এ খাত থেকে টাকা বানানো হয়েছে। সর্বনাশ করা হয়েছে খাতটিকে। লোডশেডিং হচ্ছে। সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে আছেন। আর ডিজেল পুড়িয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণির লোক। এতে বড় লোকরা সুরক্ষা ঠিকই পাচ্ছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের দাম ওঠানামা করবেই। কিন্তু ডলার পরিশোধ করে আমরা কতটুকু আমদানি করতে পারবো তা সক্ষমতার উপর নির্ভর করে।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

এদিকে যুগান্তরের একটি খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, বিএনপি নেতারা বিদ্যুৎ এবং রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন কোন মুখে? তাদের কি বিন্দুমাত্র লাজ শরম নেই? 

ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার সচিবালয়ে তার দপ্তরে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন। 

সেতুমন্ত্রী বলেন, যারা দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিল, যাদের শাসনামলে দিনের পর দিন লোডশেডিং চলত, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকত না; তারা আজ বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে কোন মুখে? 

তিনি বিএনপি নেতাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়ে প্রতারণার কথা জনগণ এখনো ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি বিদ্যুতের দাবিতে মিছিলে গুলির কথা, হারিকেন-কুপি নিয়ে বিক্ষোভের কথা এবং বিদ্যুৎ ভবন ঘেরাও করার কথা।

মতামত ক্ষমতাসীনেরা কি ভয় পেয়েছে-প্রথম আলো

চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহ হয়ে খুলনা। বিএনপি একের পর এক বিভাগীয় শহরে জনসভা করে চলেছে। পরবর্তী গন্তব্য রংপুর। নির্বাচনের চৌদ্দ-পনেরো মাস আগে এ শোডাউন নজর কাড়ছে। একই সঙ্গে জন্ম দিয়েছে অনেক প্রশ্নের।

এর আগে বিএনপি যেখানেই মিছিল-সমাবেশ করতে গেছে, তারা নানা বাধার সামনে পড়েছে। অনেক জায়গায় তাদের ওপর হামলা হয়েছে। তাতে প্রাণহানিও হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপিকে কর্মসূচি পালনে বাধা দেওয়া হবে না। তাঁকে এ কথা বলতে হলো কেন? বলার পরও পরিস্থিতি বদলায়নি। তাহলে কি ধরে নিতে হবে, এটা ছিল কথার কথা? নাকি তাঁর দলের মধ্যে অন্তর্ঘাতীরা সক্রিয় হয়েছে। এর আগে দেখেছি, কোনো গোলমাল হলেই তাঁরা বলতেন, দলে অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। তারাই এসব করছে। কাজটা যে মন্দ, তা তাঁরা স্বীকার করেন। তাই দায় নিতে চান না।

বিএনপি আগেভাগে জানান দিয়েই সমাবেশগুলো করছে, যাতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এসে যোগ দিতে পারে। উনিশ শ পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে দেখা গেছে, মানুষ পুঁটুলিতে চিড়া-মুড়ি-গুড় নিয়ে শেরেবাংলার জনসভা কিংবা মাওলানা ভাসানীর কৃষক সমাবেশে যোগ দিতে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকত। এখন আর এটার দরকার হয় না। এখন রাস্তাঘাট হয়েছে, পরিবহন-সুবিধা বেড়েছে। ফলে কয়েক ঘণ্টার প্রস্তুতি নিয়ে মানুষ আসতে পারে। কিন্তু ময়মনসিংহ আর খুলনায় দেখলাম অন্য রকম দৃশ্য। মানুষ যাতে দূর থেকে এসে সমাবেশে যোগ দিতে না পারে, সে জন্য বিনা নোটিশে পরিবহন ধর্মঘট হয়েছে। প্রতিবারই দেখা গেছে, ধর্মঘটের আয়ু দুই দিন। জনসভা শেষ হলো আর বাস চলতে শুরু করল।

মানুষ কিন্তু ঠিকই এসেছে নানানভাবে—মোটরবাইক, নছিমন, রিকশাভ্যান আর নৌকায় চড়ে। বাস চলাচল করলে হয়তো আরও লোক আসত। যারা এত কষ্ট করে কী আশায় ছুটে আসে, তা নিয়ে গবেষণা করার দরকার নেই। যেহেতু সমাবেশগুলো সরকারবিরোধী, অর্থাৎ আওয়ামী লীগবিরোধী; বোঝা যায়, তারা সরকার পরিবর্তন চায়। এত দিন একটা কথা ছিল, বিএনপির নেতা-কর্মীরাই শুধু সমাবেশ করেন। ‘জনতা’ কই? সাম্প্রতিক জমায়েতগুলোয় ‘জনতাকে’ দেখা গেছে।

একটা কথা আছে—আন্দোলন করে জনগণ। রাজনৈতিক দল নেতৃত্ব দেয়। জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে আন্দোলন গড়ে ওঠে না। বিএনপি চায় ‘রেজিম চেঞ্জ’। জনগণও যদি তা চায়, তাহলে তাদের সম্মিলন ঘটবে। প্রশ্ন হলো, জনগণ কত দূর পর্যন্ত যাবে?

