মার্চ ১৪, ২০২১ ১৬:৫৪ Asia/Dhaka
  • রাফসানের প্রতারণা, শতাধিক তরুণীর সর্বনাশ!

প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৪ মার্চ রোববারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • তিস্তা চুক্তি কেন বাস্তবায়ন হয়নি সেটা আমরা জানি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী -ইত্তেফাক
  • তিস্তা চুক্তি হয়েছে ১০ বছর আগেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী-সমকাল
  • ফ্ল্যাট ঋণ জালিয়াত চক্রে ইসির পাঁচ কর্মী -কালের কণ্ঠ
  • রাফসানের প্রতারণা, শতাধিক তরুণীর সর্বনাশ – মানবজমিন
  • কাদের মির্জাসহ ১৬৪ জনের নামে হত্যা মামলা-প্রথম আলো
  • করোনা: দেশে টিকা গ্রহিতার সংখ্যা কমছে-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • মির্জার বিরুদ্ধে থানায় মামলা রেকর্ড হয়নি –যুগান্তর
  • কাদের মির্জাকে গ্রেপ্তারের দাবি উপজেলা আওয়ামী লীগের-সমকাল

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • কলকাতার রাস্তায় হুইল চেয়ারে বসে রোড শো মমতার -আনন্দবাজার পত্রিকা
  • ন্দীগ্রাম দিবস পালনকে কেন্দ্র করে ভাঙাবেড়িয়ায় অশান্তিতে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল–বিজেপি -আজকাল
  • আমার চেয়ে মানুষের যন্ত্রণা অনেক বেশি’, হুইলচেয়ারে রাজপথে নামার আগে বার্তা মমতার -সংবাদ প্রতিদিন

শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। প্রথমে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবর।

তিস্তা চুক্তি কেন বাস্তবায়ন হয়নি সেটা আমরা জানি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  -ইত্তেফাক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ১০ বছর আগেই সই হয়েছে। কিন্তু তার বাস্তবায়ন হয়নি। কী কারণে বাস্তবায়ন হয়নি সেটা আমরা জানি। শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন। পরোক্ষভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসহযোগিতার প্রতি ইঙ্গিতই যেন দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর উৎসবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসছেন এটাই আনন্দের বিষয়। এছাড়া আরও চার দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা আসছেন।ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করবেন। ইতিমধ্যে যেগুলো আলোচনা হয়েছে এবং মোটামুটি একটা ঠিক হয়েছে ওইগুলো যাতে বলবত থাকে, বাস্তবায়নে অসুবিধা না হয়, সেজন্য হয়তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরতে পারেন। তবে নরেন্দ্র মোদির এবারের সফর মূলত বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ও আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন।

ক্ষুধার কারণে মৃত্যুঝুঁকিতে বিশ্বের লাখো মানুষ-জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের সতর্কবার্তা-ইত্তেফাক

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি বৃদ্ধি এবং ক্ষুধার কারণে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ মানুষ মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। বৃহস্পতিবার তিনি এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে বলেন, পরিস্থিতির যদি উন্নতি না ঘটে তাহলে সামনে আমাদের জন্য ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে।

নিরাপত্তা পরিষদের খাদ্য ও নিরাপত্তাবিষয়ক এক বৈঠকে গুতেরেস বলেন, ‘তাৎক্ণিক পদক্ষেপ না নিলে লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধা ও মৃত্যুর মুখে পড়বে।’ তিনি বলেন, ৩৬টিরও বেশি দেশের ৩ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষ ঘোষণা থেকে ‘মাত্র এক পা দূরে রয়েছে’।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং কোভিড-১৯ মহামারি এই পরিস্থিতি আরো তীব্র করেছে। এক্ষেত্রে আমার একটি সতর্কবার্তা যদি আপনারা এসব মানুষের খাবার দিতে না পারেন তাহলে আপনাদের সংঘাতের মুখোমুখি হতে হবে। কেননা ২০২০ সালের শেষের দিকে দ্বন্দ্ব ও অস্থিরতায় ৮ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি হয়। এ বছর এ অস্থিরতা আরো ২০ শতাংশ বাড়ছে।

