ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০ ১৬:০৯ Asia/Dhaka

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এএফএম গওসোল আযম সরকার সম্প্রতি রেডিও তেহরানকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইরান অত্যন্ত সুন্দর, সম্পদে ভরপুর একটি ধনী দেশ। ইরান সভ্যতার দেশ। এখানে নেতিবাচক কিছুই আমার চোখে পড়ে নি।

রাষ্ট্রদূত গওসোল আযম আরও বলেন, সাম্প্রতিক ইতিহাসে ইরানের যে জিনিষটি লক্ষ্যণীয় সেটি হচ্ছে, এমন কোনো উদাহরণ আমি দেখি নি যে ইরান অন্য কোনো দেশ, জাতি বা সমাজের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়েছে বা কোনো ধরনের যুদ্ধ চালিয়েছে।

একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে আমি ইরানকে দেখেছি।

পুরো সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো। আর এটি  গ্রহণ করেছেন ড. সোহেল আহম্মেদ। উপস্থাপনা করেছেন গাজী আবদুর রশীদ।

রেডিও তেহরান: জনাব গওসোল আযম, রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের উদ্যোগে আই আর আইবির বিশ্বকার্যক্রমের প্রধান ড. পেইমান জেবেলির আমন্ত্রণে প্রেস টিভির বিভিন্ন কার্যক্রম আপনি পরিদর্শন করলেন। তো কেমন লাগল  আপনার কাছে?

গওসোল আযম সরকার: দেখুন, আপনি যেমনটি বললেন, রেডিও তেহরান বাংলা বিভাগের উদ্যোগে আই আর আইবির বিশ্বকার্যক্রমের প্রধান ড. পেইমান জেবেলির আমন্ত্রণে প্রেস টিভির বিভিন্ন কার্যক্রম আমি পরিদর্শন করেছি। দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি ওয়েল ইকুইপড এবং এখানে কর্মরত সাংবাদিক, বিশ্লেষকসহ সবার পেশাদরিত্ব এবং স্টেট অব দ্য আর্ট আমাকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে।

রেডিও তেহরান: আপনি ড. জেবেলির সঙ্গে তো বৈঠক করেছেন। তো কি কি বিষয়ে কথা হলো?

গওসোল আযম সরকার: ড. জেবেলির সাথে বৈঠকে বাংলাদেশ এবং ইরানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে কথা হয়েছে। একইসাথে দুদেশের মিডিয়া সম্পর্কের ক্ষেত্র নিয়েও কথা হয়েছে। এ বিষয়ে দুদেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়েও আলাপ হয়েছে।

রেডিও তেহরান: জনাব গওসোল আযম সরকার, আপনি ইরানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে এসেছেন প্রায় ৫ মাস হতে গেল। আমরা জেনেছি যে, এরইমধ্যে আপনি ইরানের বিখ্যাত শহরগুলোসহ বিভিন্ন জায়গা সফর করেছেন। বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নিয়েছেন। তো  সামগ্রিকভাবে ইরান আপনার কাছে কেমন লাগছে ?

ইরান একটি সুন্দর দেশ

গওসোল আযম সরকার: দেখুন, ইরানে আসার পর থেকে এখানকার কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সেক্টরের সাথে আমার মতবিনিময় হয়েছে। বাংলাদেশের সাথে ইরানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কিভাবে আরও জোরদার ও বিস্তৃত করা যায় সে বিষয় নিয়েও আলোচনা করছি ও প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আর সেসুবাদে ইরানের বেশ কিছু প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর সফরের সুযোগ হয়েছে। এসব জায়গায় আমি দেখেছি এবং কথা বলে জেনেছি, বাংলাদেশ এবং ইরানের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শুভেচ্ছা সম্পর্কের বিষয়টি ব্যাপক পরিমাণে রয়েছে এবং তাঁদের মধ্যে এই সম্পর্ক আরও কিভাবে গভীরতর করা যায় সে সদিচ্ছাও রয়েছে।

ইরান একটি সভ্যতার দেশ। এর গৌরবোজ্জ্বল অতীত রয়েছে। এখানকার ইতিহাস ঐতিহ্য খুবই সমৃদ্ধ। এককথায় বলা যায় অত্যন্ত সুন্দর একটি দেশ। পর্যটনের দিক থেকে ইরান অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি দেশ। বিপুল সংখ্যক আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী এখানে আসছে।

রেডিও তেহরান: জনাব গওসোল আযম, আপনি ইরানের আকর্ষণীয় পর্যটনের কথা বলছিলেন। এখানকার উন্নয়নের দিকটি আপনি কেমন দেখলেন?

