জুলাই ০৭, ২০২১ ২২:১১ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে করোনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত এবং মৃত্যু নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করছে। ভারতের ডেল্টা ভেরিয়েন্টে সীমান্তের জেলাগুলোর নাজেহাল অবস্থা। চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। তো এসব বিষয়ে রেডিও তেহরানের সাথে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।

তিনি বলেন, লকডাউন হচ্ছে কিন্তু গরিব প্রান্তিক মানুষের কি হবে! ফোন করলেই খাবার আসবে কিন্তু সেই বাস্তবতা আসলে নেই। আপাতদৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে রাস্তাঘাট ফাঁকা কিন্তু গরিব মানুষের ভেতরের যে কষ্টটা সেটা কিভাবে নিবারণ হবে।

বিশিষ্ট এই অধ্যাপক বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের ওপর মানুষের আস্থা নেই। দুর্নীতি অব্যবস্থাপনার চিত্র সেখানে ভয়াবহ। করোনা নিয়ন্ত্রণের কৌশল দিচ্ছেন আমলারা সেখানে উপেক্ষিত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত। এটি মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না। তাছাড়া জনগণকে আসলে সম্পৃক্ত করা যায় নি। ফলে আজকের এই অবস্থা!

পুরো সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো। এটি গ্রহণ উপস্থাপনা ও তৈরি করেছেন গাজী আবদুর রশীদ।

রেডিও তেহরান: জনাব অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশে করোনার প্রকোপ উদ্বেগজনকহারে বেড়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কঠোর লকডাউনের আওতায়  গোটা দেশ। তো এই কঠোর লকডাউন নিয়ে আপনি কি বলবেন?

ওরা কাজ না করলে খাবে কি?

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস: ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার একটি প্রশ্নের জন্য। দেখুন, এতদিন লকডাউন একটি হাস্যকর শব্দ হিসেবে মানুষের কাছে পরিগণিত হয়েছিল। কখনও বলা হতো হালকা লকডাউন কখনও বলা হতো কঠোর লকডাউন এসব নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সর্বত্র একটা হাস্যরসের ব্যাপার ছিল। অর্থাৎ সরকার হয়তো লকডাউনকে সিরিয়াসলি মিন করছে না এবং বাস্তবায়ন করছে না। কিন্তু এবার লকডাউন শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত যে লকডাউন অতিক্রম করে এসেছি তা সত্যি সত্যি লকডাউন হচ্ছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। লকডাউন না মেনে যারা রাস্তায় বিনা কারণে বের হচ্ছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। ফলে একটি সত্যিকারের লকডাউন হচ্ছে বলে আমার মনে হয় এবং তার ফলও পাওয়া যাবে বলে মনে করি।

তবে এই বড় ধরণের লকডাউন দেয়ার পেছনে একটা বড় কারণ সম্প্রতি করোনায় সংক্রমণের পরিমাণ ৮ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেটি আরও বেড়েছে। গত দেড় বছরে এত সংক্রমণ একদিনে হয় নি। এটি ছিল একটি ওয়ার্নিং। আর সরকার সেই বার্তাটা ধরতে পেরেছে এবং তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। দেখা যাক কি দাঁড়ায়।

আমরা করোনার শুরু থেকে একটা সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করেছি। আমরা শুরু থেকে দেখেছি জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের চেয়ে আমলাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পুরো করোনা মোকাবেলার যে কৌশল কিংবা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চলছে। আর এ বিষয়টি কেউ ভালোভাবে নিচ্ছে না। লকডাউন কিংবা কঠোর বিধি-নিষেধ যেটিই আমরা বলি- এতে হয়তো মানুষকে আমরা রাস্তা থেকে ফাঁকা করে দিলাম। রাস্তায় মানুষরা এলো না কিন্তু মানুষগুলো তো কোথাও না কোথাও একজিস্ট করে। গরিব কিংবা প্রান্তিক মানুষরা হয়তো ভয়ে রাস্তায় কিংবা বাইরে বের হয় না কিন্তু জীবন জীবিকা, রুটি রুজি তো তাকে ছাড়ছে না।

রেডিও তেহরান: অধ্যাপক রোবায়েত, আপনি গরিব প্রান্তিক মানুষের কথা বলছিলেন। তো কঠোর লকডাউন সেই সব লাখ লাখ দিন আনে দিন খাওয়া মানুষের জন্য অভিশাপ। তাদের খাবার নেই- কি করবে তারা। তো তাদের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কি বিবেচনা করা হয়েছে?

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস:  দেখুন, আমার কাছে মনে হয়েছে সরকার অনেক বাগাড়ম্বর করছে। একটা নাম্বার দিচ্ছে ৩৩৩ কিংবা কোনো একটা নাম্বারে ফোন দিলে খাবার পৌঁছে যাবে। কিন্তু সেই বাস্তবতা আসলে নেই। আপাতদৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে রাস্তাঘাট ফাঁকা কিন্তু গরিব মানুষের ভেতরের যে কষ্টটা সেটা কিভাবে নিবারণ হবে।

গরিবের পেট চলবে কীভাবে?