২০২১ সালে এ সংকট আরো তীব্র হতে পারে। তাই এখনই আমাদের এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আর যদি আমরা তা করতে না পারি, তাহলে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যে এসব মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে যাবে। তাই এই মুহূর্তে অসহায় এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, বর্তমান এ সংকট তা আমাদের দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে এ থেকে উত্তরণে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, সাহেল, হর্ন অব আফ্রিকা, দক্ষিণ সুদান, ইয়েমেন এবং আফগানিস্তান সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। গুতেরেস বলেন, এ বিপর্যয় এড়াতে আমাদের শক্তিশালী টাস্কফোর্স চালু করতে হবে। এখন আমরা শুধু বিষয়টি অনুধাবন করতে পারছি কিন্তু একটা সময় আসবে যখন আর অনুভব নয়, চরম অবস্থার শিকার হতে হবে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে তিনি ৫৫০ কোটি ডলার জরুরি সহায়তার আবেদন করেন।

রাফসানের প্রতারণা, শতাধিক তরুণীর সর্বনাশ-মানবজমিন

প্রতারক রাফসান

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতাধিক। তারা সবাই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু প্রার্থী। তাদের প্রত্যেকের অভিযোগ প্রায় একই। বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পাইয়ে দেয়া ও পরীক্ষার ফল পরিবর্তন করে দেয়ার লোভ 

দেখানো হয়েছে। আদতে কোনো প্রশ্নপত্র বা ফল পরিবর্তন করে দেয়া হয়নি। বরং সেই সুযোগে ফেসবুক মেসেঞ্জারে চ্যাটিং করা হয়। কৌশলে মোবাইল নম্বর নিয়ে নানা তথ্য, পরামর্শ উপদেশ দেয়া হয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলা হয়।

বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে প্রেমের ফাঁদ তৈরি করে খোলামেলাভাবে ভিডিও কলে আসার অনুরোধ জানায়। ভিডিও কল চলাকালে স্ক্রিন রেকর্ডার দিয়ে সেই দৃশ্য ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ভার্চ্যুয়াল সেক্স ও টাকা আদায় করা হতো। শতাধিক শিক্ষার্থীর সরলতা ও দুর্বলতা নিয়ে একাই এই কাজ করেছে রাফসান চৌধুরী (৩১) নামের এক প্রতারক। সম্প্রতি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে এই প্রতারক গ্রেপ্তারের পর এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে। তার মোবাইল ঘেঁটে ডিবি জানতে পেরেছে ফেসবুকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেলে ভর্তি এবং রেজাল্ট পরিবর্তন করার গ্যারান্টি দিয়ে শতাধিক মেয়ে শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। পরে তাদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল সেক্স করেছে। নিজের কব্জায় নিয়েছে ওই শিক্ষার্থীদের গোপন ভিডিও ও ছবি। এছাড়া বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা মানবিক ছবি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে পাঠিয়ে টাকা আদায় করতো। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার নারী ইয়াবাসেবীদের কাছে ইয়াবা সরবরাহ করতো। এসব অভিযোগে ১১ই মার্চ বৃস্পতিবার খিলগাঁও শান্তিপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর রাফসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে শুক্রবার খিলগাঁও থানায় মাদক ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দু’টি মামলা করেছে ডিবি। এরমধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় দু’দিনের রিমান্ড চলছে তার।

অন্য একটি খবরে লেখা হয়েছে, চট্টগ্রামে বেপরোয়া ‘লেডি গ্যাং লিডার’ সিমরান সিমিকে আটক করেছে পুলিশ।

