মার্চ ১২, ২০২৩ ১০:৫৯ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১২ মার্চ রোববারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • প্রত্যাবাসনে আচমকা তোড়জোড়-নেপথ্যে চীন ও আসিয়ানের চাপ, পশ্চিমারা সতর্ক পর্যবেক্ষণে -মানবজমিন
  • সংসদে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য ৫০ আসন চায় হিন্দু মহাজোট - বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: পরিস্থিতি থমথমে, বিক্ষোভের ডাক শিক্ষার্থীদের -প্রথম আলো
  • শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ রাবির ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ , বিজিবি মোতায়েন -ইত্তেফাক
  • ডিবি পরিচয়ে সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাই সাড়ে ৭ কোটি টাকার অঙ্ক মিলছে না
  • রহস্য উদ্ঘাটনে তিন সদস্যের কমিটি গঠন * -যুগান্তরপরিচালকেরা নিজেদের মালিক ভাবছেন, ব্যাংক খাত নিয়ে গভর্নর -কালের কণ্ঠ

কোলকাতার শিরোনাম:

  • মোদির অপমান, দেশের অপমান’, বিবিসির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের প্রস্তাব পাশ গুজরাট বিধানসভায় -সংবাদ প্রতিদিন
  • অনশন ছেড়ে আলোচনায় বসুন, DA আন্দোলনকারীদের বার্তা রাজ্যপালের- আনন্দবাজার
  •  সরকারকে কিনতে হব আলু, রাজ্যজুড়ে অবরোধ কৃষকদের -গণশক্তি

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. গত বৃহস্পতিবার ডাচ বাংলা ব্যাংকের যে ১১ কোটি টাকা ডাকাতি হয়েছে তার মধ্যে ৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার হদিস মেলেনি এখনো। এ নিয়ে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকা নানা রকম খবর প্রকাশ করছে। আপনি কীভাবে দেখছেন বিষয়টিকে?
২. সাত বছর পর চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার বিষয়ে চুক্তি সই হয়েছে। এই চুক্তির গুরুত্ব কী? কী প্রভাব ফেলবে এই চুক্তি?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

প্রত্যাবাসনে আচমকা তোড়জোড়-নেপথ্যে চীন ও আসিয়ানের চাপ, পশ্চিমারা সতর্ক পর্যবেক্ষণে-মানবজমিন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনে তোড়জোড়

আচমকা প্রত্যাবাসন প্রস্তুতি শুরু করেছে মিয়ানমার। বার্মার সামরিক সরকারের এমন উদ্যোগের নেপথ্যে কী? তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ  চলছে কূটনৈতিক অঙ্গনে। ঢাকার তরফে দায়িত্বশীলদের কেউ অবশ্য এ নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলেননি। তবে অনানুষ্ঠানিক সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে চীন এবং আসিয়ান জোটের বাড়তি চাপে বর্ষার আগেই প্রত্যাবাসন শুরু করতে সম্মত হয়েছে মিয়ানমার। একটি পাইলট প্রজেক্টের আওতায় প্রাথমিকভাবে হাজারের বেশি মিয়ানমার নাগরিককে রাখাইনে ফেরানো হবে জানিয়ে সূত্র মানবজমিনকে বলেছে, প্রত্যাবাসন শুরু করাটাই চ্যালেঞ্জের বিষয়। এটি শুরু করতে পারলে সংখ্যা ধাপে ধাপে উন্নীত হবে, ২০২৩ সালে ৫০ হাজার বাস্তুচ্যুত রেহিঙ্গাকে তাদের স্বভূমে ফেরানোর টার্গেট রয়েছে। প্রত্যাবাসন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ আসিয়ান জোটের আটজন দূতকে মংডু এবং সিটুওয়েতে সংস্কার কর্ম করে পুরোপুরি প্রস্তুত করা ট্রানজিট ক্যাম্পগুলো সরজমিন দেখানো হয়েছে। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে রাখাইনে বিভিন্ন এলাকায় নেয়া হয় ১১ জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে।ঢাকা ও নেপিডো’র দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র জানায়, প্রত্যাবাসনের উদ্যোগকে যেকোনো সময় স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। তবে অবশ্য রোহিঙ্গাদের ফেরাটা মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই হতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কোনো অবস্থাতেই যেন ফিরে যেতে সম্মত পরিবারগুলোকে ভেঙে টুকরো টুকরো করা না হয়।

