মে ১৬, ২০২১ ১৩:৩৪ Asia/Dhaka

প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৬ মে রোববারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:

  • যতদিন প্রয়োজন গাজায় হামলা চলবে: নেতানিয়াহু-যুগান্তর
  • হামাস নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ফেলেছে ইসরাইল - প্রথম আলো
  • গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ-মানবজমিন
  • ইসরায়েলের জঘন্য কর্মকাণ্ড বন্ধে একমত মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়া-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস আজ-ইত্তেফাক
  • দেশেই টিকা তৈরির চেষ্টা চলছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী-সমকাল
  • অফিস খুলেছে, আসেনি পুরো কর্মচাঞ্চল্য-কালের কণ্ঠ

এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:

  • ১৫ দিনে ৯ বার বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের দাম, নয়া রেকর্ড কলকাতায় -সংবাদ প্রতিদিন
  • 'পজিটিভিটি আনলিমিটেড'! কোভিড পরিস্থিতির জন্য সরকার জনগণ দুজনকেই দায়ী করলেন আরএসএস প্রধান –আজকাল
  • রাজ্যে কঠোর বিধি-আজ থেকে ‌৫ দিন -গণশক্তি

শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের হামলা ও হত্যার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ ভারতসহ বিশ্বমিডিয়ায় বিশেষ বিশেষ শিরোনামে খবর পরিবেশিত হয়েছে। যুগান্তর ও প্রথম আলোর শিরোনাম-সপ্তম দিনের মতো চলছে ইসরইলি হামলা- আরও ৪ ফিলিস্তিনি নিহত। আর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন,যতদিন প্রয়োজন গাজায় হামলা চলবে। যখন

গাজার পশ্চিমে শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এক পরিবারের ১০ সদস্য নিহত হয়েছেন। শুধু বেঁচে গেছে ওই পরিবারের পাঁচ মাস বয়সী এক শিশু। তবে শিশুটি গুরুতর আহত। তখন হামলা চলবেই বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।  বিবিসি ও রয়টার্সের বরাত দিয়ে দৈনিকগুলো এ কথা লিখেছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, রকেট হামলার জবাবে ইসরায়েল হামলা চালিয়ে যাবে। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে আজ রোববার সপ্তমদিনের মতো সংঘর্ষ চলছে।

স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার গাজার পশ্চিমে শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া শিশুটির নাম ওমর আল হাদিদি। হামলায় শিশুটির মা, চার ভাইবোন, খালা ও চারজন খালাতো ভাইবোন নিহত হয়।

হামলার সময় শিশুটির বাবা মোহাম্মদ আল হাদিদি বাড়িতে ছিলেন না। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘ওই শরণার্থীশিবিরে কোনো রকেট হামলা চালানো হয়নি। সেখানে শুধু শিশু ও নারী ছিল।  কোন অপরাধে তাদের এভাবে মেরে ফেলা হলো?’

দৈনিকটির অন্য খবরে লেখা হয়েছে, ফিলিস্তিনে বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে লন্ডনে ইসরাইলি দূতাবাস ঘেরাও। আর ইত্তেফাকের খবরে লেখা হয়েছে,গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ। তবে অপর এক খবরে লেখা হয়েছে ইসরাইলকে সমর্থন জানিয়ে  ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে ফোন করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। 

মার্কিন কংগ্রেসম্যান রাশিদা তৈয়েব

অন্যদিকে মার্কিন কংগ্রেসম্যান রাশিদা তৈয়েব জো বাইডেনসহ তার প্রশাসনের একচোখা নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন, জেনারেল অস্টিন ও উভয় দলের অন্য নেতাদের বিবৃতিগুলো পড়লে মনেই হবে না যে, ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্ব আছে। রাশিদা তৈয়ব বলেন, ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে ঠিক এ মুহূর্তে হামলা চালিয়ে তাদের বাড়িঘর ছিন্নভিন্ন করে দেওয়া হচ্ছে, পরিবারগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে। অথচ তাদের কোনো স্বীকৃতি নেই।মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের বক্তব্যে শিশুদের আটক করা ও হত্যা করার বিষয়ের উল্লেখ নেই। মুসলিমদের অন্যতম পবিত্র স্থানে নামাজরত মুসল্লিদের ওপর ইসরাইলি পুলিশের অব্যাহত হয়রানি ও সন্ত্রাস সৃষ্টির বিষয়টি কোনোভাবেই স্বীকার করা হচ্ছে না। নামাজ পড়ার সময় আল আকসা মসজিদ যে অব্যাহতভাবে সহিংসতা, কাঁদানে গ্যাস, ধোঁয়ায় ঢেকে ফেলা হচ্ছে, তার কোনো উল্লেখ নেই তাদের বিবৃতিতে।

