সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০ ১৬:১২ Asia/Dhaka

প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ২১ সেপ্টেম্বর সোমবারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।

প্রথমে বাংলাদেশের শিরোনাম:

  • গ্রাহকের কাছে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা বকেয়া তিতাসের-দৈনিক ইত্তেফাক
  • যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ কার পক্ষ নেবে-প্রথম আলো
  • ভোমরা বন্দর দিযে এলো আরও ১০৮ টন পেঁয়াজ-দৈনিক সমকাল
  • এশিয়ার নতুন শীতল যুদ্ধে হেরে গেছে ন্যায় বিচার ও রোহিঙ্গারা-মানবজমিন
  • কোটিপতি গাড়িচালক মালেকের বিরুদ্ধে মামলা,১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন-দৈনিক যুগান্তর
  • তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির বন্টনের আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে-কালের কণ্ঠ
  • ভিপি নূরের বিরুদ্ধে ধর্ষর্ণের অভিযোগে মামলা-বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারতের শিরোনাম:

  • ডেরেক ও ব্রায়েনসহ আটজন সাংসদকে সাসপেন্ড রাজ্যসভা থেকে-দৈনিক আজকাল
  • আজও উত্তপ্ত রাজ্যসভা,বেরোতে নারাজ সাপপেন্ড হওয়া ডেরেক-দোলারা-আনন্দবাজার পত্রিকা
  • কৃষকদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো ভয় পাচ্ছেন আপনারা’ কৃষি বিল নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ মোদীর-সংবাদ প্রতিদিন

শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। শুরুতেই করোনার খবর.. 

ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা-৯ লাখ ৪৫ হাজার ছাড়াল। আক্রান্ত ৩ কোটি ৭৭ হাজার পেরিয়ে গেছে। ভারতে করোনায় একদিনে প্রায় ৮৭ হাজার সংক্রমিত। এ সময় মারা গেছেন ১১৩০, মোট মৃত্যু-প্রায় ৮৮ হাজার আর মোট আক্রান্ত প্রায় ৫৫ লাখ। বাংলাদেশে করোনায় ২৪ ঘন্টায় আরও ৪০ জনের মৃত্যু। দ্বিতীয় ধাপে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। খবরটি প্রথম আলোর। 

দৈনিক ইত্তেফাকের খবরে লেখা হয়েছে, ইউরোপের মতো বাংলাদেশেও করোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে। আর ভ্যাকসিন সম্পর্কে লেখা হয়েছে, চীনের ভ্যাকসিন কূটনীতি: দুর্বল দেশগুলোকে কবজা করার হাতিয়ার।

এবার ভদ্রলোক আবদুল মালেক কাণ্ড!

গাড়িচালক আবদুল মালেক ১৪ দিনের রিমান্ডে

মিডিয়ার খবরে ঝড় তুলেছে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুলের একজন গাড়ি চালক। তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মচারী। দেশজুড়ে সবাই তাকে নিয়ে মশগুল। দৈনিক যুগান্তরের খবর-স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোটিপতি গাড়িচালক আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে।

রোববার দিনগত রাত ১২টার পর র‌্যাব বাদী হয়ে তুরাগ থানায় এ মামলা করে।এদিকে ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে হাজির করে মালেককে জিজ্ঞাসাবদের জন্য ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। ঢাকার সিএমএম আদালত শুনানি শেষে তার জামিনের আবেদন নাকচ করে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

মালেক সম্পর্কে দৈনিক মানবজমিনে ধারাবাহিকভাবে বেশ কিছু খবর পরিবেশিত হয়েছে। মতামতও তুলে ধরা হয়েছে। মত মতান্তরের একটি নিবন্ধ লিখেছেন সাজেদুল হক। শিরোনামটি হলো-একটি স্বপ্নের চাকরি, এবং… তিনি লিখেছেন, জাতি হিসেবে আমরা সম্ভবত ঈর্ষাপরায়ণ। একজন মানুষ অসামান্য সফলতা দেখিয়েছে। কোথায় সবাই মিলে বাহবা দিবে তা না! সবাই মশগুল তার সমালোচনায়। নাকি এটা এক ধরনের আফসোসও! বই, পুস্তক পড়ে, মোটিভেশনাল বক্তৃতা শুনে তো জীবনে এতোটা সফল হওয়া যায় না।তার কাহিনী এরইমধ্যে মোটামুটি সবার জানা হয়ে গেছে। ‘ভদ্রলোকের’ নাম আবদুল মালেক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুলের একজন গাড়ি চালক। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী।