প্রতিপক্ষের দলীয় ক্যাডার ও পুলিশের সরাসরি বাধা ও হামলার ঘটনা না থাকলে মানুষ স্বস্তিতে ও নির্ভয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারে। গত তিনটি সমাবেশে এমনটি দেখা গেছে। পুলিশ ও ক্যাডাররা যে ভোলা, নারায়ণগঞ্জ বা মুন্সিগঞ্জের মতো হামলার পথ ধরেনি, তা নিশ্চয়ই ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই হয়েছে। তারা কি স্বেচ্ছায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে?

নাকি তাদের ওপর কোনো চাপ আছে? ক্ষমতাসীনদের হঠাৎ অহিংস হয়ে ওঠার মাজেজা কী? এ নিয়ে মানুষ নানা কথা বলে। বিদেশিদের চাপ, আইএমএফ থেকে ডলার ধারের ব্যাপার-স্যাপার। এসব কথাবার্তা। মন্ত্রীরা মাঝেমধ্যেই বলেন, বিদেশিরা, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশের রাষ্ট্রদূতেরা নাক গলান। এটা বন্ধ করতে হবে। বোঝা যায়, রাষ্ট্রদূতেরা সরব হচ্ছেন।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে ইরান-বাংলাদেশে প্রতিদিন

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মনসুর চাভোশি বলেছেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন করবে ইরান।

মঙ্গলবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে ইরানের রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

রাষ্ট্রদূত মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা হয়।

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নয়া মোড়! বিজেপিতে যোগ দেবেন শিণ্ডে শিবিরের ২২ বিধায়ক, দাবি উদ্ধবের-সংবাদ প্রতিদিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, মহারাষ্ট্রের মুখ‌্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে (Eknath Shinde) শিবিরের ৪০ জন বিধায়কের মধ্যে ২২ জনই ‘ক্ষুব্ধ’ এবং খুব শীঘ্রই তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। শিব সেনার উদ্ধব ঠাকরে শিবিরের মুখপত্র ‘সামনা’য় এমনই দাবি করা হয়েছে, যা নিয়ে বর্তমানে সে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। ‘সামনা’র ‘রোকঠোক’ কলামে দাবি করা হয়েছে, একনাথ শিণ্ডেকে ‘অস্থায়ীভাবে’ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছে। মুখপত্রে বলা হয়েছে, “এখন সকলেই বুঝে গিয়েছে, যে কোনও সময় শিণ্ডের মুখ্যমন্ত্রিত্ব চলে যেতে পারে। শিণ্ডে শিবিরের আন্ধেরি পূর্বের উপনির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু বিজেপির (BJP) জন্যই তারা সেটা করেনি।” শুধু তাই নয়। ‘সামনা’র (Samnna) বিশ্লেষণ অনুযায়ী, “শিণ্ডে শিবির মহারাষ্ট্রে গ্রাম পঞ্চায়েত ও সরপঞ্চ নির্বাচনে যে সাফল্যের দাবি করছেন, তা ভিত্তিহীন। শিণ্ডে শিবিরের ২২ জন বিধায়ক অখুশি, ক্ষুব্ধ। এঁদের সিংহভাগ অচিরেই বিজেপির সঙ্গে মিশে যাবে।

সংবাদ প্রতিদিন/আজকাল/ গণশক্তিসহ প্রায় সব দৈনিকে লেখা হয়েছে, প্রথম অশ্বেতাঙ্গ হিসাবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছেন ঋষি সুনাক (Rishi Sunak)। ব্রিটেনের সংখ্যালঘু মানুষের মধ্যে থেকে একজন প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছেন, এই প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছে বিরোধী দলগুলি। মেহবুবা মুফতি থেকে পি চিদম্বরম সকলেই বলেছেন, বিশ্বের অন্যতম প্রধান দেশগুলি সংখ্যালঘুদের সরকারের শীর্ষপদে বসাচ্ছে। সেখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ভারতের। তবে পালটা দিয়েছে বিজেপিও। সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে অযথা রাজনীতি করছে বিরোধী দলগুলি, বলেছেন লোকসভা সাংসদ রবিশংকর প্রসাদ (Ravishankar Prasad)। ঋষি সুনাকের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খবর পেয়েই টুইট করেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি (Mehbooba Mufti)। কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, “প্রথমবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি। গোটা দেশ এই ঘটনা উদযাপন করছে। আমাদের সকলের মনে রাখা দরকার, একজন সংখ্যালঘু ব্যক্তিকেই প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে বেছে নিল ব্রিটেন। অন্যদিকে ভারত এখনও NRC ও CAAর মতো আইনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে বিভেদ ছড়াচ্ছে। বৈষম্যের জালে আবদ্ধ হয়ে রয়েছি আমরা।”