এ সময় তিনি ফিলিস্তিনিরা বর্তমানে গাজা যুদ্ধে যে নিষ্ঠুরতার মুখোমুখি তা স্বীকার করে বিবৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য,মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন,পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিকেনসহ মার্কিন নেতৃবৃন্দ অব্যাহতভাবে ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে উত্তেজনা প্রশমনের প্রথম শর্ত হিসেবে হামাসের রকেট নিক্ষেপ বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছেন। এমনকি উত্তেজনা প্রশমনে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকেরও বিরোধিতা করে আসছে আমেরিকা।

গাজায় ‘গণহত্যার’ প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভ-মানজমিন

গাজায় ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে ইসরাইল-প্রতিবাদে বিক্ষোভ বিশ্বজুড়ে

গাজায় ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে ইসরাইল। এর প্রতিবাদে আম্মান এবং বাগদাদ থেকে লন্ডন এবং বার্লিনে মানবতার পক্ষের হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। নির্বিচারে গাজায় যখন হত্যালীলা, ধ্বংসলীলায় মেতে উঠেছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার তখন এসব মানুষ রাজপথে তাদের ক্ষোভের আগুন ঝরালেন। বিক্ষোভ হয়েছে দোহা, লন্ডন, প্যারিস, মাদ্রিদসহ বিশ্বের বড় বড় শহরে। শনিবার গাজায় একটি শরণার্থী শিবিরে নৃশংস হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। সেখানে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আল জাজিরা, বার্তা সংস্থা এপির কার্যালয় হিসেবে পরিচিত আল জালা ভবনকে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরাইল। এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে ফিলিস্তিনি, বিশেষ করে গাজার হামাসদের।

তাদের অপরাধ রকেট হামলা চালিয়েছে ইসরাইলে। ঘটনা সত্য। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিধর ডেমোক্রেট, ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স যে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে, তার কোনো উত্তর খোঁজেন না কেউই। বার্নি স্যান্ডার্স প্রশ্ন তুলেছেন, হামাস কেন রকেট হামলা করে? নিজেদের ভূখণ্ড থেকে তাদেরকে ১৯৬৭ সালে উচ্ছেদ করে তা দখল করেছে ইসরাইলের ইহুদিরা। সেই ভূমির দাবিতে হামাস বা ফিলিস্তিন আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু এই চরম সত্যের কাছে কেউই ফিরে যান না।

চরম মাত্রায় অসম শক্তি প্রয়োগের কারণে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ইরাকের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি পতাকা। প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা মুকতাদার আল সদরের আহ্বানে ইরাকের ৫টি প্রদেশেই এই বিক্ষোভ হয়েছে শনিবার। রাজধানী বাগদাদ, দক্ষিণের প্রদেশ ব্যাবিলন, ধি কার, দিওয়ানিয়ে এবং বসরায় বিক্ষোভ হয়েছে।

কাতার: বিক্ষোভ হয়েছে কাতারের রাজধানী দোহা’য়। সেখানে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি পতাকা। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এমন ব্যানার প্রদর্শন করেন তারা। দোহা’য় বসবাস করেন ফিলিস্তিনি রীম আলগোউল। তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন, আমার দেশে ইসরাইলি বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। দেশকে স্বাধীন করতে যা যা করার আমরা তাই করবো। যেহেতু আমরা এই মুহূর্তে দেশে নেই, তাই এখানে এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছি। ফিলিস্তিনে যা ঘটছে তাতে আমার হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। এদিন দোহা’য় ইমাম মুহাম্মদ আবদেল ওয়াহাব মসজিদে সমবেত হন হাজার হাজার মানুষ।