ইরানের পরমাণু প্রযুক্তি

গওসোল আযম সরকার: দেখুন, বিভিন্ন সেক্টরে ইরানের অগ্রগতি লক্ষ্যণীয়। শিল্পের ক্ষেত্রে দেশটি নিজস্ব প্রযুক্তি, বিনিয়োগ এবং ব্যাপকভিত্তিক নিজস্ব সম্পদ তারা কাজে লাগাচ্ছে। ক্রমাগতভাবে ইরান শিল্পক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করছে। দেশটি প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও ব্যাপক উন্নতিসাধন করেছে স্বীয় উদ্যোগে ও ব্যবস্থাপনায়। ইরানের শিক্ষা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব বিশেষজ্ঞ আছেন তাদের মান অনেক উচুঁ। বাস্তবিকভাবে ইরান প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটি দেশ। এটি অত্যন্ত ধনী দেশ। দেশটি নিজের প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের বিষয়ে অনেক বেশি ততপর। দেশটি ভ্রাতৃপ্রতীম দেশগুলোর সাথে তাদের সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে রেখেছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিনিয়োগ, প্রযুক্তিসহ আরও অনেক্ষ ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে ইরান। এটি দুদেশের জন্য মঙ্গলজনক এবং তা দুদেশের স্বার্থের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। ফলে আমি এ পর্যন্ত যেটুকু দেখেছি এবং জেনেছি তাতে অত্যন্ত আশাবাদী।

রেডিও তেহরান:  জনাব গওসোল আযম সরকার, আপনি ইরানের উন্নয়নের কথা বললেন। বাংলাদেশ এবং ইরানের সম্পর্কের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রগুলোর কথাও বললেন। একজন রাষ্ট্রদূত হিসেবে সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোন সেক্টরকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

গওসোল আযম সরকার: দেখুন, আসলে সহযোগিতা সবক্ষেত্রেই বৃদ্ধি করা সম্ভব এবং প্রয়োজন। তবে আমি দুদেশের প্রাইভেট সেক্টরের মধ্যে লেনদেন ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়টিকে  প্রাথমকিভাবে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। আর অন্যান্য দিকের সহযোগিতা ঐতিহ্যগতভাবে বিদ্যমান রয়েছে। যেমন ধরুন, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ইরান এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। শত শত বছর ধরে এ সম্পর্ক বহমান। আবারও বলছি দুদেশের মানুষের মধ্যে পরস্পরের প্রতি যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সেটা বিদ্যমান সুদীর্ঘকাল ধরে। দুদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান প্রদান রয়েছে। শিল্প সাহিত্যে লেনদেন যথেস্ট পরিমাণে আছে এবং এগিয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয়কে ভিত্তি হিসেবে ধরে বিনিয়োগ, শিল্প ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রকে গুরুত্ব দিতে হবে। এতে দুদেশের বেসরকারি খাত আরও এগিয়ে যেতে পারে এবং তাতে দুদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারবে বলে আমার মনে হয়।

রেডিও তেহরান: জনাব গওসোল আযম সরকার, ইসলামি বিপ্লব সফল হওয়ার পর থেকে ইরানের বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার রয়েছে। অনেক বলে থাকে যে ইরান উদার কোনো দেশ নয়। এটি ধর্মান্ধ একটি দেশ। তো আপনার ৫ মাসের পর্যবেক্ষণে ইরানকে কি সেরকম মনে হয়েছে। এখানকার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশ কী পিছিয়ে পড়া দেশের মতো মনে হয়েছে আপনার কাছে?

