মে ০৫, ২০২০ ১৫:৫৬ Asia/Dhaka
  • কথাবার্তা:'করোনায় ইমিউনিটি এখন বাংলাদেশের একমাত্র পথ'

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: রেডিও তেহরানের প্রাত্যহিক আয়োজন কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি মুজাহিদুল ইসলাম। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আজ ৫ মে মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • নতুন এমপিও ভুক্তিতে ঘুষ চাইলেই মামলা-দুদক চেয়ারম্যান–যুগান্তর অনলাইন 
  • হজের অর্ধেক কোটাও পূরণ হয় নি, কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা-দৈনিক ইত্তেফাক
  • এই সংকটকালে সঠিক তথ্য এবং স্বাধীন গণমাধ্যম অত্যন্ত জরুরি-দৈনিক মানবজমিন
  • চাপ বেড়েছে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে, নদী পার হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • প্রথম আলোর শিরোনাম-গার্মেন্ট শ্রমিকরা কি দেশের নাগরিক? এক গার্মেন্ট শ্রমিকের প্রশ্ন
  • দৈনিক সমকালের শিরোনাম-করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৭ কোটি ডলারের বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি 

ভারতের শিরোনাম:    

  • ভারতে করোনা আক্রান্ত ১৮ হাজার ছাড়াল, ২৪ ঘন্টায় মৃত ৪৭ জন-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • এবার আইন মন্ত্রকের অন্দরে করোনার হানা, আক্রান্ত সিনিয়র কর্মকর্তা-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন
  • গরিবদের হাতে টাকা দিতে করোনা পরবর্তী ভারতে বড় প্যাকেজ চাই- রাহুলকে পরামর্শ নোবেলজয়ী অভিজেতের-দৈনিক আজকাল

পাঠক/শ্রোতা! এবারে চলুন, বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। বাংলাদেশ ভারতসহ বিশ্ব মিডিয়ায় করোনাভাইরাসের সর্বশেষ আপডেট খবর বিশেষ গুরুত্বসহ পরিবেশিত হয়ছে। একনজরে সেসব খবর দেখে নেয়া যাক।

বিশ্ব করোনা পরিস্থিতি: 

বিশ্বে করোনার দাপট, আড়াই লাখ ছাড়াল মৃত্যু

করোনায় অনেকটা থমকে পড়েছে গোটা বিশ্ব। বিশ্বের ২১০ টি দেশ এবং অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। দৈনিক যুগান্তর লিখেছে, বিশ্বে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬,৪৬,৩৪১- জন, মৃতের সংখ্যা ২,৫২,৪২৫  জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১২০০,৩১৭ জন। তবে মৃত্যু ছাড়াল আড়াই লাখ।মানবজমিনের খবর, ট্রাম্প উদ্বিগ্ন-জুনে তার দেশে গড়ে প্রতিদিন ৩ হাজার করে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। দেশটি ৩ ট্রিলিয়ন ঋণ নিতে চায়। তবে করোনা নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ দেখানে পারেনি আমেরিকা  বলে দাবি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।অন্যদিকে বিজ্ঞনীদের দাবি বাদুড় আর চামচিকে করোনানা ছড়ায়নি। 

এদিকে করোনায় ইতিবাচক কিছু খবর এসেছে মিডিয়ায়। নিস্তব্ধতা ভেঙে জেগে উঠেছে ইতালি।গ্রীষ্মেই মানবদেহে পরীক্ষামূলক টিকা প্রয়োগ করবে দেশটির গবেষকরা।নিউজিল্যান্ডও একধাপ এগিয়েছে।যুগান্তরের একটি খবরে লেখা হয়েছে,লন্ডনের বিভিন্ন কারাগারে মুসলিমদের রোজা পালনে দুঃসহ যাতনা।   

বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি: 