দেশে এক বছরে ১৪ হাজার ৪৩৬ জনের আত্মহত্যা-মানবজমিন

আত্মহত্যার সংখ্যা বেড়েছে

গত এক বছরে দেশজুড়ে আত্মহত্যা করেছেন ১৪ হাজার ৪৩৬ জন । আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদন বলছে, পারিবারিক জটিলতা, সম্পর্কের অবনতি, পড়াশোনা নিয়ে হতাশা, আর্থিক সংকট-এই আত্মহত্যার মূল কারণ।

শনিবার দুপুর ১২টার দিকে অনলাইনে আয়োজিত এক ওয়েবনিয়ারে সংগঠনটি আত্মহত্যার পরিসংখ্যান ও কারণ তুলে ধরে।

ফ্ল্যাট ঋণ জালিয়াত চক্রে ইসির পাঁচ কর্মী-কালের কণ্ঠ

ভুয়া নথিপত্র তৈরি  করে ফ্ল্যাট কেনার নামে ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কমপক্ষে পাঁচ কর্মী জড়িত। তাঁরা টাকার বিনিময়ে এনআইডি সার্ভারে একজনের তথ্যের স্থানে অন্যজনের তথ্য ও ছবি আপলোড করে দিতেন। আর জালিয়াতির কাজটি শেষ হলেই ওই নকল ছবি ও তথ্য সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতেন।গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে বেরিয়ে আসা ইসির ওই পাঁচ কর্মী হলেন পিয়ন সাজ্জাদ, কর্মী আজিজ ও সাফিন আহমেদ সাফি, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী শাহজাদ এবং কম্পিউটার অপারেটর শাহাদাত। সম্প্রতি ইসি বিভিন্ন অভিযোগে ৪৪ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। তাঁদের মধ্যে এই চক্রের অন্তত দুজন রয়েছেন।চক্রটি একের পর এক জালিয়াতি করে ঢাকায় ১১টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের নামে ২০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে।

একে একে ২৪টি ফ্ল্যাটের ঋণের নামে এই অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পড়েছে ঢাকা ব্যাংকের পক্ষ থেকে দায়ের হওয়া মামলার তদন্তে। গত ৭ ডিসেম্বর খিলগাঁও এবং ১২ ডিসেম্বর পল্টন থানায় এসব মামলা করা হয়।

জালিয়াতির এসব ঘটনায় এরই মধ্যে ৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঢাকা ব্যাংকের পক্ষ থেকে করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঋণগ্রহীতা কিস্তি পরিশোধ না করায় নোটিশ দিয়ে শেষে তারা মামলা করে। ওই মামলা করা হয় ভুয়া ফ্ল্যাট মালিক বা ক্রেতার বিরুদ্ধে। জড়িত করা হয় বিক্রেতাকেও। মামলার তদন্তে নেমে নির্দিষ্ট ঠিকানায় বিক্রেতা ও ক্রেতার হদিস পায়নি ডিবি। এর সূত্র ধরে শুরু হয় তদন্ত। বেরিয়ে আসে প্রতারণার কাহিনি।

কাদের মির্জাসহ ১৬৪ জনের নামে হত্যা মামলা-দৈনিক প্রথম আলো

কাদের মির্জাসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাসহ ১৬৪ জনের নামে আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১টার দিকে নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ নম্বর আমলি আদালতে এই মামলা করা হয়।

তবে যুগান্তরের খবরে লেখা হয়েছে, মির্জার বিরুদ্ধে থানায় মামলা রেকর্ড হয়নি , অন্যদিকে কাদের মির্জা বলেছেন, আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি, আমাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মির্জাকে গ্রেফতারের দাবি  জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। 

এখনও উভয়পক্ষের নেতারা মুখোমুখি অবস্থানে অনড় রয়েছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। এ অবস্থায় ব্যবসায়ী সমাজ ও জনসাধারণের মাঝে বিরাজমান আতঙ্ক কাটেনি এখনও। পুলিশ বলছে, সংঘর্ষে জড়িতদের ছাড় দেয়া হচ্ছে না। গ্রেফতারে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। বিভিন্ন স্পটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। এ পর্যন্ত পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ৩৭ জনকে।

