ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪ ১১:০০ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২৪ ফেব্রুয়ারি শনিবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।

বাংলাদেশের শিরোনাম: 

  • গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাড়িচাপায় শ্রমিক নিহত, মহাসড়ক অবরোধ-ভাঙচুর-প্রথম আলো
  • সক্রিয় দুই শতাধিক কিশোর গ্যাং, নিয়ন্ত্রণে শতাধিক গডফাদার-ইত্তেফাক
  • নিত্যপণ্যের দাম কমছেই না -মানবজমিন
  • আমি এই দেশের সন্তান এই দেশেই থাকব, দেশের জন্য যে কাজ করি সেটাই করব: ড. ইউনূস-ডেইলি স্টার বাংলা
  • মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা খালাস ৯৫ ভাগ আসামি-যুগান্তর

কোলকাতার শিরোনাম:

  • সাংসদেরা দলবদলের মুখে, বিএসপিতে ভাঙন?-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • এক সপ্তাহে ৩ বার বাংলায় মোদি-সংবাদ প্রতিদিন
  • সন্দেশখালির মানুষ চান শাহজাহানের শাস্তি, কমিশনের রিপোর্ট বলছে অন্য কথা-গণশক্তি
  • মোদি ফ্যাসীবাদী, জবাব গুগুলের, ক্ষুব্ধ দিল্লি-আজকাল

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত তুলে ধরছি। দৈনিকগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন খবরকে প্রধান শিরোনাম করা হয়েছে।

ইত্তেফাকের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম-সক্রিয় দুই শতাধিক কিশোর গ্যাং, নিয়ন্ত্রণে শতাধিক গডফাদার। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, রাজধানীসহ সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে দুই শতাধিক কিশোর গ্যাং দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বিপথগামী কিশোররা এলাকায় মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন, চাঁদাবাজি এমনকি হত্যার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ও ভোলার দৌলতখানে কিশোর গ্যাং গ্রুপের হামলায় দুই জন নিহত হয়েছে। এ কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে শতাধিক গডফাদার।

পর্দার আড়ালে থেকে রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে গডফাদাররা কিশোর গ্যাং দিয়ে এলাকায় মাস্তানি, চাঁদাবাজি ও এলাকা নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে খুনোখুনির ঘটনাও ঘটাচ্ছে। ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সের এ কিশোরদের অজানা অপরাধে হাতেখড়ি হওয়ার পর এক পর্যায়ে তারা বড় অপরাধ জগতে পা রাখছে। আজকের কিশোর গ্যাং সদস্যই তিন-চার বছর পর অপরাধ রাজ্যে ‘বড় ভাই’ হয়ে যাচ্ছে। বড় ভাই থেকে এক সময়ে নেপথ্যের গডফাদার বনে যায়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, বিপথগামী কিশোররা এলাকায় মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন, চাঁদাবাজি এমনকি হত্যার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। এই কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে শতাধিক গডফাদার। এদের মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২১ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নাম রয়েছে। এছাড়া অর্ধশত গডফাদার রয়েছে, যারা থানা ও ওয়ার্ডে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পদধারী। পর্দার আড়ালে থেকে গডফাদাররা এখন কিশোর গ্যাং গ্রুপকে পরিচালনা করছে।

গত দুই সপ্তাহে পুলিশ ও র‍্যাবের হাতে কিশোর গ্যাং গ্রুপের অন্তত শতাধিক বড় ভাই গ্রেফতার হয়েছে।

মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা খালাস ৯৫ ভাগ আসামি-যুগান্তরের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, ভালো কর্মসংস্থানের আশায় বিদেশে পাড়ি জমিয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন অনেকে। কেউ বাধ্য হচ্ছেন পতিতাবৃত্তিতে, কেউ কাজ না পেয়ে ঘুরছেন রাস্তায়, কেউ বিনা অনুমতিতে প্রবাসে অবস্থান করতে গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন কারাগারে। কাউকে আবার জিম্মি করে নির্মম নির্যাতনের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে মুক্তিপণ। অনেকে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে বিদেশে গিয়ে পাচ্ছেন না প্রতিশ্রুত কাজ। একই ধরনের ঘটনা ঘটছে দেশেও। এসব ঘটনায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়। তবে ৯৫ শতাংশ আসামিই খালাস পেয়ে যান। ফের জড়ান পুরোনো অপরাধে। এভাবে মানব পাচারের অপরাধ বেড়েই চলছে। এতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে নারী ও শিশুরা।

গণতন্ত্র ও মানবাধিকার না থাকলে জাতি হিসেবে আমরা টিকে থাকবো না: ড. ইউনূস-মানবজমিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, আমি চারদিকে বিপদের মধ্যে আছি। এ অবস্থায় কথা না বলা নিজেকে রক্ষা করার একটা সুবিধা। যতো কথা কম বলা যায়, ততোই হয়তো ঝামেলার হাত থেকে বাঁচবো। ১২ তারিখে আমাদের অফিস দখল নিতে গেলো। আমরা পুলিশের কাছে গেলাম। পুলিশ বললো, আমরা এ ব্যাপারে কিছু করতে পারবো না।

শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাতে ইউটিউবে ‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ টকশো-তে 'মুখোমুখি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস' অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এমন মন্তব্য করেছেন।

