অবিশ্বাস্য!
'১ হাজার নারীকে ধর্ষণ, ধর্মগুরুর ৮৬৫৮ বছরের কারাদণ্ড!'
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২৬ নভেম্বর শনিবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- রাজধানীর ৩৮৬ রুটের ২৫৮টিতেই চলছে না গণপরিবহন-ইত্তেফাক
- মতামত-কেন লাশ হয়ে ফেরে আয়াতেরা-প্রথম আলো
- ১ হাজার নারীকে ধর্ষণ, ধর্মগুরুর ৮৬৫৮ বছরের কারাদণ্ড! - যুগান্তর
- আয়াতকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা- মানবজমিন
- ফারদিন হত্যা: তিন সপ্তাহ পরও খুনের রহস্য অজানা-কালের কণ্ঠ
- এখন আর খাবারের জন্য হাহাকার করতে হয় না : প্রধানমন্ত্রী-বাংলাদেশ প্রতিদিন
ভারতের শিরোনাম:
- যাঁর সঙ্গে প্রথম সারিতে বসেননি, সেই শুভেন্দুকেই চায়ের আমন্ত্রণ মমতার! ‘মাস্টারস্ট্রোক’ না নমনীয়তা-আনন্দবাজার পত্রিকা
- গণতন্ত্রে কোনও প্রতিষ্ঠানই নিখুঁত নয়’, ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য প্রধান বিচারপতির -সংবাদ প্রতিদিন
- এশিয়া কাপে ভারত না এলে আমরাও বিশ্বকাপ খেলতে ওখানে যাব না’, স্পষ্ট করলেন রামিজ -আজকাল
এবারে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত
প্রথমেই অর্থনীতির খবর-ঢাকা-আশুলিয়া-কঠিন শর্তের চীনা ঋণে আরেকটি উড়ালসড়ক-প্রথম আলোর এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, চীনের কঠিন শর্তের ঋণ ও চীনা ঠিকাদারের মাধ্যমে ঢাকায় আরেকটি উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাভার ইপিজেড পর্যন্ত এই উড়ালসড়ক ২০২৬ সালে চালুর কথা রয়েছে, যার নাম ঢাকা-আশুলিয়া উড়ালসড়ক। উড়ালসড়কটি নির্মিত হলে যাতায়াত সহজ হবে। ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকার এই উড়ালসড়কের নির্মাণ শুরু। অবশ্য এর আগেই ব্যয় বেড়েছে। রয়েছে কঠিন শর্ত। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাওয়া এবং মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতিকে সংকটে ফেলেছে। প্রয়োজনীয় আমদানি ও বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ কীভাবে হবে, এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যুগান্তরের একটি শিরোনাম এরকম-বিশ্বে দাম কমলেও দেশে প্রভাব নেই। ডলারের উত্তাপে নিত্যপণ্যের বাজারও গরম হয়ে উঠেছে।
আয়াতকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা-মানবজমিনের মর্মান্তিক খবরে লেখা হয়েছে, ৬ বছর বয়সী ছোট্ট শিশু আলিন ইসলাম আয়াত।গত ১৫ই নভেম্বর বিকালে বাসা থেকে পার্শ্ববর্তী মসজিদে আরবি পড়তে বের হয়। এরপর থেকে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছিলো না। শেষ পর্যন্ত নিখোঁজের ১০ দিন পর শিশুটির অন্তর্ধান রহস্যের জট খুলেছে। মূলত মুক্তিপণের জন্য অপহরণের পর এই ফুটফুটে শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ৬ টুকরো করে সাগরপাড়ের বেড়িবাঁধে ফেলে দেয় দাদার বাড়ির সাবেক ভাড়াটিয়া আবির আলী। তবে এখনও পর্যন্ত শিশুটির দেহের খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করা যায়নি। আর প্রথম আলোর এ সম্পর্কিত মতামত কলামের শিরোনাম- কেন লাশ হয়ে ফেরে আয়াতেরা।
‘আজ যে শিশু
পৃথিবীর আলোয় এসেছে
আমরা তার তরে একটি সাজানো বাগান চাই’
রাজধানীর ৩৮৬ রুটের ২৫৮টিতেই চলছে না গণপরিবহন-ইতেফাকের এ খবরে লেখা হয়েছে-রাজধানীর গণপরিবহনে কোনোভাবেই ফেরানো যাচ্ছে না শৃঙ্খলা। কাগজে কলমে রুটের তালিকায় অনুমোদন থাকলেও বাস্তবে বেশির ভাগ রুটেই চলছে না বাস। অন্যদিকে রুট পারমিট ছাড়াই চলছে দেড় হাজার বাস। বেসরকারি পরিবহনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। একদিকে রুট পারমিটহীন বাস চলাচল, অন্যদিকে অনুমোদন নিয়েও বাস না চালানো, অন্য পরিবহনের কারণে নগরপরিবহন কোণঠাসায়। ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের।