কাতার: বিক্ষোভ হয়েছে কাতারের রাজধানী দোহা’য়। সেখানে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি পতাকা। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে এমন ব্যানার প্রদর্শন করেন তারা। দোহা’য় বসবাস করেন ফিলিস্তিনি রীম আলগোউল। তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন, আমার দেশে ইসরাইলি বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। দেশকে স্বাধীন করতে যা যা করার আমরা তাই করবো। যেহেতু আমরা এই মুহূর্তে দেশে নেই, তাই এখানে এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছি। ফিলিস্তিনে যা ঘটছে তাতে আমার হৃদয় ক্ষতবিক্ষত। এদিন দোহা’য় ইমাম মুহাম্মদ আবদেল ওয়াহাব মসজিদে সমবেত হন হাজার হাজার মানুষ।

ফ্রান্স: ৪২০০ কর্মকর্তাকে দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলার পরও প্যারিসের উত্তরে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক শত মানুষ। এ সময় তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুুলিশ কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করেছে। সেখানে কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ করার কারণে পুলিশ এই ব্যবস্থা নেয়। প্যারিস কর্তৃপক্ষের আতঙ্ক এই সহিংসতা আরো বড় রূপ নিতে পারে। তবে বিক্ষুব্ধ জনতা বেশ কিছু গার্বেজ বিন বা ময়লা ফেলার ভাগাড়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। পুলিশের প্রতি ইটপাটকেল ছুড়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখানে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

স্পেন: মাদ্রিদে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। তাদের বেশির ভাগই যুব শ্রেণির। ফিলিস্তিনি পতাকায় নিজেদের মুড়ে নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন মাদ্রিদের পুয়ের্তা ডেল সোল প্লাজার সামনে। এ সময় তারা সমস্বরে গাজায় ইসরাইলের নৃশংসতার বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করেন। তারা একসুরে বলেন, এটা কোনো যুদ্ধ নয়। এটা হলো গণহত্যা। তারা আমাদেরকে গণহারে হত্যা করছে। ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ৩৭ বছর বয়সী আমিরা শেখ আলি বিক্ষোভে অংশ নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

লেবানন: লেবানন-ইসরাইল সীমান্ত বরাবর কয়েক শত লেবাননি এবং ফিলিস্তিনি বিক্ষোভ করেছেন। কেউ কেউ এ সময় সীমান্ত দেয়াল বেয়ে উঠে যান উপরে। এর ফলে ইসরাইল কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতি গুলি ছুড়েছে। এতে আহত হয়েছেন একজন। শনিবার লেবাননের সীমান্তবর্তী গ্রাম ওদাইশেহ’তে বিক্ষোভকালে সীমান্ত দেয়ালের ওপর দিয়ে কিছু বিক্ষোভকারী ইসরাইলের দিকে হাতবোমা ও পাথর নিক্ষোপ করেছে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনি এবং লেবাননের পতাকা। এ ছাড়া তাদের কারো কারো কাছে ছিল যোদ্ধা গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর হলুদ ব্যানার।

কাশ্মীর: ভারত শাসিত কাশ্মীরে বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় সেখানে দমনপীড়ন চালিয়েছে পুলিশ। তারা আটক করেছে কমপক্ষে ২০ জনকে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর প্রধান শহর শ্রীনগরের রাস্তায় বেশ কিছু মানুষ ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা ফিলিস্তিনপন্থি এবং ইসরাইল বিরোধী স্লোগান দেন। এতে যোগ দিয়েছিলেন ২৫ বছর বয়সী এক যুবক। তিনি বলেছেন, গাজায় যখন শিশুদের হত্যা করছে ইসরাইল তখন আমরা কিভাবে নীরব থাকতে পারি। পৃথিবীর প্রতিটি মানবসন্তানের উচিত তাদের পক্ষে দাঁড়ানো। এটা মানবতা এবং সংহতির প্রশ্ন।

