কথাবার্তা: করোনায় প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই কোটি!
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ১০ এপ্রিল শুক্রবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের শিরোনাম :
- ছুটি বাড়ছে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত-দৈনিক প্রথম আলো
- ক্লাস্টার থেকে ছড়াচ্ছে করোনা, সামাজিক দূরত্ব না মানলে তা হবে ভয়াবহ-দৈনিক ইত্তেফাক
- কেরানীগঞ্জ কারাগারে প্রথম ফাঁসি হবে মাজেদের-দৈনিক মানবজমিন
- সরকারের অবহেলায় স্বাস্থ্য খাতে চরম সংকট বিরাজ করছে: রিজভী-দৈনিক যুগান্তর
- প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য, করোনায় প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই কোটি!-বাংলাদেশ প্রতিদিন
- করোনার সুযোগে সন্ত্রাসী হামলা বাড়তে পারে, আশঙ্কা জাতিসংঘের–কালের কণ্ঠ
- যে কোনো দেশের চেয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা নিউইয়র্কেই বেশি-দৈনিক সমকাল
ভারতের শিরোনাম:
- দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ৬ হাজার ছুঁইছুঁই, ২৪ ঘণ্টায় মৃত আরও ৩৩ দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
- করোনা নিয়ে ফিরল চোর, কোয়ারেন্টাইনে ১৭ জন পুলিশকর্মী–সহ বিচারক, কপালে ভাঁজ প্রশাসনের -দৈনিক আজকাল
- করোনা চিকিৎসায় ‘প্লাজমা থেরাপি’র পরীক্ষামূলক প্রয়োগ দেশে, পথ দেখাচ্ছে কেরল -দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
পাঠক/শ্রোতা! এবারে চলুন, বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

বৈশ্বিক মহামারি করোনায় গোটা বিশ্বজুড়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যু মিছিল। ওয়ার্ল্ডওমিটার ওয়েবসাইটের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী (শুক্রবার দুপুর ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত), বিশ্বের ২০৯টি দেশ ও অঞ্চলকে আক্রান্ত করেছে করোনাভাইরাস। বিশ্বব্যাপী মোট মৃতের সংখ্যা ৯৫,৭৩৪ জন ও আক্রান্তের সংখ্যা ১৬,০৪,৫৩৫ জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ৩,৫৬,৬৬০ জন। তবে তবে জার্মানের একদল বিজ্ঞানী বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, করোনায় বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা এর থেকে বহুগুণ বেশি। তাদের ধারণা, বিশ্বের কমপক্ষে ২০-৪০ মিলিয়ন (২-৪ কোটি) মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। জার্মানির গটিনজেন ইউনিভার্সিটির দুই গবেষকের দাবি অনুযায়ী, প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে মহামারি কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ মিলিয়ন বা ২ কোটি ৬০ লাখ।
করোনার প্রভাব পড়েছে অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতিসহ সবক্ষেত্রে। এখনও পর্যন্ত এই রোগের কোনো প্রতিষেধক বা টিকা এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বিজ্ঞানীরা করোনা প্রতিরোধে আশার কথা শোনাচ্ছেন।বিশ্বজুড়ে চলছে কোয়ারেন্টিন, আইসোলেশন, লকডাইন, শাটডাউন। বিশ্বজুড়ে প্রধান খবর হচ্ছে করোনা।
করোনা সম্পর্কিত বাংলাদেশের খবর:
করোনা একদিনে কেড়ে নিল আরও ৬ প্রাণ, মোট মৃত্যু ২৭-দৈনিক যুগান্তরের এ খবরে লেখা হয়েছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৯৪ জন।এতে দেশে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের দিক দিয়ে একদিনে এ সংখ্যাটি সর্বোচ্চ।এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হলো ২৭ জনের। আর মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪২৪ জনে।অনলাইনে লাইভ ব্রিফিংয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এসব তথ্য জানান।
ঢাকা ছাড়া আরও ২১ জেলায় করোনার সক্রমণ ঘটেছে বলে খবর দিয়েছে দৈনিক প্রথম আলো। বেদনাদায়ক ২ টি খবর খবর- প্রথম আলোর একটি খবরে লেখা হয়েছে, লাশের পাশে মায়ের আহাজারি, ২১ ঘণ্টায় এগিয়ে আসেননি কেউ। শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ঘড়িসার ইউনিয়নের কলারগাঁও গ্রামের ঘটনা। সুশান্ত কর্মকার (৩৪)। পা ফোলা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে ভর্তি হন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকির আশঙ্কায় তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে বুধবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।মৃত্যুর পর স্বজন ও গ্রামবাসী কেউ লাশ দেখতে আসেননি। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করার জন্যও এগিয়ে আসেননি কেউ।ন্তান আর গ্রামবাসীকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছিলেন। কিন্তু কেউ তাঁর আর্তনাদে সাড়া দেননি। এমনকি সুশান্তর বড় ভাই, চার বোন ও বোনের পরিবারের সদস্যরাও ফিরে তাকাননি।পরবর্তী সময়ে অন্য উপজেলার ও নড়িয়ার অন্য ইউনিয়নের যুবকেরা এগিয়ে আসেন।’বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সত্য নারায়ণের সেবা মন্দিরে ওই যুবকের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া কাজ শেষ করা হয়।