আন্তর্জাতিক খবর-খুন, ধর্ষণ, নারীদের যৌনদাসী বানিয়ে রাখাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে এক ধর্মগুরুকে এবার ৮ হাজার ৬৫৮ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল তুরস্কের একটি আদালত। আদনান ওকতার (৬৬) নামে ওই তুর্কি ধর্মগুরুর অপরাধ ছাপিয়ে গেছে ভারতীয় ‘ধর্মগুরু’ রামরহিমের কুকীর্তিকেও।
তুরস্কের স্বঘোষিত ধর্মগুরু আদনান ওকতার হারুণ ইয়াইয়া নামেও পরিচিত। ইস্তানবুলের ফৌজদারি আদালত ওকতার এবং তার ১৩ সহযোগীকে সাড়ে ৮ হাজার বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দিয়েছে সম্প্রতি। ফাইন আর্টস নিয়ে পড়াশোনার করার পর ধর্মগুরুর পথ বেছে নেন আদনান। ১৯৮০ সালে এক ধর্মগুরু হিসাবে পেশাগত জীবন শুরু করেন তিনি।
ধর্মগুরু হিসাবে কাজ করতে করতেই আদনানসিলর নামে একটি সংগঠন খোলেন এই ধর্মগুরু। পরে ১৯৯০ সালে সায়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশন খুলে নারীদের পোশাক নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু করেন। নারীদের জন্য আধুনিক এবং ছোট পোশাক বানিয়ে ব্যবসাতেও নামেন।
গোপন সূত্রে পুলিশ খবর পেয়েছিল, সংগঠনের আড়ালে আদনান অসামাজিক কাজকর্মের একটা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তার পরই ২০১৬ সালে আদনানের আস্তানায় এবং সংগঠনের দপ্তরে তল্লাশি চালায় তুরস্ক পুলিশ। যদিও সেই সময় কিছু পায়নি তারা ২০১৭ সালে ফের তল্লাশি চালায় পুলিশ। তখন ওকতার কোনও রকমে পুলিশের নাগাল থেকে পালিয়ে যান। তার খোঁজে তল্লাশি অব্যহত রাখে পুলিশ।
নাবালিকাদের যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, প্রতারণা, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টিতে উস্কানি এবং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ২০১৮ সালে ওকতারকে গ্রেফতার করে তুরস্ক পুলিশ। একটি টেলিভিশন চ্যানেল চালাতেন ওকতার। ধর্ম নিয়ে জনপ্রিয় টক শো-ও করতেন সেখানে। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পর এ৯ নামে সেই টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সংগঠন চালানোর নামে ওকতার ১০০০ তরুণীকে জোর করে যৌনদাসী বানিয়ে তাদের ওপর নিপীড়ন চালাতেন। নারীদের ত্বকের সমস্যা দূর করার কথা বলে তাদের জোর করে গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়ানোর অভিযোগ ওঠে ওকতারের বিরুদ্ধে।তার আস্তানায় তল্লাশি চালানোর সময় ৬৯ হাজারের বেশি গর্ভনিরোধক ওষুধ পেয়েছিল পুলিশ।
ওকতারের আশপাশে সব সময় সুন্দরী রমনী ঘিরে থাকতেন। আদালতে ওকতার স্বীকার করেছিলেন, তার একটি বা দুইটি নয়, ১০০০ ‘গার্লফ্রেন্ড’ রয়েছে। ওই নারীদের তিনি ‘পোষা বিড়াল’ বলে ডাকতেন।
ওকতারের সংগঠনে এক সদস্য এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কেউ যদি সংগঠন ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করতেন, তার জীবন নরকে পরিণত করতে দ্বিধাবোধ করতেন না এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। ওকতারের রাজনৈতিক প্রভাবও ছিল যথেষ্ট মজবুত। ফলে সংগঠন ছেড়ে পালিয়ে কেউ রেহাই পেতেন না।
অপরাধীদের গ্যাং চালানো, রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেল এবং শারীরিক অত্যাচারসহ একাধিক অভিযোগে ২০২১ সালে ১০টি আলাদা মামলায় ওকতারের ১০৭৫ বছরের সাজা ঘোষণা করে আদালত।