রাসায়নিকের গুদাম স্থানান্তর, পারলেন না তিন মন্ত্রী-প্রথম আলো

পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল ২০১০ সালে। তা-ও ভয়াবহ একটি অগ্নিকাণ্ডের পর। নিমতলীর সেই আগুনে মারা যান অন্তত ১২৪ জন। কথা ছিল, একটি রাসায়নিক শিল্পপার্ক হবে, সেখানে রাসায়নিক ব্যবসায়ীরা তাঁদের গুদাম সরিয়ে নেবেন।  

সেই উদ্যোগের পর ১৩টি বছর পেরিয়ে গেছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুজন মন্ত্রীর মেয়াদ শেষ হয়েছে—দিলীপ বড়ুয়া ও আমির হোসেন আমু। শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারের মেয়াদও শেষের পথে। মন্ত্রণালয়টিতে আটজন সচিব বদলেছেন। কিন্তু রাসায়নিক শিল্পপার্ক এখনো তৈরি হয়নি। শিল্পপার্ক করার আগে রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নিতে ২০১৯ সালে অস্থায়ী গুদাম তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। সেই গুদামও এখনো পুরো তৈরি হয়নি। এর আগে ২০০৬ সালে পুরান ঢাকা থেকে প্লাস্টিকের কারখানা সরিয়ে নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা স্মারক সই হয়। সেই প্লাস্টিক শিল্পনগরের জমি অধিগ্রহণই এখনো হয়নি।

রাসায়নিক শিল্পপার্ক ও প্লাস্টিক শিল্পনগর প্রকল্প নিয়ে আলোচনার মধ্যেই ২০১৯ সালে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় আগুনে ৭১ জনের মৃত্যু হয়। এরপর আরও কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে, মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মানুষের এই মৃত্যু ও দুর্ভোগের কারণ পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরাতে না পারা। বিষয়টি আবার আলোচনায় এসেছে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ২৪ জনের মৃত্যুর পর। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আশঙ্কা, সিদ্দিকবাজারের ঘটনা রাসায়নিক থেকে না হলেও পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের ঝুঁকি রয়েছে। ঝুঁকি থেকে যাওয়ার জন্য দায়ী সুশাসনের ঘাটতি, জবাবদিহির অভাব ও জীবনরক্ষার প্রকল্পে অগ্রাধিকার না দেওয়া।

ডিবি পরিচয়ে সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাই-সাড়ে ৭ কোটি টাকার অঙ্ক মিলছে না..

ব্যাংকের টাকা ডাকাতি

রহস্য উদ্ঘাটনে তিন সদস্যের কমিটি গঠন * নিরাপত্তা ছাড়া টাকা বহনের সময় রহস্যঘেরা গাড়ি নষ্টের গল্প * জড়িত আরও কয়েকজন আটক, নতুন করে আরও টাকা উদ্ধারের দাবি-যুগান্তর

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথে সরবরাহের জন্য বহন করা সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের পর ৯ কোটি টাকা উদ্ধারের কথা জানিয়েছিল ডিবি পুলিশ।

কিন্তু ঘটনার পর সময় যত গড়ায়, টাকার অঙ্ক যেন ততই কমতে থাকে। শেষ পর্যন্ত টাকা উদ্ধার দেখানো হয় ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার। মামলার এজাহারেও টাকার এই অঙ্ক উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা তাহলে কোথায় গেল-সেই প্রশ্নের জবাব মিলছে না। পুলিশের উদ্ধার অভিযানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও এখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ফলে এ নিয়ে খোদ পুলিশ প্রশাসনেই চলছে নানা কানাঘুষা।