বৃটেন: ‘স্টপ বোম্বিং গাজা’ বা গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করো প্লাকার্ড নিয়ে লন্ডনে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় তারা ফিলিস্তিন স্বাধীন করো স্লোগানে মার্বেল আর্চে সমবেত হন এবং ইসরাইল দূতাবাসের দিকে অগ্রসর হন। উল্লেখ্য, কেনসিংটন হাই স্ট্রিটে ইসরাইলের দূতাবাস অবস্থিত। বিক্ষুব্ধ জনতা তার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। আয়োজকরা দাবি করেন এতে যোগ দিয়েছিলেন এক লাখ মানুষ।

জার্মানি: সামিদুন প্যালেস্টাইনিয়ান প্রিজনার সলিডারিটি নেটওয়ার্কের ডাকে জার্মানির বার্লিনসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। বার্লিনের নুকোন শহরে তিনটি বিক্ষোভের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এই অঞ্চলটিতে বসবাস করেন বিপুল সংখ্যক তুর্কি এবং আরব বংশোদ্ভূত। বিক্ষোভ থেকে স্লোগান দেয়া হয়েছে ‘ইসরাইলকে বর্জন কর’। এ সময় পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছুড়েছে তারা। পুলিশও গ্রেপ্তার করেছে বেশ কিছু মানুষকে। বিক্ষোভ হয়েছে ফ্রাঙ্কফুর্ট, লিপজিগ এবং হামবুর্গে।

নিহত প্রথম ইসরাইলি সৈন্যটি ফিলিস্তিনি নারীকে ধর্ষণ করে গর্ব করেছিল!-মানবজমিন

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিকতম সহিংসতায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রথম নিহত হওয়া সৈন্যটি এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে একজন ফিলিস্তিনি নারীকে ধর্ষণ করার বিষয়ে গর্ববোধ করেছিল।

বুধবার গাজা উপত্যকার কাছে এক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ওমর তাবিব (২১) নিহত হয়েছেন বলে ডেইলি সাবাহ জানিয়েছে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ হামাসকে ওই হামলার জন্য দায়ী করেছে যাতে তাবিব নিহত হয় এবং আরও একজন সৈন্য গুরুতর আহত হয়। আরেকজন অফিসারও হালকা আঘাতপ্রাপ্ত হন।

আইডিএফ তাবিবের মৃত্যুসংবাদ প্রচারের পর নেটিজেনরা তার সম্পর্কে ইন্টারনেটে অনুসন্ধান শুরু করে। আর তখনই তাবিবের টুইটার একাউন্ট ঘেটে ভয়ংকর এক তথ্য পাওয়া যায়। ২০১৯ সালের আগস্টের আট তারিখে এক টুইটে তাবিব নিজেই জানান, তিনি একজন ফিলস্তিনি নারীকে ধর্ষণ করেছেন। তাবিব এবং অন্য ইসরাইলি সেনাদের মাদকাসক্ত এবং শিশু হত্যাকারী বলে জনৈক ফিলিস্তিনপন্থী টুইটার ব্যবহারকারী আক্রমণাত্মক পোস্ট করার পর তাবিব এমন মন্তব্য করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার তাবিবকে  উত্তর ইসরাইলে তার নিজ শহর ইলিয়াকিমে সমাধিস্থ করা হয় যেখানে মূলত ইয়েমেনি বংশোদ্ভূত ইহুদি অধিবাসীরা থাকেন। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় কয়েক শ স্থানীয় এবং আইডিএফ কর্মী অংশ নেন। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই তাবিবের অবসরে যাওয়ার কথা ছিল।

ইসরাইলের উন্মত্ত হামলায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে আল জাজিরা, এপির অফিস

উন্মত্ত এক যুদ্ধের নেশায় মেতেছে ইসরাইল। কোনো বাছবিচার নেই। উন্মত্তের মতো বেপরোয়াভাবে হামলা চালিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে মুসলিমদের বাসভূমি গাজা। সেখানে রক্ষা পাচ্ছে না আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও। এরই মধ্যে তারা আকাশচুম্বী একটি ভবনে হামলা চালিয়েছে। সেখানে আল জাজিরা, এপি সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের অফিস ছিল। আল জালা নামের ওই ভবনটিতে বোমা হামলা চালিয়ে তা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে ইসরাইলিরা। এ থেকে স্পষ্ট ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কোনো কিছুর পরোয়া না করে যথেচ্ছ বোমা হামলা চালাচ্ছেন।

