ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ ১৭:৪৬ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। পরে বিস্তারিত খবরে যাব।

বাংলাদেশের শিরোনাম: 

  • ব্যয় তিন গুণ, তবু কেনা হয় তেলভিত্তিক কেন্দ্রের বিদ্যুৎ-প্রথম আলো
  • রাজধানীর ৪ হাসপাতালে র‍্যাবের অভিযান-ইত্তেফাক
  • সরকারের চেয়ে সিন্ডিকেট কিভাবে শক্তিশালী হয়, প্রশ্ন সংসদে-যুগান্তর
  • গণতন্ত্র মঞ্চের মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, জোনায়েদ সাকি আহত-মানবজমিন
  • বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে গ্রাহকের-ডেইলি স্টার বাংলা

কোলকাতার শিরোনাম:

  • সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আলাদা, একটার সঙ্গে আর একটার তুলনা করবেন না-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • হিমাচলে শুরু ‘নাটক’, ইস্তফা মন্ত্রীর, বহিষ্কৃত ১৫ বিধায়ক-সংবাদ প্রতিদিন
  • পদত্যাগ করছি না, ঘোষণা হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রীর- গণশক্তি
  • মুসলিমদের ঘর ভাড়া না দেওয়ার নির্দেশ পোস্টার জয়পুরে-পুবের কলম-পুবের কলম
  • কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের ‘হুমকি ও ভয়’ দেখানো হয়েছে: জয়শঙ্কর-আজকাল

শিরোনামের পর এবার বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত তুলে ধরছি। দৈনিকগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন খবরকে প্রধান শিরোনাম করা হয়েছে। মানবজমিনের শিরোনাম-গণতন্ত্র মঞ্চের মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জ, জোনায়েদ সাকি আহত। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংকের অর্থ লোপাট ও অর্থপাচারের প্রতিবাদে সচিবালয় অভিমুখে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিলে দুই দফা লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম কিন্তু পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে। আমাদের অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তাদের হসপিটালে পাঠানো হয়েছে। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিকে অনেক মেরেছে পুলিশ। তিনিও আহত।

সরকারের চেয়ে সিন্ডিকেট কিভাবে শক্তিশালী হয়, প্রশ্ন সংসদে-যুগান্তরের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, সরকারের চেয়ে বাজার সিন্ডিকেট কিভাবে শক্তিশালী হয়- এ প্রশ্ন করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের উপনেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।তিনি বলেন, ‘সরকারের চেয়ে কিভাবে সিন্ডিকেট শক্তিশালী হয়? আমাদের দেশের বিভিন্ন সংস্থা আছে, তথ্য আছে, তাহলে কিভাবে সরকারের চেয়ে এরা বড় শক্তিশালী হয়? প্রধানমন্ত্রী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলার পরও দৃশ্যমান কিছু দেখা যাচ্ছে না।’এ সময় তিনি আরও বলেন, আমি বলতে পারি, যদি সিন্ডিকেটকে শক্ত হাতে দমন করা না হয়, তাহলে এরা রমজানে পণ্যের দাম বাড়াবে। এই সংসদে আগের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেটে হাত দেওয়া যাবে না। যদিও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। কিন্তু দৃশ্যমান কিছু দেখছি না।

ব্যয় তিন গুণ, তবু কেনা হয় তেলভিত্তিক কেন্দ্রের বিদ্যুৎ-ইত্তেফাকের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে, তেল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় অন্য জ্বালানির তুলনায় তিন গুণের বেশি। তবু সারা বছরই তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সরকার। বসে থাকছে গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার বড় একটি অংশ।বিদ্যুৎ খাতে বিপুল অঙ্কের অর্থ বকেয়া। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের দেনাও শোধ করা যাচ্ছে না। ফলে গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোদমে চালানো যাচ্ছে না। প্রতিমন্ত্রীর দাবি, বাধ্য হয়েই তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে হচ্ছে। ভর্তুকি বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ এবং আমদানির জন্য মার্কিন ডলার পাওয়া গেলে গ্যাস ও কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো যাবে।অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেল আমদানি করতেও ডলার লাগে। সেই ডলার দিয়ে গ্যাস ও কয়লা আমদানি করা যায়। তাঁদের মতে, বেসরকারি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে সুবিধা দিতে সেগুলো থেকে বিদ্যুৎ কেনা হয়।

ইত্তেফাকের খবরে লেখা হয়েছে, রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এলাকায় সরকারি শিশু হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একযোগে অভিযান চালিয়েছে র‍্যাব।জানা গেছে, সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া, দালালদের দৌরাত্ম্য এবং প্রেসক্রিপশন নিয়ে রোগী-স্বজনদের বিরক্ত করার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।এ ব্যাপারে র‌্যাব-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ নাজমুল্লাহেল ওয়াদুদ বলেন, রোগী ও তাদের স্বজনদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি হাসপাতাল থেকে বের করে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে বেশি বিল করে কমিশন বাণিজ্য করা হচ্ছে। সব টেস্ট সরকারি হাসপাতালে হলেও দালাল ও কিছু অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে এসব করা হচ্ছে।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত

হিমাচলে শুরু ‘নাটক’, ইস্তফা মন্ত্রীর, বহিষ্কৃত ১৫ বিধায়ক-সংবাদ প্রতিদিন

সম্ভাবনা ছিলই। আর সেই সম্ভাবনাকে সত্যি করে বুধবার সকাল থেকে ‘নাটক’ শুরু হিমাচল প্রদেশে (Himachal Pradesh)। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিং ইস্তফা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে। এদিকে এদিন বাজেট অধিবেশন শুরু হতেই বিজেপি বিধায়করা স্লোগান দিতে থাকেন। এর পরই স্পিকার ১৫ জন বিধায়ককে বহিষ্কার করেন।

