ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩ ১৫:৫৩ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ১৬ ডিসেম্বর শনিবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপার আসন সমঝোতা পুরোপুরি হয়নি, আজও বৈঠক-প্রথম আলো
  • লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৩ বাংলাদেশি আহত-ডেইলি স্টার বাংলা
  • নির্বাচন না করতে জিএম কাদেরকে হুমকি, থানায় জিডি -ইত্তেফাক
  • ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে বাংলাদেশের অর্থনীতি- আইএমএফ-মানবজমিন
  • আন্দোলনে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত-যুগান্তর 

কোলকাতার শিরোনাম:

  • ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ভেঙে দিল পড়শি দেশ-চীন-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ‘সংসদে গ্যাস হামলার জন্য দায়ী বেকারত্ব’, মোদির নীতিকে কাঠগড়ায় তুললেন রাহুল-সংবাদ প্রতিদিন
  • দুর্নীতি আড়াল করতেই বিদ্বেষ, বিভাজনের চাষ-গণশক্তি
  • সংসদে অচলাবস্থা, গান্ধী মূর্তিতে বিক্ষোভ ইন্ডিয়ার-আজকাল

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত তুলে ধরছি। আজ বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস। এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা বাঙালির ঘরে ঘরে এ শিরোনাম করেছে দৈনিক যুগান্তর। দৈনিকটি লিখেছে-বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। স্মৃতিসৌধে সর্বস্তরের মানুষের ঢল আর শ্রদ্ধার ফুলের কথা লিখেছে প্রথম আলো। এদিকে বিজয় দিবসে রাজধানীতে র‍্যালি করেছে বিএনপি বলে প্রায় সব দৈনিকে খবর ছাপা হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী বলেছেন,নব্য হানাদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বিএনপি। ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণতান্ত্রিক রাজনীতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। এ দুটো খবর ডেইলি স্টার বাংলায় পরিবেশিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিজয় দিবস নিয়ে ভারতের সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার একটি খবর-এরকম- বিজয় দিবসে ভারত-পাক যুদ্ধে শহিদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৯৭১ সালে আজকের দিনেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান। এদিন প্রধানমন্ত্রীর স্মরণ করলেন ১৬ ডিসেম্বরের গৌরবময় ইতিহাসের কথা। 

রাজনীতির খবরে প্রথম আলো লিখেছে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন সমঝোতা এখনো হয়নি। তবে আসন সমঝোতাসহ নানা বিষয়ে গতকাল আলোচনা হয়েছে। আজও বৈঠক হবার কথা রয়েছে। তবে ইত্তেফাকের খবরে বলা হয়েছে, জাতীয় পার্টিকে ৩০ আসন ছাড়তে পারে আওয়ামী লীগ।

রিজার্ভে যোগ হলো ১০৯ কোটি ডলার-অর্থনীতির এ শিরোনামের খবরে দৈনিক যুগান্তর লিখেছে, রিজার্ভে যোগ হলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আইএমএফ ও এডিবির ঋণের ১০৯ কোটি ডলার। শুক্রবার রাতে ঋণ সহায়তার এ অর্থ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভে যুক্ত হয়।এছাড়াও বিশ্ব ব্যাংকসহ অন্যান্য ঋণের অরও অর্থ যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। আর্থিক সংকটের সময়ে এটা আমাদের জন্য স্বস্তির খবর। বৃহস্পতিবার দেশের রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের ঋণ যুক্ত হওয়ায় রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার।তবে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী বিপিএম-৬ অনুযায়ী হিসাব করা হলে রিজার্ভ দাঁড়াবে ২০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। তবে যুগান্তরের গতকালের একটি খবরের শিরোনাম এভাবে করা হয়েছিল-দেশের মোট বৈদেশিক ঋণের তুলনায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অনুপাত সর্বনিম্নে এসে নেমেছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আর মানবজমিনের খবর-ক্রমাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে বাংলাদেশের অর্থনীতি- বলেছে আইএমএফ। দৈনিকটির অপর একটি খবরের শিরোনাম-টাকার সংকটে থাকা শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের লেনদেন সেবা বন্ধের ঝুঁকিতে পড়েছে।

প্রথম আলোতে পরিবেশিত অর্থনীতির একটি প্রতিবেদন তুলে ধরছি। শিরোনাম এরকম-তিন সূচকে ধনী দেশের অন্য রকম তালিকা, বাংলাদেশের অবস্থা কী? এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজারের বর্তমান বিনিময়মূল্যে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি ২ হাজার ৬৯০ ডলার। এরপর পিপিপি বা পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি বা স্থানীয় বাজারমূল্যের নিরিখে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৭ হাজার ৪০০ ডলার। কিন্তু সেই উপার্জন করার জন্য যে পরিমাণ সময় মানুষকে কাজ করতে হয়েছে, তার নিরিখে মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়ায় ৫ হাজার ৬৩০ ডলার।

দ্য ইকোনমিস্ট সম্প্রতি বিশ্বের ধনী দেশের তালিকা তৈরি করেছে। তিনটি সূচকের ভিত্তিতে এই তালিকা করেছে তারা। সাময়িকীটি মনে করছে, এর মধ্য দিয়ে একটি দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যায়।