১৯৮২ সালে তার চাকরি জীবন শুরু হয়েছিল। এরপর আস্তে আস্তে জীবনটা তার পাল্টাতে থাকে। আর এখন এমন সম্পদশালী তিনি যা অনেকের কল্পনারও বাইরে। ঢাকায় সাত তলা দু’টি ও ১০ তলা একটি বাড়ি। একটি বাড়িতেই ২৪টি ফ্ল্যাট। আর বেশি বিবরণ দিতে চাই না! আমরা কেউইতো আসলে ঈর্ষার বাইরে নই।

গাড়িচালক টাকার কুমির আবদুল মালেক

অবশ্য আবদুল মালেকরা একেবারে অভিনব কোনো চরিত্র নয়। মাঝে মাঝেই এমন সম্পদশালী তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের কাহিনী সামনে আসে। সংবাদপত্রে বড় বড় হেডলাইন হয়। একমুখী টিভি চ্যানেলে হয় বিস্তর বিশ্লেষণ। আবদুল মালেক, আবজালরা কীভাবে নিজেদের টাকার মেশিনে পরিণত করেন তা সবার জানা। কারা তাদের এই মেশিন হতে সহযোগিতা করে, মেশিনের উৎপাদনের বড় অংশ কারা নিয়ে যায় তাও সহজে অনুমান করা যায়। ড্রাইভারদের নাম তবু মাঝে-মধ্যে আলোচনায় আসে। কখনো কখনো তাদের কারাগারেও যেতে হয়। কিন্তু স্যারেরা প্রায় সব সময়ই থেকে যান আড়ালে। কিংবা তাদের স্যারেরা। বাংলাদেশে তা নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না, গবেষণা হয় না।

কোটিপতি ক্লাবে সদস্য সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। বাড়ছে ভিনদেশি বেগমপাড়ায় বাংলাদেশি ভাবিদের প্রভাব-প্রতিপত্তি। প্রভাবশালী মানুষেরা বিপুল অর্থ পাচার করে দিচ্ছে বিদেশে। তাদের স্বজনদের স্বপ্ন আশা-আকাঙ্খা সব বেগমপাড়া ঘিরে। আবদুল মালেকের বিস্ময়কর কাহিনীর মধ্যেই পুরনো একটি বিষয় নিয়ে নতুন রিপোর্ট পড়ছিলাম। দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতে পাচার করেছেন ২২৭ কোটি টাকা। আর এর বেশিরভাগ টাকাই তিনি উড়িয়েছেন সিঙ্গাপুরে ক্যাসিনোর টেবিলে। ফরিদপুরে মাঝারি গোছের দুই নেতার (আপন দু’ ভাই) ২০০০ কোটি টাকা পাচারের কাহিনীতো এরই মধ্যে প্রকাশিত। কিন্তু সবাই জানেন, প্রকাশের বাইরে রয়ে গেছে আরো বহুকিছু।

এসব দেখেই কি-না আবদুল মালেকের সম্পদের পাহাড় বিস্মিত করতে পারেনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে। তিনি লিখেছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্রাইভারের এত এত সম্পদ দেখে অবাক হচ্ছেন। মনে হচ্ছে এটা যেন খুব নজিরবিহীন একটা ঘটনা। খবরটা দেখে আমার মধ্যে তেমন কোন প্রতিক্রিয়াই হয় নি। এই লুটেরা সমাজের জন্য খুবই সাধারণ মানের একটা খবর। এই রকম ‘সফল’ মানুষ এই সমাজে যে কত আছে তার হিসেব নেই। বলি কি! এই ড্রাইভার সাহেবকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘মোটিভেশনাল স্পিকার’ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হোক। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীদের তিনি কার্যকরীভাবে মোটিভেশন দিবেন যে কিভাবে এত ছোট চাকরি করেও এত সফল হওয়া যায়। এতে করে আমরা একটা সফল জাতি তৈরি করতে সক্ষম হব। যদিও ইতোমধ্যে আমরা এ ক্ষেত্রে বেশ সফল হয়েছি, আরো সফল হতে পারব। ড্রাইভারের ‘স্যার’রা সব দুধের ধোয়া তুলসী পাতা।

গত কয়েক বছর ধরে মাঝে মাঝেই বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে। নিশ্চয়ই আমাদের এক গাড়ি চালকের সম্পদের বিবরণী শুনে সিঙ্গাপুরের গাড়ি চালকরাও তাজ্জব বনে যাবেন। দেশটির প্রখ্যাত উন্নয়ন গবেষক কিশোর মাহবুবানি। সম্প্রতি তার একটি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ওই ভিডিও শেয়ার দিয়ে তিনি লিখেছেন, ১৯৬৫ সনে স্বাধীনতা লাভের সময় সিঙ্গাপুর ছিলো একটি অত্যন্ত দবিদ্র তৃতীয় বিশ্বের দেশ, আর এখন দেশটি পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশগুলোর অন্যতম। এই ভিডিওটিতে সে দেশের উন্নয়ন গবেষক কিশোর মাহবুবানি নিজের জীবনব্যাপী অভিজ্ঞতা থেকে এই উন্নয়নের পেছনে প্রধান তিনটি নিয়ামকের উল্লেখ করেছেন, যেগুলো হল

