আবরার হত্যা: হত্যাকারীরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৩ নভেম্বর বুধবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। এরপর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাবো। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশের শিরোনাম:
- আবরার হত্যা: হত্যাকারীরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল-দৈনিক প্রথম আলো
- কেউ অন্ধকারে থাকবে না, সব ঘরেই আলো জ্বলবে : প্রধানমন্ত্রী- কালেরকণ্ঠ
- আবরার হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে: আইনমন্ত্রী- দৈনিক যুগান্তর
- নেতিবাচক রাজনীতির কারণে দল ছাড়ছেন বিএনপি নেতারা’-দৈনিক ইত্তেফাক
- অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি নয়: কাদের-দৈনিক মানবজমিন
- আ’লীগ থেকে বিএনপিতে আসার অবস্থা তৈরী হয়েছে : মির্জা ফখরুল-দৈনিক নয়াদিগন্ত
ভারতের শিরোনাম:
- সবাই যেন ত্রাণ পায়’, বসিরহাটে বুলবুল বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
- শিবসেনাকে সমর্থন দিলে মুখ্যমন্ত্রী পদেরও দাবি জানাবে এনসিপি, সূত্রের খবর -দৈনিক আজকাল
- পুরসভা অভিযান ঘিরে পুলিশ-বিজেপি ধস্তাধস্তি, ধুন্ধুমার চাঁদনি চকে-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
পাঠক/শ্রোতা! এবারে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিশ্লেষণে যাব। জনাব সিরাজুল ইসলাম কথাবার্তার আসরে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
কথাবার্তার প্রশ্ন
১. ২৫ জনকে আসামি করে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র নিহত আবরার হত্যার চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। কী বলবেন আপনি?
২. ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা নিয়ে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার মূল কারণ হিসেবে মার্কিন ভুল আচরণকে চিহ্নিত করেছে চীন। আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
জনাব সিরাজুল ইসলাম আপনাকে আবারো ধন্যবাদ
আবরার হত্যা: হত্যাকারীরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল-দৈনিক প্রথম আলো
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, কোনো একক কারণে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়নি। তিনি (আবরার) শিবির করেন কি না, হত্যার পেছনে এটি একটি মাত্র (অন্যতম) কারণ। কিন্তু যাঁরা তাঁকে হত্যা করেছেন, তাঁরা এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। কেউ তাঁদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলে, সালাম না দিলে, তাঁদের সামনে হেসে দিলে ইত্যাদি কারণে তাঁরা নির্যাতন করতেন।

আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
মনিরুল বলেন, ‘অভিযুক্তরা র্যাগিংয়ের নামে নতুনদের আতঙ্কিত রাখতে এসব কাজ করেন। এসব বিষয়ে আমরা আগে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে তদন্তে একজন সাক্ষী বলেছেন যে তিনি একজনকে সালাম দেননি বলে তাঁকে পেটানো হয়েছে। র্যাগিংয়ের নামে উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের অভ্যস্ততার অংশ হিসেবেই আবরার হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আগে থেকে মনিটরিং করলে এমন ঘটনা না–ও ঘটতে পারত। এটা তাদেরই মনিটর করার কথা।’
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি রাত ১০টার পর থেকে আবরারের ওপর নির্যাতন শুরু হয়। ২টা ৫০–এর দিকে ডাক্তার তাঁকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে পেটানো হচ্ছিল।’

পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বজিৎ হত্যায় যারা রড দিয়ে পিটিয়েছিল তাদের ফাঁসি হয়েছে। অভিযুক্ত কয়েকজন আবার খালাসও পেয়েছে। সেই মামলায় আমরা তেমনভাবে সিসিটিভি ফুটেজ পাইনি। এ ধরনের ঘটনা প্রমাণের জন্য ট্রেডিশনাল তদন্ত বা চাক্ষুষ সাক্ষীর সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। আবরার হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন, তদন্ত সহায়ক দল ছিল, সিসিটিভি ফুটেজ, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য প্রমাণ, ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের তথ্য রয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ, পাশাপাশি ৮ জন আসামির বক্তব্যও হত্যাকাণ্ডের অনেক বিষয় প্রমাণ করে, যদিও এ ধরনের ঘটনায় চাক্ষুষ সাক্ষী থাকলেও সাক্ষ্য দিতে এগিয়ে আসে না। কিন্তু আমরা যেভাবে চার্জশিট প্রস্তুত করেছি আশা করছি সবার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে।মনিরুল ইসলাম বলেন, আবরারকে হয়তো একটু আগে হাসপাতালে নিয়ে গেলে এমন নৃশংস পরিণতি হতো না।মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘চার্জশিট (অভিযোগপত্র) আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, আবরার হত্যায় সরাসরি অংশ নেন ১১ জন। বাকি ১৪ জন হত্যাকাণ্ডে বিভিন্ন পর্যায়ে জড়িত রয়েছেন।’