এর মধ্যে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল আছেন। তিনি এখন কারাগারে। 

গত দেড় মাস ধরে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের বিরোধ চলছে। এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে এক অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন সময়ে দুপক্ষে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সিএনজিচালক ও শ্রমিক লীগ কর্মী আলাউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান, আহত হন অর্ধশতাধিক। এর আগে আরেক সংঘর্ষে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির নিহত হন।

১২৭ হত্যা মামলার চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে-অধরাই থাকছে ঘাতক চক্র-যুগান্তর

তথ্যপ্রমাণের অভাবে ১২৭টি হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারছে না পুলিশ। বছরের পর বছর ধরে মামলাগুলোর তদন্ত ঝুলে আছে। গতিহীন হয়ে পড়েছে এর সঙ্গে জড়িতদের কাজ।

ফলে চাপ কমাতে পর্যায়ক্রমে ‘ক্লুলেস’ সব মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে যাচ্ছেন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এতে কোনোদিনই জানা যাবে না এসব হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কারণ। অন্ধকারেই হারিয়ে যাবে ঘাতক চক্র। এদের কেউ শাস্তিও পাবে না। 

তবে ১২৭টির মধ্যে প্রায় অর্ধেক মামলার তদন্তে গাফিলতি ও ত্রুটিবিচ্যুতি পেয়েছে ঊর্ধ্বতন তদারকি কর্মকর্তারা। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে। এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন কোনো সমস্যা নেই যে তার সমাধান নেই। সমাধান বের করতে হবে। আমরা কেস টু কেস দেখে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। সিআইডির মামলা তদন্তে দীর্ঘসূত্রতার কথা প্রচলিত আছে। ৩০/৪০ বছর ধরে একটা মামলা তদন্তেরও নজির আছে। এটা শুধু হয়েছে সিদ্ধান্তহীনতার কারণে। আমরা এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি। এ ধরনের মামলা তদন্তে টাকার উৎস না থাকায় গাফিলতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা ঠিক নয়। কর্মকর্তারা তদন্ত ভাতা পান। হত্যা, ডাকাতি, চুরি, প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধারার মামলার জন্য আলাদা আলাদা তদন্ত ভাতা দেওয়া হয়। আগে নিয়ম ছিল সংশ্লিষ্ট থানা থেকে ভাতার টাকা আনতে হতো। আমাদের কর্মকর্তারা ভাতা আনতে থানায় যেত না। এখন আমাদের কর্মকর্তাদের আমরাই ভাতা দেব। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এটা অনুমোদনও হয়েছে। আগামী মাসে সিআইডি থেকেই কর্মকর্তারা তদন্ত ভাতা পাবেন।’

পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্লুলেস হত্যা মামলা তদন্তের দুর্বল দিক হচ্ছে মরদেহের ডিএনএ প্রোফাইল ও ফিঙ্গার প্রিন্ট সংরক্ষণ না করা। মামলার শুরুতেই যদি তদন্ত কর্মকর্তারা ডিএনএ প্রোফাইল ও ফিঙ্গার প্রিন্ট সংরক্ষণ করতেন, তাহলে খুনিদের অনেকেই ধরা পড়ত। আসামি ধরা পড়লে হত্যাকাণ্ডের রহস্যও উদ্ঘাটিত হতো। কিন্তু কাজ দুটি করতে নিজস্ব অর্থ ব্যয় হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তারা সেটি করতে আগ্রহী হয়নি। এছাড়া এ ধরনের ‘ক্লুলেস’ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারার পেছনে দেশে ‘ন্যাশনাল প্ল্যাটফরর্ম’ না থাকাকেও একটি অন্যতম কারণ হিসাবে উল্লেখ করেন ওই কর্মকর্তা। 