গওসোল আযম সরকার: দেখুন, আমি এই স্বল্প সময়ে যেটুকু দেখেছি ইরানকে তাতে আমার কাছে সেরকমটি মনে হয় নি। ইরান একটি সভ্যতার দেশ। ইতিহাস, শিক্ষা সংস্কৃতি, শিল্প বলতে গেলে সবদিক থেকে যথেস্ট এগিয়ে থাকা একটি দেশ। সামাজিক দিকসহ অন্যান্য বিষয়েও এখানকার মানুষ এগিয়ে চলছে। সভ্যতার গতির সাথে তাল মিলিয়ে দেশটি এগিয়ে যাচ্ছে। নেতিবাচক তেমন কিছুই আমি দেখতে পাই নি। সাম্প্রতিক ইতিহাসে ইরানের যে জিনিষটি লক্ষ্যণীয় সেটি হচ্ছে, এমন কোনো উদাহরণ আমি দেখি নি যে ইরান অন্য কোনো দেশ, জাতি বা সমাজের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়েছে বা কোনো ধরনের যুদ্ধ চালিয়েছে।

একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে আমি দেখেছি। সুতরাং আমার কাছে মনে হয় নি এধরনের অভিযোগে ইরানকে অভিযুক্ত করা যায়।

রেডিও তেহরান: এবারে একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি, ইরানে আসার পর আপনার সঙ্গে রেডিও তেহরানের যোগাযোগ ঘটেছে, পরিচয় হয়েছে। তো রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

গওসোল আযম সরকার: দেখুন, রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগটি অত্যন্ত পুরনো বলে আমি জানি। দীর্ঘদিন দরে রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। এই রেডিওর শ্রোতা সংখ্যাও বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে আছে। বাংলাদেশে রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের জনপ্রিয়তা আছে এবং বিশ্বজুড়ে যেসব প্রধান রেডিও বা বেতার সার্ভিস আছে তারমধ্যে রেডিও তেহরানের বাংলা সার্ভিস একটি। রেডিও তেহরানের সংবাদ, প্রতিবেদন, সংবাদ বিশ্লেষণ বিশেষ করে বাংলাদেশের উন্নয়নের ইতিবাচক চিত্র তুলে ধরার ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলেছে বলে আমি লক্ষ্য করেছি। 

রেডিও তেহরান: বাংলাদেশ ইরানের মধ্যকার বর্তমান সম্পর্ক কী সন্তোষজনক?

গওসোল আযম সরকার: আসলে দেখুন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করা বা বিস্তার করার কোনো সীমা নেই। ক্রামন্বয়ে এটিকে বিকশিত করা প্রয়োজন। আরও জোরদার ও গভীর করা প্রয়োজন। আর সে লক্ষ্যেই আমরা দুদেশের মধ্যে কাজ করে যাচ্ছি। দুদেশের সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে। সামনে আসছে অনেক নতুন নতুন ক্ষেত্র। এসব ক্ষেত্রে সহযোগির প্রয়োজন আছে। সুতরাং এই সহযোগিতা জোরদার করার প্রচেষ্টা দুদেশের পক্ষ থেকে রয়েছে এবং থাকবে।

রেডিও তেহরান: জনাব গওসোল আযম সরকার, ইরানের সরকার এবং জনগণের কাছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের আতিথেয়তা বেশ প্রশংনীয়। এই ইস্যুটি ইরানে ব্যাপকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং বাংলাদেশের ভূমিকাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। তো রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে আপনি কি বলবেন?

