জানুয়ারি ১১, ২০২৪ ১৬:০৩ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১১ জানুয়ারি বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে এক ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ -ইত্তেফাক
  • পাঁচ ঝুঁকিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি, প্রধান ঝুঁকি জ্বালানিসংকট: ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম -প্রথম আলো
  • অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলো হোয়াইট হাউস/ বাংলাদেশ ইস্যুতে নীতি পরিবর্তন হয়নি: জন কিরবি-মানবজমিন
  • দ্য টেলিগ্রাফের বিশ্লেষণ  ‘সামনে সত্যিকার বড় পরীক্ষায় পড়বে বাংলাদেশ’ -যুগান্তর
  • যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি ক্রমাগত কমছে-ডেইলি স্টার বাংলা

কোলকাতার শিরোনাম:

  • মালদ্বীপের মতোই ছক কষেছিল চিন-তবে তা ব্যর্থ-সংবাদ প্রতিদিন
  • রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ ইডি-গণশক্তি
  • ‘মলদ্বীপের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব সাহায্য করবে চিন’- আনন্দবাজার পত্রিকা
  • প্রজাতন্ত্র দিবসে বাতিল কর্ণাটকের ট্যাবলো, দ্বন্দ্ব বিজেপি-কংগ্রেসের-আজকাল

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. দ্য ডিপ্লোম্যাটের রিপোর্ট: বাংলাদেশে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন মেরুকরণ, সহিংসতার ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে। মানবজমিন এই রিপোর্ট তুলে ধরেছে। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

২. ইসরাইলকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে মুসলিম পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন। প্রশ্ন হচ্ছে- সেটা কী সম্ভব?

বিশ্লেষণের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

ইত্তেফাকের খবরে লেখা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন আজ বৃহস্পতিবার। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরাও আজ শপথ নেবেন। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩ বছরে দল ও সরকার পরিচালনায় অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা। উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের হাল ধরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটের মাধ্যমে টানা চতুর্থ এবং পঞ্চমবারের মতো দলকে জয়ী করে অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন তিনি। বিশ্বে কোনো নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পঞ্চম বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনন্য নজির ও গৌরবের মুকুটের অধিকারিও হবেন তিনি। নিজের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও সাহসী কর্মকাণ্ড দিয়ে আরো আগেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা।

নতুন মন্ত্রিসভায় সবচেয়ে বেশি সদস্য কোন বিভাগের-প্রথম আলো

প্রধানমন্ত্রীসহ ৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বেশি সদস্য ঢাকা বিভাগের। প্রধানমন্ত্রীসহ এই সংখ্যা ১৫ জন। ঢাকা বিভাগের পরে মন্ত্রিসভার সবচেয়ে বেশি সদস্য চট্টগ্রাম বিভাগের। এই সংখ্যা ৯ জন। 

এ ছাড়া মন্ত্রিসভায় সিলেটের বিভাগের তিনজন, বরিশাল বিভাগের দুই, খুলনা বিভাগের দুই, ময়মনসিংহ বিভাগের দুই, রাজশাহী বিভাগের দুই ও রংপুর বিভাগের দুজন স্থান পেয়েছেন।

৩৭ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভায় বড় বদল, কারণ কী-প্রথম আলো

নতুন মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছেন টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে যাওয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভায় প্রথমবারের মতো যুক্ত হলেন ১৪ জন। আগে বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রী ছিলেন এমন পাঁচজন এবার মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন। 

বিদায়ী মন্ত্রিসভার ৩০ জন নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। এর মধ্যে ৭ জানুয়ারির ভোটের আগেই বাদ পড়েন দুজন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী। তিনজন নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। আর তিনজন এবার দলীয় মনোনয়নই পাননি। অবশ্য বাদ পড়া টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীদের একজন নতুন মন্ত্রিসভায় ফিরেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য ৩৭ জন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। একই সঙ্গে তাঁর নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। এতে আরও বলা হয়, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলা গণ্য হবে।

বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বদলায়নি: জন কারবি-প্রথম আলো

বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) কৌশলগত যোগাযোগ সমন্বয়ক জন কারবি।

ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন, বাংলাদেশে একতরফা নির্বাচন শেষ হয়েছে, বিরোধীদের দমনপীড়নের জন্য বিশ্বব্যাপী সমালোচনা হচ্ছে। দ্য গার্ডিয়ান এই নির্বাচনকে ‘বিরোধীদের ওপর নির্মম দমনপীড়নে আচ্ছন্ন’ বলে চিহ্নিত করেছে। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলেছে, ‘বাইডেনের গণতন্ত্র প্রচারের সীমাবদ্ধতা দেখিয়ে দিল বাংলাদেশ।’

ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা আপনি বলেছিলেন। নির্বাচনের আগে আপনারা ভিসা নিষেধাজ্ঞার নীতি ঘোষণা করেছিলেন। গণতন্ত্র প্রচারে বাইডেন প্রশাসনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

জবাবে জন কারবি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এখনো বিশ্বজুড়ে কার্যকর ও প্রাণবন্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বে বিশ্বাস করি এবং বাংলাদেশি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য আমাদের ইচ্ছার কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমাদের এ প্রত্যাশার মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’

আরেক প্রশ্নে বলা হয়, নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল পেয়েছেন, নতুন বছরের প্রথম দিন তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তা করা হয়েছে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনে ইউনূসের অসামান্য অবদানের কথা বিবেচনা করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন কি এই বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত আছেন?

জবাবে জন কারবি বলেন, তিনি প্রশ্নটি গ্রহণ করেছেন।

আরেকটি খবরে লেখা হয়েছে, সহিংসতা ও বিরোধীদের ভয়ভীতি বাংলাদেশে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করেছে: চার মার্কিন সিনেটর।

পাঁচ ঝুঁকিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি, প্রধান ঝুঁকি জ্বালানিসংকট: ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-প্রথম আলো

বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এখন সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ জ্বালানিস্বল্পতা। এ কারণে শিল্পোৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সেই সঙ্গে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও অর্থনীতির জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। অর্থনীতিতে ঝুঁকির অন্যান্য ক্ষেত্র হচ্ছে প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া, সম্পদ ও আয়বৈষম্য এবং সরকারি ঋণ বেড়ে যাওয়া ও বেকারত্ব।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাদের বার্ষিক বৈঠকের আগে গতকাল বুধবার বৈশ্বিক ঝুঁকি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য ঝুঁকির সাধারণ ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সুনির্দিষ্ট ঝুঁকিগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রসঙ্গে ঝুঁকির উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।

মহামারির পর চলতি বছর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হবে সবচেয়ে কম—বিশ্বব্যাংক সদ্যই এ কথা বলার পর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বৈশ্বিক ঝুঁকি প্রতিবেদন দিল। সেখানে তারা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক ঝুঁকি চিহ্নিত করেছে।

বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের অংশীদার হিসেবে কাজ করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। মোট ৭১টি কোম্পানির ওপর জরিপ করে ঝুঁকির এই তালিকা প্রস্তুত করেছে তারা।

দ্য টেলিগ্রাফের বিশ্লেষণ  ‘সামনে সত্যিকার বড় পরীক্ষায় পড়বে বাংলাদেশ’-যুগান্তর

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল নির্বাচন বয়কট করায় ‘বিতর্কিত’ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল জয়ের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় এসেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। 

আওয়ামী লীগ ২৯৮ আসনের মধ্যে ২২২টি আসনে জিতেছে। সবচেয়ে বড় বিরোধী দল— জাতীয় পার্টি মাত্র ১১টি আসনে জয়লাভ করেছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ, যারা নিজেদের দলের টিকিট পাননি। তারা ৬১টি আসনে জয়ী হয়েছেন।

ফল স্পষ্ট হলেও আগামী কয়েক দিন, সপ্তাহ আর মাস বাংলাদেশকে সত্যিকারের বড় পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এই সময়ের মধ্যে দেশটির সরকার কেমন আচরণ করে তার প্রভাব পড়বে দেশটির প্রতিবেশীদের এবং ভারতের মতো বন্ধু দেশের ওপরও।

বাংলাদেশের দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে দ্য টেলিগ্রাফের বিশ্লেষণে এসব কথা বলা হয়েছে।  

৪০ শতাংশের স্বল্প ভোটারের উপস্থিতি এটাই বলছে যে, ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য ভোটারদের প্রতি বিএনপির আহ্বান কাজ করেছে। এটিই প্রথম নয় যে বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগ (১৯৯৬ সালে) কিংবা বিএনপি (২০১৪) দ্বারা বয়কট করা নির্বাচনে কম ভোটদানের হার দেখেছে। 