আক্রান্ত মিডিয়া, কেন টার্গেট আল জাজিরা?-মানবজমিন

১১ বছর ধরে ভবনটিতে অফিস করতেন আল-কাহলাউত। গাজায় ইসরাইলি বর্বরতার খবর দিয়ে এরইমধ্যে বিশ্বব্যাপী এক পরিচিত মুখ। আল জাজিরার এই সংবাদদাতা গতকাল বিবরণ দিচ্ছিলেন তার দীর্ঘ দিনের স্মৃতি বিজড়িত অফিসটি কীভাবে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। একই ভবনে অফিস ছিল আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি’রও। আল-কাহলাউত বলেন, এই ভবন থেকে আমি অনেক খবর প্রচার করেছি। এখানে সহকর্মীদের সঙ্গে আমাদের অনেক সুখস্মৃতি রয়েছে। কিন্তু মাত্র দুই সেকেন্ডে এটিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে।

মিডিয়া ভবন গুঁড়িয়ে দেয়ার পুরো ঘটনা সরাসরি সম্প্রচার করেছে আল জাজিরা। চ্যানেলটির উপস্থাপক আবেগপূর্ণ ভাষায় বলেন, আমাদের চ্যানেলকে চুপ করানো যাবে না।

অর্থনীতি-রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘পাড়া বেড়ানো’-প্রথম আলো

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে টানাহেঁচড়া হচ্ছে। কাজ শুরু হওয়ার পাঁচ বছর পর প্রকল্পটি এবার ‘বেড়াতে’ যাবে। এত দিন ধরে শিক্ষা পরিবারে ছিল। আগামী অর্থবছর থেকে বিদ্যুৎ পরিবারে যাবে। প্রকল্পটি যেখানে বেড়াতে যায়, সেই পরিবার ‘ফুলেফেঁপে’ ওঠে। ১০ বছরে মেয়াদের রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্পটি আগামী পাঁচ বছর বিদ্যুৎ পরিবারেই থাকবে। রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের এখন ‘পাড়া বেড়ানো’র স্বভাব হয়েছে।

এবার একটু খোলাসা করা যাক, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্পটি দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। কয়েক বছর ধরে বাজেটে খাতওয়ারি বরাদ্দ বাড়িয়ে দেখানোর জন্য এই প্রকল্প কাজে লাগানো হয়। কারণ, ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পেই প্রতিবছর সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়। 

শিক্ষা বাজেট বাড়ানোর 'রূপপুর পদ্ধতি' এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পারমাণবিক শক্তি কমিশন। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) পাঁচ ধরে এই প্রকল্পে বরাদ্দ করা হাজার হাজার কোটি টাকা বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের সঙ্গে যুক্ত হয়। ফলে, শিক্ষা খাতের বরাদ্দ বেশি করে দেখানো সম্ভব হয়েছে। আগামী বছর থেকে শিক্ষা খাত আর এই সুযোগ পাবে না। আগামী অর্থবছরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বরাদ্দ বিদ্যুৎ খাতের সঙ্গে দেখানো হবে। ফলে ফুলেফেঁপে উঠবে বিদ্যুৎ খাতের বরাদ্দ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড় অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ এম ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বেশি দেখানোর জন্য রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের টাকা ওই খাতে নেওয়া হয়েছে। এখন এই প্রকল্পের খরচ বিদ্যুৎ খাতে দেখানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর কারণ, নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদনের চাহিদা নেই। নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্পও নেওয়া হচ্ছে না। দেশের প্রায় শতভাগ এলাকা বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালনের আওতায় এসেছে। এ কারণে এখানে বরাদ্দ বাড়ানো যাচ্ছে না। রাজনৈতিক অভিলাষে এ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেখানোর জন্য রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

এম ফাওজুল কবির মনে করেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিদ্যুৎ খাতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। কারণ, পারমাণবিক ইস্যুর মতো এত সংবেদনশীল বিষয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতেই আলাদাভাবে থাকা উচিত।