সম্প্রতি গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে দেশের সবাইকে এক কণ্ঠে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছিলেন ড. ইউনূস। এই বক্তব্য ব্যখ্যা করার অনুরোধ করলে তিনি বলেন, আমরা কেউই গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে না এটা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া। আমরা সবাই গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, ন্যায়-নীতির পক্ষে। এগুলো না থাকলে জাতি হিসেবে আমরা টিকে থাকবো না। গণতন্ত্রের কথা সবাই এখন মুখ খুলে বলতে পারছে না।

নিত্যপণ্যের দাম কমছেই না-মানবজমিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, বাজারে নতুন সবজি ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজির দাম সামান্য কমেছে। তবে বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় এখনো অনেক বেশি। এদিকে বেড়েই চলেছে মাছ, মুরগি ও পিয়াজের দাম। এ ছাড়া বাজারের অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চড়া দামে আটকে আছে। রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসায়ীরা রমজানের অনেক আগে থেকেই এই ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ালে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

সাংসদেরা দলবদলের মুখে, বিএসপিতে ভাঙন?-আনন্দবাজার পত্রিকার এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, বিরোধী দলগুলি আগ্রহ দেখানো সত্ত্বেও বিএসপি নেত্রী মায়াবতী জানিয়েছেন তাঁর দল একাই লড়বে উত্তরপ্রদেশে। তবে রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বিএসপি-র অস্তিত্বই এখন ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে। সূত্রের খবর, তাদের ১০ জন সাংসদ দলত্যাগী হওয়ার জন্য অন্য দলগুলির সঙ্গে সমঝোতা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। তাঁদের মধ্যে চার জন যোগাযোগ করেছেন শাসক দল বিজেপির সঙ্গে। তিন জন কংগ্রেস এবং তিন জন এসপি-র সঙ্গে কথা বলছেন। স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, তাঁদের বিএসপি ত্যাগ সময়ের অপেক্ষামাত্র।অন্য দিকে, শক্তিহীন মায়াবতীর দলিত ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসানোর জন্য মাঠে নেমেছে নরেন্দ্র মোদীর দল।

এক সপ্তাহে ৩ বার বাংলায় মোদি-সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার এ খবরে বলা হয়েছে, বাংলা থেকেই শুরু লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করবেন নরেন্দ্র মোদি। সূত্রের খবর, আগামী ১ মার্চ আরামবাগে সভা করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তৃণমূলের দখলে থাকা ওই লোকসভা কেন্দ্রটিকে এবার টার্গেট করেছে বিজেপি। আরামবাগের পর ২ তারিখ কৃষ্ণনগরে সভা করতে পারেন মোদি। আর ৬ তারিখ বারাসতে সভা। ফলে এক সপ্তাহে তিনবার বঙ্গ সফরে মোদি।এপ্রিলের শুরুতেই ভোট আসন্ন। তার আগে থেকে প্রচারের দামামা বাজাতে চলেছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। একদিকে, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জেলায় জেলায় ঘুরে সরকারি প্রকল্পের পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে দিয়ে একপ্রকার শুরু করেছেন। আরেকদিকে বিজেপিও হেভিওয়েটদের দিয়ে প্রচার শুরু করছে। মার্চ পড়তেই তা শুরু হচ্ছে। একেবারে প্রধানমন্ত্রীকে দিয়েই হাইভোল্টেজ প্রচারের সূচনা করছে বঙ্গের গেরুয়া ব্রিগেড।

মোদি ফ্যাসীবাদী, জবাব গুগুলের, ক্ষুব্ধ দিল্লি-আজকাল পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ফ্যাসিবাদের সাদৃশ্য রয়েছে। গুগুলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জেমিনির এই জবাবে ক্ষুব্ধ দিল্লি। আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী জেলেনস্কির ক্ষেত্রে এই জবাব দেওয়া হয়নি। গুগুলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে সরব কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক। সূত্রের খবর, গুগুলকে এই বিষয়ে নোটিশ পাঠাতে চলেছে মোদি সরকার।গুগুলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দেওয়া জবাবকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেছে কেন্দ্রীয় তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক।

দৈনিকটির অপর এক খবরের শিরোনাম-ওঁর মাথার ঠিক নেই, নাম না করে রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ মোদির। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, বেনারস নিয়ে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যে কংগ্রেস নেতাকে তীব্র আক্রমণ নরেন্দ্র মোদির। রাহুল গান্ধী মন্তব্য করেন, মদ্যপান করে অনেক মানুষকে তিনি বেনারসের রাস্তায় শুয়ে থাকতে দেখেছেন। এর পাল্টা মোদি জানান, যাঁর নিজেরই মাথার ঠিক নেই সে আবার আমার বেনারসের সন্তানদের নিয়ে মন্তব্য করছে। নাম না করে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, শাহী পরিবারের "যুবরাজ" বেনারসের মানুষকে অপমান করেছে।

রাহুল গান্ধীর পাশাপশি ইন্ডিয়া জোটকেও একহাত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদি বলেন, "এই অপমান ভুলবেন না। ওঁরা তরুণদের প্রতিভাকে ভয় পায়। কাশী, অযোধ্যার নতুন রূপ ওরা পছন্দ করে না।" কংগ্রেসকে আক্রমণ করে মোদি বলেন, দুর্নীতির কারণে উত্তরপ্রদেশ কয়েক দশক ধরে উন্নয়নে পিছিয়ে ছিল। তাঁর বিশ্বাস, উত্তরপ্রদেশের সমস্ত আসন এনডিএ-তে যাবে।

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ২৪

ট্যাগ