বাংলাদেশে আক্রান্ত প্রায় ১১ হাজার

বিশ্বের সাথে সাথে করোনায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে যাচ্ছে  বাংলাদেশে। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৯২৯  জন। মোট  মৃতের সংখ্যা ১৮৩  জন। আর সুস্থ্য হয়েছেন ১ হাজার ৪০২ জন।প্রথম আলোসহ প্রায় সব অনলাইন সংস্করণের খবর। ঢাকার রাজপথে বড় দুটি হাসপাতালের মাঝে দুই ছেলের চোখের সামনে তাদের বাবার মৃত্যু হলো। তারপর বলা চলে কেউ এগিয়ে আসেনি।মর্মান্তিক এ খবর দিয়েছে দৈনিক কালের কণ্ঠ। এদিকে বাংলাদেশ প্রতিদিনে একইরকম কষ্টের খবর দিয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ময়মিনসিং জেলার গৌরিপুরের সাতুতী গ্রামে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যান আবদুল হাই। তার দাফনে বাধা দেয়া হয় এবং বাবার লাশ নিয়ে রাস্তায় ঘুরছেন ছেলে। 

লকডাউন হচ্ছে না, ইমিউনিটি এখন বাংলাদেশের একমাত্র পথ

আর মানবজমিনের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম এরকম,লকডাউন হচ্ছে না, ইমিউনিটি এখন বাংলাদেশের একমাত্র পথ  বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছিল আটান্ন দিন আগে। আজ (সোমবার) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মোট শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দশ হাজারের ওপর। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা ৬৮৮, যা এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক শনাক্ত হওয়া রোগী।

বাংলাদেশের শীর্ষ ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম পশ্চিমা একটি গণমাধ্যমেক বলছেন বাংলাদেশে করোনভাইরাস মহামারির প্যার্টান বা আক্রান্তের সংখ্যা নির্দেশকারী গ্রাফে এর ওঠানামার চিত্রটা দেখলে দেখা যাবে, বিশে এপ্রিল ৪৯২জনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল। তারপর দৈনিক আক্রান্তের এই হার ওঠানামা করে এখন ৬শ'য়ের কোঠায় পৌঁছেছে।"মাঝে এই সংখ্যা ৫০০র ঘরে ছিল, এখন তা ছয়শ'র ঘরে এসে গেছে। দিনে দিনে এই কার্ভটা (গ্রাফে আক্রান্তের রেখাচিত্র) উঠে যাচ্ছে। সমস্ত ইনফেকটেড লোকের ৫৫% ঢাকা সিটিতে। আর সব আক্রান্তের ৮৭% ঢাকা বিভাগে।"তিনি বলছেন, বিশেষ করে ঢাকায় সংক্রমণের বিষয়টা ঠিকমত নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলেই তার মনে হচ্ছে।"ইনফেকশনটা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে, সেটা যে সহসা কমবে তার কোন (লক্ষণ) নেই," 

২৮শে এপ্রিল গার্মেন্টস খুলে দেয়া হয়েছে এর কী প্রভাব  তা পাওয়া যাবে ১২ই মে থেকে

অধ্যাপক ইসলাম বলছেন, গত ২৮শে এপ্রিল গার্মেন্টস খুলে দেয়া হয়েছে এবং এর কী প্রভাব পড়বে তা "আমরা পাওয়া শুরু করব ১২ই মে থেকে"।দোকানপাটও এতদিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেবার যে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে, অধ্যাপক ইসলাম মনে করছেন তার প্রভাবে এই গ্রাফ আরও ঊর্ধ্বমুখী হবে।কবে এই আশংকা কাটবে?সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশের মানুষও গভীর উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করছে কবে তারা এই শঙ্কা-মুক্ত হবে।অধ্যাপক ইসলাম মনে করছেন এই সংক্রমণ যদি অব্যাহত থাকে তাহলে "হার্ড ইমিউনিটি" না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।"হার্ড ইমিউনিটি- অর্থাৎ কিছু লোক মারা যাবে, এবং অনেক মানুষ ইমিউন (প্রাকৃতিকভাবে ভাইরাস প্রতিরোধী) হয়ে যাবে।"মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠলে তবেই এই ভাইরাস থেকে ব্যাপক সংক্রমণের আশঙ্কা চলে যাবে বলে তিনি মনে করছেন। তবে এখানে সতর্ক হবার কারণও রয়েছে বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। 