কোনও প্রমাণ ছাড়াই স্বামীকে ‘চরিত্রহীন’ ও ‘মাতাল’ বলা নিষ্ঠুরতা, জানিয়ে দিল হাই কোর্ট-আনন্দবাজার পত্রিকা

কোনও প্রমাণ ছাড়াই স্বামীকে রমণীমোহন বা মদ্যপ বলা নিষ্ঠুরতা। বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত একটি মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়ে এমনটাই বলেছে বম্বে হাই কোর্ট। বিচারপতি নিতিন জামদার এবং শর্মিলা দেশমুখের ডিভিশন বেঞ্চ এ বিষয়ে পুণের পারিবারিক আদালতের রায় বহাল রেখে স্ত্রীর আবেদন খারিজ করেছে।

পুণের ওই ৫০ বছরের মহিলার স্বামী ছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী। পারিবারিক আদালতে ওই মহিলা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর স্বামী অন্য নারীদের প্রতি আসক্ত এবং নিয়মিত মদ্যপান করেন। এর ফলে তাঁর দাম্পত্যের অধিকার খর্ব হচ্ছে। স্বামীর এমন আচরণ ‘স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুরতা’ বলেও অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু ২০০৫ সালে পারিবারিক আদালত সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয়। এর পর বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।

হাই কোর্টে মামলার শুনানি চলাকালীন মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। সম্প্রতি দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ওই মহিলার আবেদন খারিজ করে বলেছে, ‘‘স্বামীর চরিত্র নিয়ে অযৌক্তিক অভিযোগ তুলেছেন আবেদনকারী। অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণও দেখাতে পারেননি। এর ফলে তাঁর স্বামীর মানহানি হয়েছে। একে নিষ্ঠুর আচরণ বলা যায়।’’ ২০০৫-এর অক্টোবরে পারিবারিক আদালত বিবাহ বিচ্ছেদের যে নির্দেশ দিয়ে যে ডিক্রি জারি করেছিল তা বহাল রেখে ডিভিশন বেঞ্চ মৃতের প্রকৃত উত্তরাধিকারী চিহ্নিত করতে বলেছে।

অমানবিক! রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছে কিশোরী, সাহায্য না করে ভিডিও তুলতে ব্যস্ত জনতা-সংবাদ প্রতিদিন

নাবালিকাকে ধর্ষণ

রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছে এক কিশোরী। নিজে থেকে উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই। হাত বাড়িয়ে পথচলতি মানুষের সাহায্য চাইছে সে। তার আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছেন পথচারীরাও। কিন্তু এগিয়ে এসে সাহায্য করার বদলে দূরে দাঁড়িয়ে নাবালিকার ভিডিও তুলতেই ব্যস্ত সাধারণ মানুষ। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) এই গোটা ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে ওই কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তবে তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। প্রাথমিক ভাবে ওই কিশোরীর পরিবারের অনুমান, ধর্ষণ করা হয়েছে নাবালিকাকে।

জানা গিয়েছে, রবিবার থেকে নিখোঁজ ছিল ওই কিশোরী (UP Girl)। পরিবারের দাবি, রবিবার সন্ধেবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। তারপর থেকেই আর খুঁজে পাওয়া যায়নি নাবালিকাকে। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। তারপরেও নাবালিকাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত একটি ঝোপের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় মেয়েটিকে পাওয়া যায়। অচৈতন্য অবস্থায় সাহায্যের জন্য আর্তি জানাচ্ছিল সে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে (Viral Video) দেখা যাচ্ছে, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রয়েছে ওই কিশোরী। রক্তমাখা হাত বাড়িয়ে সাহায্য চাইলেও সেই ডাকে সাড়া দিচ্ছে না কেউই। বরং সামনে দাঁড়িয়ে ভিডিও তুলতে ব্যস্ত সকলে। সেরকই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। তবে তার মধ্যেই একজন গিয়ে পুলিশে খবর দেন। জখম অবস্থায় মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজে ওই কিশোরীকে দেখা গিয়েছে। একজন যুবকের সঙ্গে সে কথা বলছিল, সেই দৃশ্যও ধরা পড়েছে সিসিটিভিতে। তবে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা, সেই বিষয়ে এখনই কিছু বলা হয়নি পুলিশের তরফে। অন্যদিকে , এই গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস। কী করে এরকম দশা হল ওই নাবালিকার, সেই প্রশ্ন তুলে দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে কংগ্রেস।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৫