তবে ভোটারদের অসন্তুষ্টির অন্যান্য লক্ষণও রয়েছে— সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং অন্যান্য সমালোচকের ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠীগুলোর নিন্দার মুখে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন এস্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা বা অন্যান্য কঠোর পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক করেছে।

নয়াদিল্লির পুরনো বন্ধু আওয়ামী লীগের (ক্ষমতায়) ফিরে আসা ভারতের কৌশলগত স্বার্থের পক্ষে গেলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে মজবুত হয়েছে।

যাই হোক, নির্বাচনি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের স্বার্থে দেশের নতুন প্রশাসনকে অবশ্যই গত কয়েক মাসের ক্ষত সারাতে এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের কাছে পৌঁছাতে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভয়ের পরিবেশ সরিয়ে ফেলতে হবে, যার জেরে বিরোধী দলের অনেক সদস্য আত্মগোপনে রয়েছেন।

বিরোধীদেরও রাজনৈতিকভাবে পুনরায় যুক্ত হওয়ার জন্য গঠনমূলক উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এসব কিছুই বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য অত্যাবশ্যক। এটা অপরিহার্য, কারণ সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশে যে ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে, সেটা এমনভাবে বিস্ফোরিত হতে পারে, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। 

বন্ধু হিসেবে ভারতকে অবশ্যই ঢাকাকে পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দিতে হবে, যাতে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে না পড়ে। স্বাধীন দেশ হিসেবে ৫২ বছরে বাংলাদেশ গর্ব করার মতো অনেক কিছু অর্জন করেছে। এখন ঢাকার সেই অর্জনগুলোকে একীভূত করার সময়।

দ্য ডিপ্লোম্যাটের রিপোর্ট

বাংলাদেশে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন মেরুকরণ, সহিংসতার ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে-মানবজমিন

গণতান্ত্রিক একটি নির্বাচন থেকে বহুদিক থেকে ৭ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফাঁকফোকড় ছিল। হাজারো প্রার্থী, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনেক সংগঠন, বিশাল র‌্যালি, বিপুল পরিমাণ প্রেস এমনকি নজরকাড়া নির্বাচনী গান ছিল। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এই ভোটে প্রতিযোগিতার কোনো চিহ্ন ছিল না। বেশির ভাগ ভোটারের অংশগ্রহণ ছিল না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ার দাবি তোলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলো। কিন্তু তা আওয়ামী লীগ সরকার প্রত্যাখ্যান করার পর নির্বাচন বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি ও অন্য দলগুলো। অক্টোবরে মহাসমাবেশের পর বিএনপির বেশির ভাগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে কর্তৃপক্ষ। নির্বাচন বর্জনের অর্থ হলো ৭ই জানুয়ারি ভোটকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার বহু আগেই এটা পরিষ্কার হয়ে যাওয়া যে- বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদ নিশ্চিত করবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ। এরপর নির্বাচন কমিশন যখন ঘোষণা করলো যে, ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ অথবা দলটি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মিলে ২৮৩টি আসনে জয়ী হয়েছে, তখন বিস্মিত হওয়ার কিছু ছিল না। ভোটকে বিশ্বাসযোগ্যতা দেয়ার জন্য অন্য আসনগুলোতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের প্রত্যাহার করেছে, যাতে তাদের মিত্ররা বা সাজানো বিরোধীরা জিততে পারেন।

কিন্তু এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যখন আরও ৫ বছরের মেয়াদ নিশ্চিত করলো, তখন তা একটি ‘পিরিক বিজয়’ হিসেবে ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। (এমন একটি বিজয়কে পিরিক বিজয় বলে আখ্যায়িত করা হয়, যে বিজয়ে বিজয়ীকে ভীষণ মূল্য দিতে হয়- যা তার পরাজয়ের সমতুল্য)। এই দলটির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গভীর ফাটল, যা ভোটের ফলে প্রকৃতভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে নিবন্ধিত ভোটারদের শতকরা কমপক্ষে ৪০ ভাগ ভোট দিয়েছেন। কিন্তু সারাদিন ভোটকেন্দ্রগুলো দেখা গেছে শূন্য। এ জন্য এত বেশি সংখ্যক মানুষ ভোট দিয়েছেন যে, এই সংখ্যাটা নিয়ে উচ্চ মাত্রায় সংশয় আছে। তবু ঘটনা যা-ই হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত উচ্চ ভোট দেখানো হলেও তা সাম্প্রতিক দশকগুলোতে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে শতকরা ৭৫ থেকে ৮৫ ভাগ ভোটের চেয়ে অনেক কম। 