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় ২৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিচ্ছে পুলিশ। আসামি ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
মনিরুল ইসলাম বলেন, আবরারকে হত্যায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন ১১ জন। এরাই আবরারকে কয়েক দফায় মারপিট করেন। বাকি ১৪ জন বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্নভাবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত ২৫ আসামির মধ্যে ২১ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২১ জনের মধ্যে ১৬ জনের নাম আবরারের বাবার করা হত্যা মামলার এজাহারে আছে। তাঁরা হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা ও এ এস এম নাজমুস সাদাত।
বাকি ৫ জনের নাম তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। তাঁরা হলেন ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু।
পলাতক আছেন চারজন। পলাতক জিসান, তানিন ও মোর্শেদের নাম মামলার এজাহারে রয়েছে। এজাহারের বাইরে আরেক আসামি হলেন রাফি।
গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে জানা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন।
কেউ অন্ধকারে থাকবে না, সব ঘরেই আলো জ্বলবে : প্রধানমন্ত্রী- কালেরকণ্ঠ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, তাঁর সরকার ২০২১ সাল নাগাদ সকল উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে সারাদেশের ঘরে ঘরে আলো জ্বালতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময়কে আমরা মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। ইনশাল্লাহ, মুজিব বর্ষ উদযাপনের মধ্যে আমরা শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ অন্ধকারে থাকবে না, সব ঘরেই আলো জ্বলবে।
প্রধানমন্ত্রী আজ বুধবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং’র মাধ্যমে ৭টি নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনকালে একথা বলেন। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য মতে, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো উদ্বোধন এবং উপজেলাগুলোতে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা এখন হয়েছে ২২ হাজার ৫৬২ মেগাওয়াট।
পাশাপাশি দেশের ৪৬১টি উপজেলার মধ্যে ২৩৪টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হলো। আরো ১২৭টি উপজেলায় শিগগিরই শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্ভব হবে, যেগুলো এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া, বাকি একশ’ উপজেলায় আগামী ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ উদযাপনকালে বিদ্যুতায়ন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি লক্ষ্য স্থির করেছি- ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা উদযাপন করবো। জাতির পিতার জন্মদিন ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে এই কর্মসূচি পালন শুরু করে পরবর্তী ২০২১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পর্যন্ত এক বছর এই কর্মসূচি চলবে। তখন আর একটি ঘরেও অন্ধকার থাকবে না।
তিনি বলেন, আলোকিত করাই আমাদের কাজ এবং সেটাই আমরা করে যাচ্ছি। যেখানে বিদ্যুতের গ্রিড লাইন পৌঁছেনি সেসব প্রত্যন্ত পাহাড়ি, হাওড় এবং চরাঞ্চলে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরকরাহ করে সারাদেশে এই বিদ্যুতায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে, বলেন তিনি। তিনি বিদ্যুৎ ব্যবহারে জনগণকে সাশ্রয়ী হওয়ার তাঁর পরামর্শ পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের যে খরচ হয় এর চাইতে অনেক কম অর্থে আমরা তা সরবরাহ করে যাচ্ছি। তিনি এ সময় বিএনপি আমলে দেশে বিদ্যমান ভয়াবহ লোড শেডিংয়ের কথা স্মরণ করিয়ে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর সরকার গঠন করে ১৯৯৬ সালে তাঁর সরকার দেশে বিদ্যুৎ পেয়েছিল মাত্র ১৬শ’ মেগাওয়াট। পরবর্তী ৫ বছরে তা বাড়িয়ে ৪ হাজার ৩শ’ মেগাওয়াট করে রেখে গেলেও ২০০১ পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার পরবর্তী ৫বছরে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন এক মেগাওয়াটও বাড়াতে পারেনি। উপরন্তু, তা কমিয়ে ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াটে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালের সরকার গঠনের পর থেকে বিদ্যুৎকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়াসহ একের পর এক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে তাঁর সরকার বিদ্যুৎকে আজকের পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি সবাইকে অনুরোধ করবো এই বিদ্যুৎ ব্যবহারে আপনারা সাশ্রয়ী হবেন। বিদ্যুৎ অপচায় যেন না হয়। বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হলে আপনাদের বিদ্যুতের বিলটাও কম আসবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই দেশ আমাদের এবং এই দেশের প্রতিটি সম্পদ জনগণের। কাজেই এই সম্পদকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, আসুন সকলে মিলে দেশকে গড়ে তুলি। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে বাব্বি মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানী এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানী এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মো. শহীদুজ্জামান সরকার গণভবনের অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, বেলপথ মন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব আহমেদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে দেশের বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন খাদ্য পুষ্টি সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং তা নিশ্চিত করারও পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। অর্থাৎ একটা মানুষের জীবনে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ যে মৌলিক বিষয়গুলো প্রয়োজন হয় সে চাহিদাগুলো সম্পূর্ণভাবে পূরণের কর্মসূচিই আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি, যার সুফলটা পাচ্ছে দেশের জনগণ।
তিনি দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এই কারণে যে, তারা আমাদের বার বার ভোট দিয়েছেন এবং সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আর সে কারণেই আজকে দেশের উন্নয়নটা আমরা করতে পারছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একশ’ শিল্পাঞ্চল (বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল) আমরা গড়ে তুলছি। যেখানে ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান হবে, উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, দেশের চাহিদাও মিটবে এবং বিদেশেও আমরা রপ্তানি করতে পারবো। ফলে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অব্যাহত রাখার জন্য চাষের জমি সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, চাষের জমি আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে কারণ আমাদের যে জনসংখ্যা তাদেরকে আমরা প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ করতে চাই। ভিক্ষা চেয়ে, হাত পেতে চলতে চাই না, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজের খাদ্য নিজেরা উৎপাদন করে আমরা সরবরাহ করতে চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আত্মমর্যাদা নিয়ে বিশ্ব সভায় মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। যেটা আমাদের জাতির পিতা শিখিয়ে গেছেন।
আবরার হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে: আইনমন্ত্রী- দৈনিক যুগান্তর
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আবরার হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্র দেয়ার পর বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দ্রুত বিচার আইন, ২০০০’ এ বিচার করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করব। সেটা যখন আইন মন্ত্রণালয়ে আসবে তখন আমরা দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলার বিচার করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করব।
শিগগিরই আবরার হত্যা মামলার বিচার শেষ হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এবং জনগণের চাহিদা অনুযায়ী এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যথা শিগগিরই করা হবে।’
এর আগে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এই ২৫ জনের মধ্যে ১১ জন সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। বাকি ১৪ জনের বিরুদ্ধে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।
বুধবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিং করে এ কথা জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।