আর দৈনিক যুগান্তরের বেদনাদায়ক খবরটি হচ্ছে-খাটিয়াও মেলেনি: কাঁধে করেই লাশ দাফন করলেন বাবা-ভাই। এখবরে লেখা হয়েছে,

জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া যুবকের মরদেহ দাফনে ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি মসজিদের লাশ বহনের খাটিয়া। দাফনের আগে মৃতের গোসল করাতে দেয়া হয়নি। অনন্যোপায় হয়ে মৃতের বাবা ও তার দুই ভাই তার লাশ কাঁধে বহন করে নিজেরাই কবরস্থ করেছেন। বৃহস্পতিবার এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের উপজেলার বক্তারপুর গ্রামে।
ত্রাণ ও ন্যায্য মূল্যের পণ্য: ভীড়ে ঝুঁকি বাড়ছে-দৈনিক মানবজমিন
বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, দৈনিক মানবজমিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাদে বিশ্বের সকল দেশকে ছাড়িয়েছে নিউ ইয়র্ক। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি অনুসারে, একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে স্পেনে।করোনা পরিস্থিতিতেও গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে ত্রাণ গ্রহণ ও ন্যায্য মূল্যের পণ্য কিনছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। এতে করে এই শ্রেণির মানুষেরা মারাত্বক করোনা ঝুঁকিতে রয়েছেন। অন্যান্য সময়ের মত করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবি ন্যায্য মূল্য পণ্য বিক্রি করছে।তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে টিসিবির পণ্য বিক্রি সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।এদিকে শুধু ন্যায্য মূল্যের পণ্য কিনতে নয় বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ত্রাণ বিতরণেও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। দাতাদের পাশাপাশি ত্রাণ গ্রহিতারাও নিয়ম ভাঙছেন।
দৈনিক ইত্তেফাকরের একটি খবরে লেখা হয়েছে, রাজধানী ঢাকার তিন আবাসিক এলাকাসহ সারা দেশে মোট পাঁচটি ক্লাস্টার (একটি এলাকায় কম দূরত্বের মধ্যে অনেক রোগী) থেকে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন করোনা ভাইরাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই সামাজিক দূরত্ব মেনে সরকার নির্দেশিত পথে না চললে পরবর্তীতে কারোর পক্ষেই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না।
আর দৈনিক যুগান্তরের একটি খবরে লেখা হয়েছে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারের অবহেলায় স্বাস্থ্য খাতে চরম সংকট বিরাজ করছে।
করোনা বিশ্ব:
করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় স্পেনকে ছাড়িয়ে গেল নিউ ইয়র্ক। যে কোনো দেশের চেয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা নিউইয়র্কেই বেশি এ খবর দিয়েছে দৈনিক সমকাল। করোনা যুদ্ধে ইতালিতে শতাধিক ডাক্তার-নার্সের মৃত্যুর খবর ছাপা হয়েছে দৈনিক ইত্তেফাকে।
প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য, করোনায় প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই কোটি!-দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবর।
করোনার সুযোগে সন্ত্রাসী হামলা বাড়তে পারে, আশঙ্কা জাতিসংঘের এ শিরোনামটি দৈনিক কালের কণ্ঠের। এ খবরে লেখা হয়েছে, করোনাভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট পরিস্থিতির সুযোগে বাড়তে পারে সন্ত্রাসী হামলা। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। গত তিন মাস ধরে করোনা আতঙ্কে ‘ত্রাহি-ত্রাহি’ রব উঠেছে সর্বত্র। করোনার মহামারির আতঙ্কে সন্ত্রস্ত্র গোটা বিশ্ব।। আর তার মাঝেই নতুন এক আশঙ্কার কথা শোনালেন জাতিসংঘের মহাসচিব।

বিবর্তিত হয়েছে করোনা, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়েছে ৩ ধরনের ভাইরাস-দৈনিক মানবজমিনের এখবরে লেখা হয়েছে, গত তিন মাস ধরে বিশ্বব্যবস্থাকে স্থবির করে রেখেছে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস (সারস-কভ-২)। এখন পর্যন্ত এর প্রকোপে সৃষ্ট কভিড-১৯ রোগে মারা গেছেন প্রায় ৯৬ হাজার মানুষ। আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ লাখের বেশি। কিন্তু ভাইরাসের দৌরাত্ম এতেই থেমে নেই। গত বুধবার পিনাস সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় প্রানঘাতী এই ভাইরাস নিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। গবেষকরা বলছেন, মানবদেহে প্রবেশের পর ভাইরাসটি দ্রুত গতিতে বিবর্তিত হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে তিন ধরনের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ চলছে। এ খবর দিয়েছে দ্য ডেইলি মেইল।