এদিকে নিরাপত্তা ছাড়া টাকা বহনের সময় রহস্যঘেরা গাড়ি নষ্টের গল্পেরও ডালপালা পাখা মেলছে। তবে পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত আরও কয়েকজনকে আটক করে তাদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে টাকার হিসাব মেলাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত কমিশনার মো. আশরাফুজ্জামানকে।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মো. আশরাফুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা পেপার ওয়ার্ক শুরু করেছি। ছিনতাইয়ের ঘটনার পর টাকা উদ্ধারের অঙ্কে গরমিল এবং এসব নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলোসহ সবদিক নিয়ে আমরা কাজ করব। আশা করি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে পারব।’

গত বৃহস্পতিবার সকালে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বুথে সরবরাহের জন্য ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা নিয়ে যাচ্ছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেড। মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় অবস্থিত ঠিকাদারের গুদাম থেকে টাকা নিয়ে ওইদিন সকালে একযোগে বের হয় তিনটি গাড়ি। তিন গাড়ির মধ্যে একটিতে পাহারায় ছিলেন সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মী। হঠাৎ তিন গাড়ির একটি বিকল হয়ে যায় দিয়াবাড়ীর নিরিবিলি এলাকায়। তখন যে গাড়িতে সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন, ওই গাড়িটিও বিকল গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে যায়।

কিন্তু রহস্যজনকভাবে কোনো নিরাপত্তা ছাড়াই টাকা বহনকারী আরেকটি গাড়ি চলতে থাকে। উত্তরা এলাকায় পৌঁছালে অপর একটি কালো গাড়িতে করে আগতরা ডিবি পুলিশ পরিচয়ে টাকা বহনকারীদের মারধর শুরু করে। ছিনতাইকারী দলটি ছিল নিরস্ত্র। অথচ কোন বাধা ছাড়াই টাকার ট্রাংক লুটে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায় তারা। কয়েক মিনিটে ঘটে যাওয়া ছিনতাইয়ের ওই ঘটনা টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়।

এরপর দৃশ্যপটে আলোচনায় নাটকীয় পুলিশি অভিযান। সকালে ছিনতাইয়ের ঘটনার পর সন্ধ্যায় ৯ কোটি টাকা উদ্ধারের কথা জানায় ডিবি পুলিশ। একই সঙ্গে ডাকাতিতে জড়িত সাতজনকে গ্রেফতারের কথাও জানায়।ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের ৯ কোটি টাকারও বেশি উদ্ধারের কথা বলেছিলেন। কিন্তু ট্রাংকগুলো থানায় হস্তান্তরের পর টাকা পাওয়া যায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার। টাকার অঙ্কের গরমিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তসংশ্লিষ্ট কেউই মুখ খুলতে নারাজ।

এদিকে গরমিল শুধু টাকার ক্ষেত্রেই ঘটেছে, তা-ই নয়। বহন করা টাকার পরিমাণ নিয়েও আছে রহস্য। টাকা পরিবহণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মানি প্ল্যান্ট লিংক লিমিটেড জানায়, ছিনতাই হওয়া টাকার পরিমাণ ১১ কোটি ২৫ লাখ।আর ডাচ্-বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তি মোতাবেক ১১ কোটি ২৭ লাখ টাকা বিভিন্ন বুথে সরবরাহের জন্য ব্যাংক থেকে তুলে নেয়। শনিবার সারা দিন বিভিন্ন সূত্রে খোঁজখবর নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।

টাকার অঙ্কে গরমিলের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি ধারণা থেকে টাকার অঙ্ক ৯ কোটি উল্লেখ করেছিলান। তবে থানা পুলিশ প্রকাশ্যে সবার উপস্থিতিতে গুনে যেটা পেয়েছে, সেটাই ঠিক।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একটি ট্রাংকের সাইডে কাটা ছিল তা ঠিক। সেটা ডাকাতদের কাজ হতে পারে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডিবির একাধিক টিম অভিযান পরিচালনা করছে। আটক ও উদ্ধার আছে। ভালো খবর দেওয়া যাবে।’