অনেকে চাকুরি হারিয়েছে। প্রতিদিন একজন রিকশাওয়ালাকে তার রিকশা নিয়ে বের হতে হয়, শ্রমিককে বের হতে হয়। তানাহলে তাদেরকে না খেয়ে থাকতে হয়। তাদের খাবারের সংস্থান আমরা দেখছি না। তারা কিভাবে ত্রাণ পাবে সেই সমন্বয় আমরা দেখছি না এবং বড় একটা রোডম্যাপ থাকে যেমন ধরুন ৭ দিন কিংবা ১৪ দিন লকডাউন দেয়া হবে। সেই হিসেবে একটা রোডম্যাপ থাকতে হবে। সেইরকম কোনো সুপরিকল্পনা আমাদের কাছে এখনও দৃশ্যমান হয় নি। গত দেড় বছরে আমরা দেখেছি সরকার অনেক প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। অফিসিয়াল হিসেবে হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। কিন্তু গবেষণায় এসেছে সেই টাকা গরিব কিংবা প্রান্তিক মানুষদের হাতে আসলে ঠিকভাবে পৌঁছানো যায় নি। এটি খুবই দুঃখজনক।

রেডিও তেহরান: অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কথা বলছিলেন। তাঁরা কিন্তু মাস ছয়েক আগেও পূর্বাভাস দিয়েছিলেন জুন থেকে-সংক্রমণ উর্ধ্বমূখী হবে। তো এই যে আগেভাগে আমরা জানলাম পরিস্থিতি শোচনীয় হতে পারে- তা বিবেচনায় নিয়ে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস: দেখুন, আপনি ঠিকই বলেছেন, যারা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ তাদের কথাগুলো শুরু থেকে কখনই গুরুত্ব দিয়ে আমলে নেয়া হয় নি। আমলাতান্ত্রিক সিদ্ধান্তগুলো চাপিয়ে দেয়ার কারণে কিন্তু আজকে এই ফলটা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা শুরু থেকে বলছে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের কথা। যেটা ইন্ডিয়া থেকে এসেছে। আমাদের সীমান্ত জেলাগুলোতে সক্রমণের আশঙ্কার কথা তাঁরা বহুদিন থেকে বলে আসছেন।

আমি নিজেও টেলিভিশনে বহুদিন থেকে এ সম্পর্কে অনুষ্ঠান করছি এবং সেখানে এসব নিয়ে আলোচনা কথাবার্তা হয়েছে কিন্তু এসব বিষয়কে সরকার আমলে নেয় নি। আমলারা ভেবেছিলেন যে কমে যাবে। একধরনের নিয়তি নির্ভরতা। আমি ঠিক জানি না আমলারা পুরো বিষয়টিকে ঠিক কিভাবে দেখেন! তবে বিশেষজ্ঞদের কথাগুলো শোনা হয় নি শুরু থেকেই। সীমান্ত জেলা যেমন- খুলনা, রাজশাহী সাত্ক্ষীরাতে ভারতীয় ডেল্টা ভেরিয়েন্ট যেভাবে ছড়িয়ে গেল ঠিক তখন যদি ঐসব অঞ্চলকে কঠোর লকডাউনের আওতায় আনতে পারতাম তাহলে জেলা থেকে কিন্তু সেই সংক্রমণ ঢাকায় আসতে পারত না। আসলে বিশেষজ্ঞদের ওয়ার্নিংগুলোকে আমরা সিরিয়াসলি দেখি না। সেভাবে গুরুত্ব দেই না। আর তাঁদের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা না নেয়ার কারণেই আজকে আমাদের এই অবস্থাটা হয়েছে।

রেডিও তেহরান: জ্বি, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে সে সম্পর্কে আপনি কি বলবেন?

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস: জ্বি করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বিশাল জটিলতা তৈরি হয়েছে। একটা দেশ নির্ভরতা যে ভ্যাকসিন পলিসি; ভারত আমাদেরকে দিয়ে দেবে-আমরা খুব খুশি হয়েছিলাম। এই ডিপ্লমেসি ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমাদেরকে খুবই বাজে অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। আমরা ভারত থেকে আর ভ্যাকসিন পচ্ছি না। এখন শেষ মুহূর্তে আমরা চায়না, রাশিয়ার সাথে যোগাযোগ করছি। আমেরিকা থেকে আসছে, কোভ্যাক্সিন আসবে ইত্যাদি।

ভ্যাকসিন যদি আমরা কন্টিনিউয়াস দিতে পারতাম তাহলে সেটি খুব ভালো হতো। এরমধ্যে কিন্তু বড় একটা গ্যাপ হয়ে গেছে। দেখুন- করোনার মতো মহামারিকে হাসপাতাল দিয়ে, আইসিইউ দিয়ে কিংবা অক্সিজেন ফ্লো দিয়ে কিন্তু মোকাবেলা করা যায় না। এজন্য দরকার জনগণকে সম্পৃক্ত করা। কমিউনিটি এনগেজমেন্ট সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। গত দেড়বছরে আমরা এখনও পর্যন্ত কমিউনিটিগুলোকে করোনাভাইরাসবিরোধী ক্যাম্পেইনে এনগেজ করতে পারিনি। আমরা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছি। 