রাজনৈতিক অভিলাষে এ খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেখানোর জন্য রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

ফুলেফেঁপে উঠবে বিদ্যুৎ খাত

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরে (২০২১-২২) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। ফলে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বরাদ্দ দাঁড়াচ্ছে ৪৫ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেই আসছে এ খাতের প্রায় ৪০ শতাংশ বরাদ্দ। সেই সুবাদে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত এডিপি থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে। উন্নয়ন বাজেট থেকে এটাই প্রাপ্তি। ৬১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যোগাযোগ খাত প্রথম স্থানে আছে।

তাহলে শিক্ষার কী হবে? সোজা উত্তর—বরাদ্দে পিছিয়ে যাবে শিক্ষা, ধর্ম ও প্রযুক্তি খাত। এবার দ্বিতীয় স্থানে থাকা এ খাত চতুর্থ স্থানে নেমে যাবে। আগামীবার শিক্ষা খাত বরাদ্দ পাচ্ছে ২৩ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা। যদি রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের বরাদ্দ পাওয়া যেত, তাহলে দ্বিতীয় অক্ষুণ্ন থাক।

কোন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ উন্নয়ন ও পরিচালন খরচে কত বরাদ্দ পেল, তা দিয়ে এক অর্থবছরের পুরো বাজেট থেকে খাতওয়ারি বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়। মোটাদাগে বাজেট থেকে খাতওয়ারি প্রাপ্তি এটাই। ১৫টি খাত দিয়ে এটা নির্ধারণ করা হয়। ওই ১৫ খাতে একটি হলো শিক্ষা ও প্রযুক্তি। এখানেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বরাদ্দ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। 

পাঁচ বছর ধরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রতিবছর ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। এ বছর বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ বরাদ্দ পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাত। এ খাত প্রায় ৮৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। ওই বরাদ্দের প্রায় ১৮ শতাংশ এসেছে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে থেকে। কয়েক বছর ধরেই এভাবেই রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের বরাদ্দ দিয়ে শিক্ষার বাজেট বাড়ানো হতো।

আগামীবারের বাজেট থেকে পোয়াবারো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। খাতওয়ারি বরাদ্দ পাওয়ার দিক থেকে দশম স্থানে থাকা এ খাতের অবস্থানের উন্নতি হবে। এবার উন্নয়ন ও পরিচালন খরচসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। আগামীবার এ খাতের উন্নয়ন খরচের জন্য পাচ্ছে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিঃসন্দেহে এ খাতকে ফুলেফেঁপে উঠতে সহায়তা করবে।

বাবুল-মিতুর সন্তানদের খোঁজ পায়নি পিবিআই-যুগান্তর

চট্টগ্রামে ৫ বছর আগে চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যার প্রধান আসামি তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের দুই সন্তানের খোঁজে নেমেছে পুলিশ।

মিতু হত্যার প্রত্যক্ষ সাক্ষী তাদের ছেলে। ঘটনার দিন চট্টগ্রামে জিইসির মোড়ে তার সামনেই মাকে কুপিয়ে হত্যা করে খুনিরা। সে সময় তার বয়স ছিল ৭। মাকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টাও করে সে। কিন্তু তখন ‘হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া’ বাবুলের সোর্স কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা তাকে জড়িয়ে ধরে রাখায় ব্যর্থ হয় সে। গ্রেফতার দুই আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই ঘটনাটি উঠে আসে। বিষয়টি আমলে নিয়ে মিতু-বাবুলের দুই সন্তানের খোঁজে নেমেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। কিন্তু এখনও তাদের সন্ধান মেলেনি।

কারণ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইকে ভুল ঠিকানা দিয়েছিলেন বাবুল। নিহত মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় যে মামলা করেছেন, সেখানেও বাবুল আকতারের ঢাকার ঠিকানা ভুলভাবে লেখা হয়েছে।