আর প্রথম আলোর একটি বিশ্লেষণ-বিনা অস্ত্রে, বিনা রক্তপাতে ব্যাংক ডাকাতির আরও যত ঘটনা।

পরিবহনের সময় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ১১ কোটি টাকা ডাকাতির ঘটনা নিয়ে নাটক কম হচ্ছে না। ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর। আর এর অর্থ উদ্ধারের কাহিনি আরও আকর্ষণীয়। ডাকাতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অর্থ উদ্ধারের যে কাহিনি বলা হয়েছিল, তাতে আছে নানা ফাঁকফোকর। তবে পুরো ঘটনাটি অবশ্যই ব্যাংক ডাকাতির ইতিহাসে স্থান পাওয়ার মতোই। ওই ডাকাতির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ধরে আলোচনা করলেই বোঝা যাবে, কেন এটি ইতিহাসে স্থান পাওয়ার মতো।

বিনা রক্তপাতে, বিনা অস্ত্রের ব্যাংক ডাকাতি

রণক্ষেত্র রাবি, গুলিবিদ্ধ ১৫ শিক্ষার্থী, আইসিইউতে একজন, রেললাইন অবরোধ, বিজিবি মোতায়েন-মানবজমিন

আহত ছাত্ররা

রাজশাহী বিশ্বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বিনোদপুর বাজার এলাকা। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের এলাপাতাড়ি রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন ১৫ জন শিক্ষার্থী। তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরমধ্যে এক শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে রেললাইন অবরোধ করে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ক্যাম্পাস এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস ড্রাইভারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও স্থানীয়দের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়। রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে অগ্নিসংযোগের সময় এই গুলির ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে এলোপাতাড়ি রাবার বুলেট ও টিয়ার শেষ নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থীর গায়ে গুলি লাগে। গুরুতর অবস্থায় তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে। 

তিনি বলেন, আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আশঙ্কাজনক এক শিক্ষার্থী আইসিইউতে ভর্তি আছেন।

এদিকে পুলিশের শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করে আন্দোলন করছে। যার ফলে ঢাকাগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১১টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা ছেড়ে যায়নি। 

এদিকে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিটি মেয়র এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ কর্মকর্তারা। উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার মাইক নিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমাদের প্রতি অনুরোধ তোমরা হলে ফিরে যাও। তোমাদের জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। রুমে যাও তোমরা। এ ঘটনায় প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছে। এদিকে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে আগামী ১২ ও ১৩ মার্চ সকল ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে ক্লাস পরীক্ষা চলমান রাখতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

অনশন ছেড়ে আলোচনায় বসুন, DA আন্দোলনকারীদের বার্তা রাজ্যপালের-সংবাদ প্রতিদিন

বকেয়া ডিএ (DA) চেয়ে সরকারি কর্মচারীদের অনশন নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল। অনশন ছেড়ে আলোচনায় বসার ডাক দিলেন তিনি। সবপক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসে দ্রুত সমস্যা সমাধানের পরামর্শ সি ভি আনন্দ বোসের। পূর্বসূরি জগদীপ ধনকড়ের মতোই টুইট করে নিজের মত জানালেন রাজ্যপাল। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এহেন টুইট ঘিরে বঙ্গ রাজনীতিতে চর্চা তুঙ্গে।গত চার সপ্তাহ ধরে রাস্তায় বসে রিলে অনশন করছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। আন্দোলনকারী যৌথ মঞ্চের দাবি একটাই, বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে। এই দাবিতে ধর্মঘটও করেছে তারা। পালটা রাজ্য়ের দাবি,  কেন্দ্র রাজ্যের বকেয়া মেটাচ্ছে না। এমনবস্থায় বকেয়া ডিএ মেটানো সম্ভব নয়। তবু নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও সরতে রাজি নন সরকারি কর্মচারীরা। এমন পরিস্থিতি আলোচনায় বসে সমস্যা মেটানোর পরামর্শ দিলেন রাজ্যপাল।