চার্জশিটে যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন— মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অমিত সাহা, মাজেদুল ইসলাম, মুজাহিদুর রহমান, তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. জিসান, আকাশ হোসেন, শামীম বিল্লাহ, এএসএম নাজমুস সাদাত, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মো. মোর্শেদ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, মুনতাসির আল জেমি, মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না মোশতুবা রাফি এবং এসএম মাহমুদ সেতু।
প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে ৫ অক্টোবর বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
নেতিবাচক রাজনীতির কারণে দল ছাড়ছেন বিএনপি নেতারা’-দৈনিক ইত্তেফাক
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, 'আওয়ামী লীগ জনগণের মধ্যেই আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। আর নেতিবাচক রাজনীতির কারণে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।' বুধবার কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ‘সামাজিক অংশগ্রহণ’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'নেতিবাচক রাজনীতির জন্য বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের আরও নেতারা পদত্যাগের অপেক্ষায় রয়েছে। শীঘ্রই তারা বিএনপি ছেড়ে যাবেন। কারণ, যে দলের শীর্ষ নেত্রী-নেতা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের কারণে আদালত থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত, বিদেশে পলাতক, সেই দলের প্রতি কারো আস্থা থাকতে পারেনা। বিএনপির প্রতি কোন সুস্থ, বিবেকবান মানুষের আস্থা থাকতে পারেনা, এটি ভাল মানুষের কোন জায়গা হতে পারেনা।'

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে হানিফ বলেন, 'বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে পারেন তার চিকিৎসকরা। তারা বলছেন তিনি আগের মতই আছেন, অবস্থার খুব একটা অবনতি ঘটেছে এমন কোন তথ্য মেডিকেল বোর্ড দেয়নি। তারপরেও প্রতিদিন বিএনপি’র নেতারা বলছেন তার স্বাস্থ্য খারাপ।'
হানিফ বলেন, 'বেগম জিয়া ৭৫ বছর বয়সে ৩০ বছর বয়সের মত হাঁটাচলা করবেন এটা ভাবা ঠিক হবে না। বাস্তবতা মেনে নিতে হবে, বয়সের কারণেই তার অনেক অসুখ থাকতে পারে। তবে আমরা চাই তিনি সুস্থ হয়ে উঠুন। সরকার বেগম জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছে। মেডিকেল বোর্ড প্রয়োজন মনে করলে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।'
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মুসতানজিদ, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. রওশন আরা বেগম, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামসহ রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি ও সুধীজনরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি নয়: কাদের-দৈনিক মানবজমিন
এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি নয় বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা কমেছে। আজ সকাল ১১টায় তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৬ লেন বিশিষ্ট ৮ কিলোমিটার এপ্রোচ সড়ক পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, সদ্য প্রয়াত চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মঈনউদ্দীন খান বাদলের স্বপ্নের কালুরঘাট সেতুর নির্মাণকাজ কোরিয়ার অর্থায়নে আগামী বছর শুরু হবে।

তাছাড়া সড়ক সেতুর কাজের ব্যাপারে কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলছে। এছাড়া চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।তিনি আরো বলেন, এ সময় বেপরোয়া চালকের মতো যারা বেপরোয়া রাজনীতি করছেন তাদের জন্যও রাজনৈতিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও জানান তিনি।প্রসঙ্গত, কুয়েত ফান্ড ফর এরাবিক ইকোনমিক ডেভলপমেন্টের অর্থায়নে ৩৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ লেন বিশিষ্ট ৮ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে সড়ক পরিবহন অধিদপ্তর।এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আব্দুস ছালামসহ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
আ’লীগ থেকে বিএনপিতে আসার অবস্থা তৈরী হয়েছে : মির্জা ফখরুল-দৈনিক নয়াদিগন্ত
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি থেকে নয় এখন আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে আসার অবস্থা তৈরী হয়েছে।