এদিকে, পদত্যাগ করছি না, ঘোষণা হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রীর-গণশক্তি পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, ‘কেউ আমাকে পদত্যাগ করতে বলেনি। আমি পদত্যাগ করিনি। লড়াই চলবে।’ হিমাচল প্রদেশে নিয়ে টালমাটালের মধ্যেই সংবাদমাধ্যমে এই মন্তব্য করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং কংগ্রেস নেতা সুখবিন্দর সিং সুখু।রাজ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বিজেপি দল ভাঙানোর খেলা শুরু করায়। বুধবার বিধানসভায় আস্থা ভোটেরও দাবি করেছে বিজেপি।

কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের ‘হুমকি ও ভয়’ দেখানো হয়েছে: জয়শঙ্কর-আজকাল

কানাডার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সোমবার তিনি বলেন, “কানাডায় ভারতীয় কূটনীতিকদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে কানাডায় ভিসা ইস্যু করা সাময়িক স্থগিত করে ভারত। ওই সময় আমরা কানাডিয়ানদের কাছ থেকে স্বস্তি পাচ্ছিলাম না বললেই চলে।”

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আলাদা, একটার সঙ্গে আর একটার তুলনা করবেন না-আনন্দবাজার পত্রিকা/সংবাদ প্রতিদিন

সন্দেশখালির নাম উল্লেখ না করলেও বুধবার মমতা বলেন, "সিঙ্গুর হল সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম হল নন্দীগ্রাম, এক এক জায়গার এক একটা আলাদা আলাদা চেহারা মনে রাখবেন, একটার সঙ্গে আর একটার তুলনা করে দাঙ্গা বাঁধিয়ে দিয়ে ভুল করবেন না। কোথাও রক্ত ঝরুক আমি চাই না।" জ্ঞানত তিনি কোনও ভুলকে প্রশ্রয় দেন না বলেও জানান মমতা। ’নন্দীগ্রামের সঙ্গে সন্দেশখালির লাগাতার আন্দোলনের কী মিল, কী-ই বা অমিল, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা জারি রয়েছে।

মুসলিমদের ঘর ভাড়া না দেওয়ার নির্দেশ পোস্টার জয়পুরে-পুবের কলম ঘর ভাড়া না দেওয়ার, একজোট হওয়ার পোস্টার হিন্দুত্ববাদীদের

উত্তরাখণ্ডে যেভাবে বিজেপি শাসনকে কাজে লাগিয়ে সেখান থেকে মুসলিমদের উচ্ছেদের জন্যে পোস্টার লাগানো হয়েছিল, বাড়িওয়ালাদের বাধ্য করা হয়েছিল যাতে মুসলমানদের দোকান বা ঘর ভাড়া না দেওয়া হয়। সেই একই ঘটনার ট্রেলার দেখল জয়পুর। একই বার্তা। মুসলমানদের ঘর ভাড়া দেওয়া যাবে না। বাড়ি বিক্রি করা যাবে না। জয়পুরের নন্দপুরি কলোনির দেওয়ালে পোস্টার সাঁটানো হয়েছিল। সেখানে লেখা হয়েছিল, ‘হিন্দুদের কাছে অনুরোধ, আপনার একজোট থাকুন। সংঘর্ষ করুন। মুসলিম জিহাদের বিরুদ্ধে একত্রিত হন’।

কিন্তু কোন সাহসে এমন কাজ করছে সেখানকার হিন্দুত্ববাদীরা? এর জাবাবও মিলেছে। সেখানকার বিজেপি কাউন্সিলর এলাকার মানুষজনকে নিজেই বলেছেন, এলাকায় মুসলমানদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। এর পর থেকে এলাকায় পোস্টার সাঁটাচ্ছে হিন্দুত্ববাদীরা। ঘরে ঘরে পৌঁছে, হিন্দু বাড়ি মালিকদের বলা হচ্ছে, তারা যেন কোনও মুসলমনকে ঘর বা দোকান ভাড়া না দেয়।

এলাকার কাউন্সিলর অনিতা জৈনর সঙ্গে সাংবাদিকরা যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এই পোস্টার সম্পর্কে তিনি জানেন। এতে তার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। এই ভাবনাকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছেন তিনি।এ তো গেল কাউন্সিলরের কথা। কিন্তু এই ঘটনায় পুলিশের কি ভূমিকা, সেই প্রশ্নও উঠছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করা হয়নি বলে জানানো হয়েছে খোদ পুলিশের পক্ষ থেকে।

প্রশ্ন উঠছে, জয়পুরে কোনও মুসলিমকে বাড়ি ভাড়া দিলে সমস্যা কোথায়? বাড়ি বিক্রিতেই বা সমস্যা কোথায়? সংবিধানে কি জয়পুরে মুসলিমদের বাড়ি কেনায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে? তাহলে কেন এই অবিচার? সম্প্রতি রাজস্থানে ক্ষমতা পেয়েছে বিজেপি। উত্তরাখণ্ডেও যখন মুসলমান উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে, তখনও সেখানে ক্ষমতায় বিজেপি। তাহলে কি ক্ষমতার অপব্যবহার করে লোসভার আগে সুকৌশলে অশান্তি বাঁধানোর চেষ্টা করছে গেরুয়া দল? এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ২৮