গণমাধ্যম সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি খবর পরিবেশিত হয়েছে আজকের বাংলাদেশের মিডিয়ায়। এ সম্পর্কে মানবজমিনের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি। এই সংকটকালে সঠিক তথ্য এবং স্বাধীন গণমাধ্যম অত্যন্ত জরুরি-দৈনিক মানবজমিনের এ শিরোনামের খবরে লেখা হয়েছে,করোনার এই সংকটকালে সঠিক তথ্য এবং স্বাধীন গণমাধ্যম নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রে আস্থাভাজন প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশ তৈরি নিশ্চিতের বিষয়ে নজর দেয়াও প্রয়োজন বলে মনে করেন ব্র্যাকের চেয়ারপারসন ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, করোনার এই সংকটকালে সঠিক তথ্য এবং স্বাধীন গণমাধ্যম অত্যন্ত জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ। পশ্চিমা একটি গণমাধ্যমের শিরোনাম এরকম-হামলা এবং হয়রানি –বাংলাদেশি সাংবাদিকদের হাল।

এবার ভারতের কয়েকটি খবর তুলে ধরছি:

ভারতে ছাপিয়ে গেল সব রেকর্ড- মৃত্যু ও আক্রান্ত, লকডাউন শিথিল-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা /এনডিটিভি

ভারতে একদিনে করোনায় রেকর্ড 

এ খবরে লেখা হয়েছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ভারতে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১৯৫ জনের। আক্রান্ত ৩ হাজার ৯০০ জন।এনিয়ে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৪৩৩ জনে দাঁড়ালো। মোট মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৫৬৮ জনের।করোনার বিস্তার ঠেকাতে দেশটিতে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হয়। এরপর পরবর্তী ধাপে বাড়ানো হয়। তবে ইতিমধ্যে দেশটি বিভিন্ন অঞ্চলে লকডাউন শিথিল করেছে। এরপরই দেশটিতে একদিনে রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃতের খবর এলো।

লকডাউনের কোপে পরিচারিকারা, কাজ হারিয়ে রেশনের ভরসায় দিনযাপন তাঁদের-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে,লকডাউনের জেরে কাজ হারা বাড়ির কাজে সাহায্য করতে আসা দিদিরা। পরিযায়ী শ্রমিকদের দলেও তাঁরা পরেন না। তবে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ও করোনা সংক্রমণের জেরে প্রতিটি কাজের বাড়িতেই বন্ধ হয়েছে তাদের অবাধ যাতায়াত।সকাল হতেই স্টেশন চত্বরে থিকথিক করছে ভিড়। শিয়ালদহ, পার্কসার্কাস, বালিগঞ্জ, দমদম সব স্টেশনেরই একই হাল। তবে সেসব এখন অতীত। সংক্রমণের ভয়ে বাকি রাজ্যগুলির তুলনায় অনেক আগেই এই রাজ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গণপরিবহন ফলে কাজ হারিয়েছেন বাড়ির কাজে সাহায্য করতে আসা কাজের দিদিরা। রুমা পায়রা জানান, “প্রায় ৪০ দিন ধরে বাড়িতে বসে আছি। যে বাড়িতে কাজ করতাম সেই বাড়িতে কাজ করতে যেতে বারণ করা হয়েছে। এমনকি তাঁরা টাকাও দেবে না বলে দিয়েছে। এই অবস্থায় কিকরে সংসার চালাব বুঝে উঠতে পারছি না। তাই এখন পুরোপুরি খাবারের জন্য রেশনের ভরসায় দিন চালাতে হচ্ছে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৫
 

ট্যাগ