‘অনেকে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আসার জন্য যোগযোগ করছেন’- তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের এমন বক্তব্যের জবাবে একথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) বেলা ১১টায় শের-ই বাংলা নগরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও দোয়া মোনাজাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় স্বাধীনতার যে চেতনা নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম পরবর্তীকালে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। সেই স্বৈরাচারকে সঙ্গে নিয়ে তারা সরকার গঠন করেছিল। পরবর্তীতে ভোট ডাকাতি করে তাদেরকে নিয়ে সংসদে গেছে।

তাদেরই মহাসচিব কয়েকদিন আগে গণতন্ত্রকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করেছেন। তিনি আমাদের প্রিয় নূর হোসেন যিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক ছিলেন, তার বিরুদ্ধে কতগুলো কথা বলেছেন, যে কথাগুলো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে পুরোপুরি অপমান করা, দেশের গণতান্ত্রিক মানুষকে অপমান করা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। আমরা মনে করি প্রকাশ্যে, সংসদে সব জায়গায় তার ক্ষমতা চাওয়া উচিত।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে তারা দেশের মানুষের অধিকার হরণ করেছে। গণতন্ত্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য তারা কাজ করছে।
বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পদত্যাগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতা পদত্যাগ করেছেন এটা আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারছি, কিন্তু আমি এখনও জানি না।
‘দলে বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছে সেজন্য নেতারা চলে যাচ্ছেন কারণ বাইরে থেকে তারেক রহমান দল চালাতে পারছেন না’ এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এসব কথা বলে ওনারা অভ্যস্ত। কারণ তারা নিজেদের দল সামলাতে পারছেন না। প্রতিদিন যুবলীগের সম্মেলনে পরস্পর মারামারি করছেন। তাদের পতন ঢেকে রাখার জন্য তারা অহেতুক মিথ্যা কথা বলছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন চলছে এই আন্দোলন আরও বেগবান হবে বলেও তিনি জানান।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হক প্রমুখ।
এবার ভারতের বিস্তারিত খবর তুলে ধরছি
সবাই যেন ত্রাণ পায়’, বসিরহাটে বুলবুল বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
ত্রাণ নিয়ে যেন মানুষের মধ্যে কোনও ক্ষোভ না থাকে। সবাই যেন ত্রাণ পায়। বসিরহাটে প্রশাসনিক কর্তাদের এ ভাবেই ত্রাণ বিলির বিষয়ে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পর বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের বুলবুল বিধ্বস্ত এলাকা আকাশ পথে বুধবার ঘুরে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কপ্টারে পরিস্থিতি ঘুরে দেখে তিনি বসিরহাটে প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন।
মমতা এ দিন বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যে প্রায় ১৫ লাখ হেক্টর জমিতে ফসল নষ্ট হয়েছে। আকাশ পথে দেখলাম অনেক জায়গায় এখনও জল জমে রয়েছে। বাঁধ ভেঙে জলও ঢুকেছে।” তিনি প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানান, গোটা এলাকায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বসিরহাটে বুলবুলের তাণ্ডবে প্রাণ গিয়েছে পাঁচ জনের। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের চেক দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘ভয়াবহ পরিস্থিতি। কলকাতা থেকে বোঝা যায় না কতটা ক্ষতি হয়েছে।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিনও বাঁধ ভাঙা রুখতে সেচ কর্তাদের ম্যানগ্রোভ অরণ্য বাড়াতে নির্দেশ দেন। সঙ্গে সুন্দরবনে ভাঙন রুখতে যে বিশেষ ধরণের ঘাস ব্যবহার করছে বন দফতর, সেই ঘাস ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। তিনি সেচ কর্তাকে বলেন, ‘‘বাঁধ কংক্রিট করে রোখা যাবে না। প্রতি বছর বাঁধ ভাঙবে। তাই ম্যানগ্রোভ বাড়ান।”