কোনো বাস্তব বিরোধী না থাকায়, ভোট দেয়ার আগ্রহ বেশিরভাগ ভোটারের মধ্যেই ছিল না বললেই চলে। কিন্তু ৭ই জানুয়ারি নির্বাচন বা সমালোচকদের মতে ‘সিলেকশন’ ছিল ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য একটি গণভোটের মতো। এই নির্বাচনে কম মাত্রায় ভোটার ভোট দেয়ার মধ্য দিয়ে সরকারের সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সে ভোটারদের অসন্তোষ কোন পর্যায়ে তা প্রতিফলিত হয়েছে। দেশের ভিতরে সমালোচকদের বিরুদ্ধে কঠোর হাতে দমনপীড়ন, ব্যাপক বিস্তৃত দুর্নীতি ও দুষ্টচক্র বৃদ্ধি পাওয়ার ধারণা এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার কারণে ক্ষমতাসীন দলটির সমর্থন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই কারণগুলো বিরোধিতাকে নতুন একটি গতি দিয়েছে, যা কয়েক বছর আগেও শেষ পর্যায়ে উপনীত হয়েছিল। 

দেড় বছর ধরে বিএনপি বেশির ভাগই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছিল শেখ হাসিনাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য, যাতে ওই সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারে। কিন্তু তাদের দাবি কর্ণকুহরে প্রবেশ করতে যখন ব্যর্থ হয়, তখন তারা লক্ষাধিক সমর্থককে ঢাকায় মহাসমাবেশে ডাকে। ২৮শে অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ ভণ্ডুল করে দেয়ার পর দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে সরকার। নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্যতা করতে কিছু পদক্ষেপ নেয় আওয়ামী লীগ। তারা বিএনপিকে ভাঙ্গার চেষ্টা করে। এ জন্য বিএনপির সিনিয়র নেতাদের আশ্বস্ত করা হয় যে, যদি তারা নির্বাচনে আসতে রাজি হন তাহলে তাদেরকে জেল থেকে মুক্তি দেয়া হবে। শেষ পর্যন্ত একজন মাত্র ব্যক্তি সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন। তার জামিন নিশ্চিত হয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের টিকেট পাওয়ার জন্য আগেই মনোনীত হয়ে যান সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু পুরো বিএনপি এক থেকেছে। তারা সেভাবে টিকে আছে। একতার পরীক্ষায় টিকে আছে। তারা নির্বাচন বর্জনের প্রচারণায় থাকে। যদিও দলটির বেশির ভাগ সদস্য এবং নেতা জেলে, তবুও তারা একটি কার্যকর রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে থেকে গেছে। 

এর ফলে বাংলাদেশ একটি সূক্ষ্ম অবস্থানে এসেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে আছে। কিন্তু তার বৈধতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান হারে বিতর্ক হচ্ছে। পরপর টানা তিনটি ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের পর ভোটারদের মধ্যে সর্বকালের সবচেয়ে বেশি হতাশা দেখা দিয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের আন্দোলিত করতে বিরোধী দলের অহিংস আন্দোলনের কৌশল এবং দলের ভাবমূর্তি দেশে এবং বিদেশে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কার্যকর ফল দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশের রাজনীতিতে সহিংসতা খুব ঘন ঘন দেখা গিয়েছে, তা এর মধ্য দিয়ে বিদায় নিয়েছে। অন্যদিকে অহিংস এই আন্দোলন করলেও বিরোধীরা তাদের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।  এখন রাজনৈতিক সহিংসতার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। দলটির বেশির ভাগ উদারপন্থি নেতা জেলে। ফলে দলটির কোনো অংশ থেকে বিরোধীদেরকে অতীতের ভয়াবহ সহিংসতায় ফেরাতে চাইতে পারেন। যদি এটা ঘটে তাহলে তা হবে মারাত্মক এক ভুল। কারণ, এর ফলে বিএনপিকে বাংলাদেশের জন্য সমস্যার একটি কারণ হিসেবে দেশে এবং বিদেশে দেখানোর সুযোগ করে দেয়া হবে আওয়ামী লীগ সরকারকে।  