গওসোল আযম সরকার: দেখুন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যে রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায় ছিল এবং এখনও আছে তাদের ওপর যে নির্যাতন, অবিচার এবং সর্বশেষ জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালানো হয়েছিল সেটি দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্খিত একটি অবস্থা। বিশ্ববাসী সেই চিত্র দেখেছে। আর এর পুরো চাপটা বড়েছে বাংলাদেশের ওপর। যদিও রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের নয়; এটি মিয়ানমারের সমস্যা। মিয়ানমারের সরকারের সাথে দেশটির নিজস্ব নাগরিক রোহিঙ্গাদের মধ্যকার সমস্যা। অথচ তারা জাতিগত নিধনের শিকার তারা হয়েছে। তাদেরকে দেশটি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে নির্যাতন অত্যাচারের মাধ্যমে।

লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ

রোহিঙ্গাদের ভয়ঙ্কর বিপদের মধ্যে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকার সামান্য বিলম্ব করেন নি বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দিতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘটনার সাথে সাথে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমাদের সীমান্ত খুলে দিয়ে তাদেরকে আশ্রয় দেয়ার কথা বলেন। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে  প্রায়  সাড়ে সাত লাখ বা তার কিছু বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশে করেছে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগ কিন্তু এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখের মতো রোহিঙ্গা আছে। বাংলাদেশের নিজস্ব নানাবিধ সমস্যা থাকার সত্ত্বেও রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দেয়া এবং তাদের মৌলিক চাহিদাপূরণ করা বেশ কষ্টকর। তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারের ব্যবস্থায়, আন্তর্জাতিক বন্ধু রাষ্ট্র ও ভ্রাতৃপ্রতিম ইরানের মতো রাষ্ট্রের সহযোগিতায় বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের মৌলিক চাহিলা মিটিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রোহিঙ্গা সমস্যাটি এখন শুধু বাংলাদেশই নয় গোটা বিশ্ব উপলব্ধি করতে পেরেছে। রোহিঙ্গা সংকটের এখন সমাধান হিসেবে আমরা ও গোটা বিশ্ব একটি বিষয়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে  আর সেটি হচ্ছে তাদেরকে নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন। আর সেই প্রত্যাবর্তনের জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা করেছে আর সেটির আওতায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে যাতে করে রোহিঙ্গারা উপযুক্ত পরিবেশে নিজ রাজ্য রাখাইনে ফিরে যেতে পারে। রোহিঙ্গারা ফিরে যাওয়ার পর যাতে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। তারা যেন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জীবিকা নির্বাহ করতে পারে এবং নাগরিক অধিকার ফিরে পায়  সেজন্য আন্তর্জাতিক সমাজ মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। আর এ চাপ অব্যাহত থাকা উচিত। আমি মনে করি মিয়ানমার সরকারের উচিত রোহিঙ্গাদের জন্য এমনই নিরাপদ শান্তিপূর্ণ  একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা। রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা উচিত। তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া উচিত। আর সেটিই হতে পারে রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান।

রেডিও তেহরান: জনাব গওসোল আযম, আপনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কথা বলছিলেন। তো এ ব্যাপারে মিয়ানমার সরকার কী বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে এবং আপনার দৃষ্টিতে তাদের অবস্থান কী সন্তোষজনক?

গওসোল আযম সরকার: দেখুন, যেকথা আগেই বলেছি এ সময় পর্যন্ত বেশ কয়েকটি ইনস্ট্রুমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে। এর আওতায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পর্যায় মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে সভা ও আলোচনা হচ্ছে। সম্প্রতি মিয়ানমারের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে গিয়ে সেখানে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন আলোচনা করেছেন। কিন্তু বাস্তবিকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও প্রত্যাবর্তনের অনুকূল তৈরির কাজটি করা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকারের সিরিয়াসনেসের ঘাটতি আছে বলে আমি মনে করি। আর রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সরকারের আচরণে সন্তুষ্ট হতে পারছে না বলেই কক্সবাজারে আশ্রিত ভিকটিম রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যেতে পারছে না। এর আগে ২/৩ বার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল কিন্তু তারা ফিরে যায় নি। আর আমরা ভলান্টারি প্রত্যাবাসনে বিশ্বাসী। আমরা জোর করে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার কথা বলতে পারি না। আর ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি হয় নি বলেই দুবার উদ্যোগ নেয়ার পরও তারা ফিরে য়ায় নি।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৭  

 

 

ট্যাগ