১. সকল পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ (স্বজনপ্রীতি বা অন্য কোন বিবেচনার বিপরীতে),

২. দেশ শাসনের সর্বস্তরে সততা ও কর্তব্যপরায়নতা (দুর্নীতির বিপরীতে), এবং

৩. বাস্তবতার বিবেচনায় নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।

মানবজমিনের অন্য একটি রিপোর্টের শিরোনাম- এরকম-টাকার কুমির স্বাস্থ্যের গাড়িচালক। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে,

ভয়ঙ্কর আবদুল মালেক, শ শ কোটি টাকা তার

মাথায় সাদা টুপি। মুখে পাকা লম্বা দাড়ি। ৬৩ বছর বয়সী আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। তার কাজ কর্মকর্তার গাড়ি চালানো। কিন্তু গাড়ি চালানো তো দূরের কথা খোদ মহাপরিচালকের গাড়ি ব্যবহার করতেন নিজে। ওই গাড়ি চালাতেন অধিদপ্তরের আরেক চালক। গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত ওই গাড়িটি কব্জায় ছিল গাড়ি চালক মালেকের। রোববার অভিযান চালিয়ে কোটিপতি এ গাড়ি চালককে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

তিনি  স্বাস্থ্যে সাবেক ডিজি আবুল কালাম আজাদের গাড়ি চালাতেন। প্রভাবশালী  এই গাড়ি চালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ, বদলিসহ নানা অনিয়ম করে শ’ শ’ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। রাজধানীতে গড়েছেন বিলাসবহুল বেশ কয়েকটি বাড়ি। খামার গড়েছেন নিজের নামে। ব্যাংকে জমা করেছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। গ্রেপ্তারের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই অবাক হয়েছেন তার সম্পদের তথ্য পেয়ে।

মালেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। দেখতে সাদামাটা ভদ্রবেশী মনে হলেও বাস্তবে তিনি ভয়ঙ্কর এক ব্যক্তি। অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা থেকে শুরু করে আছে জাল টাকার ব্যবসা। অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, অর্থ আদায় সবই করেন। গাড়ি চালক পেশার আড়ালে এমন কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ড নেই যা তিনি করেন না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের গাড়িসহ আরো তিনটি প্রকল্পের গাড়ি নিজের কব্জায় রেখেছিলেন। অধিদপ্তরের নিয়োগ-বাণিজ্য থেকে শুরু করে ক্রয়, টেন্ডারবাজি ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া অধিদপ্তরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন। শুধু তাই নয়, নিজ এলাকায় মালেক ছিলেন মূর্তিমান এক আতঙ্ক। অবৈধ অস্ত্র ও টাকার গরম দেখিয়ে তিনি ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিলেন। প্রকাশ্য অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে শক্তির মহড়া দিতেন। তার চক্রে ছিল একাধিক লোক। যাদেরকে নেতৃত্ব দিতেন মালেক নিজেই। তাদের হুমকি-ধমকিতে এলাকার লোকজন তটস্থ থাকতো। ভয়ে কারো মুখ খোলার সাহস ছিল না। কেউ মুখ খুললে তাকে নানাভাবে হয়রানি করতেন। তার ওপর নেমে আসতো খড়গ। অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে হয়েছেন টাকার কুমির। বিলাসবহুল গাড়ি-বাড়ি, ফ্ল্যাট, প্লট- সবই আছে তার। তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন, অবৈধ ব্যবসা, সম্পদ অর্জনের এসব অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতেন। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) প্রাথমিক তদন্ত করে এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অবশেষে আব্দুল মালেককে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল ভোরে ঢাকার অদূরে তুরাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ৫ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ টাকার জালনোট, ১টি ল্যাপটপ ও ১টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