এরই মধ্যে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে শেখ হাসিনা বিএনপির ওপর আরও দমনপীড়ন চালানোর পূর্বাভাস দিয়েছেন। তিনি সমর্থকদের বলেছেন, এই দলটির রাজনীতি করার অধিকার নেই। তবে এ কথা দিয়ে তিনি কি বুঝাতে চেয়েছেন তা পরিষ্কার না হলেও বিএনপিকে নিষিদ্ধ করাটা হবে একটি ভুল। এমন পদক্ষেপ নেয়া হলে বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক প্রকৃত পছন্দ এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার ঝুঁকি থাকবে, এসব দেশের ওপর বাণিজ্যের জন্য নির্ভরশীল বাংলাদেশ। বাস্তবে ওই নীতি প্রয়োগ করা কঠিন হবে। ২০১৩ সালে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে জামায়াতে ইসলামীকে। কিন্তু উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এখনও তারা রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিএনপিকে আন্ডারগ্রাউন্ডে পাঠানো হলে তাতে দেশ আরও মেরুকরণ হবে। এরই মধ্যে ছোট ছোট বিরোধী দল, যারা নির্বাচন বর্জন করেছে তারা বিএনপির সঙ্গে একক আন্দোলনে মিশে যাচ্ছে। এ দলটিকে নিষিদ্ধ করা হলে এই ধারা আরও ত্বরান্বিত হবে। একত্রিত হবে বামপন্থি, মধ্যপন্থি বিএনপি এবং ইসলামপন্থি শক্তিগুলো। 

যদিও বিএনপি এর মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা নির্বাচনের পরের সপ্তাহে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করবে না। অবরোধ দেবে না। কিন্তু সরকারকে দুর্বল করতে এবং তাকে পদত্যাগে বাধ্য করতে আরও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিরোধীরা চালাবে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়। আওয়ামী লীগকে এই আন্দোলন ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে বলে মনে না হলেও সরকার মনে করতে পারে আন্দোলনকে আরও বৃদ্ধি পাওয়া রোধে অধিক কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে হবে। অতীতে যখন নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধী শক্তিগুলোকে টার্গেট করেছে জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে, তখন এই প্রবণতা গভীর উদ্বেগের। 

অর্থনীতির ওপরও এর বড় রকম ক্ষতিকর প্রভাব থাকতে পারে। বিশেষ করে যখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে এবং মুদ্রাস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে রয়ে গেছে। অনিশ্চয়তা, অস্থিতিশীলতা এবং রাজপথে বড় রকম সহিংসতা হলে তাতে পলিসিমেকাররা স্থিতিশীলতার জন্য কঠোরতা অবলম্বন করতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় আঘাত লাগতে পারে। বিশেষ করে ইমেজ নিয়ে সচেতন পশ্চিমা ব্রান্ডগুলো, যারা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক কেনে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ আসে এই তৈরি পোশাক খাত থেকে। 

যদিও বিএনপি এর মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা নির্বাচনের পরের সপ্তাহে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করবে না। অবরোধ দেবে না। কিন্তু সরকারকে দুর্বল করতে এবং তাকে পদত্যাগে বাধ্য করতে আরও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিরোধীরা চালাবে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়। আওয়ামী লীগকে এই আন্দোলন ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে বলে মনে না হলেও সরকার মনে করতে পারে আন্দোলনকে আরও বৃদ্ধি পাওয়া রোধে অধিক কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে হবে। অতীতে যখন নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধী শক্তিগুলোকে টার্গেট করেছে জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে, তখন এই প্রবণতা গভীর উদ্বেগের। 

অর্থনীতির ওপরও এর বড় রকম ক্ষতিকর প্রভাব থাকতে পারে। বিশেষ করে যখন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে এবং মুদ্রাস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে রয়ে গেছে। অনিশ্চয়তা, অস্থিতিশীলতা এবং রাজপথে বড় রকম সহিংসতা হলে তাতে পলিসিমেকাররা স্থিতিশীলতার জন্য কঠোরতা অবলম্বন করতে পারেন। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় আঘাত লাগতে পারে। বিশেষ করে ইমেজ নিয়ে সচেতন পশ্চিমা ব্রান্ডগুলো, যারা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক কেনে। বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ আসে এই তৈরি পোশাক খাত থেকে। 