এ বিষয়ে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন জানিয়েছিলেন, বাবুল আকতার পিবিআইকে যে ঠিকানা দিয়েছেন, তার ভিত্তিতেই মামলায় ওই ঠিকানা লিখেছেন তিনি।শুক্রবার পিবিআইয়ের উপমহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন, সন্তানদের এসব ঝামেলা থেকে সরিয়ে রাখতেই এ কাজটি করেছেন বাবুল। তারা যেন পুলিশের হাতে না আসে। এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, বাবুল আকতারের বাসার ঠিকানা লেভেল-৭, সড়ক নম্বর ১১, বাসা নম্বর ২২, ব্লক সি, বাবর রোড। কিন্তু মোহাম্মদপুরের বাবর রোডে এই হোল্ডিং নম্বরের বাসার অস্তিত্বই পায়নি পুলিশ।

পরে পুলিশি জেরায় বাবুলের মুখ থেকে সঠিক ঠিকানা নিয়ে সেখানে গেলেও তার সন্তানদের পায়নি পুলিশ। ওই এপার্টমেন্টের নিরাপত্তা রক্ষী মো. রিপন জানায়, বাবুলকে গ্রেফতারের দিনই তার নতুন স্ত্রী আগের ঘরের দুই সন্তানকে নিয়ে অজ্ঞাতস্থানে চলে গিয়েছেন। এই অবস্থায় দুই সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাদের নানা মোশাররফ হোসেন।  

এমন পরিস্থিতিতে মিতু-বাবুলের দুই সন্তানকে নিজেদের কাছে রাখতে চান বলে জানান মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।   

নাতি-নাতনিকে নিজেদের জিম্মায় চেয়ে রোববার আদালতে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু নাতি-নাতনি কোথায় তা তিনি জানেন না। পুলিশও দিতে পারছেন না খোঁজ। 

এ বিষয়ে মোশাররফ হোসেন শনিবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মা মারা যাওয়ার পর তারা আমাদের বাসায় ছিল। পরে বাবুল তাদের নিয়ে যায়। এখন বাবাও পুলিশের হাতে গ্রেফতার। তাদের দেখাশোনার জন্য বিশ্বস্ত কেউ নেই। আমরা নানা-নানি তাদের দেখাশোনা করব।’

মিতুর দুই সন্তান এখন কোথায় সে প্রশ্নে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল ভুল ঠিকানা দিয়েছিল। পরে আবারও জেরার মুখে আসল ঠিকানা দেয়। আমরা সেই বাসায় লোক পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে কেউ নেই। তাদের খোঁজা হচ্ছে। দুই-একদিনের মধ্যেই তাদের অবস্থান জানতে পারব।’

প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ঢাকায় অবস্থান করা মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে নিজের জঙ্গি-বিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তবে পুলিশ তদন্তে তার সম্পৃক্ততার গুঞ্জন ছিল আগে থেকেই।  মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন তার মামলায় অভিযোগ করেন, মিতু পরকীয়ায় বাধা হওয়ায় তাকে খুন করেন বাবুল। পাঁচ বছর পর স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি হয়ে রিমান্ডে আছেন বাবুল।

 ‘দেশের করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটা ভালো’-স্বাস্থ্যমন্ত্রী,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়লো-ইত্তেফাক

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশের করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটা ভালো। বিভিন্ন হাসপাতালে দেড় হাজার করোনা রোগী ভর্তি আছেন। খালি আছে সাড়ে ১০ হাজার শয্যা।তিনি বলেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা আনার জোর চেষ্টা চলছে। তবে আমেরিকা, ইউরোপ, ভারতসহ উন্নত দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি অনেকটা ভালো আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশে করোনার টিকা উৎপাদনের চেষ্টা চলছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়লো

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। শনিবার (১৫ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। শনিবার (১৫ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস আজ-ইত্তেফাক

আজ ১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ৪৫ বছর আগে ১৯৭৬ সালের এই দিনে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে ভারত নির্মিত ফারাক্কা বাঁধের প্রতিবাদ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ফারাক্কা অভিমুখে লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়।

রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দান থেকে ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে লাখো জনতার সেই লং মার্চ রওনা হয়। লংমার্চ শেষে কানসাট হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত বিশাল সমাবেশে বক্তব্য দেন মজলুম জননেতা। সেই থেকে ১৬ মে ফারাক্কা দিবস নামে পরিচিতি লাভ করে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ১৮ কিলোমিটার উজানে ভারত ফারাক্কা বাঁধটি নির্মাণ করে।