এই সূচকে দেখা যায়, প্রথম সূচক ছাড়া বাকি দুই সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে ভারত। বর্তমান বিনিময়মূল্যের নিরিখে ভারতের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি ২ হাজার ৩৯০ ডলার; কিন্তু পিপিপিতে ৮ হাজার ৩৮০ ডলার ও সেই উপার্জন করার জন্য যে পরিমাণ সময় মানুষকে কাজ করতে হয়েছে, তার নিরিখে ৮ হাজার ২০ ডলার।

পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি ১ হাজার ৬০০ ডলার হলেও অন্যান্য দুই সূচকে তাদের অবস্থান বেশি পেছনে নেই। দেশটির পিপিপি ৬ হাজার ৪৪০ ডলার আর সেই উপার্জন করার জন্য যে পরিমাণ সময় মানুষকে কাজ করতে হয়েছে, তার নিরিখে ৮ হাজার ৩১০ ডলার।

দ্য ইকোনমিস্ট ২০টি দেশের দেশের ক্রমতালিকা বা র‍্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে, বাকি দেশগুলোর পরিসংখ্যান বর্ণানুক্রমে দিয়েছে। শীর্ষ এই ২০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ নেই, তবে বর্ণানুক্রমিক দেশের মধ্যে বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করেছে। সে কারণে বাংলাদেশের অবস্থান ঠিক কী, তা বোঝা যাচ্ছে না।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

‘সংসদে গ্যাস হামলার জন্য দায়ী বেকারত্ব’, মোদির নীতিকে কাঠগড়ায় তুললেন রাহুল-সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, সংসদের নিরাপত্তা বিচ্যুতির জন্য ঘুরিয়ে মোদির নীতিকেই কাঠগড়ায় তুললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী । তাঁর দাবি, সংসদে যে নিরাপত্তার বিচ্যুতি হয়েছে, সেটার জন্য দায়ী বেকারত্ব। আর এই বেকার সমস্যা তৈরিই হয়েছে মোদির ভ্রান্ত নীতির জন্য। এ সম্পর্কে দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, সংসদে গ্যাস হামলা: জুলাইয়েই রেইকি, দীর্ঘ পরিকল্পনা, প্ল্যান বি-ও তৈরি ছিল হামলাকারীদের।তদন্তে ক্রমশ চাঞ্চল‌্যকর তথ‌্য উঠে আসছে। আর দৈনিক আজকাল রাজনীতির খবরে লিখেছে, সংসদে অচলাবস্থা, গান্ধী মূর্তিতে বিক্ষোভ ইন্ডিয়ার। আরও বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও ভণ্ডুল হয়ে গেল সংসদের দুই কক্ষের সভা। লোকসভায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার প্রতিবাদে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পোষ্টার হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন ইন্ডিয়া শিবিরের সাংসদরা।

দুর্নীতি আড়াল করতেই বিদ্বেষ, বিভাজনের চাষ। গণশক্তি পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, জাতীয় সুরক্ষার নামে ঘৃণার চাষ করে বিজেপি দেশবাসীর কাউকেই সুরক্ষা দিতে পারবে না। বিজেপি এবং তৃণমূল যেভাবে ধর্ম, জাতি, ভাষার নামে মানুষে মানুষে বিভাজন তৈরি করছে তার বিপদ সম্পর্কে সচেতন করতে সেলিম বলেছেন, ওদের লুটের রাজনীতিতে মানুষের জীবনজীবিকা বিপন্ন। সেগুলি আড়াল করতে জাতীয় সুরক্ষার নাম করে দেশবাসীর এক অংশকে আরেক অংশের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার শিরোনাম-মঙ্গলবার থেকেই ১০ দিনের বিপাসনায় কেজরীওয়াল, ‘ইন্ডিয়া’ বৈঠক কি এড়িয়ে যেতে চলেছেন আপ প্রধান? বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, আগামী ১৯ ডিসেম্বর বিকেল ৩টে থেকে দিল্লিতে বিজেপি বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র বৈঠক বসার কথা। পটনা, বেঙ্গালুরু, মুম্বইয়ের পরে এটি বিরোধী জোটের চতুর্থ বৈঠক।যদিও ওই দিন কখন থেকে কেজরী বিপাসনায় বসবেন তা জানানো হয়নি। খোলসা করা হয়নি, তিনি ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে যোগ দেবেন কি না।

ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ভেঙে দিল পড়শি দেশ-চীন এ শিরোনামের খবরে আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ভারতের পড়শি দেশে চিনপন্থী শাসক ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নয়াদিল্লির অস্বস্তি বেড়েছে। একের পর এক ভারত-বিরোধী সিদ্ধান্ত তিনি নিয়ে চলেছেন। তবে সরাসরি সংঘাতের পথে হাঁটছেন না। সময়টা ভাল যাচ্ছে না ভারতের। এই মুহূর্তে ভূ-রাজনীতিগত দিক থেকে বেশ কয়েকটি বিষয় নয়াদিল্লিকে চাপে রেখেছে। তার মধ্যে অন্যতম হল দক্ষিণের দ্বীপরাষ্ট্রের সমস্যা।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১৬

ট্যাগ