খবরে বলা হয়, ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গত ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের জিনগত ইতিহাস নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন। এতে তারা কাছাকাছি পর্যায়ের কিন্তু তিনটি ভিন্ন ধরণের ভাইরাসের সংক্রমণ দেখতে পেয়েছেন। এদের টাইপ-এ, টাইপ-বি ও টাইপ-সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এই গবেষণা অনুসারে, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি হারে বিস্তার লাভ করছে টাইপ-বি ভাইরাস।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মূল ভাইরাস বা টাইপ-এ ভাইরাসটি বাদুর থেকে পাঙ্গোলিনসের মাধ্যমে মানুষের দেহে প্রবেশ করেছে। তবে চীনে এই ভাইরাসের হার ছিল তুলনামূলক কম। বরং সেখানে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে টাইপ-বি ভাইরাসের সংক্রমণ। এই টাইপ-বি ভাইরাস ক্রিস্টমাসের মৌসুমে বিস্তার লাভ করেছিল।
বিশ্লেষণের ফলাফল অনুসারে, টাইপ-এ ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে অস্ট্রেলিয়া ও সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্রে।
গবেষকরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত মার্কিনিদের সংগৃহীত নমুনার দুই-তৃতীয়াংশের মধ্যে টাইপ-এ ভাইরাস পাওয়া গেছে। তবে এই ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত পাওয়া গেছে পশ্চিম উপকূলে, নিউ ইয়র্কে নয়। ক্যামব্রিজের ম্যাকডোনাল্ড ইন্সটিটিউট অব আর্কিওলজিক্যাল রিসার্চের ফেলো ও প্রজননবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ড. পিটার ফরস্টার ও তার দল সারস-কভ-২ ভাইরাসের প্রজনন ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেছেন। তারা জানান, যুক্তরাজ্যে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে টাইপ-বি ভাইরাস। সেখান থেকে সংগৃহীত নমুনার তিন-চতুর্থাংশের মধ্যেই এই ক্যাটাগরির ভাইরাস ধরা পড়েছে। এছাড়া, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসেও এই টাইপ-বি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা গেছে। এদিকে, টাইপ-সি ভাইরাস বিবর্তিত হয়েছে টাইপ-বি থেকে। এটি সিঙ্গাপুর হয়ে ইউরোপে ছড়িয়েছে। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, সারস-কভ-২ নামের এই ভাইরাসটি মানবদেহের প্রতিরোধ ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকতে নিজের বিবর্তন ঘটাচ্ছে। স্থানভেদে সে বিবর্তন হচ্ছে ভিন্ন রকমের।এই গবেষণায় হতভম্ব হয়ে গেছেন বিজ্ঞানীরাও। জানুয়ারির মধ্যেই টাইপ-এ ও টাইপ-বি উভয় ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণই বিদ্যমান ছিল। চীনে টাইপ-বি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকলেও যুক্তরাজ্যের পশ্চিম উপকূলে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে টাইপ-এ ভাইরাসের সংক্রমণ। গবেষণাটি বিস্তৃত পরিসরে করতে না পারায় এর কারণ সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি গবেষকরা। প্রাথমিকভাবে বিশ্বজুড়ে মাত্র ১৬০ জন আক্রান্তের নমুনার উপর ভিত্তি করে এই গবেষণা সম্পন্ন করা হয়। এর মধ্যে অনেক নমুনাই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রথম দিককার আক্রান্তদের থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। পরবর্তীতে তাতে যোগ করা হয় এক হাজারের বেশি নমুনা। এখন পর্যন্ত গবেষণাটি অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পুনর্বিচার (পিয়ার রিভিউ) করা হয়নি।
এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি
করোনা সম্পর্কিত আপডেট খবরে দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, দেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়ল। গত ২৪ ঘণ্টায় এক ধাক্কায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত সংখ্যাও বেড়েছে অনেকটাই। এই সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৭৮ জন। সব মিলিয়ে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত দেশ জুড়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪১২। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩৩ জনের।
সারা বিশ্বের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে চিন? ব্ল্যাকবেরির হ্যাকিং রিপোর্টে শঙ্কার ছায়া-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার খবর। এখবরে লেখা হয়েছে, গত এক দশক ধরে সকলের নজর এড়িয়ে বিশ্বের তাবড় শক্তিশালী দেশের কম্পিউটার থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নিয়েছে চিনা হ্যাকাররা। ঠিক যে সময় চিন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে উথাল পাথাল গোটা বিশ্ব ঠিক সেইসময় বেজিংয়ের বিরুদ্ধে এ বার এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল কানাডার সফ্টওয়্যার সংস্থা ব্ল্যাকবেরি। চিনা সরকারের হয়েই সে দেশের হ্যাকাররা অনলাইনে গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তারা।
স্কুটিতে ১৪শ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করলেন মা-এনডিটিভি/আজকাল

এ খবরে লেখা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতে ২১ দিনের লকডাউন চলছে। হঠাৎ করে লকডাউনে বহু মানুষ নিজের ঘরবাড়ি থেকে দূরে আটকে পড়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের নেলোরে লকডাউনে আটকাপড়া ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে স্কুটারে করে এক হাজার ৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিলেন তেলেঙ্গানার এক মা।
রাজিয়া বেগম (৪৮) নামের ওই নারী একটানা তিন দিন স্কুটার চালিয়ে ছেলেকে বাড়িতে ফেরত নিয়ে আসেন। পুলিশের অনুমতি নিয়ে সোমবার (৬ এপ্রিল) সকালে এই দুঃসাধ্য যাত্রায় বের হয়ে বুধবার তার সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন।
রাজিয়া হায়দরাবাদ থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে নিজামবাদে একটি সরকারি স্কুলে চাকরি করেন। ১৫ বছর আগে তার স্বামী মারা যান। তারপর থেকে দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে একা হাতেই জীবনযুদ্ধে লড়ে চলেছেন তিনি। তার বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক এবং ছোট ছেলে নিজামুদ্দিন(১৫), যাকে তিনি অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন।
নিজামুদ্দিন কিছুদিন আগেই দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এবং এখন তিনি এমবিবিএসের প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করার জন্যে বিশেষ কোচিং নিচ্ছেন। তিনি গত ১২ মার্চ নেল্লোরের রহমতবাদে এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে লকডাউন ঘোষিত হওয়ায় সেখানে আটকে পড়েন।
ছেলের এই অবস্থা দেখে রাজিয়া বেগম ঠিক করেন যে তিনি ছেলেকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনবেন। পুলিশের ভয়ে তিনি বড় ছেলেকে না পাঠিয়ে নিজেই স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। ৬ এপ্রিল সকালে তিনি তেলেঙ্গানার বাড়ি থেকে বের হন, সারাদিন স্কুটি চালিয়ে পরদিন বিকেলে নেল্লোর পৌঁছান। তারপর সেখান থেকে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হন। বুধবার সন্ধ্যায় ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে পৌঁছান তিনি।
করোনা চিকিৎসায় ‘প্লাজমা থেরাপি’র পরীক্ষামূলক প্রয়োগ দেশে, পথ দেখাচ্ছে কেরল-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির প্লাজমা (Plasma) দিয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে সারিয়ে তোলার প্রাচীন কৌশল প্রয়োগ করোনা চিকিৎসায় দিশা দেখাতে পারে। এমনই আশার কথা শুনিয়েছে বিশ্বের তাবড় চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের একাংশ। করোনা চিকিৎসায় এবার সেই পথে হাঁটার অনুমোদন দিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চও (ICMR)। আর তারপরই পরীক্ষামূলকভাবে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগে করোনা রোগীকে সুস্থ করে তোলার কাজে নামছে কেরল। শ্রী চিত্র তিরুনাল ইনস্টিটিউট ফর মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে দেশের প্রথম এই থেরাপিতে চিকিৎসা শুরু হচ্ছে।
করোনা নিয়ে ফিরল চোর, কোয়ারেন্টাইনে ১৭ জন পুলিশকর্মী–সহ বিচারক, কপালে ভাঁজ প্রশাসনের
চুরি বিদ্যায় এবার করোনার থাবা। এবার গাড়ি চোরের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলল। আর তা নিয়ে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থল ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের পাঞ্জাব। কীভাবে ওই চোর করোনায় আক্রান্ত হয়েছে সেটা খুঁজে বের করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হল, এই চোরের পরিবার, তার সংস্পর্শে আসা ১৭ জন পুলিশকর্মী, পুলিশকে সাহায্য করা দুই যুবক আর বিচারক–সহ আদালতের কর্মীদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। যাতে সবার চক্ষু এখন চড়কগাছ!#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১০