মোদির অপমান, দেশের অপমান’, বিবিসির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের প্রস্তাব পাশ গুজরাট বিধানসভায়-সংবাদ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Modi) নিয়ে বিবিসি-র (BBC) তথ‌্যচিত্র ঘিরে বিতর্ক পৌঁছল গুজরাট বিধানসভায়। এই তথ‌্যচিত্রে গোধরা দাঙ্গায় রাজ্যের তৎকালীন মুখ‌্যমন্ত্রী মোদির ভূমিকা নিয়ে তাঁকে কালিমালিপ্ত করা হয়েছে অভিযোগ তুলে শুক্রবার বিধানসভায় একটি নিন্দা প্রস্তাব আনে সরকার পক্ষ। সেখানে প্রায় তিন দশক ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি।

প্রস্তাবটি ধ্বনিভোটে পাশও হয়ে গিয়েছে। সেই প্রস্তাবে বিবিসির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার জন‌্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করা হয়েছে। প্রস্তাবটি পেশ করার সময় মন্ত্রী হর্ষ সাংভি বলেন, “এই তথ্যচিত্র শুধু প্রধানমন্ত্রী মোদির অপমান নয়, এটা ১৩০ কোটি ভারতবাসী সবার অপমান।” এদিন অবশ‌্য প্রস্তাবটি পাশের সময় কংগ্রেস সদস‌্যরা অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, জানুয়ারি মাসে বিবিসি-র তরফে একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচারিত হয়- ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’। তথ‌্যচিত্রটি ভারতে দেখা না গেলেও তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ঝড় বয়ে যায়। তথ‌্যচিত্রটির বিষয়বস্তু ছিল ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গা। যেখানে দাঙ্গার সময়ে একজন নেতা এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মোদির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ভারতের বিদেশমন্ত্রক এই তথ্যচিত্রকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে চিহ্নিত করে একে ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রতিফলন বলে বিবৃতি দেয়। সোশ‌্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ওই তথ‌্যচিত্রের লিঙ্ক মুছে দেওয়ার জন‌্য কেন্দ্রের তরফে সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবু, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ‌্যালয়ে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি সেই তথ‌্যচিত্র প্রদর্শনের উদ্যোগ নিলে তা নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

রাস্তায় আলু ফেলে বিক্ষোভ কৃষকদের-গণশক্তি

আলু নিয়ে প্রতিবাদ

দেনার দায়ে আলুচাষিরা আর আত্মঘাতী হতে চান না। রাজ্য সরকারকে কৃষকদের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ হাজার টাকা কুইন্টাল দরে আলু কিনতে হবে। শনিবার রাজ্যের আলু চাষের প্রায় আশিটি এলাকায় রাজ্য ও জাতীয় সড়কে আলু ফেলে অবরোধ করেন আলুচাষিরা। 

পুলিশ, প্রশাসন আগে ভাগে বিরাট বাহিনী মোতায়েন করে। কৃষকদের রাস্তায় উঠতে বাধা দেওয়া হয়। কিন্তু দলে দলে আলু চাষী লাল ঝান্ডা নিয়ে ২নম্বর জাতীয় সড়কে নেমে পড়েন। বিশাল সংখ্যক কৃষককে পুলিশের আটকাবার ক্ষমতা ছিল না। 

রাস্তা অবরোধ হয়, প্রতিবাদী কৃষকরা মমতার কুশপুতুল দাহ করেছেন, রাস্তায় টায়ার পুড়িয়েছেন। বস্তা বস্তা আলু রাস্তায় ফেলে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১২

ট্যাগ