অবৈধ ভাবে সংগঠন চালানো, শিক্ষা এবং যৌন অধিকার লঙ্ঘন, ব্যক্তিগত তথ্য চুরি, গুপ্তচরবৃত্তিসহ নানা অভিযোগে এ বছরের ১৭ নভেম্বর ওকতারকে ৮,৬৫৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে তুরস্কের আদালত।ওক্তার হলেন তুরস্কের ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি যাকে এত বড় সাজা দিল আদালত। এর আগে তুরস্কেরই এক ব্যক্তিকে ৯ হাজার ৮০৩ বছরের সাজা দিয়েছিল আদালত।এটি যুগান্তরে ছাপা হয়েছে।
প্রথম আলোর খবর-আফগানিস্তানে খাদ্যসংকট- আফগানিস্তানে অনেক বাসিন্দা তাঁদের ক্ষুধার্ত শিশুদের শান্ত রাখতে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখেন। আবার অনেকে বাঁচার তাগিদে কিডনির মতো নিজেদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কিংবা কন্যাসন্তানদের বিক্রি করে দিচ্ছেন।
রাজনীতির খবর:
কুমিল্লায় সূর্যোদয়ের আগেই সমাবেশস্থলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আজ কুমিল্লা বিভাগীয় গণসমাবেশ বিএনপির। এটি ছিল ইত্তেফাকের খবর। প্রথম আলো লিখেছে, কুমিল্লায় বিএনপির গণসমাবেশ শুরুর আগে কর্মী-সমর্থকদের সরব উপস্থিতি। দৈনিকটির অন্য একটি খবরে বলা হয়েছে, ১০ ডিসেম্বর-এবার উত্তাপ বিএনপির সমাবেশের স্থান নিয়ে।সরকার চায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করুক বিএনপি। এতে কারসাজি দেখছে দলটি। তারা চায় নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবর-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, এখন আর খাবারের জন্য হাহাকার করতে হয় না। অনেক উন্নত দেশ মন্দার কবলে পড়েছে। কিন্তু আমরা এখনো দুর্ভাগ্যজনক অবস্থায় পড়িনি’। ‘কারও কাছে আমরা হাত পেতে চলবো না।
এবার ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

ভোট মিটতেই ফের জেলে রাম রহিম, নির্বাচনী রাজনীতির সঙ্গে ‘যোগ’ নিয়ে সরব বিরোধীরা-সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, ৪০ দিনের জন্য তাঁকে জেলমুক্ত করেছিল হরিয়ানার বিজেপি সরকার। অবশেষে শুক্রবার ফের গরাদের ওপারে ফিরলেন রাম রহিম। তাঁর সঙ্গে নির্বাচনী রাজনীতির যোগ স্পষ্ট বলেই দাবি বিরোধীদের। যদিও হরিয়ানার বিজেপি সরকারের দাবি, রাম রহিমের মুক্তির সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই। কিন্তু শুক্রবারই শেষ হয়েছে সেরাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর সেদিনই জেলে ফিরলেন ধর্ষক ধর্মগুরু।
গণতন্ত্রে কোনও প্রতিষ্ঠানই নিখুঁত নয়’, ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য প্রধান বিচারপতির-সংবাদ প্রতিদিন

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, সাংবিধানিক গণতন্ত্রে কোনও প্রতিষ্ঠানই নিখুঁত নয়। যার মধ্যে রয়েছে কলেজিয়ামও। এর সমাধান হল, বর্তমান ব্যবস্থাকেই চালিয়ে নিয়ে যাওয়া। এমনই মত প্রকাশ করলেন প্রধান বিচারপতি (Chief Justice) ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (D Y Chandrachud)।২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবস। তার আগে শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধান বিচারপতি। সেখানেই কলেজিয়াম ব্যবস্থা নিয়ে চলতে থাকা দীর্ঘদিনের বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতিকে বলতে শোনা যায়, ”সাংবিধানিক গণতন্ত্রে কোনও সংগঠনই নিখুঁত নয়। তবু আমাদের কাজ করতে হয় যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে, তাকে নিয়েই।উল্লেখ্য, কেন্দ্র ও বিচার বিভাগের মধ্যে কলেজিয়াম নিয়ে টানাপড়েন অনেক দিনের।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২৬