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

বিলকিসের ধর্ষকদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না

বিলকিস কাণ্ডে ৯ অভিযুক্ত নিখোঁজ! কোথায় গেলেন ধর্ষকরা? মুখে কুলুপ স্থানীয়দের।-সংবাদ প্রতিদিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় (Bilkis Bano Case) ১১ জন দোষী সাব্যস্তকে কার্যত জেলে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এর জন্য সময়ও বেঁধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর মধ্যেই প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর সংবাদ, ১১ জনের মধ্যে ৯ জনের হদিশ মিলছে না! গুজরাটের (Gujarat) দাহোদ জেলার পাশাপাশি দুই গ্রাম বাড়ি দোষীদের। ৯ জনের বাড়িতে তালা ঝুলছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এমন ঘটনায় নতুন করে দোষারোপ শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ভয়ংকর অপরাধে দোষীরা পলাতক না কি কেউ বা কারা ওদের গা ঢাকা দিতে সাহায্য করছে? এই বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয়রা।

বিলকিসের দোষীদের ২০২২ সালের ১৫ আগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাট সরকার। মুক্তির পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই ১১ জনকে সংবর্ধনা দিয়েছিল বলে অভিযোগ। এমনকী বিতর্কের মাঝে গুজরাট সরকার জানায়, জেলে ১১ জন ধর্ষক ও খুনি ‘ভালো আচরণ’ করেছে। সেই কারণেই তাদের সাজার মেয়াদ কমানো হয়েছিল। যার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস। গত সোমবার সুপ্রিম কোর্ট গুজরাট সরকারের ওই নির্দেশ বাতিল বলে ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে ওই ১১ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ধর্ষককে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যেই জেলে ফেরার নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Image Caption

 

সংবাদ প্রতিদিনের খবরে লেখা হয়েছে, ভুটানের (Bhutan) মসনদে ভারতের ‘বন্ধু’ শেরিং তোবগে। নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরই তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকের অনুমান ছিল, নির্বাচনে কলকাঠি নেড়ে চিনপন্থী নেতাদের ভুটানের ক্ষমতায় বসাতে পারে বেজিং। যেভাবে কয়েকমাস আগে মালদ্বীপে ক্ষমতায় এসেছিলেন চিনপন্থী মহম্মদ মুইজু। তবে সমস্ত আশঙ্কা নস্যাৎ করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তোবগের দল। ৫ বছর পরে ফের প্রধানমন্ত্রী হলেন শেরিং।

জিনপিংয়-মোদী

তবে আনন্দবাজার পত্রিকার একটি শিরোনাম এরকম, ‘মলদ্বীপের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব সাহায্য করবে চিন’, জিনপিংয়ের আশ্বাস কি দিল্লিকে হুঁশিয়ারি? বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে নয়াদিল্লি-মালে টানাপড়েনের আবহে এ বার সক্রিয় বেজিং। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সে দেশ সফররত মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুকে আশ্বাস দিয়েছেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বতো ভাবে সহায়তা করা হবে। কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।

পাঁচ দিনের চিন সফরের তৃতীয় দিনে বুধবার জিনপিংয়ের সঙ্গে রাজধানী বেজিংয়ে বৈঠক করেন মুইজ্জু। সেখানেই ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের আবহে মলদ্বীপের পাশে থাকার অঙ্গীকার করে চিনা প্রেসিডেন্ট তথা কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই বৈঠকেই বেজিংকে তাঁদের ‘পুরনো বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠতম সহযোগী’ বলেন মুইজ্জু। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সংক্রান্ত কয়েকটি চুক্তি সই হয়েছে বলে চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমটির দাবি।

কূটনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, এ ক্ষেত্রে কার্যত ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চিন। জিনপিংয়ের বক্তব্যে স্পষ্ট, এ বার ‘ভারতীয় প্রভাব বলয়ে’ থাকা দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে অনুপ্রবেশের ছক কষছেন চিনের কমিউনিস্ট নেতৃত্ব। অতীতে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাক সংঘাতেও তাঁদের এমন ভূমিকা দেখা গিয়েছে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১১

ট্যাগ