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী ওই এলাকায় অন্য ধরনের চাষ কতটা করা যায়, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন কৃষি আধিকারিকদের। আয়লার পরেও সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকে যাওয়া। নোনা জল ঢুকে যাওয়ায় বেশ কয়েক বছর পতিত হয়ে যায় ওই জমি। ঠিক সে রকম এ বারও গোসাবা, হিঙ্গলগঞ্জ বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের জমি জলমগ্ন। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জমা জল সরানোর পাশাপাশি দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা ফিরিয়ে আনার উপরেও জোর দেন। বসিরহাট এলাকায় ১ হাজার ২০০-টিরও বেশি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ কর্তারা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে, অধিকাংশ এলাকাতেই বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা সম্ভব হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জলমগ্ন এবং প্লাবিত এলাকায় মেডিক্যাল টিম এবং পানীয় জল পর্যাপ্ত পরিমাণে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে পরিবার প্রতি ১২ কেজি চাল এবং সঙ্গে শিশুখাদ্য ও জ্বালানি হিসাবে ৫ লিটার কেরোসিন অবিলম্বে বিলি করার নির্দেশ দেন জেলা কর্তাদের। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, সব মিলিয়ে বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি ৫০ হাজার কোটি টাকা ছুঁতে পারে।
বুলবুলে বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মুখ্যমন্ত্রী, ক্ষত সারাতে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ জেলা প্রশাসনকে-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
পশ্চিমবঙ্গ যে ভাবে বুলবুলের মোকাবিলা করেছে, তার প্রশংসা করেছে ভারত সরকার। সোমবার কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠকে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে আকাশপথে ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত নামখানা-বকখালি-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝঞ্ঝা বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখার পর, কাকদ্বীপে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানেই মমতা জানান—কেন্দ্রীয় একটি পর্যবেক্ষক দল রাজ্যে আসছে। তাদের সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন জেলা আধিকারিকদের। বুলবুলে মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকে পাশে নিয়ে তিনি জেলার বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের কাছ থেকে ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত খতিয়ান চান মমতা। হেলিকপ্টার থেকে দেখা অভিজ্ঞতা থেকে বলেন— উপকূলবর্তী এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পান এবং ধান উপকূলবর্তী এলাকায় ১০০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
শিবসেনাকে সমর্থন দিলে মুখ্যমন্ত্রী পদেরও দাবি জানাবে এনসিপি, সূত্রের খবর -দৈনিক আজকাল
ঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে জারি হয়ে গেছে রাষ্ট্রপতি শাসন। তা সত্ত্বেও এখনও সে রাজ্যে সরকার গড়ার আশা ছা়ড়েনি শিবসেনা। এখনও শারদ পাওয়ারের এনসিপি এবং কংগ্রেসের সাহায্য নিয়ে সরকার গড়ার জন্যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধব ঠাকরের দল। তবে সূত্রের খবর, যদি শেষ পর্যন্ত ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি ও কংগ্রেসের সমর্থনে শিবসেনা সরকার গঠন করতে সমর্থ হয় তাহলে মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্যও দাবি জানাবে এনসিপি। জানা গেছে, শিবসেনাকে সমর্থনের প্রশ্নে যে শর্তগুলি শারদ পাওয়ারের দল দিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল শিবসেনার সঙ্গে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে দিতে হবে তাঁদের প্রতিনিধিকেও। শিবসেনার ৫৬ টি আসন থেকে মাত্র ২টি আসন কম থাকায় এনসিপি মনে করছে যে মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ও তাঁদের সমর্থনে উদ্ধব ঠাকরের দল সরকার গড়লে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হবে তাঁরাও। মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে ১৪৫ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন। সেখানে কংগ্রেস ও এনসিপি যদি শিবসেনার হাত ধরে তবে তাঁদের মোট বিধায়কের সংখ্যা হবে ১৫৪ জন।এর আগে বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়ার সময় ঠিক এনসিপির মতোই একই দাবি করেছিল শিবসেনা। তাঁরাও বলেন যে শুধু বিজেপির প্রতিনিধিই নন, আড়াই বছর–আড়াই বছর করে মুখ্যমন্ত্রী পদের মেয়াদে ওই আসনে বসতে চান শিবসেনার প্রতিনিধিও। যদিও সেই দাবি খারিজ করে দেয় বিজেপি।