রেডিও তেহরান: অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, আপনি করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে জনসচেতনার জায়গাটিতে যেতে পারিনি বলে উল্লেখ করলেন। খুবই যৌক্তিক। কিন্তু পাশপাশি যে বিষয়টি আজকের একটি বড় প্রশ্ন-প্রায় দেড় বছরের মতো বাংলাদেশ মহামারি করোনার কবলে। বিশ্ব ধুঁকছে করোনায়। তো সেই প্রেক্ষাপটে সবার একটা আশার জায়গা ছিল দেশের স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি অব্যবস্থাপনার জায়গা কমে আসবে এবং মানুষ চিকিৎসা পাবে। সেখানে পুরনো ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। মানুষের সেই আশার জায়গাটি কি তৈরি হয়েছে-স্বাস্থ্যক্ষেত্রে?

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস: দেখুন, আমি তো বলব সেটা একেবারেই পাচ্ছে না। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রতি মানুষের কোনো আস্থা আছে বলে আমি মনে করি না। আগেও খুব কম আস্থা ছিল। তার নমুনা আমরা পেতাম যে মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত এমনকি নিম্নমধ্যবিত্তরা সুযোগ পেলেই চিকিৎসার জন্য ভারতে চলে যেত। যেহেতু এখন তারা ভারতে যেতে পারছে না, দেশেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে এবং তারা আসলে সেই চিকিৎসা পাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্যখাতে পুরো যে একটা অব্যবস্থাপনা, দুর্বলতা, দক্ষতাহীনতা ছিল সেটা আগে অতটা টের পাই নি; কিন্তু করোনা আসার পর সেটি কিন্তু প্রকট আকার ধারণ করেছে; সবকিছু 'হা' হয়ে গেছে। এর ভেতরে যে কত রকমের দুর্নীতি হতে পারে সেটা স্পষ্ট হয়েছে। কতরকমের অব্যবস্থাপনা হতে পারে সেটা কিন্তু পরিষ্কার হয়ে গেছে। এসবের প্রমাণ কিন্তু গত দেড় বছরে আমরা পেয়েছি।

গোটা দেশ এখন করোনা রিস্কের মধ্যে

হাসপাতাল এবং ডাক্তারদের মধ্যে আমরা দেখেছি করোনার নেগেটিভ রিপোর্টকে পজেটিভ করছে আবার পজিটিভকে নেগেটিভ করছে। কেনাকাটায় হাজার হাজার কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে। এতবেশি অনিয়ম হয়েছে-বিশেষ করে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বছরের পর বছর কাজ দেয়া হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত অন্যতম একটি দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। করোনাকালীন স্বাস্থ্যব্যবস্থাপনা  এবং স্বাস্থ্যসেবা নেয়াটা যখন আরো বেশি জরুরি সেই পর্যায়ে এসে আমরা মৌলিক কোনো পরিবর্তন দেখছি না। করা যায় নি। তারা চলছে তাদের মতো করে চলছে, মন্ত্রী নিজেকে ডিফেন্ড করছেন কিন্তু আসলে কাজ হচ্ছে না। সবমিলিয়ে আমি বলব যে, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতটা খুবই নাজুক এবং খুবই ভঙ্গুর। মানুষ এখান থেকে সত্যিকারের কোনো স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। মানুষের আস্থাও খুব বেশি এই খাতের প্রতি আছে বলে আমার মনে হয় না। এটার আসলে টোটাল পুনর্গঠন দরকার।

রেডিও তেহরান: অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস সবশেষে আপনি বাংলাদেশের মানুষকে করোনা বিষয়ে কি পরামর্শ দেবেন?

অধ্যঅপক রোবায়েত ফেরদৌস: দেখুন আমার পরামর্শ হচ্ছে করোনার মতো অতিমারি আসলে হাসপাতাল দিয়ে মোকাবেলা করা যাবে না। মানুষের সামাজিক সচেতনা জরুরি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যেসব পরামর্শ দিচ্ছেন সেগুলো মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, মাস্ক আমাদের পরতেই হবে,ভ্যাক্সিন নেই বা না নেই হাত ধোয়ার অভ্যাসটা আমাদেরকে করতে হবে। সবমিলিয়ে সমস্ত কমিউনিটেকে এনগেজ করতে হবে। এটা আমাদের সবার সমস্যা; আমি একা বাঁচলে হবে এই চিন্তা থেকে আসলে হবে না আমরা সবাই মিলে বাঁচব কিভাবে এরকম একটা সামষ্টিক চেতনা যদি আমরা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারি তাহলেই কেবল সম্ভব।

তো অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি, চলমান কঠোর লকডাউন, স্বাস্থ্যসেবা এবং লকডাউনে প্রান্তিক মানুষের অবস্থা নিয়ে রেডিও তেহরানের সাথে কথা বলার জন্য আপনাকে অবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস:জ্বি আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৭

 

ট্যাগ