আইনবিদ শাহদীন মালিক মোবাইল ফোনে যুগান্তরকে বলেন, পৃথিবীতে খুনের মামলার রহস্য উদ্ঘাটন তুলনামূলকভাবে সহজ। কারণ অন্তত ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে যারা খুন হন, খুনি তাদের পূর্বপরিচিত। এজন্য তাদের খুঁজে বের করা সহজ। তবে নিহত ব্যক্তির পরিচয় খুঁজে পাওয়া না গেলে কাজটা কঠিন। নিহত ব্যক্তির পরিচয় খুঁজে পাওয়া না গেলে তদবিরকারকের অভাব থাকে। ফলে পুলিশের কাজও এক্ষেত্রে শিথিল হয়। সার্বিকভাবে আমাদের দেশের খুনের মামলার শতকরা ২৫/৩০ ভাগের বেশি সুরাহা হয় না। এজন্য পুলিশের কাজে শিথিলতা ও জবাবদিহিতার অভাব দায়ী। 

সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এসব মামলার রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়ার পেছনে বড় কারণ হচ্ছে-যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হন, তাদের পরিচয় উদ্ধার না হওয়া। ফলে কোনো স্বজন তদবির নিয়ে পুলিশের কাছে যায় না। এতে তদন্ত কাজ চালিয়ে নিতে পুলিশের পকেট থেকে টাকা খরচ করতে হয়। একপর্যায়ে তদন্ত কাজে স্থবিরতা আসে। মামলা হারিয়ে যায় কালের অন্ধকারে।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, এ ধরনের ক্লুলেস মামলা তদন্তে সুফল পাওয়ার জন্য ইউরোপে আছে ‘ইউরোপোল ডেটাবেজ।’ যেখানে সবাই সব তথ্য শেয়ার করতে পারে। সেখান থেকে তথ্য নিয়ে কাজ করতে পারে তদন্তকারী সংস্থার সদস্যরাও। দেশেও ইউরোপোল ডেটাবেজের আদলে ‘ন্যাশনাল প্ল্যাটফরম’ নামে একটি ডেটাবেজ সেন্টার খোলা যেতে পারে। যেখানে হারানো বিজ্ঞপ্তি, অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহ ও যে কোনো হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে যে কেউ তথ্য দিয়ে রাখতে পারবে। তাহলে দেশেও এতসংখ্যক মামলার তদন্তে ব্যর্থ হবে না পুলিশ। 

হত্যাকাণ্ডের হটস্পট: পুলিশের তথ্যমতে, রাজধানীর উপকণ্ঠ নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন এলাকা হত্যাকাণ্ডের ‘হটস্পট’। এসব এলাকা থেকে মাসে অন্তত ১০টি মরদেহ পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে হত্যাকাণ্ডগুলো এসব এলাকায় ঘটে। আবার ক্ষেত্রবিশেষ দূরে কোথাও খুন করার পর আলামত গায়েব করতে এসব স্থানে মরদেহ ফেলা হয়। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়। সারা দেশের বিভিন্ন থানায় প্রতিমাসে এমন মামলার সংখ্যা অন্তত ৩০টি। হত্যাকাণ্ডের অনেক মামলা থানা পর্যায়ে তদন্ত করে রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে গভীরে গিয়ে তদন্তের জন্য এ ধরনের মামলা পাঠানো হয় সিআইডিতে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মরদেহ শনাক্ত না হওয়ায় জটিল এ মামলার তদন্তে নেমে সিআইডি কর্মকর্তারাও হিমশিম খান। বছরের পর বছর তদন্ত শেষে দরকারি তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে না পেরে হাল ছেড়ে দেন তদন্ত কর্মকর্তারা। তখনই ‘ক্লুলেস’ বিবেচনায় মামলাগুলোর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। 

কেস স্টাডি: এ ধরণের একটি মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০১৮ সালের ১৬ জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ কাঞ্চন ব্রিজ এলাকায় খুন হন ২৮ বছরের অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক ডা. মো. আসাদুজ্জামান মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে মতামত দেন-‘ওই যুবককে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।’