১৯৮২ সালে সর্বপ্রথম সাভার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিবহন পুলে চালক হিসেবে চাকরি শুরু করেন। বর্তমানে তিনি প্রেষণে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত। একজন গাড়ি চালক হলেও অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই ছিল তার নিয়ন্ত্রণে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যাবতীয় টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতো মালেক। টাকার বিনিময়ে নিজের পছন্দের লোকদের টেন্ডার পাইয়ে দিতেন। প্রতিটা টেন্ডারেই তিনি ভাগ বসাতেন। অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য সরঞ্জাম থেকে শুরু করে অফিসিয়াল অন্যান্য কেনাকাটায়ও তার দৌরাত্ম্য ছিল। নিয়োগ বাণিজ্যেও একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে চাকরি পাইয়ে দিতেন। দীর্ঘদিন ধরে টেন্ডারবাজি, কেনাকেটা, নিয়োগ-বাণিজ্য করে তিনি কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। তার আধিপত্যের কাছে খোদ অধিদপ্তরের সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তি থেকে শুরু করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পর্যন্ত তটস্থ হয়ে থাকতেন। গাড়ি চালক হয়েও তিনি কোনো গাড়ি চালাতেন না। উল্টো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্ধারিত কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি দিয়ে নিজে চলাফেরা করতেন। সরকারি গাড়ি ভাড়ায় খাটাতেন। অধিদপ্তরের তিনটি প্রকল্পের গাড়ি তার দখলে ছিল। এসব গাড়ি মাসিক ভাড়ায় অন্যত্র খাটাতেন। এই তিনটি গাড়ি ছিল যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার তিনজন প্রকল্প পরিচালকের জন্য বরাদ্দ। অভিযোগ আছে মালেক সব সময় অস্ত্র বহন করতেন। বিষয়টি কর্মস্থলের অনেকেই জানতেন। কাজও হাসিল করতেন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে। শুধু অধিদপ্তর নয়, তার লম্বা হাত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। অভিযোগ আছে মালেকের খুঁটির জোর বেশ শক্ত ছিল।

র‌্যাবের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুঘল ছিল আব্দুল মালেক। স্বাস্থ্য সেক্টরে আধিপত্য বিস্তারের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা করে আসছেন। এর বাইরে অস্ত্রের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তার বিলাসবহুল জীবন ছিল। চলাফিরা করতেন সমাজের উচ্চপদস্থ ব্যক্তির সঙ্গে। চালক হিসেবে তার যে আয় সেটি ব্যয় ও সম্পদের সঙ্গে অসামঞ্জস্য ছিল। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, আব্দুল মালেকের স্ত্রীর নামে দক্ষিণ কামারপাড়া এলাকায় দু’টি সাততলা ভবন, বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২৪টি ফ্ল্যাট, ১৫ কাঠা জমিতে একটি ডেইরি ফার্ম, হাতিরপুলে সাড়ে চার কাঠা জমিতে ১০ তলা ভবন রয়েছে। নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে তার রয়েছে কোটি কোটি টাকা। লাভজনক-অলাভজনক বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। র‌্যাব জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে তার আরো বাড়ি, জমি থাকতে পারে।

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার মানবজমিনকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির প্রাডো গাড়ি গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত তিনি ব্যবহার করেছেন। এছাড়া তিনটি প্রকল্পের যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার তিনটি গাড়ি তার দখলে ছিল। অধিদপ্তরের ক্রয়, নিয়োগ-বাণিজ্য টেন্ডার-বাণিজ্য ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। একাধিক বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ তার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নানা তথ্য আমাদেরকে দিচ্ছেন।

রাজনীতির খবরে দৈনিক যুগান্তরের শিরোনাম-সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,দুদেশের সম্পর্কে মধ্যে কৃত্রিম দেয়াল এখন আর নেই। খবরটিতে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২১ বছর দুদেশের মধ্যে সম্পর্কের যেই কৃত্রিম দেয়াল ছিল তা এখন আর নেই।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস সোমবার সকালে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন। সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বহুমাত্রিক। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক বোঝাপড়া ভালো হলে দুদেশেরই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহজতর হয়।

কঠিন থেকে কঠিনতর চ্যালেঞ্জের মুখে বিশ্ব অর্থনীতি বিষয়ক এ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে,

ক্রমেই কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। গোটা বিশ্ব এখন করনোরা করাল গ্রাসে। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শুধু তাই নয়, করোনার প্রভাবে কার্যত ধ্বসে গিয়েছে বিশ্বের অর্থনীতি। ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড আগেই এটিকে মানবজাতির অন্ধকারতম সময় বলে উল্লেখ করেছে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাসের কথায়, 'করোনা মানবজাতির স্বাস্থ্যের পাশাপাশি গোটা বিশ্বের অর্থনৈতিক কাঠামোকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধির হার এবার সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছতে পারে'। এযাবত্কালে বিশ্ব এমন আর্থিক মন্দার মুখোমুখি হয়নি।