ওই লংমার্চ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলে দেয়। বিশ্ব মিডিয়াগুলোতে ফলাও করে খবর প্রচার হওয়ায় ভাসানী হয়ে ওঠেন আফ্রো-এশিয়ার নেতা। সে সময় চুক্তি অনুযায়ী, পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি পূরণ না হওয়ায় মরুকরণের দিকে যাচ্ছিলো বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। যদিও সে অবস্থার এখনও পরিবর্তন হয়নি। ১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি অনুযায়ী খরা মৌসুমের জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ৩৫ হাজার কিউসেক পানি দেওয়ার কথা বাংলাদেশকে।কিন্তু বাংলাদেশ সে পানি পায়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, ২০০১ সাল ২০১৫ সাল পর্যন্ত চুক্তি অনুযায়ী পানি মিলছে মাত্র তিন বছর।

 এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

১৫ দিনে ৯ বার বাড়ল পেট্রল-ডিজেলের দাম, নয়া রেকর্ড কলকাতায়-সংবাদ প্রতিদিন

দেশ কাবু করোনার (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ে। অধিকাংশ শহরে লকডাউন। অনেকের কমেছে বেতন। কাজ হারিয়ে হাড়ির হাল বহু সংসারে। কিন্তু এসবের মধ্যেও লাগাতার বেড়ে চলেছে জ্বালানির দাম। রবিবার ফের একধাক্কায় বেশ খানিকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জ্বালানির দাম। এই নিয়ে চলতি মাসে ৯ বার। ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থানের বেশ কয়েকটি শহরে পেট্রল সেঞ্চুরি পেরিয়েছে। অন্যান্য বেশ কয়েকটি শহরও সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছে। লাগাতার বৃদ্ধির জেরে কলকাতাতেও নয়া রেকর্ড গড়েছে পেট্রল-ডিজেলের মূল্য।

স্থগিত হলেও যেন বাতিল না হয় মাধ্যমিক, চাইছেন শিক্ষক-পরীক্ষার্থীরা

জুন মাসে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হবে না। শনিবার রাজ্যের দুই বোর্ড পরীক্ষা নিয়ে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা অতিমারীর ভয়াবহতার মুখে জুনে পরীক্ষা স্থগিত করা ছাড়া কোনও উপায় ছিল না তা কার্যত মেনে নিয়েই সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে শিক্ষক মহলের অধিকাংশই৷ তবে, পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের স্বার্থে পরীক্ষা বাতিল যেন না করা হয়, সেই আবেদনও জানাচ্ছেন তাঁরা। শিক্ষকদের সঙ্গেই একমত পরীক্ষার্থীরাও। পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেই পরীক্ষা নেওয়া হোক। এমনটাই চাইছেন তাঁরা।

'পজিটিভিটি আনলিমিটেড'! কোভিড পরিস্থিতির জন্য সরকার জনগণ দুজনকেই দায়ী করলেন আরএসএস প্রধান-আজকাল

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় দেশের করুণ পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্র সরকার এবং সাধারণ মানুষ, দুই পক্ষকেই দায়ী করলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। তিনি বললেন, 'আমরা এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি তার কারণ, চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও সরকার, প্রশাসন কিংবা সাধারণ মানুষ সবাই প্রথম ঢেউয়ের পরে অসাবধান হয়ে গেছিল।' অনলাইনে 'পজিটিভিটি আনলিমিটেড' কর্মসূচির ভাষণ দিতে গিয়ে তাঁর এই বক্তব্য খানিকটা বেসুরোই শোনাল। 

ভাগবত বলেন, এবার বলা হচ্ছে তৃতীয় ঢেউ আসবে। আমাদের কি ভয় পাওয়া উচিত? নাকি সঠিক মনোভাব নিয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়া উচিত? সমালোচনার শেষে অবশ্য পজিটিভিটি ছড়ানোর চেষ্টা করলেন সঙ্ঘী নেতা।

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৬

  • বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।
     


 

ট্যাগ