অবশ্য সুরতহাল রিপোর্টে পুলিশ উল্লেখ করেছিল-‘মরদেহের কপালে রক্তবর্ণের ছোপ ছোপ দাগ, মুখের বাম পাশে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ ও নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে।’ সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা শেষে এক মাস পর ১৭ আগস্ট রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান অপমৃত্যুর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করেন। এরপর হত্যারহস্য উদ্ঘাটনে শুরু হয় তদন্ত।

থানা পুলিশ রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হলে ওই বছরের ২২ নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার স্থানান্তরিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিআইডিতে। তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন সিআইডির পরিদর্শক কাইয়ুম খান। তদন্তকালে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে রূপগঞ্জের সলুপিনা গ্রামের বাসিন্দা একাধিক মামলার আসামি নূর হোসেন ওরফে নূরাকে গ্রেফতার করা হয়।

তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য বের করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। এর মধ্যে আরেক দফা পরিবর্তন হয় তদন্ত কর্মকর্তা। দীর্ঘ সময় তদন্তে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ উদ্ধার করতে না পেরে গত ১ ফেব্রুয়ারিতে আদালতে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় গ্রেফতার হওয়া একমাত্র আসামি নূর হোসেন ওরফে নূরাকে। 

তদন্তে গাফিলতি: সূত্র জানায়, সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মামলার নথি পর্যালোচনা করে তদন্ত কর্মকর্তাদের বেশকিছু গাফিলতি পেয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছে এর ব্যাখ্যা চান। গত বছরের ১৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ ঢাকা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার বরাবরে ব্যাখ্যার জবাব দেন।

তাদের মামলা তদন্তে ও তদারকিতে ত্রুটিবিচ্যুতি না করার জন্য ‘প্রথমবারের মতো সতর্ক’ করতে মতামত দেওয়া হয়। আর মামলা দায়েরকারী পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ও এসআই রুহুল আমিনকে শোকজ করা হয়।

পুলিশ সদরের বক্তব্য: তথ্যপ্রমাণের অভাবে ১২৭টি হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পেরে ক্লুলেস বিবেচনায় পর্যায়ক্রমে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি সোহেল রানা লিখিত বক্তব্যে জানান, প্রতিটি মামলার যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে ফাইনাল রিপোর্ট অথবা চার্জশিট দেওয়ার আইনি বিধান আছে। তবে ঢালাওভাবে ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়ার বিষয়টি মোটেও যৌক্তিক নয়। এ ধরনের কোনো তথ্যও নেই।

আমরা নিজেরাই নতুন পরিস্থিতিতে হতভম্ব-মানবজমিন

হঠাৎ করেই করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। হাসপাতালগুলোতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আইসিইউ শয্যার সংকট দেখা দিচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকরাও। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে গণটিকা কার্যক্রম চালু হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ১৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১২ জন।  দুই মাসের ব্যবধানে বুধবার (১০ মার্চ) প্রথমবারের মতো শনাক্তের সংখ্যা হাজারের ঘরে পৌঁছায়। এদিন এক হাজার ১৮ জন শনাক্ত হয়েছেন।

১১ মার্চ এক হাজার ৫১ জন, ১২ মার্চ শনাক্ত হন এক হাজার ৬৬ জন। বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের সর্বোচ্চ হার ছিলো গত জুলাই মাসে। এ পর্যন্ত মাস হিসেবে মোট সংক্রমণের ২২ দশমিক ৪৬ ভাগ হয়েছে ওই মাসে। আর গত ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বনি¤œ দুই দশমিক ৮২ ভাগ সংক্রমণ হলেও এখন তা আবার বাড়ছে। চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম সাত দিনেই তা চারভাগ ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় হাসপাতালগুলোতে চাপ বাড়ছে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের আইসিইউগুলোতে আসন সংকট দেখা দিচ্ছে। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানেই বড় ধরনের এই পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ'’র প্রধান ও অ্যানেস্থেসিওলজি অধ্যাপক ডা. শাহজাদ হোসাইন মাসুম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘পরিস্থিতি আবার খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমরা নিজেরাই নতুন পরিস্থিতিতে হতভম্ব। এটা যে টিকা আসার পর মানুষ গাছাড়া দিয়েছে শুধু সেই কারণেই হচ্ছে তা আমার মনে হয় না। তাহলে তো আগেই হতো।

