মার্চ ১২, ২০২৪ ১৭:২২ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতাবন্ধুরা! আজ ১২ মার্চ মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • রোজার বাজারে নেই স্বস্তি-ইত্তেফাক
  • ‘রোজার বাজার অসহনীয়’-ডেইলি স্টার বাংলা
  • সুদ আসল দুটোই হারানোর আশঙ্কা-যুগান্তর
  • মতামত ডলার-টাকা অদলবদল ও রিজার্ভ বাড়ার বিভ্রম-প্রথম আলো
  • কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার শুরু- মানবজমিন 

কোলকাতার শিরোনাম:

  • সিএএ: কেন্দ্রের পোর্টালে আবেদন করবেন না! তা হলেই নাগরিকত্ব যাবে, সতর্ক করে দিলেন মমতা-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • CAA চালু হতেই খোল-করতাল নিয়ে নাচ, মঙ্গলে মমতার বার্তায় মন বদলাবে মতুয়াদের?-সংবাদ প্রতিদিন
  • সিএএ বাতিলের লড়াই-ই চলবে, জানালো পলিট ব্যুরো-গণশক্তি
  • CAA: 'আমাদের আর উদ্বাস্তু বলবে না', সিএএ লাগু হতেই আবেগপ্রবণ মতুয়ারা-আজকাল
  • আমরা দেশের ভূমিপুত্র-নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চাই, সিএএ নিয়ে হুঁশিয়ারি মমতা বালার-পুবের কলম

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবার দু'টি খবরের বিশ্লেষণে যাচ্ছি- 

কথাবার্তার বিশ্লেষণের বিষয়:

১. সংকটেও বাড়ছে প্রকল্প, কাটছাঁট ১৮ হাজার কোটি টাকা। দৈনিক মানব জমিনের শিরোনাম এটা। কী বলবেন আপনি?

২. পবিত্র রমজান উপলক্ষে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইরান। আপনার কী মনে হয়- ইরানের এই আহ্বান সাড়া দেবে মুসলিম বিশ্ব?

বাইরে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর

সোমালিয়ার দস্যুদের কবলে বাংলাদেশি জাহাজ, ২৩ নাবিক জিম্মি- যুগান্তর

সোমালিয়ার দস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ। বাংলাদেশের স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে এ জাহাজটি আক্রান্ত হয়।

সোমালিয়া থেকে প্রায় ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে সমুদ্রে অন্তত ১০০ দস্যু জাহাজটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ওই জাহাজে কর্মরত ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক দস্যুদের কাছে জিম্মি অবস্থায় রয়েছে। নৌপরিবহণ অধিদপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

জানা গেছে, সমুদ্রগামী এ জাহাজটি কয়লা নিয়ে মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। পথিমধ্যে গালফ অব ইডেনে জাহাজটিতে হামলা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় দস্যুরা। তাদের অনেকের হাতে অস্ত্র রয়েছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নাবিকেরা নিরাপদে রয়েছেন। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানিয়েছে। 

এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটির মালিক চট্টগ্রামের এসআর শিপিং লিমিটেড। এটি মূলত বাল্ক ক্যারিয়ার। 

জাহাজটি আক্রান্তের তথ্য যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম। তিনি বলেন, জাহাজের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। জাহাজের ক্রুরা (নাবিক) নিরাপদে রয়েছেন। তাদের উদ্ধারে আন্তর্জাতিক যে প্রক্রিয়া ও কৌশল রয়েছে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার শুরু-মানবজমিন

কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যেই মালদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে ভারত। চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজুর বেঁধে দেয়া সময়সীমা ১০ই মার্চ। এদিন ভারত ২৫ জন সেনা সদস্যকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এনডিটিভি এ খবর দিয়ে বলছে বাকিদের ফেরত আনা হবে এ মাসেই। উল্লেখ্য, মালদ্বীপের ভারতপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের সম্মতির ভিত্তিতে দেশটিতে ৮৯ জন ভারতীয় সেনা মোতায়েন করেছিল ভারত। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারত মহাসাগরে চীনের তৎপরতার ওপর নজরদারি করা।

তবে তার পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচি, মালদ্বীপের জনবসতিপূর্ণ দ্বীপগুলোতে খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজও করতেন ভারতীয় সেনারা। কিন্তু ভারতীয় সেনাদের উপস্থিতিকে মালদ্বীপের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থি হিসেবে উল্লেখ করে এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলেন দেশটির অন্যতম নেতা ও চীনপন্থি রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ মুইজ্জু। গত সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর মালদ্বীপ থেকে নিজ সেনা সদস্যদের ফিরিতে নিতে ভারতকে আহ্বানও জানান তিনি। সেই সঙ্গে সময়সীমা বেঁধে দেন যে ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে ভারতকে তার সেনাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। পরে নয়াদিল্লির সঙ্গে এক বৈঠকের পর এই সময়সীমা ১০ মে পর্যন্ত বর্ধিত করেন তিনি।

মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পূর্ব পর্যন্ত ভারত মহাসাগর অঞ্চলে কৌশলগত দিক থেকে নয়াদিল্লির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল মালদ্বীপ। তবে মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর থেকে একদিকে এই সম্পর্কে শীতলতা এসেছে, অন্যদিকে বেড়েছে এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব বৃদ্ধির আশঙ্কা। গত জানুয়ারিতে চীন সফরে যান মোহাম্মদ মুইজ্জু। সেখানে বেইজিংয়ের সঙ্গে মালদ্বীপের অবকাঠামো, জ্বালানি, সমুদ্র গবেষণা ও কৃষি সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করে এসেছেন তিনি। অন্যদিকে ভারত গত মাসে ঘোষণা দিয়েছে এখন থেকে নিজেদের লাক্ষাদ্বীপ অঞ্চলে নৌবাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করবে দেশটি। মালদ্বীপ থেকে লাক্ষাদ্বীপের দূরত্ব মাত্র ১৩০ কিলোমিটার।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

সিএএ সম্পর্কিত খবর আজকের ভারতের প্রায় সব দৈনিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছে। সংবাদ প্রতিদিনের শিরোনাম-লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার মাত্র কয়েকদিন আগে কেন্দ্র সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর (CAA) করেছে মূলত বাংলার সমীকরণ মাথায় রেখে। যা খানিকটা হলেও পাকে ফেলেছে রাজ্যের শাসকদলকে। অন্তত এই আইনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর যেভাবে মতুয়া সম্প্রদায়কে উৎসবে মাততে দেখা গিয়েছে, তাতে খানিকটা হলেও প্রমাদ গুণেছে শাসকদল। অন্য একটি খবরে লেখা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, AA-র পোর্টালে আবেদন করলেই বাতিল হবে নাগরিকত্ব। আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে এ সম্পর্কে লেখা হয়েছে, কেন্দ্রের চালু-করা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে নাগরিকদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার হাবড়ার প্রশাসনিক সভা থেকে মমতা বলেন, ‘‘একটা কথা মন দিয়ে শুনে নিন! আপনারা কেউ নাগরিকত্বের জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করবেন না। করলেই আপনাদের নাগরিকত্ব চলে যাবে। আপনাকে বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বলবে। আপনার সম্পত্তি কেড়ে নেবে। ওই ফাঁদে খবরদার পা দেবেন না!’’

সংবাদ প্রতিদিনের অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, মোদি ভক্ত অভিনেত্রী কঙ্গনা বলেছেন, মোদি যা বলেন, তা করেন’, CAA চালু হতেই কেন্দ্রের হয়ে গলা ফাটালেন। সিএএ চালু সম্পর্কিত খবরে লেখা হয়েছে, মঙ্গলবার থেকেই সিএএ (CAA) অনলাইন পোর্টালে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যাবে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। আর পুবের কলম পত্রিকায় লেখা হয়েছে, তৃণমুলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমরা দেশের ভূমিপুত্র-নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চাই, সিএএ নিয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন।

হরিয়ানায় ভাঙল এনডিএ, খট্টরকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাইনি-আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে লেখা হয়েছে, হরিয়ানায় ভাঙল এনডিএ, খট্টরকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাইনি। খবরটিতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটের পরে জাঠ নেতা দুষ্মন্তের সঙ্গে জোট করে সরকার গড়েছিল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছিলেন খট্টর। উপমুখ্যমন্ত্রী করা হয় দুষ্মন্তকে।এরই মধ্যে চণ্ডীগড়ে বিজেপি ও তার সহযোগী বিধায়কদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পদে খট্টরের উত্তরসূরি হিসাবে কুরুক্ষেত্রের বিজেপি সাংসদ নায়েব সিংহ সাইনির নাম চূড়ান্ত হয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে।আরএসএসের স্বয়ংসেবক হিসাবে সঙ্ঘ পরিবারে যুক্ত হওয়া সাইনি বর্তমানে হরিয়ানা বিজেপির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছে।বৈঠকের পরে সাইনি রাজ্যপাল বন্দারু দত্তাত্রেয়র কাছে গিয়ে সরকার গড়ার দাবি জানান। এদিকে সিএএ ইস্যুতে উত্তপ্ত অসম।বিজ্ঞপ্তি পুড়িয়ে বিক্ষোভ।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/ ১২

ট্যাগ