ফলে ভেঙে যায় বিজেপি–শিবসেনার সুখের সংসার।মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়ার পর, এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ে সরকার গঠনের আশা ধরে রেখেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। দীর্ঘদিনের বিরোধী এবং আদর্শগতভাবেও ভিন্ন দল কংগ্রেসের সঙ্গে মতপার্থক্য সরিয়ে রেখে তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করার পথ বের করেছিল মেহবুবা মুফতির পিপিডি এবং বিজেপি। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটাও সম্ভব।’ মঙ্গলবার সন্ধেয় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি খুঁজে বের করছি, কীভাবে ভিন্ন আদর্শের দলগুলি বিজেপির সঙ্গে জোট করে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে কাজ করার পথ বের করব। আমাদের ৬ মাস সময় রয়েছে। আমি বিজেপিকে আদর্শের প্রশ্ন করতে চাই। কী করে তারা নীতীশ কুমার, পাসোয়ান, পিডিপি এবং নাইডুর সঙ্গে যেতে পারে।’ শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের মধ্যে বারেবারে আলোচনার সমাপ্তি ঘটে সোমবার। যে সময়ে সমর্থনের চিঠি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে যাওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছিল শিবসেনা, তখনই কংগ্রেস জানিয়ে দেয়, কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি তারা এবং শারদ পাওয়ারের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ধীরে চলার বার্তা দিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। ফলে শারদ পাওয়ারের দলকে সরকার গঠনে আহ্বান জানিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই প্রস্তাবও কার্যকর হয়নি শারদ পাওয়ার আরও সময় চাওয়ায়। এরপরেই মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়।
পুরসভা অভিযান ঘিরে পুলিশ-বিজেপি ধস্তাধস্তি, ধুন্ধুমার চাঁদনি চকে-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
বিজেপির পুরসভা অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার চাঁদনি চকে। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে বিজেপি। পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতলও ছোঁড়ে মিছিলকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পালটা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। বিক্ষোভকারীদের রুখতে বাধ্য হয়ে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী জখম হয়েছেন। আটক করা হয়েছে বিজেপির তারকা নেত্রী রিমঝিম মিত্র-সহ বেশ কয়েকজনকে।

ক্রমশই কলকাতায় ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ডেঙ্গু। ইতিমধ্যেই প্রাণহানিও হয়েছে বহু মানুষের। এই পরিস্থিতি ডেঙ্গু মুক্ত কলকাতার দাবি নিয়ে রাজপথে বিজেপি। এছাড়াও জলকরমুক্ত কলকাতা, জমির মিউটেশন কমানো, অবৈধ পার্কিং ও জঞ্জালমুক্ত কলকাতা-সহ প্রায় দশ দফা দাবি রয়েছে তাদের। এমনই দশ দফা দাবি নিয়ে কলকাতা পুরসভা অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় গেরুয়া শিবির।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বুধবার সকালে বিজেপির রাজ্য দপ্তরের সামনে ভিড় জমান বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এছাড়াও রয়েছেন রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ শিকদার, দেবজিৎ সরকারের মতো নেতারা।

মিছিলের শুরুতেই দিলীপ ঘোষ বলেন, “পুরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত করাই আমাদের লক্ষ্য।” এরপর সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে জমায়েত হন তাঁরা। মশারি, মশার বিভিন্ন মডেল নিয়ে মিছিল চাঁদনির দিকে আসে।
এদিকে, মিছিল আটকাতে সকাল থেকেই প্রস্তুত কলকাতা পুলিশ। চাঁদনি চকের ই মলের সামনে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশেরও। ব্যবস্থা করা হয় জলকামানেরও। তবে সেই ব্যবস্থা সত্ত্বেও বুধবার দুপুরে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে বিজেপি। ব্যারিকেডের ওপ্রান্তে জড়ো হওয়া পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে বোতল ছোঁড়া হয়। বাধা দেয় পুলিশ। তার জেরেই রীতিমতো অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় চাঁদনি চকে। উন্মত্ত বিক্ষোভকারীদের বাধা দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ব্যবহার করা হয় জলকামানও। বেশ কিছুক্ষণ পর আবারও বিজেপির মহিলা মোর্চার নেত্রীরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজেপির তারকা নেত্রী রিমঝিম মিত্র-সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়। আটক হওয়ার পর পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন রিমঝিম। অভিনেত্রী বলেন, “কলকাতা পুরসভায় যেতে যখন দেওয়াই হবে না, তখন মিছিলের অনুমতি দেওয়া হল কেন?”
পার্সটুডে/এমবিএ/১৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।