তিনি মনে করছেন, করোনার নতুন কোন স্ট্রেইনের কারণে এর বিস্তার ঘটতে পারে। সেটি হতে পারে বাইরে থেকে এসেছে অথবা বিদ্যমান ভাইরাসই নিজেকে বদলে আরো শক্তিশালী হয়েছে।

তিনি সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমাদের সামাজিব দূরত্ব অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। টিকার কারণে গাছাড়া দিলে হবে না। আর মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। তিনি জানান, করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার দুই সপ্তাহ পর তা কার্যকর হয়। প্রথম ডোজ নিয়েই শরীরে কোভিড প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। কাজেই টিকা নিয়েই নিশ্চিত হওয়া বা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা ভয়ংকর বলে উল্লেখ করেন এই চিকিৎসক। এদিকে ৩০ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কথা থাকলেও এই পরিস্থিতিতে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, এ ব্যাপারে আবারো জাতীয় পরামর্শক কমিটির মতামত নেয়া হবে।

এবার ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

Image Caption

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে পরিচয় দেন ‘স্ট্রিট ফাইটার’ হিসেবে। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেই দাপুটে বিরোধী নেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠা তাঁর। তাই নিজের এবং দলের কঠিন সময়ে রাস্তাকে ভুলছেন না মমতা। দিন তিনেক আগেই নন্দীগ্রামে গিয়ে আহত হয়েছেন তিনি। এখনও পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা। হাঁটাচলা করতে পারছেন না। কিন্তু তাতে কী? আজ ঐতিহাসিক নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষে ফের রাস্তায় নেমে পড়ছেন তৃণমূল নেত্রী।

নন্দীগ্রাম দিবসে হুইলচেয়ারে বসেই পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । রবিবার দুপুরে মেয়ো রোড থেকে মিছিল শুরুর আগেই টুইটারে বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী। লিখলেন, “আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। আমার এখনও যন্ত্রণা হচ্ছে। কিন্তু মানুষের ব্যথা আমার চেয়ে বেশি।” তিনি আরও লেখেন, “আমাদের শ্রদ্ধেয় মাটিকে রক্ষা করতে অনেক লড়াই করেছি। আরও কঠিন লড়াই অপেক্ষা করেছে আমাদের জন্য। কিন্তু কাপুরুষদের সামনে মাথা নত করব না।” 

ঐতিহাসিক নন্দীগ্রাম দিবসে ৫ কিলোমিটার লম্বা পথে মিছিল করছে তৃণমূল। হুইলচেয়ারে বসে সেই মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লড়াকু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রয়েছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা। রাজনীতির নথিতেও ১৪ মার্চ তারিখটি ঐতিহাসিক হয়ে রইল এদিন। কারণ, মমতার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে হুইলচেয়ারে তাঁকে এর আগে কোনওদিন দেখা যায়নি। নেত্রীর এই লড়াকু মানসিকতায় নতুন করে উজ্জীবিত দলের কর্মীরা। নেত্রীকে দেখে দলীয় কর্মীদের বার্তা, “ভাঙা পায়েই লড়াই হবে।”