আইএমএফ-এর ইতিহাসে এই প্রথম এমন ঘটনা। তাদের আশঙ্কা, ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সঙ্কটেও ছাপিয়ে যাবে এবারের মন্দা। আইএমএফ- এর দাবি, 'আমরা এক বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকলাম, যেখানে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করা হচ্ছে '। কারণ প্রতিটা দেশের আভ্যন্তরীন সম্পদ যথেষ্ট নয়৷ এই দেশগুলোর আবার অনেকেই ঋণের ভারে জর্জরিত ৷ ৮০ টি দেশ যাদের বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের ৷ করোনা ভাইরাস অতিমারি সারা পৃথিবীর সমস্ত দেশে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে ৷ চলতি বছরে বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার জেরে কয়েক লক্ষ কোটি ডলার ক্ষতি হতে চলেছে বিশ্ব অর্থনীতির, জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট। COVID-19 সংকটের শিকার হতে চলেছে বিশেষ করে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো। এই পরিস্থিতিতে আগামী দুই বছর বিনিয়োগে মন্দা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সংকট থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে বাঁচাতে ২৫,০০০ কোটি ডলার উদ্ধারকারী অনুদানের আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

কৃষি বিল ইস্যুতে মোদিকে তীব্র সমালোচনায় রাহুল গান্ধী

সর্বজ্ঞ ৫৬ ইঞ্চির সীমাহীন অহং, মোদীকে কৃষি-খোঁচা রাহুলের-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, রাজ্যসভায় ধ্বনিভোটে কৃষি বিল পাশ এবং প্রতিবাদী আট সাংসদের শাস্তি প্রসঙ্গে এ বার নরেন্দ্র মোদী সরকারকে টুইটারে নিশানা করলেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।

সোমবার তিনি লেখেন,‘‘গণতান্ত্রিক ভারতের রূপান্তর প্রক্রিয়া অব্যাহত। প্রথমে নিশ্চুপ করিয়ে। এর পর সাংসদদের সাসপেন্ড করে, কৃষকদের অন্ধকারে রেখে কালা আইন পাশ করিয়ে। এই ‘সর্বজ্ঞ’ সরকারের সীমাহীন অহংবোধ দেশকে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে।’’

কৃষি বিল পাস ও সাংসদদের সাসপেনশন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে স্বেরাচারী বললেন মমতা

সংবাদ প্রতিদিন লিখেছে, গণতন্ত্রকে অশ্রদ্ধা’স্বৈরাচারী মনোভাব’ সাংসদদের সাসপেনশন নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। কৃষি বিল নিয়ে গতকাল তারা রাজ্যসভায় তীব্র প্রতিবাদ জানান। তারই  জেরে আজ দিনের শুরুতেই ডেরেক ও ব্রায়েনসহ ৮ সাংসদের সাসপেন্ড করা হয়। এরই কড়া প্রতিক্রিয়ায় মমতা ঐ মন্তব্য করেন। এদিকে দৈনিকটির অপর এক খবরে লেখা হয়েছে, জোর করেই রাজ্যসভায় পাস হলো কৃষি বিল। প্রতিবাদে উত্তাল হরিয়ানা, পাঞ্জাবসহ বিভিন্ন রাজ্য।

‘কৃষকদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো ভয় পাচ্ছেন আপনারা’, কৃষি বিল নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ মোদির-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

কৃষি বিল নিয়ে মোদী বললেন-বিরোধীরা মিথ্য বলে ভুল বোঝাচ্ছে

তীব্র বিতর্কের মধ্যেই রাজ্যসভার পাশ হয়েছে কৃষি বিল (Farm Bill, 2020)। তারপরে হিন্দি, ইংরাজি ও পাঞ্জাবিতে টুইট করে কৃষকদের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠক করে বিলে গুনাগুন ব্যাখা করেছিলেন ছয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। দেশজুড়ে এই বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন কৃষকরা। সরব বিরোধীরাও। এমন পরিস্থিতিতে এই ‘ঐতিহাসিক’ বিল নিয়ে সোমবার রীতিমতো জাতির উদ্দেশে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। আরও একবার আশ্বস্ত করলেন ন্যূনতম সহায়কমূল্য নিয়ে। এই বিল যে কৃষিমাণ্ডি বিরোধী নয়, তাও এদিন স্পষ্ট করে দিলেন তিনি। আবার এই বিলের বিরোধিতা করায় বিরোধীদেরও একহাত নিলেন মোদি। বললেন, “কৃষকদের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ ফসকে যাওয়ার ভয়ে মিথ্যা বলে ভুল বোঝাচ্ছে বিরোধীরা”।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/২১