আনন্দবাজার পত্রিকার খবর- সেই সত্যজিৎ কেন তৃণমূলে, নন্দীগ্রাম দিবসে মমতার দিকে তোপ দাগলেন শুভেন্দু। খবরটিতে লেখা হয়েছে, কাধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে লড়াই করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সময়ের ফেরে এখন প্রতিদ্বন্দ্বী। তার প্রতিফলন দেখা গেল নন্দীগ্রাম দিবসেও। শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঝাঁঝালো ভাষায় আক্রমণ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে গুলি চালানোর অভিযোগ, তাঁকে দলে শামিল করা নিয়ে মমতাকে একহাত নিলেন শুভেন্দু।

ফের ভারতের আকাশে পাক ড্রোন! বিএসএফ গুলি চালাতেই সীমানার ওপারে চম্পট-সংবাদ প্রতিদিন

আবারও পাকিস্তানি ড্রোন ঢুকে পড়ল ভারতীয় ভূখণ্ডে। রবিবার সকালে পাঠানকোটে দেখা গিয়েছে ড্রোনটিকে। সঙ্গে সঙ্গে ড্রোনটিকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে বিএসএফ। বেগতিক দেখে চম্পট দেয় ড্রোনটি। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বারবার ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়তে দেখা গিয়েছে পাকিস্তানের ড্রোনকে। মূলত অস্ত্রশস্ত্র ও মাদক দ্রব্য ছড়াতেই সীমান্তরেখা পেরিয়ে এই ড্রোনগুলিকে ভারতের অংশে পাঠায় পাকিস্তান।

এদিন সকাল ৬টা ১০-এ পাঠানকোটের বামিয়াল সেক্টরের ডিন্ডা পোস্টে ওই ড্রোনটি অতর্কিতেই ঢুকে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ড্রোনটির দিকে গুলিবর্ষণ শুরু করে বিএসএফ। ড্রোনটি পালিয়ে গেলে এলাকায় কড়া তল্লাশি চালাতে থাকে বিএসএফ। আসলে গত কয়েক মাস ধরে বারবার এই ধরনের ড্রোনের মাধ্যমে জঙ্গিদের কাছে অস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। তাই এলাকা ভাল করে তল্লাশি চালিয়ে দেখা হচ্ছে ড্রোনটি থেকে কোনও অস্ত্রশস্ত্র ফেলা হয়েছে কিনা।

ভারত সীমান্তে ফের বাঙ্কার বানাচ্ছে চীন

আবার হিমালয় এলাকায় নিজের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে চীন। ভারত-তিব্বত সীমান্ত ঘেঁষে বাঙ্কার ও গ্রাম তৈরি করছে দেশটি। হংকংভিত্তিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, এসব এলাকায় এমন ৬২৪টি গ্রাম নির্মাণ করবে চীন। একটি মার্কিন স্যাটেলাইটে দেখা গেছে, এসব গ্রাম ঘিরে বাঙ্কারও তৈরি হচ্ছে। শনিবার (১৩ মার্চ) এসব খবর জানানো হয়েছে।

কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য বিতর্কিত সীমান্তভূমিতে চীনের নির্মাণকাজ ভারত, ভুটান এবং নেপালের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। শুধু গ্রামই নয়, সামরিক সুবিধা সম্পন্ন স্থাপনাও নির্মাণ করা হচ্ছে।

সম্প্রতি চীনা সরকারের একটি নথি উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, চীন বিতর্কিত হিমালয় এলাকায় ৬২৪টি সীমান্ত গ্রাম নির্মাণ করতে চায়। দারিদ্র্য বিমোচনের নামে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি নির্মমভাবে তিব্বতিদের উৎখাত করছে এবং তাদের এসব গ্রামে বসতি স্থাপন করতে বাধ্য করছে।

চীন যেমন দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগরে আধিপত্য সম্প্রসারণের জন্য উপকূলরক্ষী বাহিনী সমর্থিত বেসামরিক মাছ ধরার নৌকা নিয়োগ করেছে, তেমনি তারা হিমালয়ের নির্জন সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত সৈন্য পাঠানোর আগে পশুপালক পাঠাচ্ছে।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৪

  • বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